#প্রশ্ন – খলিফা ছাড়া কোন জিহাদ নাই। কারন হাদিসে আছে ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ, তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করা হয়। যেহেতু এখন খলিফা বা ইমাম নাই তাই এখন জিহাদ ও নাই। তাহলে কেন আপনার মতো জঙ্গিরা জিহাদ-জিহাদ করে ফিতনা সৃষ্টি করছে? [নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক]
.
#উত্তর - বর্তমান সময়ে অনেকেই ফরযে আইন জিহাদ তরক করা, পিছনে বসে এসি রুমে হাল্*কা করা, আলেমদের কিছু কিছু কথায় বিভ্রান্ত হয়ে যান। জিহাদবিমুখ পেছনে বসে থাকাদের সাথে বসে থাকা এসব আলিম, দা’ই, মুফতি, এবং সেলিব্রিটিদের ব্যভৃত যুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হল-
.
যেহেতু খলিফা নাই, তাই জিহাদ নাই। আর যেহেতু এখন জিহাদ নাই তাই জিহাদের নামে যা হচ্ছে তা ফিতনা। আর যেহেতু এটা ফিতনা তাই আমাদের এ থেকে দূরে থাকলেই শুধু হবে না। এর বিরোধিতাও করতে হবে। আর এই যুক্তির দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে তারা শুধু জিহাদবিমুখতায় থেমে থাকেন না, তারা জিহাদবিরোধিতায় পতিত হন। শুধু বসে থাকাদের সাথে বসে থাকায় তাদের গোমরাহি সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের কার্যক্রম ইসলামের শত্রুদের সহায়তা করার পর্যায়ে পৌছে যায়।
.
যদি জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ হুজুর, (দুঃখিত,‘হে শায়েখ’) জিহাদের জন্য খলিফা শর্ত- এটা কিভাবে বের হলো? এর দলীল কি?
.
এই ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম দলীল হচ্ছে একটি হাদিস। আর কিছু ভালভাবে না জানলেও দেখা যায় এই হাদিসটি ‘পিছনে বসে থাকা দলটি’ খুব ভালোভাবে মনে রাখে, তা হচ্ছেঃ الإمام جنة يقاتل من ورائه “নিশ্চয়ই ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ, তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করা হয়।” [সহীহ মুসলিম]
.
মুরজিয়া শ্রেণী, ইরজাগ্রস্থ ব্যক্তিত্ব, দরবারী আলেম, অন্ধ মাদখালী কিংবা জিহাদবিরোধী অন্যান্য গোষ্ঠীর কাছে পিছনে বসে থাকার জন্য এই হাদিসের অপব্যবহার একটা অন্যতম হাতিয়ার। তাই এই হাদিসের ব্যাপারে একটু যাচাই-বাছাই করা জরুরী।
.
আমরা বলিঃ জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ। হাদিসটি উত্তম একটি হাদিস। এর শিক্ষাটা খুবই বাস্তবসম্মত। মুসলিমদের জন্য ইমাম বা খলিফা হচ্ছেন, তাদের জন্য ঢালস্বরুপ। খলিফার পিছনে থেকে, তার নির্দেশ ও পরিকল্পণায় জিহাদ হবে। তার কাছে উম্মাহ নিরাপত্তা পাবে। কোথাও কাফিররা আক্রমণ করলে অথবা কেউ নির্যাতিত হলে, খলিফা তাকে নিরাপত্তা দিবেন। কিন্তু আফসোস আমরা সেই রকম ইমামের অধীন এখন নেই। এর জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করা উচিত।
.
কিন্তু ভাই, এই হাদিস থেকে সলফে সালেহীনদের কেউ কি জিহাদের কোন শর্ত বের করেছেন যে, জিহাদের জন্য একজন খলিফা / ইমাম এর উপস্থিতি শর্ত? খলিফা না থাকলে, কাউকে আমীর নিযুক্ত করে জিহাদ করা যাবে না?
.
যদি সালাফরা এ রকম কোন শর্ত বের না করে থাকেন, তাহলে এই যুগে মহিলাদের সাথে পিছনে বসে থাকা কোন আলেম কি এ রকম নতুন একটি শর্ত জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর সাথে জুড়ে দিতে পারবে? না, অবশ্যই না।
.
আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা শুধু জিহাদ ও ক্বিতালের ব্যাপারে উল্লেখ হয়নি!! বরং নামাজের ইমামের ব্যাপারেও একই শব্দে ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা এসেছে। সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছেঃ
.
وفي صحيح مُسْلِم عَن أَبِي هُرَيْرَةَ، عَن النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنما الإمام جنة، فإذا صلى قاعداً فصلوا قعوداً، وإذا قَالَ: سَمِعَ الله لمن حمده ، فقولوا : اللهم ربنا لَكَ الحمد
অর্থাৎ, ‘ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ। যদি তিনি বসে নামাজ পড়েন, তবে তোমরাও বসে নামাজ পড়ো। যখন তিনি বলেন, ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’, তখন তোমরা বলোঃ ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’।
.
একইভাবে জাবির (রাঃ) থেকে ইমাম দারাকুতনী (রঃ) হাদিস বর্ণনা করেছেনঃ
.
إنما الإمام جنة فإذا صلى قائما فصلوا قياما وإن صلى جالسا فصلوا جلوسا -أخرجه الدارقطنى (1/423) .
অর্থাৎ, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ, যখন তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েন, তোমরাও দাঁড়িয়ে পড়ো। যখন তিনি বসে নামাজ পড়েন তখন তোমরা বসে নামাজ পড়ো’।
.
এখন জিহাদ বিমুখ ব্যক্তিরা কি এটা বলবে, যে এই হাদিসগুলোও খলিফার উপস্থিতির সাথে খাছ??
.
এখন কি দাঁড়িয়ে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
এখন কি বসে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
এখন কি নামাজে ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’ বলার জন্য কেউ খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
আজব তাদের যুক্তি! আজব তাদের দলীল! আজব তাদের ফিকহ!!
.
পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিরা নিশ্চয়ই এখন বলবে, ‘না, এই হাদিসে তো নামাজের ইমামের ব্যাপারে বলা হয়েছে’। আমরাও এটাই বলি। জ্বি, ঐ হাদিসেও জিহাদের ইমাম / নেতা / কমান্ডারের কথা বলা হয়েছে। ঐ হাদিসটিকে খলিফার সাথে খাছ করা হয় নি। এর দ্বারা মুজাহিদগণের আমীর কিংবা সারিয়ার আমীর ইত্যাদি উদ্দেশ্য করা হয়েছে যাদের আনুগত্যের ব্যাপারে একাধিক হাদিস এসেছে।
.
এ কারণেই, এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে হাজার (রঃ) ফাতহুল বা’রীতে উল্লেখ করেছেন,
.
وقوله إنما الإمام جنة بضم الجيم أي سترة لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ويكف أذى بعضهم عن بعض والمراد بالامام كل قائم بأمور الناس والله أعلم - فتح الباري - ابن حجر
অর্থাৎ, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ইমাম হচ্ছেন জামার মতো, কারণ তিনি শত্রুদেরকে মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বিরত রাখেন এবং এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে ক্ষতি করা থেকেও বিরত রাখেন। আর ইমাম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ মানুষের উপর দায়িত্বশীল প্রত্যেক ব্যক্তি, আল্লাহু আ’লাম’।
.
তাই, হাদিসের উল্লেখিত ‘ইমাম’ শব্দকে শুধু খলিফার সাথে খাস করাটা জিহাদ থেকে পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিদের একটি মারাত্বক ভুল!! এর দ্বারা তারা নিজেদেরকে প্রতারিত করতে পারবেন কিন্তু আল্লাহ্*র দ্বীনের সাথে এর কোন সম্পর্ক আল্লাহু আ’লাম।
.
নেই। তাই জিহাদের কথা বলা ফিতনা না, যখন আল্লাহ নিজেই তাঁর নবীকে ﷺ বলেছেন -অতএব তুমি আল্লাহর রাস্তায় ক্বিতাল কর। তুমি শুধু তোমার নিজের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মুমিনদেরকে উদ্বুদ্ধ কর। আশা করা যায় আল্লাহ অচিরেই কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করবেন। আর আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর এবং শাস্তিদানে কঠোরতর। [আন-নিসা, ৮৪]
.
বরং ফরয তরক করাটাই ফিতনা, দ্বীনের ফরয বিধান ছেড়ে বসে থাকা এবং এর পক্ষে অজুহাত তৈরি করাটাই ফিতনা, হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করাটাই ফিতনা, কাফির-মুশরিকদের পদাবনত হওয়াটাই ফিতনা, আল্লাহর আইনের বদলে মানবরচিত আইনের অধীনে বসবাস করাটাই ফিতনা, আল্লাহর বদলে আল্লাহর সৃষ্টিকে অধিক ভয় করাটাই ফিতনা, নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্য না করা এবং নিজের নিস্ক্রিয়তাকে জায়েজ করার চেষ্টাই ফিতনা, নিশ্চয় মুসলিমরা দুর্বল এবং কাফিররা মুসলিমদের উপর ক্ষমতাসীন হওয়াটাই ফিতনা - নিশ্চয় শিরক সবচেয়ে বড় ফিতনা, আর যে ব্যক্তি শিরকের সাথে আপোষ করে নেয়, যে ব্যক্তি তাহিদের ব্যাপারে ছাড় দেয় সেই সর্বাধিক ফিতনাগ্রস্থ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।
.
যার কাছে সাত আসমানের উপর থেকে ওহী নাযিল হত তিনি ﷺ বলেছেন –
.
.
সালামাহ বিন নুফাইল (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
তারা মিথ্যা বলছে! জিহাদ তো কেবল শুরু হয়েছে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর পথে জিহাদ করতেই থাকবে। বরং আল্লাহ মানুষের মধ্য থেকে কারো কারো হৃদয়কে বক্র করে দিবেন যাতে তারা তাদের বিরদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং এবং এই কিতাল থেকে তাদেরকে তিনি রিযক্ব দান করবেন যতক্ষণ না ক্বিয়ামাত কায়েম হয় এবং আল্লাহ্*র ওয়াদা এসে যায়। ঘোড়ার কপালে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত রহমত থাকবে (সুনান নাসায়ি, হাদিস নং ৩৫৬১ – সাহিহ)
.
জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানের একটি দল এই দ্বীনের সংরক্ষণের জন্য কিয়ামাত পর্যন্ত কিতাল (يُقَاتِلُ যুদ্ধ) করতে থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭১৭, ই.ফা. ৪৮০০)
https://www.facebook.com/PleaseGiveP...type=3&theater
.
#উত্তর - বর্তমান সময়ে অনেকেই ফরযে আইন জিহাদ তরক করা, পিছনে বসে এসি রুমে হাল্*কা করা, আলেমদের কিছু কিছু কথায় বিভ্রান্ত হয়ে যান। জিহাদবিমুখ পেছনে বসে থাকাদের সাথে বসে থাকা এসব আলিম, দা’ই, মুফতি, এবং সেলিব্রিটিদের ব্যভৃত যুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হল-
.
যেহেতু খলিফা নাই, তাই জিহাদ নাই। আর যেহেতু এখন জিহাদ নাই তাই জিহাদের নামে যা হচ্ছে তা ফিতনা। আর যেহেতু এটা ফিতনা তাই আমাদের এ থেকে দূরে থাকলেই শুধু হবে না। এর বিরোধিতাও করতে হবে। আর এই যুক্তির দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে তারা শুধু জিহাদবিমুখতায় থেমে থাকেন না, তারা জিহাদবিরোধিতায় পতিত হন। শুধু বসে থাকাদের সাথে বসে থাকায় তাদের গোমরাহি সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের কার্যক্রম ইসলামের শত্রুদের সহায়তা করার পর্যায়ে পৌছে যায়।
.
যদি জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ হুজুর, (দুঃখিত,‘হে শায়েখ’) জিহাদের জন্য খলিফা শর্ত- এটা কিভাবে বের হলো? এর দলীল কি?
.
এই ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম দলীল হচ্ছে একটি হাদিস। আর কিছু ভালভাবে না জানলেও দেখা যায় এই হাদিসটি ‘পিছনে বসে থাকা দলটি’ খুব ভালোভাবে মনে রাখে, তা হচ্ছেঃ الإمام جنة يقاتل من ورائه “নিশ্চয়ই ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ, তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করা হয়।” [সহীহ মুসলিম]
.
মুরজিয়া শ্রেণী, ইরজাগ্রস্থ ব্যক্তিত্ব, দরবারী আলেম, অন্ধ মাদখালী কিংবা জিহাদবিরোধী অন্যান্য গোষ্ঠীর কাছে পিছনে বসে থাকার জন্য এই হাদিসের অপব্যবহার একটা অন্যতম হাতিয়ার। তাই এই হাদিসের ব্যাপারে একটু যাচাই-বাছাই করা জরুরী।
.
আমরা বলিঃ জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ। হাদিসটি উত্তম একটি হাদিস। এর শিক্ষাটা খুবই বাস্তবসম্মত। মুসলিমদের জন্য ইমাম বা খলিফা হচ্ছেন, তাদের জন্য ঢালস্বরুপ। খলিফার পিছনে থেকে, তার নির্দেশ ও পরিকল্পণায় জিহাদ হবে। তার কাছে উম্মাহ নিরাপত্তা পাবে। কোথাও কাফিররা আক্রমণ করলে অথবা কেউ নির্যাতিত হলে, খলিফা তাকে নিরাপত্তা দিবেন। কিন্তু আফসোস আমরা সেই রকম ইমামের অধীন এখন নেই। এর জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করা উচিত।
.
কিন্তু ভাই, এই হাদিস থেকে সলফে সালেহীনদের কেউ কি জিহাদের কোন শর্ত বের করেছেন যে, জিহাদের জন্য একজন খলিফা / ইমাম এর উপস্থিতি শর্ত? খলিফা না থাকলে, কাউকে আমীর নিযুক্ত করে জিহাদ করা যাবে না?
.
যদি সালাফরা এ রকম কোন শর্ত বের না করে থাকেন, তাহলে এই যুগে মহিলাদের সাথে পিছনে বসে থাকা কোন আলেম কি এ রকম নতুন একটি শর্ত জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর সাথে জুড়ে দিতে পারবে? না, অবশ্যই না।
.
আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা শুধু জিহাদ ও ক্বিতালের ব্যাপারে উল্লেখ হয়নি!! বরং নামাজের ইমামের ব্যাপারেও একই শব্দে ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা এসেছে। সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছেঃ
.
وفي صحيح مُسْلِم عَن أَبِي هُرَيْرَةَ، عَن النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنما الإمام جنة، فإذا صلى قاعداً فصلوا قعوداً، وإذا قَالَ: سَمِعَ الله لمن حمده ، فقولوا : اللهم ربنا لَكَ الحمد
অর্থাৎ, ‘ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ। যদি তিনি বসে নামাজ পড়েন, তবে তোমরাও বসে নামাজ পড়ো। যখন তিনি বলেন, ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’, তখন তোমরা বলোঃ ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’।
.
একইভাবে জাবির (রাঃ) থেকে ইমাম দারাকুতনী (রঃ) হাদিস বর্ণনা করেছেনঃ
.
إنما الإمام جنة فإذا صلى قائما فصلوا قياما وإن صلى جالسا فصلوا جلوسا -أخرجه الدارقطنى (1/423) .
অর্থাৎ, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ, যখন তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েন, তোমরাও দাঁড়িয়ে পড়ো। যখন তিনি বসে নামাজ পড়েন তখন তোমরা বসে নামাজ পড়ো’।
.
এখন জিহাদ বিমুখ ব্যক্তিরা কি এটা বলবে, যে এই হাদিসগুলোও খলিফার উপস্থিতির সাথে খাছ??
.
এখন কি দাঁড়িয়ে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
এখন কি বসে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
এখন কি নামাজে ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’ বলার জন্য কেউ খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
.
আজব তাদের যুক্তি! আজব তাদের দলীল! আজব তাদের ফিকহ!!
.
পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিরা নিশ্চয়ই এখন বলবে, ‘না, এই হাদিসে তো নামাজের ইমামের ব্যাপারে বলা হয়েছে’। আমরাও এটাই বলি। জ্বি, ঐ হাদিসেও জিহাদের ইমাম / নেতা / কমান্ডারের কথা বলা হয়েছে। ঐ হাদিসটিকে খলিফার সাথে খাছ করা হয় নি। এর দ্বারা মুজাহিদগণের আমীর কিংবা সারিয়ার আমীর ইত্যাদি উদ্দেশ্য করা হয়েছে যাদের আনুগত্যের ব্যাপারে একাধিক হাদিস এসেছে।
.
এ কারণেই, এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে হাজার (রঃ) ফাতহুল বা’রীতে উল্লেখ করেছেন,
.
وقوله إنما الإمام جنة بضم الجيم أي سترة لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ويكف أذى بعضهم عن بعض والمراد بالامام كل قائم بأمور الناس والله أعلم - فتح الباري - ابن حجر
অর্থাৎ, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ইমাম হচ্ছেন জামার মতো, কারণ তিনি শত্রুদেরকে মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বিরত রাখেন এবং এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে ক্ষতি করা থেকেও বিরত রাখেন। আর ইমাম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ মানুষের উপর দায়িত্বশীল প্রত্যেক ব্যক্তি, আল্লাহু আ’লাম’।
.
তাই, হাদিসের উল্লেখিত ‘ইমাম’ শব্দকে শুধু খলিফার সাথে খাস করাটা জিহাদ থেকে পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিদের একটি মারাত্বক ভুল!! এর দ্বারা তারা নিজেদেরকে প্রতারিত করতে পারবেন কিন্তু আল্লাহ্*র দ্বীনের সাথে এর কোন সম্পর্ক আল্লাহু আ’লাম।
.
নেই। তাই জিহাদের কথা বলা ফিতনা না, যখন আল্লাহ নিজেই তাঁর নবীকে ﷺ বলেছেন -অতএব তুমি আল্লাহর রাস্তায় ক্বিতাল কর। তুমি শুধু তোমার নিজের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মুমিনদেরকে উদ্বুদ্ধ কর। আশা করা যায় আল্লাহ অচিরেই কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করবেন। আর আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর এবং শাস্তিদানে কঠোরতর। [আন-নিসা, ৮৪]
.
বরং ফরয তরক করাটাই ফিতনা, দ্বীনের ফরয বিধান ছেড়ে বসে থাকা এবং এর পক্ষে অজুহাত তৈরি করাটাই ফিতনা, হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করাটাই ফিতনা, কাফির-মুশরিকদের পদাবনত হওয়াটাই ফিতনা, আল্লাহর আইনের বদলে মানবরচিত আইনের অধীনে বসবাস করাটাই ফিতনা, আল্লাহর বদলে আল্লাহর সৃষ্টিকে অধিক ভয় করাটাই ফিতনা, নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্য না করা এবং নিজের নিস্ক্রিয়তাকে জায়েজ করার চেষ্টাই ফিতনা, নিশ্চয় মুসলিমরা দুর্বল এবং কাফিররা মুসলিমদের উপর ক্ষমতাসীন হওয়াটাই ফিতনা - নিশ্চয় শিরক সবচেয়ে বড় ফিতনা, আর যে ব্যক্তি শিরকের সাথে আপোষ করে নেয়, যে ব্যক্তি তাহিদের ব্যাপারে ছাড় দেয় সেই সর্বাধিক ফিতনাগ্রস্থ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।
.
যার কাছে সাত আসমানের উপর থেকে ওহী নাযিল হত তিনি ﷺ বলেছেন –
.
.
সালামাহ বিন নুফাইল (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
তারা মিথ্যা বলছে! জিহাদ তো কেবল শুরু হয়েছে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর পথে জিহাদ করতেই থাকবে। বরং আল্লাহ মানুষের মধ্য থেকে কারো কারো হৃদয়কে বক্র করে দিবেন যাতে তারা তাদের বিরদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং এবং এই কিতাল থেকে তাদেরকে তিনি রিযক্ব দান করবেন যতক্ষণ না ক্বিয়ামাত কায়েম হয় এবং আল্লাহ্*র ওয়াদা এসে যায়। ঘোড়ার কপালে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত রহমত থাকবে (সুনান নাসায়ি, হাদিস নং ৩৫৬১ – সাহিহ)
.
জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানের একটি দল এই দ্বীনের সংরক্ষণের জন্য কিয়ামাত পর্যন্ত কিতাল (يُقَاتِلُ যুদ্ধ) করতে থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭১৭, ই.ফা. ৪৮০০)
https://www.facebook.com/PleaseGiveP...type=3&theater
Comment