Announcement

Collapse
No announcement yet.

একজন মুসলিমের যা জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-২) - ঈমান, মুজমাল দ্বীনের ঈমান ও জারুরিয়্যাতে দ্ব&#

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • একজন মুসলিমের যা জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-২) - ঈমান, মুজমাল দ্বীনের ঈমান ও জারুরিয়্যাতে দ্ব&#

    একজন মুসলিমের যা জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-২)

    ঈমান, মুজমাল দ্বীনের ঈমান ও জারুরিয়্যাতে দ্বীন

    এখানে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
    ১/ ঈমান কাকে বলে।
    ২/ প্রত্যেকের জন্য (শরীয়তের বিধানাবলীর উপর) মুজমালান (সংক্ষিপ্ত ভাবে) ঈমান আনা ওয়াজিব।
    ৩/ জরুরিয়াতে দ্বীনের সংজ্ঞা।

    প্রথমত: ঈমান কাকে বলে?

    এখানে আমরা সংক্ষিপ্তভাবে জামে’ মানে’ একটি সংজ্ঞা উল্লেখ করবো যা উলামায়ে কেরামের নিকট গ্রহণযোগ্য এবং যে কোন ধরণের তাকরার বা দীর্ঘায়িত থেকে বেচে থাকবো।

    আল্লাহর উপরই আমাদের ভরসা এবং তিনিই উত্তম মাওলা ও অভিভাবক।

    ঈমানের শাব্দিক অর্থঃ

    هو التصديق مع القبول و الإذعان
    ঈমান বলা হয়, কোন জিনিসকে বিশ্বাস এবং কবুলের সাথে সত্যায়ন করা।

    আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
    وَمَا أَنتَ بِمُؤْمِنٍ لَّنَا وَلَوْ كُنَّا صَادِقِينَ
    তুমি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী হই।

    তবে ‘ঈমান’ শব্দটি যখন শরয়ী কোন শব্দ হিসাবে ব্যবহারিত হবে তখন শাব্দিক অর্থ যতেষ্ঠ হবে না। বরং তখন এর সংজ্ঞার জন্য শরয়ী নুসূসের (দলীল) এর দিকে ফিরতে হবে।

    ঈমান এর শরয়ী অর্থঃ
    ঈমান হচ্ছে; অন্তর দ্বারা সত্যায়ন করা, মুখে স্বীকার করা ও অঙ্গ-প্রতঙ্গের মাধ্যমে আমল করা।
    অর্থাৎ তুমি আল্লাহকে সত্যায়ন করবে এবং তার অস্তিত্ব, একত্ববাদ, রুবুবিয়্যাত ও আসমা-সিফাতের উপর বিশ্বাস রাখবে।

    আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহঃ বলেনঃ
    মৌলিক ঈমান:
    মৌখিক স্বিকৃতি এবং আমল এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।

    মৌখিক স্বিকৃতি দুই প্রকারঃ
    এক: কওলুল কালব বা অন্তর থেকে বলা। আর তা হলো ই’তেকাদ বা বিশ্বাস।
    দুই: কওলুল লিসান বা মুখে বলা। অর্থাৎ মুখে ইসলামের কালিমা উচ্চারণ করবে।

    আমলও দু্ই প্রকারঃ
    এক: আমালুল কালব বা অন্তরের আমল। আর তা হচ্ছে নিয়্যত এবং ইখলাস।
    দুই: আমলুল জাওয়ারেহ বা অঙ্গ-প্রতঙ্গের আমল। অর্থাৎ আল্লাহর প্রত্যকটা হুকুমের সামনে আত্যসমার্পণ করা।

    সুতরাং যখন এই চারটি বিষয় নস্ট হয়ে যাবে তখন পুরো ঈমানই ভেংগে যাবে। আর যখন অন্তর দ্বারা সত্যায়ন করা না হবে তখন বাকি কাজগুলো দ্বারা কোন ফায়দা হবে না।
    (কিতাবুস সালাত ওয়া হুকমু তারিকিহা-৩৫পৃ

    হাফেজ ইবনুল আব্দিল বার রহঃ বলেনঃ
    আহলে ফিক্বহ ও আহলে হাদীসগন একমত পোষণ করেছেন যে, ঈমান হচ্ছে মৌখিক স্বিকৃতি এবং আমাল। (আত তামহীদ ৯/২৩৮)

    ইমাম আজরী রহঃ বলেন:

    “কোন মুমিন ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তার মাঝে তিনটি গুন পাওয়া যাবে। অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা এবং মৌখিক ও আমলী ভাবে ঈমান আনা।”

    তিনি আরও বলেন:
    “জেনে রেখো! অন্তর দ্বারা বিশ্বাস করা যথেষ্ট হবে না যতক্ষণ না সে মৌখিক ভাবে ঈমান আনবে না। আর অন্তর দিয়ে বিশ্বাস এবং মৌখিকভাবে ঈমান আনা যতেষ্ঠ হবে না যতক্ষণ না সে অঙ্গ প্রতঙ্গের মাধ্যমে আমল না করে। যখন তার মাঝে এই তিনটা গুন পাওয়া যাবে তখন সে একজন মুমিন হিসাবে গন্য হবে। যার উপর কোরআন সুন্নাহ এবং উম্মতের উলামায়ে কেরামের ফতোয়া দালালত বা প্রমান বহন করে। (আশ শরীয়াতু লিল আজরী ২/৬১১)

    দ্বিতীয়ত: সংক্ষিপ্তভাবে সকলের উপর ঈমান আনা জরুরী।

    একথাতে কোন সন্দেহ নেই যে, প্রত্যেকের জন্য ফরজে আইন হলো, রসূল সাঃ যা কিছু নিয়ে এসেছেন তার প্রতি সংক্ষিপ্তভাবে ঈমান আনা। আর এতেও সন্দেহ নেই যে, আল্লাহর রসূল সাঃ যা কিছু নিয়ে এসেছেন তার প্রতি বিস্তারিতভাবে ঈমান আনা ফরজে কিফায়াহ। কারণ এটা আল্লাহর রসূল সাঃ যা কিছু নিয়ে এসেছেন তা পৌঁছে দেওয়ার অন্তর্ভূক্ত এবং তা কুরআন বুঝা, গবেষণা করা, কিতাবুল্লাহর ইলম এবং হিকমাহ, উপদেশগুলো সংরক্ষণ করা, কল্যাণকর বিষয়ের প্রতি ডাকা, আমর বিল মা’রুফ নাহি আনিল মুনকার, আল্লাহর পথে হেকমত ও উত্তম নসীহতের মাধ্যমে ডাকা, উত্তম পদ্ধতিতে মানুষের সাথে বহস করা ও এজাতীয় বিষয়গুলো যা আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের উপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন তার অন্তর্ভূক্ত।

    এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, যেই জিনিসটা সকলের উপর ফরজে আইন তা তাদের শক্তি, প্রয়োজন এবং জানা থাকা অনুযায়ী ভাগ হয়ে যেতে পারে। যেই বিষয়টা ফরজে আইন তার কতক বিষয় এমন আছে যা অক্ষম ব্যক্তির জন্য শুনা আবশ্যক নয় অথবা তার সুক্ষ্ণ বিষয়গুলো বুঝা কতক ব্যক্তির জন্য আবশ্যক নয়।

    অনেক সময় কোন ব্যক্তি বিস্তারিতভাবে শরয়ী নুসূস শুনেছে এবং বুঝেছে তার উপর সে কাজ আবশ্যক, কিন্তু তা ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব নয় যেই ব্যক্তি তা শুনেও নাই এবং বুঝেও নাই। সুতরাং একজন মুফতি এবং একজন মুহাদ্দিসের উপর যা করা জরুরী তা অন্য লোকদের উপর ওয়াজিব নয়। (শরহুল আক্বীদাতুত তাহাবীয়াহ- ১/৮)

    এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা উল্লেখ করা দরকার যা থেকে অনেক মানুষ গাফেল হয়ে আছে। তা হলো জরুরী ঈমানটা জানা ছাড়া অর্জন হয় না। তাই ইসলামের বিধানগুলো ইজমালান (সংক্ষিপ্তভাবে) সকল মুসলিম এবং মুসলিমাহর জন্য জানা ফরজে আইন।

    ইবনু আব্দিল বার রাহি: বলেন:
    “উলামায়ে কেরাম এই বিষয়টির উপর একমত হয়েছেন যে, (পূর্বে বলা হয়েছে, ইসলামের বিধানগুলো ইজমালান (সংক্ষিপ্তভাবে) সকল মুসলিম এবং মুসলিমার জন্য জানা ফরজে আইন) ইলমের অন্তর্ভুক্ত হবে প্রত্যেক ব্যক্তির ফরজ আমাল যা তার উপর নির্ধারিত হয়ে আছে এবং যেই জিনিসটা ফরজে কেফায়াহ যা যখন কয়েক ব্যক্তি আদায় করে নেয় তখন অন্যদের থেকে তা রহিত হয়ে যায় (তাও জানার অন্তর্ভূক্ত)।

    যেই সমস্ত বিষয় প্রত্যেকের উপর ফরজ তার কিছু আছে যা ভুলে থাকার সুযোগ নেই। যেমনঃ মৌখিক ভাবে স্বাক্ষ্যপ্রদান করা, অন্তর দিয়ে স্বীকার করা যে, আল্লাহ তায়ালা এক, তার কোন শরীক নেই, তার কোন সাদৃশ নেই, তিনি কারও থেকে জন্ম নেননি এবং কাউকে জন্ম দেননি, তার সমকক্ষও কেউ নেই, সকল জিনিসের সৃষ্টিকর্তা, সকল জিনিস তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে, যিনি চিরঞ্জীব এবং মৃত্যুদানকারী, যার কখনো মৃত্যু হবে না। এবং যে আকীদায় আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ একমত যে, তিনি তার গুনাবলী ও সিফাতসমূহে সর্বদা গুনান্বিত এবং তার প্রথমের কোন শুরু নেই এবং তার শেষের কোন পতন নেই। আর তিনি আরশে ইসতেওয়া গ্রহণ করেছেন।” (জামেউ বয়ানিল ইলম-১/১০)

    তৃতীয়ত: জরুরীয়াতে দ্বীনের সংজ্ঞা

    জরুরীয়াতে দ্বীন বলতে বুঝানো হয় দ্বীনের এমন একটি বিষয় যা কোন চিন্তা-ভাবনা, দলীল প্রমান ছাড়াই বুঝে আসে (যেমন টুপি বা আযান) এবং তা সর্ব সাধারণও জানে। এটা বদীহী বা স্পষ্ট (যা চিন্তা ছাড়াই বুঝে আসে) এর সমপর্যায়ে। (আত তা’রীফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ লি মুহাম্মদ আমীম আল ইহসান - পৃ:৩৫৮)

    জরুরীয়া্তে দ্বীনের উপরোক্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী যে সকল মাসআলার ক্ষেত্রে বলা হয় যে, তা জরুরীয়াতে দ্বীন: তা হলো শরীয়তের ঐ সকল বিধান যা জানা থাকা সকলের জন্য আবশ্যক। তাতে সাধারণ কিংবা আলেমের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। তালাকের সময়ও এই বিষয়টি ধর্তব্য। ইমাম শাফেয়ী রহঃ এটার নাম দিয়েছেনঃ (ইলমুল আম্মাহ) যা কারও জন্য ভুলে থাকার সুযোগ নেই। (আর রিসালা-৩৫৮পৃ

    জরুরীয়াতে দ্বীনের মূল কথা হলো, এমন বিধান যা মানুষের মাঝে প্রকাশিত হয়ে গেছে এবং ছড়িয়ে পড়েছে। (জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম লি হাফিজ ইবনে রজব-পৃ:৬৭)

    অস্পষ্ট মাসআলা যা সাধারণ মানুষের জানা থাকে না তা জরুরীয়াতে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

    আল্লাহ তায়ালা সবাইকে হিদায়াত দান করুন।

    পূর্ববর্তী আলোচনা
    একজন মুসলিমের জন্য যা কিছু জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-১) তাওহীদের হেফাজত



    (পরবর্তী পর্বে থাকবে- আরকানে ঈমান এর আলোচোনা)

  • #2
    জাঝাকাল্লাহ....!
    كتب عليكم القتال وهو كره لكم

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ

      Comment


      • #4
        যাজাকুমুল্লাহ খাইরান, আল্লাহ তায়ালা আপনাদের কাজে বারাকাহ দান করুন এবং সর্বোচ্চ কবুল করে নিন।
        ইং আপনারা ইখলাসের সাথে একমাত্র আল্লাহর জন্যে কাজটা চালিয়ে যান। এবং এই চিন্তা করবেন যে, এটা ফরজ হিসেবে আদায় করছে, তাই ফরজটা পূর্ন ভাভে আদায় হচ্ছে কিনা চাই চিন্তা করবেন। আর এরর দ্বারা কয়জন ফায়দা পাবে এটা আল্লাহর হাতে। তিনি যদি কবুল করেন তাহলে এমন ভাবে ব্যবহার করবেন যা আপনারা বুঝিতেও পারবেন না। তাই কোন দিকে না তাকিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ চালিয়ে যান ইংশাআল্লাহ।
        মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
        রোম- ৪৭

        Comment


        • #5
          আল্লাহ, আপনি ভাইদের আ'মালগুলোকে কবুল করুন।
          আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
          আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

          Comment


          • #6
            Shukriya !! Caliye jan inshaallah.

            Comment

            Working...
            X