ইসলামী শরিয়তে ওয়ালা বারার আকীদাহর গুরুত্ব
প্রথমতঃ ইহা কালিমায়ে শাহাদাতের একটি অংশ। তা হচ্ছেঃ ( لا إله ) অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতিত অন্য যাদেরকেই ইবাদাত করা হয় তা থেকে বা'রা বা শত্রুতা।
দ্বিতীয়তঃ ইহা ঈমানের একটি শর্ত । যেমনটা আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ-
( ترى كثيرًا منهم يتولون الذين كفروا لبئس ما قدمت لهم أنفسهم أن سخط الله عليهم وفي العذاب هم خالدون ولو كانوا يؤمنون بالله والنبي وما أنزل إليه ما اتخذوهم أولياء ولكن كثيرًا منهم فاسقون ).
আপনি তাদের অনেককে দেখবেন, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা নিজেদের জন্য যা পাঠিয়েছে তা অবশ্যই মন্দ। তা এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহ ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তারা চিরকাল আযাবে থাকবে। (৮০) যদি তারা আল্লাহর প্রতি ও রসূলের প্রতি অবতীর্ণ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত, তবে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই দুরাচার। মায়েদাহ- ৮১
তৃতীয়তঃ এই আকীদাটি হচ্ছে ঈমানের সবচেয়ে শক্তিশালী বন্ধন।
আল্লাহর নবী বলেনঃ
روى أحمد في مسنده عن البراء بن عازب - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: ( أوثق عرى الإيمان الحب في الله والبغض في الله ).
চতুরথঃ ঈমান ও য়াক্বীনের স্বাদ আস্বাদনের মাধ্যম। হাদীসে এসেছেঃ
لما جاء عنه - صلى الله عليه وسلم - أنه قال: ( ثلاث من وجدهن وجد حلاوة الإيمان: أن يكون الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، وأن يحب المرء لا يحبه إلا لله، وأن يكره أن يرجع إلى الكفر بعد أن أنقذه الله منه كما يكره أن يقذف في النار ) [ متفق عليه ].
তিনটি জিনিস যে পাবে সে ঈমানের স্বাদ পেয়ে যাবেঃ আল্লাহ ও রাসূল তার কাছে সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া, একমাত্র আল্লাহর জন্য অন্যকে মহাব্বত করা, আল্লাহ তাকে কুফুর থেকে রক্ষা করার পর সেদিকে ফিরে যেতে তেমন অপছন্দ করা যেমনটা জাহান্নামে নিক্ষেপিত হওয়াকে করে থাকে। পঞ্চমঃ ইহাই এমন সম্পর্ক যার ভিত্তিতে মুসলিম সমাজ গড়ে উঠে। ( إنما المؤمنون إخوة) নিশ্চয়ই মুমিন একে অপরের ভাই।
ষষ্ঠঃ এই আকীদাহর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আল্লাহর বন্ধুত্ব ও অভিবাকত্ব অর্জিত হয়। ইবনে আব্বাস বলেনঃ
روى ابن عباس - رضي الله عنهما - قال: ( من أحب في الله وأبغض في الله، ووالى في الله وعادى في الله، فإنما تنال ولاية الله بذلك )
যে আল্লাহর জন্য ভালবাসবে আল্লাহর জন্য ঘৃণা করবে এবং আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব করবে ও আল্লাহর জন্য শত্রুতা করবে, তাহলে সে ইহার মাধ্যমে আল্লাহর বন্ধুত্ব অর্জন করবে।সপ্তমঃ এই আকীদাহ বাস্তবায়ন না করলে কুফুরের মধ্যে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ( ومن يتولهم منكم فإنه منهم ) যে তাদেরকে বন্ধু বানাবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
অষ্টমঃ কুরআন ও সুন্নাহতে ইহার সবচেয়ে বেশি আলোচনাই তার গুরুত্ব প্রকাশ করে।
শাইখ হামাদ বিন আতীক বলেনঃ
فأما معاداة الكفار والمشركين فاعلم أن الله سبحانه وتعالى قد أوجب ذلك، وأكد إيجابه ، وحرم موالاتهم وشدد فيها، حتى أنه ليس في كتاب الله تعالى حكم فيه من الأدلة أكثر ولا أبين من هذا الحكم بعد وجوب التوحيد وتحريم ضده
কুফফার ও মুশরিকদের সাথে শত্রুতা; জেনে রাখ, আল্লাহ তায়ালা ইহাকে ওয়াজিব করেছেন এবং আবশ্যকিতাকে দৃঢ় করেছেন। তাদের সাথে বন্ধুত্বকে হারাম করেছেন এবং তাতে জোর দিয়েছেন, এমনকি তাওহীদের আবশ্যকিয়তা ও তার বিপরীতকে হারামের বিধান ব্যতিত কিতাবুল্লাহতে এই আকীদাহ থেকে বেশি দলীল ও স্পষ্ট বর্ণনা অন্য কোন হুকুমের ব্যপারে নেই। ~~~~~~~~~~~~
আবুল অয়াফা বিন আকীল বলেনঃ
যদি তুমি বর্তমানের লোকদের থেকে ইসলামের অবস্থা জানতে চাও তাহলে শিক্ষালয়ের গেইটের ভিড়ের দিকে দৃষ্টি দিবে না, অথবা তাদের সাড়া পড়া শোরগোলের দিকে। বরং শরিয়াতের শত্রুদের বিরোদ্ধে তাদের অবস্থান সমূহের দিকে লক্ষ্য কর।
আগের পর্বের লিংকঃ
আল-অয়ালা অয়াল বারা ।। আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রুতা ।। একজন মুসলিমের যা জানা আবশ্যক ।। পার্ট ১
Comment