আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, আরবরা সফরে গেলে একে অপরের খিদমত করত। আবুবকর ও ওমর (রাঃ)-এর সাথে একজন লোক ছিল যে তাদের খিদমত করত। তারা ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর জাগ্রত হলে লক্ষ করলেন যে, সে তাদের জন্য খাবার প্রস্ত্তত করেনি (বরং ঘুমিয়ে আছে)। ফলে একজন তার অপর সাথীকে বললেন, এতো তোমাদের নবী (ছাঃ)-এর ন্যায় ঘুমায়। অন্য বর্ণনায় আছে তোমাদের বাড়িতে ঘুমানোর ন্যায় ঘুমায় (অর্থাৎ অধিক ঘুমায় এমন ব্যক্তি)।
অতঃপর তারা তাকে জাগিয়ে বললেন, তুমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট গমন করে তাঁকে বল যে, আবুবকর ও ওমর (রাঃ) আপনাকে সালাম প্রদান করেছেন এবং আপনার নিকট তরকারী চেয়েছেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও, তাদেরকে আমার সালাম প্রদান করে বলবে যে, তারা তরকারী খেয়ে নিয়েছে। (একথা শুনে) তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট গমন করে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! আমরা আপনার নিকট তরকারী চাইতে ওকে পাঠালাম। অথচ আপনি তাকে বলেছেন যে তারা তরকারী খেয়েছে। আমরা কি তরকারী খেয়েছি? তিনি (ছাঃ) বললেন, তোমাদের ভাইয়ের গোস্ত দিয়ে। যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের উভয়ের দাঁতের মধ্যে তার গোস্ত দেখতে পাচ্ছি। তারা বললেন, আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি (ছাঃ) বললেন, না বরং সেই তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে’
আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে বললাম, ‘আপনার জন্য ছাফিয়ার এই এই হওয়া যথেষ্ট’। কোন কোন বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ছাফিয়া বেঁটে। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তুমি এমন কথা বললে, যদি তা সমুদ্রের পানিতে মিশানো হয়, তাহ’লে তার স্বাদ পরিবর্তন করে দেবে’।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট একটি লোকের পরিহাসমূলক ভঙ্গি করলাম। তিনি বললেন, ‘কোন ব্যক্তির পরিহাসমূলক ভঙ্গি নকল করি আর তার বিনিময়ে এত এত পরিমাণ ধনপ্রাপ্ত হই, এটা আমি আদৌ পসন্দ করি ন’ (আবুদাউদ হা/৪৮৭৭, সনদ ছহীহ)।
কায়স বলেন, আমর ইবনুল আছ (রাঃ) তার কতিপয় সঙ্গী-সাথীসহ ভ্রমণ করছিলেন। তিনি একটি মৃত খচ্চরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যা ফুলে উঠেছিল। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! কোন ব্যক্তি যদি পেট পুরেও এটা খায়, তবুও তা কোন মুসলমানের গোশত খাওয়ার চেয়ে উত্তম’ (আদাবুল মুফরাদ হা/৭৩৬, সনদ ছহীহ)।
(২) অন্যের সাথে মন্দ আচরণের প্রতিবিধান
রাবী‘আহ আল-আসলামী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর খিদমত করতাম। ফলে তিনি আমাকে ও আবুবকর (রাঃ)-কে এক খন্ড জমি দান করলেন। অতঃপর দুনিয়ার চাকচিক্য আসল। ফলে একটি খেজুরের কাঁদিকে কেন্দ্র করে আমরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়লাম। আবুবকর (রাঃ) বললেন, এটা আমার জমির সীমানার মধ্যে। আমি বললাম, না এটা আমার জমিতে। (এ বিষয়ে) আমার ও আবুবকর (রাঃ)-এর মধ্যে কথা কাটাকাটি হ’ল। আবুবকর (রাঃ) আমাকে এমন একটা কথা বললেন যেটা আমি অপসন্দ করলাম। এজন্য তিনি অনুতপ্ত হয়ে আমাকে বললেন, হে রাবী‘আহ! তুমি অনুরূপ কথা বলে প্রতিশোধ নিয়ে নাও, যাতে ওর কিছাছ হয়ে যায়। আমি বললাম, না আমি তা করব না। অতঃপর আবুবকর (রাঃ) বললেন, তুমি অবশ্যই বলবে নতুবা তোমার বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করব (অর্থাৎ নালিশ করব)। আমি বললাম, এটা করতে পারব না। রাবী বলেন, তিনি জমি প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানালে আবুবকর (রাঃ) আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট গমন করলেন।
আমিও তার পদাংক অনুসরণ করে চললাম। এরই মধ্যে আসলাম গোত্রের কিছু লোক এসে বলল, আল্লাহ আবুবকর (রাঃ)-এর উপর রহম করুন! কোন বিষয়ে তিনি তোমার বিরুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নালিস করছেন। অথচ তিনি যা ইচ্ছা তাই তোমাকে বলেছেন? আমি বললাম, তোমরা কি জান তিনি কে? ইনিই হচ্ছেন আবুবকর ছিদ্দীক, (দু’জনের ২য় জন)। তিনি মুসলমানদের মধ্যে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। সুতরাং তোমরা তার ব্যাপারে সতর্ক থাক। তিনি তাকালে দেখবেন যে, তোমরা আমাকে তার বিরুদ্ধে সাহায্য করছ। যার ফলে তিনি ক্রোধে ফেটে পড়বেন এবং রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে যাবেন। অতঃপর তাঁর ক্রোধের কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ক্রোধান্বিত হবেন। আর তাদের দু’জনের ক্রোধের কারণে আল্লাহ ক্রোধান্বিত হবেন। তখন রাবী‘আহ ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা বলল, তাহ’লে তুমি আমাদের কি করার নির্দেশ দিচ্ছ? তিনি বললেন, তোমরা ফিরে যাও।
আবুবকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলেন এবং আমি একাকী তার পশ্চাদ্বাবন। নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট পৌঁছে তিনি তাঁর নিকট সকল ঘটনা বর্ণনা করলেন। অতঃপর তিনি আমার দিকে মাথা উঁচু করে বললেন, ‘হে রাবী‘আহ! তোমার ও আবুবকর (রাঃ)-এর মধ্যে কি ঘটেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! ঘটনা ছিল এরূপ এরূপ। অতঃপর তিনি আমাকে এমন কথা বললেন, যা আমি অপসন্দ করি। ফলে তিনি আমাকে বললেন, আমি তোমাকে যেমন বলেছি তুমি আমাকে তেমন বল, যাতে সেটার প্রতিদান (কিছাছ) হয়ে যায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ তুমি তাঁর জবাব দিবে না। বরং বলবে, হে আবুবকর! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিন, হে আবুবকর! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিন। রাবী বলেন, (রাসূল (ছাঃ)-এর এ নির্দেশ শুনে) আবুবকর (রাঃ) ক্রন্দনরত অবস্থায় ফিরে গেলেন
সংগ্রহিত
অতঃপর তারা তাকে জাগিয়ে বললেন, তুমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট গমন করে তাঁকে বল যে, আবুবকর ও ওমর (রাঃ) আপনাকে সালাম প্রদান করেছেন এবং আপনার নিকট তরকারী চেয়েছেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও, তাদেরকে আমার সালাম প্রদান করে বলবে যে, তারা তরকারী খেয়ে নিয়েছে। (একথা শুনে) তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট গমন করে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! আমরা আপনার নিকট তরকারী চাইতে ওকে পাঠালাম। অথচ আপনি তাকে বলেছেন যে তারা তরকারী খেয়েছে। আমরা কি তরকারী খেয়েছি? তিনি (ছাঃ) বললেন, তোমাদের ভাইয়ের গোস্ত দিয়ে। যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের উভয়ের দাঁতের মধ্যে তার গোস্ত দেখতে পাচ্ছি। তারা বললেন, আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি (ছাঃ) বললেন, না বরং সেই তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে’
আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে বললাম, ‘আপনার জন্য ছাফিয়ার এই এই হওয়া যথেষ্ট’। কোন কোন বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ছাফিয়া বেঁটে। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তুমি এমন কথা বললে, যদি তা সমুদ্রের পানিতে মিশানো হয়, তাহ’লে তার স্বাদ পরিবর্তন করে দেবে’।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট একটি লোকের পরিহাসমূলক ভঙ্গি করলাম। তিনি বললেন, ‘কোন ব্যক্তির পরিহাসমূলক ভঙ্গি নকল করি আর তার বিনিময়ে এত এত পরিমাণ ধনপ্রাপ্ত হই, এটা আমি আদৌ পসন্দ করি ন’ (আবুদাউদ হা/৪৮৭৭, সনদ ছহীহ)।
কায়স বলেন, আমর ইবনুল আছ (রাঃ) তার কতিপয় সঙ্গী-সাথীসহ ভ্রমণ করছিলেন। তিনি একটি মৃত খচ্চরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যা ফুলে উঠেছিল। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! কোন ব্যক্তি যদি পেট পুরেও এটা খায়, তবুও তা কোন মুসলমানের গোশত খাওয়ার চেয়ে উত্তম’ (আদাবুল মুফরাদ হা/৭৩৬, সনদ ছহীহ)।
(২) অন্যের সাথে মন্দ আচরণের প্রতিবিধান
রাবী‘আহ আল-আসলামী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর খিদমত করতাম। ফলে তিনি আমাকে ও আবুবকর (রাঃ)-কে এক খন্ড জমি দান করলেন। অতঃপর দুনিয়ার চাকচিক্য আসল। ফলে একটি খেজুরের কাঁদিকে কেন্দ্র করে আমরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়লাম। আবুবকর (রাঃ) বললেন, এটা আমার জমির সীমানার মধ্যে। আমি বললাম, না এটা আমার জমিতে। (এ বিষয়ে) আমার ও আবুবকর (রাঃ)-এর মধ্যে কথা কাটাকাটি হ’ল। আবুবকর (রাঃ) আমাকে এমন একটা কথা বললেন যেটা আমি অপসন্দ করলাম। এজন্য তিনি অনুতপ্ত হয়ে আমাকে বললেন, হে রাবী‘আহ! তুমি অনুরূপ কথা বলে প্রতিশোধ নিয়ে নাও, যাতে ওর কিছাছ হয়ে যায়। আমি বললাম, না আমি তা করব না। অতঃপর আবুবকর (রাঃ) বললেন, তুমি অবশ্যই বলবে নতুবা তোমার বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করব (অর্থাৎ নালিশ করব)। আমি বললাম, এটা করতে পারব না। রাবী বলেন, তিনি জমি প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানালে আবুবকর (রাঃ) আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট গমন করলেন।
আমিও তার পদাংক অনুসরণ করে চললাম। এরই মধ্যে আসলাম গোত্রের কিছু লোক এসে বলল, আল্লাহ আবুবকর (রাঃ)-এর উপর রহম করুন! কোন বিষয়ে তিনি তোমার বিরুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নালিস করছেন। অথচ তিনি যা ইচ্ছা তাই তোমাকে বলেছেন? আমি বললাম, তোমরা কি জান তিনি কে? ইনিই হচ্ছেন আবুবকর ছিদ্দীক, (দু’জনের ২য় জন)। তিনি মুসলমানদের মধ্যে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। সুতরাং তোমরা তার ব্যাপারে সতর্ক থাক। তিনি তাকালে দেখবেন যে, তোমরা আমাকে তার বিরুদ্ধে সাহায্য করছ। যার ফলে তিনি ক্রোধে ফেটে পড়বেন এবং রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে যাবেন। অতঃপর তাঁর ক্রোধের কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ক্রোধান্বিত হবেন। আর তাদের দু’জনের ক্রোধের কারণে আল্লাহ ক্রোধান্বিত হবেন। তখন রাবী‘আহ ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা বলল, তাহ’লে তুমি আমাদের কি করার নির্দেশ দিচ্ছ? তিনি বললেন, তোমরা ফিরে যাও।
আবুবকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলেন এবং আমি একাকী তার পশ্চাদ্বাবন। নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট পৌঁছে তিনি তাঁর নিকট সকল ঘটনা বর্ণনা করলেন। অতঃপর তিনি আমার দিকে মাথা উঁচু করে বললেন, ‘হে রাবী‘আহ! তোমার ও আবুবকর (রাঃ)-এর মধ্যে কি ঘটেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! ঘটনা ছিল এরূপ এরূপ। অতঃপর তিনি আমাকে এমন কথা বললেন, যা আমি অপসন্দ করি। ফলে তিনি আমাকে বললেন, আমি তোমাকে যেমন বলেছি তুমি আমাকে তেমন বল, যাতে সেটার প্রতিদান (কিছাছ) হয়ে যায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ তুমি তাঁর জবাব দিবে না। বরং বলবে, হে আবুবকর! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিন, হে আবুবকর! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিন। রাবী বলেন, (রাসূল (ছাঃ)-এর এ নির্দেশ শুনে) আবুবকর (রাঃ) ক্রন্দনরত অবস্থায় ফিরে গেলেন
সংগ্রহিত
Comment