মুসলিমের জন্য যা জানা থাকা আবশ্যক (পর্ব-৬ )
ফেরেস্তাদের উপর ঈমান
(১ম দরস )
ফেরেস্তাদের উপর ঈমান
(১ম দরস )
ঈমান বিল মালায়িকাহ বা ফেরেস্তাদের উপর ঈমান; এখানে তিনটি দরসে আলোচনা হবে।
প্রথম দরসঃ ফেরেস্তাদের পরিচয় এবং তাদের সৃষ্টির উপকরণ,তাদের গুনাবলী এবং ফেরেস্তাদের বিশেষ কিছু গুন।
দ্বিতীয় দরসঃ ফেরেস্তাদের প্রতি ঈমানের স্তর এবং ঈমান আনার পদ্ধতি।
তৃতীয় দরসঃ ফেরেস্তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ফিরিশতাদের পরিচয়
ফিরিশতারা হলো আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট মাখলুকাতের মধ্যে এক প্রকার মাখলুক। তাদের নূরের তৈরী সূক্ষ্ম দেহ আছে যা বিভিন্ন ধরণের ভাল সুরতে পরিবর্তণ হতে সক্ষম। তারা অনেক শক্তিধর মাখলুক এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক পারঙ্গম। তারা সংখ্যায় অনেক যার হিসাব আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে নিজের ইবাদাত এবং নিজের আদেশ-নিষেধ পালন করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং তারা আল্লাহর আদেশের অবাধ্যতা করেনা এবং যা তাদেরকে আদেশ দেওয়া হয় তাই করে।
ফিরিশতাদেরকে যে উপকরণ দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে
ফিরিশতাদেরকে যে উপকরণ দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে তার নাম “নূর”। হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রসুল সাঃ ইরশাদ করেন,“ ফিরিশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নূর দ্বারা এবং জ্বীনদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে কালো আগুনের শিখা দ্বারা। আর আদম আঃ কে সৃষ্টি করা হয়েছে ঐ জিনিস দ্বারা যা তোমাদের কাছে (কুরআনে) বর্ণনা করা হয়েছে।” (মুসলিম)
ফিরিশতাদের গুনাবলী
কুরআন এবং সুন্নাহতে তাদের গুনাবলী নিয়ে অনেক নুসূস রয়েছে। নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হলোঃ
ফিরিশতারা শক্তি ও কঠোরতার গুনে গুনান্বিতঃ
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ [٦٦:٦]
মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। আল্লাহ তায়ালা জিব্রাঈল আঃ এর গুন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ
عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ [٥٣:٥]
তাঁকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা,তিনি আরও বলেনঃ
ذِي قُوَّةٍ عِندَ ذِي الْعَرْشِ مَكِينٍ [٨١:٢٠]
যিনি শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাশালী,ফেরেস্তারা বিশাল দেহের *গুনে গুনান্বিতঃ
মুসলিম শরীফে হযরত আয়েশা রাঃ থেকে হাদীস বর্ণিত আছে যে, তিনি নবী সাঃকে আল্লাহ তায়ালার এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেনঃ
وَلَقَدْ رَآهُ بِالْأُفُقِ الْمُبِينِ [٨١:٢٣]
তিনি সেই ফেরেশতাকে প্রকাশ্য দিগন্তে দেখেছেন।তিনি বলেনঃ তিনি হলেন জিব্রাঈল আঃ। আমি তাকে মাত্র দুইবার আসল সুরতে দেখেছি। আমি তাকে আসমান থেকে নামতে দেখেছি তার বিশাল গঠনসহ যা আসমান এবং যমীনের মাঝে ছিল। (মুসলিম শরীফ )
ইমাম আহমাদ রহঃ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণনা করেনঃ তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল সাঃ জিব্রাঈলকে তার আসল আকৃতিতে দেখেছেন। তার ছয়শত ডানা ছিল। আর প্রত্যেকটি ডানা দিগন্তসমূহকে ঢেকে নিয়েছে। তার ডানা থেকে বিকরণ ছড়াচ্ছিল মণি-মুক্তা সহ বিভিন্ন রংয়ের সৌন্দর। যার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। (মুসনাদুল ইমাম আহমাদ)
আবূ দাউদ রাহঃ জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে হাদীস বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রসূল সাঃ বলেছেন « আমাকে অনুমতি দাও যে, আমি আরশ বহনকারী ফেরেস্তাদের একজনের কথা আলোচনা করবো। নিশ্চয় তার কানের লতি থেকে ঘাড় পর্যন্ত দূরত্ব হলো সাতশত বছর সফর পরিমান সময়। (সুনানে আবি দাঊদ)
গঠন ও শক্তির দিক থেকে ফেরেস্তাদের পার্থক্যঃ
ফেরেস্তারা সবাই সমান দরজার নয়। তাদের অনেক আছে যার ডানা দুইটি,কারো ডানা তিনটি এবং কারো ডানা চারটি। আর তাদের মাঝে কারও ছয়শত ডানাও আছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَّثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۚ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ [٣٥:١]
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।ফেরেস্তারা রূপ ও সৌন্দর্যে সর্বোত্তমঃ
আল্লাহ তায়ালা জীব্রাঈল আঃ এর ব্যাপারে বলেনঃ
عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ [٥٣:٥]
তাঁকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা। ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىٰ [٥٣:٦]
সহজাত শক্তিসম্পন্ন, সে নিজ আকৃতিতে প্রকাশ পেল।ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, ذُو مِرَّةٍ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দৃষ্টি নন্দিত।
আর ক্বাতাদাহ রহঃ মতে, লম্বা ও বিশাল গঠন এবং সুন্দর উদ্দেশ্য।
আল্লাহ তায়ালা ইউসুফ আঃ কে যখন নারীরা দেখেছিল ঐ সময়ের অবস্থা বলছেনঃ
فَلَمَّا رَأَيْنَهُ أَكْبَرْنَهُ وَقَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ وَقُلْنَ حَاشَ لِلَّهِ مَا هَٰذَا بَشَرًا إِنْ هَٰذَا إِلَّا مَلَكٌ كَرِيمٌ [١٢:٣١]
যখন তারা তাকে দেখল, হতভম্ব হয়ে গেল এবং আপন হাত কেটে ফেলল। তারা বললঃ কখনই নয় এ ব্যক্তি মানব নয়। এ তো কোন মহান ফেরেশতা। তারা ফিরিশতাদের কথা বলেছে, কারণ তখন তাদের মাঝে ফেরেস্তাদের সৌন্দের্যের কথা প্রসিদ্ধি ছিল।
আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের গুনের আলোচনা করতে গিয়ে তাদেরকে মহৎ এবং পবিত্র হিসাবে উল্লেখ করেছন। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
بِأَيْدِي سَفَرَةٍ [٨٠:١٥]
লিপিকারের হস্তে, كِرَامٍ بَرَرَةٍ [٨٠:١٦]
যারা মহৎ, পূত চরিত্র। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেনঃ
وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ [٨٢:١٠]
অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে।كِرَامًا كَاتِبِينَ [٨٢:١١]
সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ।ফেরেস্তাদের একটি গুন হচ্ছে লজ্জাশিলতাঃ
নবী করীম সাঃ হযরত উসমান রাঃ ব্যাপারে বলেছিলেনঃ « আমি কি ঐ ব্যক্তির ব্যাপারী লজ্জাবোধ করবো না যার ব্যাপারে ফেরেস্তারা লজ্জাবোধ করে।» (মুসলিম)
ফেরেস্তাদের একটি গুন হচ্ছে “ইলমঃ
আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদেরকে খেতাব করে বলেনঃ
قَالَ إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ [٢:٣٠]
তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।এখানে আল্লাহ তায়ালা প্রথমে ফেরেস্তাদের জন্য ইলম সাবেত করেছেন। আর নিজের জন্য এমন ইলম সাবেত করেছেন যা তারা জানেনা। আল্লাহ তায়ালা জীব্রাঈল আঃ সম্পর্কে বলেনঃ
عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ [٥٣:٥]
তাঁকে শিক্ষা দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা,ইমাম তবারী রাহঃ বলেনঃ « মোহাম্মাদ সাঃ এই কুরআন শিক্ষা দিয়েছে জিব্রাঈল আঃ।
এই হলো ফিরিশতাদের উন্নত চরিত্র এবং গুনাবলী যে গুলো তাদের উচ্চ মর্যাদার উপর ইঙ্গিত করে।
ফিরিশতাদের বৈশিষ্ট্যাবলীঃ
ফেরেস্তাদের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য এবং গুন আছে যেগুলো মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত করেছেন এবং জ্বীন ও মানুষ থেকে তাদেরকে আলাদা করেছেন। নিম্নে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলোঃ
ফেরেস্তাদের অবস্থান আসমানে। দুনিয়ায় তারা আগমন করে আল্লাহ তায়ালার বিধানকে সৃষ্টির মাঝে বাস্তবায়ন করার জন্য।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
يُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ بِالرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ أَنْ أَنذِرُوا أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاتَّقُونِ [١٦:٢]
তিনি স্বীয় নির্দেশে বান্দাদের মধ্যে যার কাছে ইচ্ছা, নির্দেশসহ ফেরেশতাদেরকে এই মর্মে নাযিল করেন যে, হুশিয়ার করে দাও, আমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। অতএব আমাকে ভয় কর। তিনি আরও বলেনঃ
وَتَرَى الْمَلَائِكَةَ حَافِّينَ مِنْ حَوْلِ الْعَرْشِ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ ۖ وَقُضِيَ بَيْنَهُم بِالْحَقِّ وَقِيلَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [٣٩:٧٥]
আপনি ফেরেশতাগণকে দেখবেন, তারা আরশের চার পাশ ঘিরে তাদের পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষনা করছে। তাদের সবার মাঝে ন্যায় বিচার করা হবে। বলা হবে, সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর। আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসূল সাঃ বলেন« একদল ফেরেস্তা রাতে তোমাদের অনুগামী হয় এবং একদল দিনে। তারা ফজর এবং আসর নামাযের সময় একত্রিত হয়। অতঃপর তোমাদের কাছে রাত কাটিয়ে যে ফেরেস্তারা তারা উপরে চলে যায়। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে প্রশ্ন করেন অথচ তিনিই ভালো জানেন। তোমরা আমার বান্দাদেরকে কোন অবস্থায় ছেড়ে এসেছ? তখন তারা বলেঃ আমরা তাদেরকে নামাযরত অবস্থায় ছেড়ে এসেছি এবং তাদের নিকট আগমন করেছি নামাযরত অবস্থায়।» (বুখারী) এব্যাপারে অনেক আয়াত এবং হাদীস বর্ণিত আছে।
ফেরেস্তাদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তারা নারীগুনে গুনান্বিত নয়ঃ
আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের ভ্রান্ত মতবাদকে খণ্ডন করে বলেনঃ
وَجَعَلُوا الْمَلَائِكَةَ الَّذِينَ هُمْ عِبَادُ الرَّحْمَٰنِ إِنَاثًا ۚ أَشَهِدُوا خَلْقَهُمْ ۚ سَتُكْتَبُ شَهَادَتُهُمْ وَيُسْأَلُونَ [٤٣:١٩]
তারা নারী স্থির করে ফেরেশতাগণকে, যারা আল্লাহর বান্দা। তারা কি তাদের সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করেছে? এখন তাদের দাবী লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنثَىٰ [٥٣:٢٧]
যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারাই ফেরেশতাকে নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে।তাদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তারা কোন ক্ষেত্রেই আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হয় না এবং তাদের থেকে গুনাহ সংগঠিত হয় না। বরং আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তার অনুসরণর এবং তার আদেশ বাস্তবায়নের স্বভাব দিয়েই সৃষ্টি করেছেন।
যেমন আল্লাহ তায়ালা তাদের গুন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ [٦٦:٦]
মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেনঃ
لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ [٢١:٢٧]
তারা আগে বেড়ে কথা বলতে পারে না এবং তারা তাঁর আদেশেই কাজ করে। তাদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো যে, তারা আল্লাহর ইবাদাত কখনো ক্লান্ত হয় না এবং দুঃখিতও হয় না।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَلَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَمَنْ عِندَهُ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِ وَلَا يَسْتَحْسِرُونَ [٢١:١٩]
নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে যারা আছে, তারা তাঁরই। আর যারা তাঁর সান্নিধ্যে আছে তারা তাঁর ইবাদতে অহংকার করে না এবং অলসতাও করে না। يُسَبِّحُونَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ لَا يَفْتُرُونَ [٢١:٢٠]
তারা রাত্রিদিন তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করে এবং ক্লান্ত হয় না। অন্য আয়াতে বলেনঃ
فَإِنِ اسْتَكْبَرُوا فَالَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ يُسَبِّحُونَ لَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُمْ لَا يَسْأَمُونَ [٤١:٣٨]
অতঃপর তারা যদি অহংকার করে, তবে যারা আপনার পালনকর্তার কাছে আছে, তারা দিবারাত্রি তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্ত হয় না। • এগুলো ফেরেস্তাদে কিছু বৈশিষ্ট্য যা আল্লাহ তায়ালা তাদের সাথেই খাস করে দিয়েছেন জ্বীন এবং মানুষ ব্যতীত।
• ফেরেস্তারা আলাদা এক ধরণের প্রাণী। যারা তাদের সৃষ্টির উপাদান এবং গঠনে মানুষ ও জ্বীন থেকে ভিন্ন। যেমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে কিছু গুন দিয়েছেন যার মাধ্যমে সে জ্বীন ও অন্যান্য প্রাণী থেকে পৃথক হয়। তেমনিভাবে ফেরেস্তাদেরকেও কিছু গুন দিয়েছেন যার মাধ্যমে তারা অন্যদের থেকে পৃথক হবে।
Comment