মুসলিমের জন্য যা জানা আবশ্যক-(পর্ব-৯)
কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনা
প্রথম অধ্যায়
কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনা
প্রথম অধ্যায়
এখানে চারটি অধ্যায়ে আলোচনা হবেঃ
প্রথম অধ্যায়ঃ
১/ “কুতুব” এর শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ।
২/ “কুতুব” এর উপর ঈমান আনার অর্থ।
৩/ “কুতুব” এর উপর ঈমান আনার হুকুম।
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ
১/ কিতাবসমূহ নাযিল করার রহস্য।
২/ কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার পদ্ধতি।
তৃতীয় অধ্যায়ঃ
কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার ফায়দা।
চতুর্থ অধ্যায়ঃ
কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে যা ভুলে থাকা যায় না।
প্রথম অধ্যায়ঃ
এখানে তিনটি বিষয়ঃ
১/ কুতুব এর শাব্দিক অর্থঃ
কুতুব এটা কিতাব এর বহুবচন। কিতাব এটা মাকতূব এর অর্থে ব্যবহৃত হয়।
“কাতবুন” মাদ্দা থেকে একত্র করা বা জমা করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। কাতেব কে কাতেব একারণে বলা হয় যে, সে বিভিন্ন হরফ একত্রিত করে এবং কিছু হরফকে অন্য কিছু হরফের সাথে মিলিত করে। ( লিসানুল আরব ১/৬৯৮)
২/ কুতুব এর পারিভাষিক অর্থঃ
আল্লাহ তায়ালার কালাম সমূহ থেকে একটি কালাম যাতে রয়েছে এমন হেদায়াত এবং নূর যা ওহী স্বরুপ আল্লাহ তায়ালা তার রসূলদের থেকে কারও উপর নাযিল করেন। যাতে তারা মানুষের নিকট তা পৌঁছিয়ে দেন। ( আল আক্বীদাতুল ইসলামিয়্যাহ ওয়া আসাসুহা )
৩/ কুতুব এর উপর ঈমান আনার অর্থঃ
এ ব্যাপারে দৃঢ় ঈমান আনা যে, আল্লাহ তায়ালার এমন কিছু কিতাব আছে যা তিনি নবী ও রাসূলগণের উপর নাযিল করেছেন। এগুলো বাস্তবেই আল্লাহ তায়ালার কালাম বা কথা। যা নূর এবং হেদায়াত সম্বলিত। আর যা কিছুই এই কিতাবগুলোতে উল্লেখ আছে তার সবকিছুই সত্য এবং হক্ব। আর কিতাবের সংখ্যা যা আল্লাহ তায়ালা নাযিল করেছেন তিনি ব্যতীত কেউ জানেন না। ( মাবাহিসুল আকীদাহ ফি সূরাতিয যুমার, নাসির বিন আলী আশ শাইখ ৪৪৯ পৃ
৪/ কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার অর্থঃ
কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনা ঈমানের রুকনসমূহ থেকে একটি রুকন। ইহা ব্যতীত মুসলিমের ঈমান সহীহ হবে না। আল্লাহ তায়ালা তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামকে সম্বোধন করে বলেনঃ
وَقُلْ آمَنتُ بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِن كِتَابٍ
বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামকে সম্বোধন করার অর্থ হচ্ছে যারাই তার রিসালাতের উপর ঈমান আনবে তারা সকলে এর লক্ষ্য হবে। তবে যে ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামকে দলীলের মাধ্যমে খাস করে দেওয়া হয়েছে সে ক্ষেত্রে সকলে এর লক্ষ্যে পরিণত হবে না। ব্যাপকভাবে উম্মতকে আদেশ করে আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَىٰ رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنزَلَ مِن قَبْلُ ۚ وَمَن يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا [٤:١٣٦]
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর, যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামতদিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে।
সুতরাং এটা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ্ থেকে আদেশ । এটাকে অস্বীকার করা কুফর ও ভ্রষ্টতা। যেমনটা আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে বুঝে আসে।
সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণ মিলে যা হযরত উমর বিন খাত্তাব রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামকে যখন ঈমান নিয়ে প্রশ্ন করা হলো তখন তিনি বলেনঃ « ঈমান হলো তুমি আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তার ফেরেস্তাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসূলগণের প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি এবং ভালো-মন্দ তাকদীরের প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করবে। ( বুখারী )
Comment