একজন মুসলিমের জন্য যা জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-৪)
আল্লাহর প্রতি ঈমান
আল্লাহর প্রতি ঈমান
এখানে পাঁচটি অংশ থাকবেঃ
প্রথম অংশঃ আল্লাহর উপর ঈমান আনা জরুরী হওয়ার দলিল।
দ্বিতীয় অংশঃ আল্লাহর অস্তিত্বের উপর দলীল।
তৃতীয় অংশঃ আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের প্রতি ঈমান আনা।
চতুর্থ অংশঃ আল্লাহর উলূহিয়্যাতের প্রতি ঈমান আনা।
পঞ্চম অংশঃ আল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহের প্রতি ঈমান আনা।
প্রথম অংশঃ
আল্লাহর উপর ঈমান আনা জরুরী হওয়ার দলিল
আল্লাহর উপর ঈমান আনা জরুরী হওয়ার দলিল
আল্লাহ তায়ালা বলেন;
كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ
সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি।আল্লাহ তায়ালা বলেন;
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَىٰ رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنزَلَ مِن قَبْلُ ۚ وَمَن يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا [٤:١٣٦]
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর, যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামত দিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেনঃ ঈমান হলো; তুমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং তার ফেরেস্তাদের প্রতি ......। (মুসলিম ৩৬/১)
দ্বিতীয় অংশঃ
আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে
আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে
১/ আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি ঈমান আনা।
২/ আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের প্রতি ঈমান আনা।
৩/ আল্লাহর উলূহিয়্যাতের প্রতি ঈমান আনা।
৪/ আল্লাহর নাম এবং সিফাতসমূহর উপর ঈমান আনা।
আল্লাহর অস্তিত্বের উপর ঈমান আনার ব্যপারে দলীল ভিত্তিক আলোচনা
আল্লাহর অস্তিত্বের উপর নিন্মোক্ত জিনিসগুলো প্রমান বহন করে ।
১/ ফিতরত বা জন্মগত স্বভাব
২/ বিবেক-বুদ্ধি
৩/ শরীয়ত
৪/ অনুভূতি
১/ আল্লাহর অস্তিত্বের উপর জন্মগত ভাবেই বিশ্বাষের প্রমানঃ
কোন চিন্তা বা শিক্ষার মুখাপেক্ষী হওয়া ব্যতীতই প্রত্যেক মানুষকে তার স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনার স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে । আর এই স্বভাবজাত বিষয়টা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় শুধু সেই, যার অন্তরে এর থেকে বিমুখ হয়ে যাওয়ার কোন কারণ পাওয়া যায়। যেমন নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেনঃ “ প্রত্যেক সন্তানকেই ফিতরাতের উপর সৃষ্টি করা হয়। অতঃপর তার পিতা মাতা হয়তো তাকে ইহুদী বানায় না হয় খৃষ্টান বানায় অথবা অগ্নিপূজক বানায়।” (বুখারী ১/৪৫৬)
রাসূল সাঃ আরও বলেন,“ বান্দাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে হানিফ (সব মতবাদ থেকে মুক্ত, একমাত্র আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যকারী) হিসাবে। অতঃপর শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।” (মুসলিম ৪/২০৪৭)
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا
এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন।নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ফিতরাত বা মৌলিক স্বভাবের দিক থেকেই আল্লাহর অস্তিত্বের উপর দালালত করেঃ
• মানুষ যখন কঠিন কোন মসিবতে পড়ে তখন সে আল্লাহ যিনি বিপদগ্রস্তের ডাকে সাড়া দেন তাকেই তার আশ্রয় বানিয়ে নেয়। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَإِذَا غَشِيَهُم مَّوْجٌ كَالظُّلَلِ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ إِلَى الْبَرِّ فَمِنْهُم مُّقْتَصِدٌ ۚ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلَّا كُلُّ خَتَّارٍ كَفُورٍ [٣١:٣٢]
যখন তাদেরকে মেঘমালা সদৃশ তরংগ আচ্ছাদিত করে নেয়, তখন তারা খাঁটি মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে স্থলভাগের দিকে উদ্ধার করে আনেন, তখন তাদের কেউ কেউ সরল পথে চলে। কেবল মিথ্যাচারী, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেনঃ
وَإِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فِي الْبَحْرِ ضَلَّ مَن تَدْعُونَ إِلَّا إِيَّاهُ ۖ فَلَمَّا نَجَّاكُمْ إِلَى الْبَرِّ أَعْرَضْتُمْ ۚ وَكَانَ الْإِنسَانُ كَفُورًا [١٧:٦٧]
যখন সমুদ্রে তোমাদের উপর বিপদ আসে, তখন শুধু আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে তোমরা আহবান করে থাক তাদেরকে তোমরা বিস্মৃত হয়ে যাও। অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে স্থলে ভিড়িয়ে উদ্ধার করে নেন, তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।সুতরাং এই কারণেই আমরা দেখি যে,মানুষ তার স্রষ্টার প্রতি মুখাপেক্ষি থাকে এবং এর মাধ্যমেই সে তার অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করে। আপনি দেখবেন, যেই ব্যক্তি নাস্তিকতায় সবচেয়ে বেশি কঠোর সেও বিপদ-মুসিবতের সময় আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় চায়।যেমনটা আল্লাহ তায়ালা তার কালামে মাজীদ সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। ২/ আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বের উপর বুদ্ধির দলীলঃ
অতীত এবং বর্তমানের সকল মাখলুকের জন্য একজন স্রষ্টা থাকা আবশ্যক। কারণ কেউই নিজেকে নিজে সৃষ্টি করতে পারবেনা। আর এটাও সম্ভব নয় যে, সে এমনিতেই হয়ে যাবে।
মাখলুকাতের সুন্দর সুসৃঙ্খল একটা নিয়মে অস্তিত্বে আসা এবং ধারাবাহিক বংশ পরম্পরায় জন্ম গ্রহণ করা এবং মাধ্যম ও ফলাফলের মাঝে সুক্ষ্ণ মিল এই বিষয়টিকে অসম্ভব করে দেয় যে, মাখলুক এমনিতেই অস্তিত্বে এসে যাবে। কারণ কোন জিনিস যখন নিজে নিজেই এমনিতে হয়ে যায় তখন তার জন্য কোন পদ্ধতি নির্ধারিত থাকে না। কিন্তু এখানে তাদের নির্ধারিত নিয়মে বেঁচে থাকা এবং জীবন যাপন করা কীভাবে সম্ভব হবে?
সুতরাং যখন এই বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে গেল, কোন মাখলুক নিজেকে নিজে সৃষ্টি করতে পারে না এবং কোন মাখলুক এমনিতেই অস্তিত্বে এসে যায় না। সেই সাথে এটাও নির্ধারিত হয়ে গেল যে, তার একজন স্রষ্টা আছে। আর তিনি হচ্ছেন আল্লাহ যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
একবার এক গ্রাম্য ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হলো, তুমি তোমার রবকে কিভাবে চিনেছ?
সে উত্তর দিল: যখন উটের লেদ উটের উপর নির্দেশ করে, পদচিহ্ণ পথিকের নির্দেশ করে তাহলে কি নক্ষত্রধারণকারী আকাশ, বিভিন্ন ধরণের ভূখণ্ড, ঢেউ বিশিষ্ট সমুদ্র একজন সুক্ষ্ণদর্শী মহাজ্ঞানীর উপর নির্দেশ করবে না?
আল্লাহ তায়ালা এই আক্বলী (যৌক্তিক) দলীলগুলো কুরআনে কারীমে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেনঃ
أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ [٥٢:٣٥]
তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? অর্থাৎ তারা সৃষ্টিকর্তা ব্যতীত সৃষ্ট হয়নি এবং তারা নিজেও নিজেকে সৃষ্টি করেনি।সুতরাং এটা নির্দিষ্ট হয়ে গেছে যে, তাদের স্রষ্টা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা।
৩/ আল্লাহর অস্তিত্বের উপর শরীয়তের দলীলঃ
আসমানী সকল কিতাব আল্লাহর অস্তিত্বের স্বীকার করে। আসমানী সে সকল বিধান যেগুলো মাখলুকের কল্যাণের বিষয়গুলোকে সুদৃঢ়ভাবে বর্ণনা করেছে তাও এই কথা প্রমান করে যে, তা মহাজ্ঞানী প্রজ্ঞাবান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মাখলুকের কল্যানের জন্য নাযিল হয়েছে।
আর ভবিষ্যতের ব্যাপারে যে সকল খবরগুলো আসমানী কিতাবে নাযিল হয়েছে যার সত্যতা বাস্তবেও পাওয়া গেছে তাও একথার উপর দলীল যে, এগুলো মহাপরাক্রমশালী প্রভুর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যিনি তা সংঘটিত করতে সক্ষম।
৪/ আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বের উপর অনুভূতি শক্তির দলীলঃ
অনুভূতি শক্তি আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বের উপর দালালাত করে দুই দিক থেকেঃ
একঃ আমরা এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ্য করেছি, প্রার্থনাকারীদের প্রার্থনা কবুল হওয়া এবং বিপদগ্রস্তের সাহায্য পাওয়া আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বের উপর অকাট্য প্রমান।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَنُوحًا إِذْ نَادَىٰ مِن قَبْلُ فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ [٢١:٧٦]
এবং স্মরণ করুন নূহকে; যখন তিনি এর পূর্বে আহবান করেছিলেন। তখন আমি তাঁর দোয়া কবুল করেছিলাম, অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে মহা সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,
إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُرْدِفِينَ [٨:٩]
তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন যে, আমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে। তিনি আরও বলেন,
أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَاءَ الْأَرْضِ ۗ أَإِلَٰهٌ مَّعَ اللَّهِ ۚ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ [٢٧:٦٢]
বল তো কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পুর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই ধ্যান কর।হাদীসে আসছে যে, একবার এক গ্রাম্য ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর নিকট আসল। যখন আল্লাহর রসূল সাঃ খুতবা দিচ্ছিলেন, সে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! (বৃষ্টির অভাবে আমাদের সব কিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে) আমাদের সকল পথ বন্ধ ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন! যাতে তিনি আমাদেরকে বৃষ্টি দিয়ে সাহায্য করেন। রসূল সাঃ তাঁর দুই হাত উত্তোলন করলেন এবং বললেন,“হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিয়ে সাহা্য্য করুন! হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিয়ে সাহা্য্য করুন” হযরত আনাস রাঃ বলেন,“ আল্লাহর কসম! আমরা আকাশে কোন মেঘ বা তার গর্জন দেখিনি এবং আমাদের মাঝে ও সিলা’ পাহাড়ের মাঝে কোন ঘর বাড়িও ছিল। তিনি বলেন, হঠাৎ আমরা সিলা’ পাহাড়ের পিছন থেকে ঢালের ন্যায় মেঘ খন্ড দেখতে পেলাম। তা আসমানের মাঝ বরাবর চলে আসল এবং ছড়িয়ে পড়ল ও বৃষ্টি বর্ষণ করতে লাগল। তিনি বলেন, “আল্লাহর কসম,আমরা এক সপ্তাহ পর্যন্ত সূর্য দেখিনি। (মুসলিম ২/৬১২)দুইঃ নবীদের নিদর্শন সমূহ যেগুলোকে মু’জেযা বলা হয়। এগুলো মানুষ নিজ চোখে দেখেছে কিংবা শুনেছে তা নবীদেরকে প্রেরকের উপর সুস্পষ্টভাবে দালালাত করে। আর সেই প্রেরক হচ্ছেন মহান আল্লাহ। কারণ নবীদের এই মু’জেযাগুলো মানুষের ক্ষমতার বাহিরে। আল্লাহ তায়ালা এগুলোর মাধ্যমে রসূলদেরকে শক্তিশালী করেন এবং তাদেরকে সাহায্য করে থাকেন।
তার দৃষ্টান্তগুলো নিম্নরুপঃ
একঃ মূসা আঃ এর এর মু’জেযা।
মূসা আঃ কে যখন আল্লাহ তায়ালা তার লাঠি দ্বারা সাগরে আঘাত করতে আদেশ করেছেন। তাই তিনি আঘাত করলেন। ফলে সেখানে বারটি শুকনো রাস্তা হয়ে গেছে এবং তার দুই দিকের পানিগুলো পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে গেল।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
فَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنِ اضْرِب بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ ۖ فَانفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيمِ [٢٦:٦٣]
অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল। দুইঃ ঈসা আঃ এর নিদর্শন।
ঈসা আঃ মৃতকে জীবিত করতেন এবং তাদেরকে আল্লাহর আদেশে কবর থেকে বের করে আনতেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَرَسُولًا إِلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنِّي قَدْ جِئْتُكُم بِآيَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ ۖ أَنِّي أَخْلُقُ لَكُم مِّنَ الطِّينِ كَهَيْئَةِ الطَّيْرِ فَأَنفُخُ فِيهِ فَيَكُونُ طَيْرًا بِإِذْنِ اللَّهِ ۖ وَأُبْرِئُ الْأَكْمَهَ وَالْأَبْرَصَ وَأُحْيِي الْمَوْتَىٰ بِإِذْنِ اللَّهِ ۖ وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأْكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِي بُيُوتِكُمْ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٣:٤٩]
আর বণী ইসরাঈলদের জন্যে রসূল হিসেবে তাকে মনোনীত করবেন। তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে। আমি তোমাদের জন্য মাটির দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরী করে দেই। তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি, তখন তা উড়ন্ত পাখীতে পরিণত হয়ে যায় আল্লাহর হুকুমে। আর আমি সুস্থ করে তুলি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত কুষ্ঠ রোগীকে। আর আমি জীবিত করে দেই মৃতকে আল্লাহর হুকুমে। আর আমি তোমাদেরকে বলে দেই যা তোমরা খেয়ে আস এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস। এতে প্রকৃষ্ট নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। তিনঃ আমাদের নবী সাঃ এর নিদর্শন।
যখন কুরাইশরা আল্লাহর নবী সাঃ এর নিকট একটা নিদর্শন চাইল তখন আল্লাহর নবী সাঃ চাঁদের দিকে ইশারা করলেন। ফলে চাঁদ দ্বিখন্ড হয়ে গেল এবং মানুষও তা দেখল।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ [٥٤:١]
কেয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। وَإِن يَرَوْا آيَةً يُعْرِضُوا وَيَقُولُوا سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ [٥٤:٢]
তারা যদি কোন নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাগত জাদু। আল্লাহ তায়ালার এই সকল নিদর্শন তার অস্তিত্বের উপর দালীল বা প্রমান বহন করে।
Comment