Announcement

Collapse
No announcement yet.

অমুসলিমেরা যদি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায় তখন এর প্রত্যুত্তর দেওয়া যাবে কি?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অমুসলিমেরা যদি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায় তখন এর প্রত্যুত্তর দেওয়া যাবে কি?

    প্রশ্ন: অমুসলিমরা যখন আমাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলে, ‘শুভ নববর্ষ’, কিংবা বলে ‘শুভ কামনা’ তখন প্রত্যুত্তরে তাদেরকে ‘আপনাদের জন্যেও অনুরূপ’ বলা কি জায়েয হবে?

    আলহামদুলিল্লাহ।

    খ্রিস্টমাস (ইংরেজী নববর্ষ) কিংবা অন্য কোন বিধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কাফেরদেরকে শুভেচ্ছা জানানো জায়েয নয়। অনুরূপভাবে তারা যদি এসব উৎসব উপলক্ষে আমাদেরকে শুভেচ্ছা জানায় সেসব শুভেচ্ছার জবাব দেয়াও আমাদের জন্য জায়েয নয়। কেননা আমাদের ধর্মে এসব দিবসের বিধান নেই। তাদের শুভেচ্ছার প্রত্যুত্তর দেয়ার মধ্যে এসব উৎসবের প্রতি অনুমোদন ও স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। মুসলিমের কর্তব্য হচ্ছে নিজ ধর্ম নিয়ে গর্ববোধ করা, ধর্মীয় বিধান নিয়ে গৌরব করা, অন্যদেরকে দাওয়াত দেয়া ও আল্লাহর ধর্ম প্রচার করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকা।

    শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়: খ্রিস্টমাস উপলক্ষে কাফেরদেরকে শুভেচ্ছা জানানোর বিধান কী? তারা শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করলে আমরা কিভাবে এর জবাব দিব? এ উৎসব উপলক্ষে তারা যে অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে সেসব অনুষ্ঠানে যাওয়া কি জায়েয? কেউ যদি উল্লেখিত বিষয়গুলোর কোন একটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নয়; বরং ভদ্রতা দেখাতে গিয়ে কিংবা লজ্জাবোধ থেকে কিংবা জড়তা থেকে কিংবা এ ধরণের অন্য যে কোন কারণে করে ফেলে সে কি গুনাহগার হবে? এ উপলক্ষকে কেন্দ্র করে তাদের মত রূপ ধারণ করা জায়েয হবে কি?

    উত্তরে তিনি বলেন: খ্রিস্টমাস (বড়দিন) কিংবা অন্যকোন বিধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কাফেরদেরকে শুভেচ্ছা জানানো আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) তাঁর ‘আহকামু আহলিয যিম্মাহ’ নামক গ্রন্থে এ বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন: “কোন কুফরী আচারানুষ্ঠান উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যেমন- তাদের উৎসব ও উপবাস পালন উপলক্ষে বলা যে, ‘তোমাদের উৎসব শুভ হোক’ কিংবা ‘তোমার উৎসব উপভোগ্য হোক’ কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন কথা। যদি এ শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করা কুফরীর পর্যায়ে নাও পৌঁছে; তবে এটি হারামের অন্তর্ভুক্ত। এ শুভেচ্ছা ক্রুশকে সেজদা দেয়ার কারণে কাউকে অভিনন্দন জানানোর পর্যায়ভুক্ত। বরং আল্লাহর কাছে এটি আরও বেশি জঘন্য গুনাহ। এটি মদ্যপান, হত্যা ও যিনা ইত্যাদির মত অপরাধের জন্য কাউকে অভিনন্দন জানানোর চেয়ে মারাত্মক। যাদের কাছে ইসলামের যথাযথ মর্যাদা নেই তাদের অনেকে এ গুনাতে লিপ্ত হয়ে পড়ে; অথচ তারা এ গুনাহের কদর্যতা উপলব্ধি করে না। যে ব্যক্তি কোন গুনার কাজ কিংবা বিদআত কিংবা কুফরী কর্মের প্রেক্ষিতে কাউকে অভিনন্দন জানায় সে নিজেকে আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির সম্মুখীন করে।”[উদ্ধৃতি সমাপ্ত] কাফেরদের উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হারাম ও এত জঘন্য গুনাহ (যেমনটি ইবনুল কাইয়্যেম এর ভাষ্যে এসেছে) হওয়ার কারণ হলো- এ শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যে কুফরী আচারানুষ্ঠানের প্রতি স্বীকৃতি ও অন্য ব্যক্তির পালনকৃত কুফরী কর্মের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। যদিও ব্যক্তি নিজে এ কুফরী করতে রাজী না হয়। কিন্তু, কোন মুসলিমের জন্য কুফরী আচারানুষ্ঠানের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করা কিংবা এ উপলক্ষে অন্যকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা হারাম। কেননা আল্লাহ তাআলা কুফরীর প্রতি সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন: “যদি তোমরা কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ্* তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও; তবে (জেনে রাখ) তিনি তোমাদের জন্য সেটাই পছন্দ করেন।”[সূরা যুমার, আয়াত: ৭] আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩] অতএব, কুফরী উৎসব উপলক্ষে বিধর্মীদেরকে শুভেচ্ছা জানানো হারাম; চাই তারা সহকর্মী হোক কিংবা অন্য কোন লোক হোক।

    আর বিধর্মীরা যদি আমাদেরকে তাদের উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানায় আমরা এর উত্তর দিব না। কারণ সেটা আমাদের ঈদ-উৎসব নয়। আর যেহেতু এসব উৎসবের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট নন। আর যেহেতু আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত মানবজাতির কাছে ইসলাম ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন, যে ধর্মের মাধ্যমে পূর্বের সকল ধর্মকে রহিত করে দেয়া হয়েছে; হোক এসব উৎসব সংশ্লিষ্ট ধর্মে অনুমোদনহীন নব-সংযোজন কিংবা অনুমোদিত (সবই রহিত)। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।”[সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ৮৫]

    কোন মুসলমানের এমন উৎসবের দাওয়াত কবুল করা হারাম। কেননা এটি তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোর চেয়ে জঘন্য। কারণ এতে করে দাওয়াতকৃত কুফরী অনুষ্ঠানে তাদের সাথে অংশ গ্রহণ করা হয়।

    অনুরূপভাবে এ উপলক্ষকে কেন্দ্র করে কাফেরদের মত অনুষ্ঠান করা, উপহার বিনিময় করা, মিষ্টান্ন বিতরণ করা, খাবার-দাবার আদান-প্রদান করা, ছুটি ভোগ করা ইত্যাদি মুসলমানদের জন্য হারাম। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের-ই দলভুক্ত”। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া তাঁর লিখিত ‘ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম’ গ্রন্থে বলেন: “তাদের কোন উৎসব উপলক্ষে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করলে এ বাতিল কর্মের পক্ষে তারা মানসিক প্রশান্তি পায়। এর মাধ্যমে তারা নানাবিধ সুযোগ গ্রহণ করা ও দুর্বলদেরকে বেইজ্জত করার সম্ভাবনা তৈরী হয়।”[উদ্ধৃতি সমাপ্ত]

    যে ব্যক্তি এমন কোন কাজে লিপ্ত হয়েছে সে গুনাহ করেছে; সেটা যে কারণেই করুক না কেন: ভদ্রতার খাতিরে, কিংবা সম্প্রীতি থেকে কিংবা লজ্জা থেকে কিংবা অন্য যে কারণেই করুক না কেন। কারণ এটি আল্লাহর দ্বীনের ক্ষেত্রে আপোষকামিতা। এবং এটি বিধর্মীদের মনোবল শক্ত করা ও স্ব-ধর্ম নিয়ে তাদের গর্ববোধ তৈরী করার কারণের অন্তর্ভুক্ত।

    আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন মুসলমানদেরকে ধর্মীয়ভাবে শক্তিশালী করেন, ধর্মের ওপর অবিচল রাখেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে তাদেরকে বিজয়ী করেন। নিশ্চয় তিনি শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী।[মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িলিস শাইখ ইবনে উছাইমীন ৩/৪৪]

    আল্লাহই ভাল জানেন।


    [আর যদি শুধু মাত্র বড়দিন/ক্রিসমাস এ আপনার জন্যও অনুরুপ/হ্যাপি ক্রিসমাস এতটুকুও বলা হারাম হয়ে থাকে এমন কি যে জিনা-ব্যাভিচার করলো তাকে অভিবাদন জানানোর চেয়েও নিকৃষ্ট হয়, তাহলে যে নিজে ক্রিসমাস পালন করলো তার জন্য কি! আল্লাহ আমাদের সহিহ বুঝ দান করুন এবং আমলের তাউফিক নসিব করুন]


    সৌজন্যেঃ https://islamqa.info/bn/69811
    Last edited by s_forayeji; 12-27-2017, 11:06 AM.
    মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

  • #2
    জাযাকাল্লাহ! একটা জরুরী বিষয় তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে হয়তো অনেকেরই জানা-শুনা নেই, কিংবা দ্বিধা-দ্বন্ধে আছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কাফেরদের সর্বপ্রকার কুফর ও রুসম রেওয়াজ হতে মুক্ত রাখুন। আমীন!

    Comment

    Working...
    X