রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লাম বলেনঃ-
"নামাজ দ্বীনের মূল ভিত্তি।"
"কিয়ামতের ময়দানে বান্দার নিকট থেকে নামাজের হিসাবই সর্বপ্রথম নেওয়া হবে।"
তাই আমাদের নামাজের ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নবান হওয়া উচিত।
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তাঁর "আল ওয়াবিলুস চাইয়্যিব মিন কালিমুত তাইয়্যিব" কিতাবের ১ম খণ্ডের ৩৮ পৃষ্ঠায় বলেনঃ-
"যখন নামাজের সময় হয় তখন পাঁচ স্তরের নামাজী দেখা যায়ঃ
প্রথম শ্রেনী শাস্তিযোগ্যঃ-
প্রথম স্তরের নামাজিরা নিজেদের সাথে নিজেরাই যুলম বা অন্যায় আচরণ করে। এরা ভালোভাবে অযু করে না, সঠিক সময়ে নামাজ পড়ে না এবং এই ধরনের নামাজে নিশ্চিত হয় না যে নামাজের সব জরুরী অংশগুলোই সে পালন করছে।
দ্বিতীয় শ্রেনীর জন্য রয়েছে জবাবদিহিতাঃ-
দ্বিতীয় স্তরের নামাযী শুধু নামাজের বাহ্যিক প্রয়োজনীয় অংশগুলোই পালন করে, তারা সময়মত নামাজ পড়ে এবং ঠিকমত ওযু করে কিন্তু তারা নিজের নফস ও শয়তাবের সাথে জিহাদে পরাজিত হয় এবং নামাজের ভিতরে শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভিন্ন ছন্তা ভাবনায় একাকার হয়ে যায়। ওয়াসওয়াসা থেকে বাচার চেষ্টাও করে না।
তৃতীয় শ্রেনী সালাতে গুনাহ মাফ হবেঃ-
তৃতীয় শ্রেনীর নামাযী হলো তারা যারা নামাজের বাইরের নিয়মাবলী মেনে চলে, সময়মত নামাজ পড়ে, ঠিকমত ওযু করে,নিজের সাথে এবং শয়তানের ওয়াসওয়াসার বিরুদ্ধে জিহাদ করে, কিন্তু সে সব সময় তার শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত থাকে যখন শয়তান তাঁর নামাজ থেকে কিছু অংশ চুরি করে নিয়ে যায়। সে নামাজ এবং শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ একই সাথে চালিয়ে যায়।
চতুর্থ শ্রেনীর নামাজী পুরষ্কৃত হবেঃ-
চতুর্থ শ্রেনীর নামাজী হলো সে যে নামাজ পড়তে দাঁড়ায় এবং নামাজের সকল শর্তই পূরন করে, তার সম্পূর্ন হৃদয় নামাযেই কেন্দ্রীভূত থাকে, সে থাকে সদা সতর্ক যাতে কোন কিছু বাদ না যায়। তার চিন্তাই থাকে কিভাবে নামাযকে যথাযথ এবং পরিপূর্নভাবে সম্পূর্ন করা যায়। নামাযে আল্লাহর বন্দেগীত তার হৃদয় থাকে গভীর ভাবে নিমজ্জিত।
পঞ্চম শ্রেনীর নামাজে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য হাসিল হবেঃ-
পঞ্চম শ্রেনীর নামাযী হলো সে যে এগুলোর সবই করে এবং সে তার হৃদয়কে আল্লাহর কাছে সমর্পন করে দেয়, হৃদয় দিয়ে আল্লাহর দিকে তাকায় এবং তার সব চিন্তা ভাবনাকে আল্লাহতে কেন্দ্রীভুত করে, হৃদয় দিয়ে আল্লাহর প্রতি সে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাবোধ পরিপূর্ন হয়, মনে হয় সত্যি সে আল্লাহকে দেখছে। শয়তানের ওয়াসওয়াসা ধুলিস্যাত হয়ে যায়। এবং এই নামাযী এবং তার প্রভুর মধ্যকার সকল প্রতিবন্ধকতা তুলে নেওয়া হয়। তার নামাজের সাথে অন্য কোন ব্যাক্তির নামাজের পার্থক্য হলো বেহেশত এবং দোযখের পার্থক্য থেকেও বেশী। এই ব্যাক্তি যখন নামাজ পড়ে সে তার মালিকের চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে এবং তার প্রতি সে সন্তুষ্ট থাকে।
প্রথম শ্রেনী শাস্তিযোগ্য, দ্বিতীয় শ্রেনীর জন্য রয়েছে জবাবদিহিতা, তৃতীয় শ্রেনী নফস ও শয়তাবের বিরুদ্ধে জিহাদ বা সংগ্রাম করছে সুতরাং তারা পাপি বলে গণ্য হবে না, চতুর্থ শ্রেনী পুরষ্কার এবং পঞ্চম শ্রেনী মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের খুব কাছের মানুষ কারন সে হলো তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত যাদের কাছে নামাজ হলো আনন্দ এবং প্রশান্তির উৎস।"
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ এর উক্ত ৫ টি স্তর যদি আমরা মনে রাখি, তাহলে আমাদের নামাজকে পঞ্চম স্তরে উন্নীত করার জন্যে যথাযথ চেষ্টা মুজাহাদা করতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।
আপনি নিজেকে পরখ করে দেখুন, আপনি কোন স্তরের নামাজী ?! আর দেরী নয় হে ভাই, আজই আপনার নামাজের মানউন্নয়ন করুণ। পঞ্চম শ্রেনীর নামাজী হতে সচেষ্ট হৌন । আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাউফিক দিন। আমীন।
আরবী ইবারত টুকু নিচে দেওয়া হলোঃ-
والناس في الصلاة على مراتب خمسة
الأول : مرتبة الظالم لنفسه المفرط وهو الذي انتقص من وضوئها ومواقيتها وحدودها وأركانها .
الثاني : من يحافظ على مواقيتها وحدودها وأركانها الظاهرة ووضوئها لكن قد ضيع مجاهدة نفسه في الوسوسة فذهب مع الوساوس والأفكار .
الثالث : من حافظ على حدودها وأركانها وجاهد نفسه في دفع الوساوس والأفكار فهو مشغول بمجاهدة عدوه لئلا يسرق صلاته فهو في صلاة وجهاد .
الرابع : من إذا قام إلى الصلاة أكمل حقوقها وأركانها وحدودها واستغرق قلبه مراعاة حدودها وحقوقها لئلا يضيع شيئا منها بل همه كله مصروف إلى إقامتها كما ينبغي وإكمالها واتمامها قد استغرق قلب شأن الصلاة وعبودية ربه تبارك وتعالى فيها .
.........
الخامس : من إذا قام إلى الصلاة قام إليها كذلك ولكن مع هذا قد أخذ قلبه ووضعه بين يدي ربه عز و جل ناظرا بقبله إليه مراقبا له ممتلئا من محبته وعظمته كأنه يراه ويشاهده وقد اضمحلت تلك الوساوس والخطوات وارتفعت حجبها بينه وبين ربه فهذا بينه وبين غيره في الصلاة أفضل وأعظم مما بين السماء والأرض وهذا في صلاته مشغول بربه عز و جل قرير العين به .
فالقسم الأول معاقب والثاني محاسب والثالث مكفر عنه والرابع مثاب والخامس مقرب من ربه لأن له نصيبا ممن جعلت قرة عينه في الصلاة ، فمن قرت عينه بصلاته في الدنيا قرت عينه بقربه من ربه عز و جل في الآخرة وقرت عينه أيضا به في الدنيا ، ومن قرت عينه بالله قرت به كل عين ومن لم تقر عينه بالله تعالى تقطعت نفسه على الدنيا حسرات .
"নামাজ দ্বীনের মূল ভিত্তি।"
"কিয়ামতের ময়দানে বান্দার নিকট থেকে নামাজের হিসাবই সর্বপ্রথম নেওয়া হবে।"
তাই আমাদের নামাজের ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নবান হওয়া উচিত।
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তাঁর "আল ওয়াবিলুস চাইয়্যিব মিন কালিমুত তাইয়্যিব" কিতাবের ১ম খণ্ডের ৩৮ পৃষ্ঠায় বলেনঃ-
"যখন নামাজের সময় হয় তখন পাঁচ স্তরের নামাজী দেখা যায়ঃ
প্রথম শ্রেনী শাস্তিযোগ্যঃ-
প্রথম স্তরের নামাজিরা নিজেদের সাথে নিজেরাই যুলম বা অন্যায় আচরণ করে। এরা ভালোভাবে অযু করে না, সঠিক সময়ে নামাজ পড়ে না এবং এই ধরনের নামাজে নিশ্চিত হয় না যে নামাজের সব জরুরী অংশগুলোই সে পালন করছে।
দ্বিতীয় শ্রেনীর জন্য রয়েছে জবাবদিহিতাঃ-
দ্বিতীয় স্তরের নামাযী শুধু নামাজের বাহ্যিক প্রয়োজনীয় অংশগুলোই পালন করে, তারা সময়মত নামাজ পড়ে এবং ঠিকমত ওযু করে কিন্তু তারা নিজের নফস ও শয়তাবের সাথে জিহাদে পরাজিত হয় এবং নামাজের ভিতরে শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভিন্ন ছন্তা ভাবনায় একাকার হয়ে যায়। ওয়াসওয়াসা থেকে বাচার চেষ্টাও করে না।
তৃতীয় শ্রেনী সালাতে গুনাহ মাফ হবেঃ-
তৃতীয় শ্রেনীর নামাযী হলো তারা যারা নামাজের বাইরের নিয়মাবলী মেনে চলে, সময়মত নামাজ পড়ে, ঠিকমত ওযু করে,নিজের সাথে এবং শয়তানের ওয়াসওয়াসার বিরুদ্ধে জিহাদ করে, কিন্তু সে সব সময় তার শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত থাকে যখন শয়তান তাঁর নামাজ থেকে কিছু অংশ চুরি করে নিয়ে যায়। সে নামাজ এবং শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ একই সাথে চালিয়ে যায়।
চতুর্থ শ্রেনীর নামাজী পুরষ্কৃত হবেঃ-
চতুর্থ শ্রেনীর নামাজী হলো সে যে নামাজ পড়তে দাঁড়ায় এবং নামাজের সকল শর্তই পূরন করে, তার সম্পূর্ন হৃদয় নামাযেই কেন্দ্রীভূত থাকে, সে থাকে সদা সতর্ক যাতে কোন কিছু বাদ না যায়। তার চিন্তাই থাকে কিভাবে নামাযকে যথাযথ এবং পরিপূর্নভাবে সম্পূর্ন করা যায়। নামাযে আল্লাহর বন্দেগীত তার হৃদয় থাকে গভীর ভাবে নিমজ্জিত।
পঞ্চম শ্রেনীর নামাজে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য হাসিল হবেঃ-
পঞ্চম শ্রেনীর নামাযী হলো সে যে এগুলোর সবই করে এবং সে তার হৃদয়কে আল্লাহর কাছে সমর্পন করে দেয়, হৃদয় দিয়ে আল্লাহর দিকে তাকায় এবং তার সব চিন্তা ভাবনাকে আল্লাহতে কেন্দ্রীভুত করে, হৃদয় দিয়ে আল্লাহর প্রতি সে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাবোধ পরিপূর্ন হয়, মনে হয় সত্যি সে আল্লাহকে দেখছে। শয়তানের ওয়াসওয়াসা ধুলিস্যাত হয়ে যায়। এবং এই নামাযী এবং তার প্রভুর মধ্যকার সকল প্রতিবন্ধকতা তুলে নেওয়া হয়। তার নামাজের সাথে অন্য কোন ব্যাক্তির নামাজের পার্থক্য হলো বেহেশত এবং দোযখের পার্থক্য থেকেও বেশী। এই ব্যাক্তি যখন নামাজ পড়ে সে তার মালিকের চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে এবং তার প্রতি সে সন্তুষ্ট থাকে।
প্রথম শ্রেনী শাস্তিযোগ্য, দ্বিতীয় শ্রেনীর জন্য রয়েছে জবাবদিহিতা, তৃতীয় শ্রেনী নফস ও শয়তাবের বিরুদ্ধে জিহাদ বা সংগ্রাম করছে সুতরাং তারা পাপি বলে গণ্য হবে না, চতুর্থ শ্রেনী পুরষ্কার এবং পঞ্চম শ্রেনী মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের খুব কাছের মানুষ কারন সে হলো তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত যাদের কাছে নামাজ হলো আনন্দ এবং প্রশান্তির উৎস।"
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ এর উক্ত ৫ টি স্তর যদি আমরা মনে রাখি, তাহলে আমাদের নামাজকে পঞ্চম স্তরে উন্নীত করার জন্যে যথাযথ চেষ্টা মুজাহাদা করতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।
আপনি নিজেকে পরখ করে দেখুন, আপনি কোন স্তরের নামাজী ?! আর দেরী নয় হে ভাই, আজই আপনার নামাজের মানউন্নয়ন করুণ। পঞ্চম শ্রেনীর নামাজী হতে সচেষ্ট হৌন । আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাউফিক দিন। আমীন।
আরবী ইবারত টুকু নিচে দেওয়া হলোঃ-
والناس في الصلاة على مراتب خمسة
الأول : مرتبة الظالم لنفسه المفرط وهو الذي انتقص من وضوئها ومواقيتها وحدودها وأركانها .
الثاني : من يحافظ على مواقيتها وحدودها وأركانها الظاهرة ووضوئها لكن قد ضيع مجاهدة نفسه في الوسوسة فذهب مع الوساوس والأفكار .
الثالث : من حافظ على حدودها وأركانها وجاهد نفسه في دفع الوساوس والأفكار فهو مشغول بمجاهدة عدوه لئلا يسرق صلاته فهو في صلاة وجهاد .
الرابع : من إذا قام إلى الصلاة أكمل حقوقها وأركانها وحدودها واستغرق قلبه مراعاة حدودها وحقوقها لئلا يضيع شيئا منها بل همه كله مصروف إلى إقامتها كما ينبغي وإكمالها واتمامها قد استغرق قلب شأن الصلاة وعبودية ربه تبارك وتعالى فيها .
.........
الخامس : من إذا قام إلى الصلاة قام إليها كذلك ولكن مع هذا قد أخذ قلبه ووضعه بين يدي ربه عز و جل ناظرا بقبله إليه مراقبا له ممتلئا من محبته وعظمته كأنه يراه ويشاهده وقد اضمحلت تلك الوساوس والخطوات وارتفعت حجبها بينه وبين ربه فهذا بينه وبين غيره في الصلاة أفضل وأعظم مما بين السماء والأرض وهذا في صلاته مشغول بربه عز و جل قرير العين به .
فالقسم الأول معاقب والثاني محاسب والثالث مكفر عنه والرابع مثاب والخامس مقرب من ربه لأن له نصيبا ممن جعلت قرة عينه في الصلاة ، فمن قرت عينه بصلاته في الدنيا قرت عينه بقربه من ربه عز و جل في الآخرة وقرت عينه أيضا به في الدنيا ، ومن قرت عينه بالله قرت به كل عين ومن لم تقر عينه بالله تعالى تقطعت نفسه على الدنيا حسرات .
Comment