সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার জন্য।
আল্লাহ তায়ালা যখন নবী আলাইহিস সালাকে এই দ্বীন দিয়ে প্রেরন করেন যেটা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছে, তখন মানুষ ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত ছিল। তারা সমস্ত বিষয়ে অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত ছিল, যেটা তারা তাদের পূর্বসূরীদের থেকে পেয়েছিল। তাই তাদের বিশ্বাষ, ইবাদাত, বিচার ফায়সালা শিরীকে উপর ছিল। তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে মানুষ ও বিভিন্ন জিনিসকে শরীক সাব্যস্ত করত। তাদের বিচারালয় গুলো ছিল কুফুরের উৎস। তারা নিজেদের সমস্ত সমস্যার সমাধানে ত্বাগুতদেরকে অবিভাবক মানত। যখন তাদের থেকে ফায়সালা আসত তা কমানো বা পিছানো হত না। যদিও ইহা যুলুম ও অত্যাচার হয়। যেমন বর্তমানে প্রত্যেকটা দেশেই হচ্ছে।
আল্লাহ তায়ালা যখন আমাদের নবীকে এই শরীয়ত দিয়ে প্রেরন করেন তখন এই সমস্ত অভ্যাস, অনুসরণ ও ফায়সালাকে বাতিল করে দিলেন। এবং ইবাদাত ও বিচার ফায়সালাকে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য নির্দিষ্ট করে দিলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ
আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। (ইউসুফ ৪০)
প্রথম অংশ সমস্ত আইনকে আল্লাহ তায়ালার শরীয়তের মধ্যে ও দ্বিতীয় অংশে ইবাদাতকে আল্লাহর জন্য সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন।
আপনি কোরান খুললে এ ধরনের অনেক আয়াত দেখতে পাবেন:-
১) وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। ( মায়েদা ৪৪)। এই আয়াতটি স্পষ্ট দলীল যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসূলের হুকুম ব্যতিত অন্য দিকে যাবে সে কাফের।
অনেক জাহেলরা বলতে চায় যে এই আয়াতটি ইয়াহুদীদের উপর নাযেল হয়েছে, আমাদের জন্য নয়। সে মূলত সঠিক মূলনীতি জানেনা। আর তা হচ্ছে; হুকুম হয় শব্দের উপর ভিত্তি করে, বিশেষ ঘটনার উপর নয়। যদি বিশেষ কারণে হুকুম নাযেল হয় তাহলে শব্দ অনুযায়ী হয়, ঐ ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, যদি ইহার উপর অন্য কোন দলীল না থাকে।
২) فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا [٤:٦٥]
অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে। এই আয়াতটি দলীল যে ব্যক্তি শরীয়ত দ্বারা ফায়সালা করবে না তার ঈমান না থাকার। কেননা আল্লাহ তায়ালা তিনটা জিনিস পাওয়া পর্যন্ত ঈমান গ্রহনে অস্বীকার কারেছেন,
ক) আল্লাহ শরীয়তের কাছে বিচার চাওয়া,
খ) ইহা গ্রহনের পর অন্তরে বক্রতা থাকবে না বরং সন্তুষ্ঠ হবে,
গ) আল্লাহ সমস্ত বিধানের সামনে আত্বসমর্পণ করা।
কেউ যদি বলে এখানে হাক্বীকি ঈমান নয় বরং ঈমানের পূর্ণতা না হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাহলে ভূল হবে। কেননা রূপক অর্থ অন্য কোন দলীল ছাড়া নেয়া হয় না।
৩) أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি অবর্তীণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে তার উপর তারা ঈমান এনেছে, ইহা সত্ত্বেও তারা তাগূতের কাছে বিচার প্রার্থনার ইচ্ছা পোষণ করছে। অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল যাতে তারা তকে অস্বীকার করে। পক্ষান্তরে শয়তান ইচ্ছা করছে তাদেরকে পরিপূর্ণ পথভ্রষ্ট করে ফেলতে। [সূরাইনিসা, আয়াত:৬০]
যে ত্বাগুতের কাছে বিচার চায় তার কুফুরীর ব্যপারে এই আয়াতটি দলীল। কেননা যদি পরিপূর্ণ ঈমান না যেত তাহলে তাদের ঈমানকে আল্লাহ তায়ালা “ধারণা” দ্বারা ব্যক্ত করতেন না। ইহাই প্রমান যে তাদের বাস্তবেই ঈমান নেই। এই আয়াতের শানে নুযুলের মধ্যেও ইহারই প্রমান বহন করে। মুফাস্সীরগণ বর্ণনা করেছেন:
عن الشعبي قال: كان بين رجل من اليهود ورجل من المنافقين خصومة فدعا اليهودي المنافق إلى النبي لأنه علم أنه لا يقبل الرشوة، ودعا المنافق اليهودي إلى حكامهم لأنه علم أنهم يأخذونها فأنزل الله: أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ.....
শা’বী (রহঃ)বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, এক ইহুদী ও মুনাফিকের মাঝে দ্বন্দ্ব হলো। ইহুদী বললো, চলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট যাই। কেননা সে জানত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষ গ্রহণ করেন না। আর মুনাফিক ইহুদী বিচারকদের নিকট যেতে আহ্বান জানাল, কেননা সে জানত তারা ঘুষ গ্রহণ করে। তাই আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করলেন: আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে.......
অন্য হাদীসে এসেছে:
عن عروة بن زبير أنه قال: (اختصم إلى رسول الله عليه السلام رجلان فقضى لأحدهما. فقال الذى فضى عليه: "ردنا إلى عمر رض" فقال الرسول : "نعم انطلقوا إلى عمر" فانطلقا فلما أتيا عمر. قال الذى قضى له: يا ابن الخطاب! إن رسول الله قضى لى و إن هذا قال _ ردنا إلى عمر. فردنا رسول الله. فقال عمر: أكذلك؟ للذي فضى عليه فقال "نعم" فقال عمر: "مكانك حتى أخرج فأقضى بينكما" فخرج مشتملا على سيفه فضرب الذى قال (ردنا إلى عمر. فقتله)
উরওয়া ইবনে যুবায়ের বর্ণনা করেন: দুই জন ব্যক্তি নবী আলাইহিস সালামের কাছে বিচার চাইল, তখন তিনি একজনের পক্ষে ফায়সালা দিলেন। বিরোদ্ধে বিচারকৃত ব্যক্তি বলল: আমাদেকে উমরের কাছে পাঠান। আল্লাহর নবী বললেন: হ্যা, উমরের কাছে যাও। তারা উমরের কছে গেল। বিচার যার পক্ষে ছিল সে বলল: হে খাত্তাবের পুত্র! আল্লাহর রাসূল আমার পক্ষে ফায়সালা দিয়েছে। আর সে বলছে আমাদেরকে উমরের কছে পাঠান। অত:পর রাসূল আমাদেরকে পাঠিয়েছেন। উমর যার বিপক্ষে বিচার তাকে বললেন: এমনই? সে বলল: হ্যা। উমর বললেন: দাড়াও, আমি বের হয়ে তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। অত:পর তরবারী নিয়ে বের হলেন। এবং আঘাত করলেন যে বলেছে, আমদেরকে উমরের কাছে পাঠান। এবং তাকে হত্যা করে দিলেন।
উলামাদের ফাতওয়াঃ-
আল্লামা আলুসী (রহঃ) বলেন:
لا شك في كفر من يستحسن القانون ويفضله على الشرع, ويقول هو أوفق بالحكمة, وأصلح للأمة, ويتميزغيظاً ويتعصب غضبا إذا قيل له في أمرالشرع فيه كذا . كما شهدنا ذلك في بعض من خذلهم الله فأصمهم وأعمى أبصارهم. فلا ينبغي التوقف في تكفير من يستحسن ما هو بين المخالفة للشرع منها, ويقدمه على الأحكام الشرعية منتقصا للحق
সন্দেহাতীতভাবে ঐ ব্যক্তি কাফের, যে অন্য কোন বিধানকে ভালো মনে করে এবং তাকে শরীয়াতের উপর অগ্রাধিকার দেয়। আর বলে এটাই বাস্তবসম্মত ও উম্মাতের জন্য কল্যাণকর। যদি তাকে কোন বিষয়ে বলা হয়, এখানে তো শরীয়াতের বিধান এমনটি ছিল, সে রাগে ও ক্ষোভে ফেটে পড়ে। যেমনটি আমরা কতক ব্যক্তির মাঝে দেখতে পাচ্ছি; আল্লাহ যাদেরকে লাঞ্চিত করেছেন, তাদেরকে বধির বানিয়েছেন, তাদের চোখগুলোকে অন্ধ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি শরীয়াত বিরোধি কোন বিধানকে পছন্দ করে এবং শর’য়ী বিধানকে অসম্পূর্ণ ভেবে সেই বিধানকে শরীয়াতের উপর প্রাধান্য দেয় তাকে কাফের বলে ঘোষণা দেয়ার ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ করা অনুচিত। [তাফসীরু রূহুল মা‘আনী, খন্ড:২৮, পৃষ্ঠা:২০]
আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ) বলেন:
قال الإمام أبو يعقوب اسحاق بن إبراهيم الحنطلي المعروف "بابنراهوية" قدأجمع المسلمون أن من سب الله، أوسب رسوله – صلى الله عليه وسلم ই،أودقع شيئاً مما أنزل الله، أوقتل نبياً من أنبياء الله، أنه كافر، ذلك وإن كان مقراً بم اأنزل الله
ইমাম আবূ ইয়াকুব ইসহাক বিন ইব্রাহীম আল হানবলী (রহঃ) যিনি ‘ইবনে রাহওয়াইহ’ নামে পরিচিত তিনি বলেন: “সকল মুসলমানরা একমত পোষণ করেছে। যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালাকে গালি দিবে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মন্দ বলবে অথবা আল্লাহর অবতীর্ণ কোন বিধানকে প্রত্যাখ্যান করবে বা আল্লাহর কোন নবীকে হত্যা করবে নিশ্চয় সে কাফের। এই তার বিধান, যদিও বা সে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানাবলীকে স্বীকার করে।
এই সম্স্ত দলীল ও ফাতওয়াই যতেষ্ঠ হবে যে, এই শরীয়তের কোন একটা মাসআলাকে অন্য বিধান মানা কুফুরী। আর যে মানবে সে কাফের হয়ে যাবে।
সমস্ত দূরুদ ও সালাম নবী ও মুসলমানদের উপর।
আল্লাহ তায়ালা যখন নবী আলাইহিস সালাকে এই দ্বীন দিয়ে প্রেরন করেন যেটা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছে, তখন মানুষ ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত ছিল। তারা সমস্ত বিষয়ে অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত ছিল, যেটা তারা তাদের পূর্বসূরীদের থেকে পেয়েছিল। তাই তাদের বিশ্বাষ, ইবাদাত, বিচার ফায়সালা শিরীকে উপর ছিল। তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে মানুষ ও বিভিন্ন জিনিসকে শরীক সাব্যস্ত করত। তাদের বিচারালয় গুলো ছিল কুফুরের উৎস। তারা নিজেদের সমস্ত সমস্যার সমাধানে ত্বাগুতদেরকে অবিভাবক মানত। যখন তাদের থেকে ফায়সালা আসত তা কমানো বা পিছানো হত না। যদিও ইহা যুলুম ও অত্যাচার হয়। যেমন বর্তমানে প্রত্যেকটা দেশেই হচ্ছে।
আল্লাহ তায়ালা যখন আমাদের নবীকে এই শরীয়ত দিয়ে প্রেরন করেন তখন এই সমস্ত অভ্যাস, অনুসরণ ও ফায়সালাকে বাতিল করে দিলেন। এবং ইবাদাত ও বিচার ফায়সালাকে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য নির্দিষ্ট করে দিলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ
আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। (ইউসুফ ৪০)
প্রথম অংশ সমস্ত আইনকে আল্লাহ তায়ালার শরীয়তের মধ্যে ও দ্বিতীয় অংশে ইবাদাতকে আল্লাহর জন্য সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন।
আপনি কোরান খুললে এ ধরনের অনেক আয়াত দেখতে পাবেন:-
১) وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। ( মায়েদা ৪৪)। এই আয়াতটি স্পষ্ট দলীল যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসূলের হুকুম ব্যতিত অন্য দিকে যাবে সে কাফের।
অনেক জাহেলরা বলতে চায় যে এই আয়াতটি ইয়াহুদীদের উপর নাযেল হয়েছে, আমাদের জন্য নয়। সে মূলত সঠিক মূলনীতি জানেনা। আর তা হচ্ছে; হুকুম হয় শব্দের উপর ভিত্তি করে, বিশেষ ঘটনার উপর নয়। যদি বিশেষ কারণে হুকুম নাযেল হয় তাহলে শব্দ অনুযায়ী হয়, ঐ ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, যদি ইহার উপর অন্য কোন দলীল না থাকে।
২) فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا [٤:٦٥]
অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে। এই আয়াতটি দলীল যে ব্যক্তি শরীয়ত দ্বারা ফায়সালা করবে না তার ঈমান না থাকার। কেননা আল্লাহ তায়ালা তিনটা জিনিস পাওয়া পর্যন্ত ঈমান গ্রহনে অস্বীকার কারেছেন,
ক) আল্লাহ শরীয়তের কাছে বিচার চাওয়া,
খ) ইহা গ্রহনের পর অন্তরে বক্রতা থাকবে না বরং সন্তুষ্ঠ হবে,
গ) আল্লাহ সমস্ত বিধানের সামনে আত্বসমর্পণ করা।
কেউ যদি বলে এখানে হাক্বীকি ঈমান নয় বরং ঈমানের পূর্ণতা না হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাহলে ভূল হবে। কেননা রূপক অর্থ অন্য কোন দলীল ছাড়া নেয়া হয় না।
৩) أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি অবর্তীণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে তার উপর তারা ঈমান এনেছে, ইহা সত্ত্বেও তারা তাগূতের কাছে বিচার প্রার্থনার ইচ্ছা পোষণ করছে। অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল যাতে তারা তকে অস্বীকার করে। পক্ষান্তরে শয়তান ইচ্ছা করছে তাদেরকে পরিপূর্ণ পথভ্রষ্ট করে ফেলতে। [সূরাইনিসা, আয়াত:৬০]
যে ত্বাগুতের কাছে বিচার চায় তার কুফুরীর ব্যপারে এই আয়াতটি দলীল। কেননা যদি পরিপূর্ণ ঈমান না যেত তাহলে তাদের ঈমানকে আল্লাহ তায়ালা “ধারণা” দ্বারা ব্যক্ত করতেন না। ইহাই প্রমান যে তাদের বাস্তবেই ঈমান নেই। এই আয়াতের শানে নুযুলের মধ্যেও ইহারই প্রমান বহন করে। মুফাস্সীরগণ বর্ণনা করেছেন:
عن الشعبي قال: كان بين رجل من اليهود ورجل من المنافقين خصومة فدعا اليهودي المنافق إلى النبي لأنه علم أنه لا يقبل الرشوة، ودعا المنافق اليهودي إلى حكامهم لأنه علم أنهم يأخذونها فأنزل الله: أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ.....
শা’বী (রহঃ)বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, এক ইহুদী ও মুনাফিকের মাঝে দ্বন্দ্ব হলো। ইহুদী বললো, চলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট যাই। কেননা সে জানত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষ গ্রহণ করেন না। আর মুনাফিক ইহুদী বিচারকদের নিকট যেতে আহ্বান জানাল, কেননা সে জানত তারা ঘুষ গ্রহণ করে। তাই আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করলেন: আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে.......
অন্য হাদীসে এসেছে:
عن عروة بن زبير أنه قال: (اختصم إلى رسول الله عليه السلام رجلان فقضى لأحدهما. فقال الذى فضى عليه: "ردنا إلى عمر رض" فقال الرسول : "نعم انطلقوا إلى عمر" فانطلقا فلما أتيا عمر. قال الذى قضى له: يا ابن الخطاب! إن رسول الله قضى لى و إن هذا قال _ ردنا إلى عمر. فردنا رسول الله. فقال عمر: أكذلك؟ للذي فضى عليه فقال "نعم" فقال عمر: "مكانك حتى أخرج فأقضى بينكما" فخرج مشتملا على سيفه فضرب الذى قال (ردنا إلى عمر. فقتله)
উরওয়া ইবনে যুবায়ের বর্ণনা করেন: দুই জন ব্যক্তি নবী আলাইহিস সালামের কাছে বিচার চাইল, তখন তিনি একজনের পক্ষে ফায়সালা দিলেন। বিরোদ্ধে বিচারকৃত ব্যক্তি বলল: আমাদেকে উমরের কাছে পাঠান। আল্লাহর নবী বললেন: হ্যা, উমরের কাছে যাও। তারা উমরের কছে গেল। বিচার যার পক্ষে ছিল সে বলল: হে খাত্তাবের পুত্র! আল্লাহর রাসূল আমার পক্ষে ফায়সালা দিয়েছে। আর সে বলছে আমাদেরকে উমরের কছে পাঠান। অত:পর রাসূল আমাদেরকে পাঠিয়েছেন। উমর যার বিপক্ষে বিচার তাকে বললেন: এমনই? সে বলল: হ্যা। উমর বললেন: দাড়াও, আমি বের হয়ে তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। অত:পর তরবারী নিয়ে বের হলেন। এবং আঘাত করলেন যে বলেছে, আমদেরকে উমরের কাছে পাঠান। এবং তাকে হত্যা করে দিলেন।
উলামাদের ফাতওয়াঃ-
আল্লামা আলুসী (রহঃ) বলেন:
لا شك في كفر من يستحسن القانون ويفضله على الشرع, ويقول هو أوفق بالحكمة, وأصلح للأمة, ويتميزغيظاً ويتعصب غضبا إذا قيل له في أمرالشرع فيه كذا . كما شهدنا ذلك في بعض من خذلهم الله فأصمهم وأعمى أبصارهم. فلا ينبغي التوقف في تكفير من يستحسن ما هو بين المخالفة للشرع منها, ويقدمه على الأحكام الشرعية منتقصا للحق
সন্দেহাতীতভাবে ঐ ব্যক্তি কাফের, যে অন্য কোন বিধানকে ভালো মনে করে এবং তাকে শরীয়াতের উপর অগ্রাধিকার দেয়। আর বলে এটাই বাস্তবসম্মত ও উম্মাতের জন্য কল্যাণকর। যদি তাকে কোন বিষয়ে বলা হয়, এখানে তো শরীয়াতের বিধান এমনটি ছিল, সে রাগে ও ক্ষোভে ফেটে পড়ে। যেমনটি আমরা কতক ব্যক্তির মাঝে দেখতে পাচ্ছি; আল্লাহ যাদেরকে লাঞ্চিত করেছেন, তাদেরকে বধির বানিয়েছেন, তাদের চোখগুলোকে অন্ধ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি শরীয়াত বিরোধি কোন বিধানকে পছন্দ করে এবং শর’য়ী বিধানকে অসম্পূর্ণ ভেবে সেই বিধানকে শরীয়াতের উপর প্রাধান্য দেয় তাকে কাফের বলে ঘোষণা দেয়ার ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ করা অনুচিত। [তাফসীরু রূহুল মা‘আনী, খন্ড:২৮, পৃষ্ঠা:২০]
আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী (রহঃ) বলেন:
قال الإمام أبو يعقوب اسحاق بن إبراهيم الحنطلي المعروف "بابنراهوية" قدأجمع المسلمون أن من سب الله، أوسب رسوله – صلى الله عليه وسلم ই،أودقع شيئاً مما أنزل الله، أوقتل نبياً من أنبياء الله، أنه كافر، ذلك وإن كان مقراً بم اأنزل الله
ইমাম আবূ ইয়াকুব ইসহাক বিন ইব্রাহীম আল হানবলী (রহঃ) যিনি ‘ইবনে রাহওয়াইহ’ নামে পরিচিত তিনি বলেন: “সকল মুসলমানরা একমত পোষণ করেছে। যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালাকে গালি দিবে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মন্দ বলবে অথবা আল্লাহর অবতীর্ণ কোন বিধানকে প্রত্যাখ্যান করবে বা আল্লাহর কোন নবীকে হত্যা করবে নিশ্চয় সে কাফের। এই তার বিধান, যদিও বা সে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানাবলীকে স্বীকার করে।
এই সম্স্ত দলীল ও ফাতওয়াই যতেষ্ঠ হবে যে, এই শরীয়তের কোন একটা মাসআলাকে অন্য বিধান মানা কুফুরী। আর যে মানবে সে কাফের হয়ে যাবে।
সমস্ত দূরুদ ও সালাম নবী ও মুসলমানদের উপর।
Comment