ইসলামী শাসনব্যবস্থা পরিচিতি
প্রথম আলোচনা
উসমানী খিলাফাহর পতনের পর বর্তমান দশকে আওয়াম ও খাওয়াস সকলের কাছে খিলাফাহ আবার পরিচিত লাভ করছে, গত কয়েক প্রজন্মের মুসলিম জাতি খিলাফাহ সম্পর্কে খিলাফাহর স্বরূপ সম্পর্কে অনেক কম জানে বা কিছু জানে না বলেই অনেকে বলে থাকেন, অবশ্য কোন কোন দীনী মাদারিসে টুকটাক আলোচনা হয় বটে, হিদায়ার দরসে যখন গোলাম-বাদীর আলোচনা আসে, তখন তো খিলাফাহ বা ইসলামী শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু আলোচনা হয়-ই, তবে আমভাবে যে হয় না, সেটা পাঠক মাত্রই অবগত!
ব্যাপকভাবে উম্মাহর কাণ্ডারিরা তাগুত শাসক ও শাসনব্যবস্থার প্রতি-ই সমর্থন বা এটাই চলবে এমন ভাব প্রদর্শন করছেন, এদেরকেই ইসলামী শাসক বা শাসনব্যবস্থার কায়েম মাকাম বা স্থলাভিষিক্ত করছেন-
তো যুগ ও আমাদের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খিলাফাহ সম্পর্কে কিছু আলোচনা না করলেই নয়!
এখানে আমি আমার আলোচনা একেবারেই সংক্ষিপ্ত করবো। আর যে আরো বিশদভাবে জানতে চায় সে যেন ফিকহের কিতাবসমূহ দেখে নেয়। বিশেষ করে ইসলামি রাজনিতি এবং ইসলামি ইতিহাসের কিতাবগুলো ভালোভাবে দেখে নেয়। আমি এখানে সংক্ষেপে শুধু মূলনীতিগুলো আলোচনা করব। বিস্তারিত নয়। আমি এখানে উল্লিখিত বিষয়ে পাঁচ ভাগে ভাগ করে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
১ম বিষয়ঃ খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ কি?
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ’র সংজ্ঞা করেছেন এভাবে-
كلُ بيعةٍ كانت بالمدينةِ فهي خلافةُ نبوةٍ
‘মদীনায় যে সকল বাইয়াত সংঘটিত হয়েছে তাই খিলাফাতুন নুবুয়্যাহ। অর্থাৎ নবুওয়াতের আদলে খিলাফাহ।’
দেখুন-
-ইবনু তাইমিয়াহ রহঃ কৃত ‘মিনহাজুস্* সুন্নাতিন নববিয়্যাহ ফি নাকজি কালামি শি’আতিল কাদারিয়্যাহ’- ৬/৯১
-ইবনু তাইমিয়াহ রহঃ কৃত ‘আলখিলাফাতু ওয়ালমুলুক’- ৩৫/২৬
ইমাম জারকাশি রহ. উক্ত সংজ্ঞার সাথে আরেকটু সংযুক্ত করে বলেন-
هو ظَاهِرُ مَذْهَبِ أَحْمَدَ، فإن عِنْدَهُ أَنَّ ما سَنَّهُ الْخُلَفَاءُ الرَّاشِدُونَ حُجَّةٌ يَجِبُ اتِّبَاعُهَا، وقال أَحْمَدُ: كُلُّ بَيْعَةٍ كانت بِالْمَدِينَةِ فَهِيَ خِلَافَةُ نُبُوَّةٍ، وَمَعْلُومٌ أَنَّ بَيْعَةَ الصِّدِّيقِ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَعَلِيٍّ كانت بِالْمَدِينَةِ وَبَعْدَ ذلك لم يُعْقَدْ بها بَيْعَةٌ
‘এটাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর মাজহাব। তার নিকট খুলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতই হল দলিল; এর উপর আমল করা ওয়াজিব। ইমাম আহমদ বলেন, ‘মদিনায় যে সকল বাইয়াত সংঘটিত হয়েছে তাই নববী ধারার খিলাফাহ। আর এটা জানা কথা যে, মদীনায় কেবল আবু বকর, ওমর, উসমান ও আলী রা. এর বাইয়াতই সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন বাইয়াত সংঘটিত হয়নি।’
দেখুন- ইমাম বদরুদ্দীন জারকাশি রহঃ কৃত ‘আলবাহরুল মুহিত ফি উসুলিল ফিকহ’- ৩/৫৩১)
সুতরাং খোলাফায়ে রাশেদীনের বাইয়াতের আলোকে যে খিলাফা গঠন হবে, তাই ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ। আর খোলাফায়ে রাশেদীনের বাইয়াতের আলোকে যে বাইয়াত গঠন হবে না তা খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ নয়। সেটা অন্য কিছু। এরপর সেটাকে যে নামে খুশি সে নামে ডাকতে পারবেন। চাইলে তাকে রাজতন্ত্র বলতে পারেন। জবরদখলের শাসনও বলতে পারেন। কিংবা সেটাকে বিশৃঙ্খলা ও স্বৈরতন্ত্র এবং আর অনেক কিছুই বলতে পারেন। কিন্তু সেটাকে ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ’ বলতে পারবেন না।
প্রথম আলোচনা
উসমানী খিলাফাহর পতনের পর বর্তমান দশকে আওয়াম ও খাওয়াস সকলের কাছে খিলাফাহ আবার পরিচিত লাভ করছে, গত কয়েক প্রজন্মের মুসলিম জাতি খিলাফাহ সম্পর্কে খিলাফাহর স্বরূপ সম্পর্কে অনেক কম জানে বা কিছু জানে না বলেই অনেকে বলে থাকেন, অবশ্য কোন কোন দীনী মাদারিসে টুকটাক আলোচনা হয় বটে, হিদায়ার দরসে যখন গোলাম-বাদীর আলোচনা আসে, তখন তো খিলাফাহ বা ইসলামী শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু আলোচনা হয়-ই, তবে আমভাবে যে হয় না, সেটা পাঠক মাত্রই অবগত!
ব্যাপকভাবে উম্মাহর কাণ্ডারিরা তাগুত শাসক ও শাসনব্যবস্থার প্রতি-ই সমর্থন বা এটাই চলবে এমন ভাব প্রদর্শন করছেন, এদেরকেই ইসলামী শাসক বা শাসনব্যবস্থার কায়েম মাকাম বা স্থলাভিষিক্ত করছেন-
তো যুগ ও আমাদের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খিলাফাহ সম্পর্কে কিছু আলোচনা না করলেই নয়!
এখানে আমি আমার আলোচনা একেবারেই সংক্ষিপ্ত করবো। আর যে আরো বিশদভাবে জানতে চায় সে যেন ফিকহের কিতাবসমূহ দেখে নেয়। বিশেষ করে ইসলামি রাজনিতি এবং ইসলামি ইতিহাসের কিতাবগুলো ভালোভাবে দেখে নেয়। আমি এখানে সংক্ষেপে শুধু মূলনীতিগুলো আলোচনা করব। বিস্তারিত নয়। আমি এখানে উল্লিখিত বিষয়ে পাঁচ ভাগে ভাগ করে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
১ম বিষয়ঃ খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ কি?
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ’র সংজ্ঞা করেছেন এভাবে-
كلُ بيعةٍ كانت بالمدينةِ فهي خلافةُ نبوةٍ
‘মদীনায় যে সকল বাইয়াত সংঘটিত হয়েছে তাই খিলাফাতুন নুবুয়্যাহ। অর্থাৎ নবুওয়াতের আদলে খিলাফাহ।’
দেখুন-
-ইবনু তাইমিয়াহ রহঃ কৃত ‘মিনহাজুস্* সুন্নাতিন নববিয়্যাহ ফি নাকজি কালামি শি’আতিল কাদারিয়্যাহ’- ৬/৯১
-ইবনু তাইমিয়াহ রহঃ কৃত ‘আলখিলাফাতু ওয়ালমুলুক’- ৩৫/২৬
ইমাম জারকাশি রহ. উক্ত সংজ্ঞার সাথে আরেকটু সংযুক্ত করে বলেন-
هو ظَاهِرُ مَذْهَبِ أَحْمَدَ، فإن عِنْدَهُ أَنَّ ما سَنَّهُ الْخُلَفَاءُ الرَّاشِدُونَ حُجَّةٌ يَجِبُ اتِّبَاعُهَا، وقال أَحْمَدُ: كُلُّ بَيْعَةٍ كانت بِالْمَدِينَةِ فَهِيَ خِلَافَةُ نُبُوَّةٍ، وَمَعْلُومٌ أَنَّ بَيْعَةَ الصِّدِّيقِ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَعَلِيٍّ كانت بِالْمَدِينَةِ وَبَعْدَ ذلك لم يُعْقَدْ بها بَيْعَةٌ
‘এটাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর মাজহাব। তার নিকট খুলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতই হল দলিল; এর উপর আমল করা ওয়াজিব। ইমাম আহমদ বলেন, ‘মদিনায় যে সকল বাইয়াত সংঘটিত হয়েছে তাই নববী ধারার খিলাফাহ। আর এটা জানা কথা যে, মদীনায় কেবল আবু বকর, ওমর, উসমান ও আলী রা. এর বাইয়াতই সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন বাইয়াত সংঘটিত হয়নি।’
দেখুন- ইমাম বদরুদ্দীন জারকাশি রহঃ কৃত ‘আলবাহরুল মুহিত ফি উসুলিল ফিকহ’- ৩/৫৩১)
সুতরাং খোলাফায়ে রাশেদীনের বাইয়াতের আলোকে যে খিলাফা গঠন হবে, তাই ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ। আর খোলাফায়ে রাশেদীনের বাইয়াতের আলোকে যে বাইয়াত গঠন হবে না তা খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ নয়। সেটা অন্য কিছু। এরপর সেটাকে যে নামে খুশি সে নামে ডাকতে পারবেন। চাইলে তাকে রাজতন্ত্র বলতে পারেন। জবরদখলের শাসনও বলতে পারেন। কিংবা সেটাকে বিশৃঙ্খলা ও স্বৈরতন্ত্র এবং আর অনেক কিছুই বলতে পারেন। কিন্তু সেটাকে ‘খিলাফাহ আ’লা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ’ বলতে পারবেন না।
Comment