ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসপি মিজানের সম্পদের পাহাড়!
ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সার কারখানা, জমি, নামে-বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট, আলিশান বাড়িসহ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তার অঢেল সম্পদের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুটি মামলা করেছে দুদক। বুধবার দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মিজানুর রহমান ১৯৮৯ সালে সার্জেন্ট (এসআই) হিসেবে তৃতীয় শ্রেণীর পদে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেয়। পরে ১৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পুলিশে যোগ দিয়ে বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে কর্মরত আছে।
এই সময়ে সে নিজ নামে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৮ শতাংশ জমিতে ২ তলা বাড়ি ও ১ হাজার ২৯৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ কৃষিজমি, ঢাকার তেজকুনিপাড়ায় ১ হাজার ৭১৮ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের অর্ধেক অংশ, জুরাইনে একটি দোকান, ঢাকায় ১৫ শতাংশ জমি, রাজউকের উত্তরা তৃতীয় ফেজে ৩ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া দুটি মাইক্রোবাস, আসবাব, ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর), ইলেকট্রনিকস, মেয়ের নামে শেয়ার এবং হাতে ও নগদে প্রায় তিন কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ হস্তান্তর/রূপান্তর করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছে।
নিজের বাড়ি নির্মাণের সময় পুলিশের ৬০ জন সদস্যকে রাজমিস্ত্রির সহকারী বা জোগালির কাজ করানোর অভিযোগ ওঠে মিজানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ ছিল, সাভারের হেমায়েতপুরের আলীপুর ব্রিজ-সংলগ্ন ৮৪ শতাংশ জমির ওপর বাড়ি তৈরি ও ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের আলমাস টাওয়ারের পাশে আরও একটি বাড়ি নির্মাণে জোগালি ও শ্রমিক হিসেবে সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৫০ থেকে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে দিয়ে কাজ করায় মিজানুর রহমান।
এসপির নকল সার কারখানা : দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মিজান ফসল উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত টিএসপি বা ট্রিপল সুপার ফসফেট সার নকল করার চারটি বড় কারখানা পরিচালনা করে।
এর মধ্যে দুটি কারখানা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আর অন্য দুটির একটি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে এবং অন্যটি কেরানীগঞ্জে। ওই চারটি কারখানায় প্রতিদিন এক হাজার টন নকল টিএসপি সার উৎপাদন করা হয়, যার দাম প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর এসব সার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয় সরকারি টিএসপি সারের বস্তায় ভরে।
কিছু সার বিক্রি হয় ‘তিউনিসিয়া টিএসপি’ নামে। গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক তা আমলে নেয় এবং এ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে।
বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’ জানিয়েছে, এত অভিযোগের পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে মিজান ।
দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছরে সে কয়েকশ’ বিঘা স্থাবর সম্পত্তি কিনেছে। ব্যাংকে তার নগদ অর্থ রয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স নেয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বৈধ করে! এসব রেকর্ডে মিজানের স্ত্রী নীপা মিজানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান অনুসন্ধান কর্মকর্তা হামিদুল হাসান। কিন্তু কমিশনের উপর মহল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে অদৃশ্য ইশারায় অনুসন্ধান নথিভুক্তির সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আবদুস সোবহানের অনুসন্ধান চলার সময় নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকবার এসপি মিজানুর রহমানকে দুদকে আসতে দেখা যায় বলে জানিয়েছে ‘যুগান্তর’। এ সময় সে সাক্ষাৎ করে দুদকের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও অনুসন্ধান কর্মকর্তার সঙ্গে। আর এর ফলে পুনঃঅনুসন্ধান প্রতিবেদনেও তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়েরের পরিবর্তে নথিভুক্তির সুপারিশ আসে!!
সূত্র:বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’
ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সার কারখানা, জমি, নামে-বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট, আলিশান বাড়িসহ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তার অঢেল সম্পদের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুটি মামলা করেছে দুদক। বুধবার দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মিজানুর রহমান ১৯৮৯ সালে সার্জেন্ট (এসআই) হিসেবে তৃতীয় শ্রেণীর পদে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেয়। পরে ১৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পুলিশে যোগ দিয়ে বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে কর্মরত আছে।
এই সময়ে সে নিজ নামে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৮ শতাংশ জমিতে ২ তলা বাড়ি ও ১ হাজার ২৯৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ কৃষিজমি, ঢাকার তেজকুনিপাড়ায় ১ হাজার ৭১৮ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের অর্ধেক অংশ, জুরাইনে একটি দোকান, ঢাকায় ১৫ শতাংশ জমি, রাজউকের উত্তরা তৃতীয় ফেজে ৩ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া দুটি মাইক্রোবাস, আসবাব, ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর), ইলেকট্রনিকস, মেয়ের নামে শেয়ার এবং হাতে ও নগদে প্রায় তিন কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, সে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ হস্তান্তর/রূপান্তর করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছে।
নিজের বাড়ি নির্মাণের সময় পুলিশের ৬০ জন সদস্যকে রাজমিস্ত্রির সহকারী বা জোগালির কাজ করানোর অভিযোগ ওঠে মিজানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ ছিল, সাভারের হেমায়েতপুরের আলীপুর ব্রিজ-সংলগ্ন ৮৪ শতাংশ জমির ওপর বাড়ি তৈরি ও ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের আলমাস টাওয়ারের পাশে আরও একটি বাড়ি নির্মাণে জোগালি ও শ্রমিক হিসেবে সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৫০ থেকে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে দিয়ে কাজ করায় মিজানুর রহমান।
এসপির নকল সার কারখানা : দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মিজান ফসল উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত টিএসপি বা ট্রিপল সুপার ফসফেট সার নকল করার চারটি বড় কারখানা পরিচালনা করে।
এর মধ্যে দুটি কারখানা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আর অন্য দুটির একটি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে এবং অন্যটি কেরানীগঞ্জে। ওই চারটি কারখানায় প্রতিদিন এক হাজার টন নকল টিএসপি সার উৎপাদন করা হয়, যার দাম প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর এসব সার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয় সরকারি টিএসপি সারের বস্তায় ভরে।
কিছু সার বিক্রি হয় ‘তিউনিসিয়া টিএসপি’ নামে। গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক তা আমলে নেয় এবং এ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে।
বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’ জানিয়েছে, এত অভিযোগের পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে মিজান ।
দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছরে সে কয়েকশ’ বিঘা স্থাবর সম্পত্তি কিনেছে। ব্যাংকে তার নগদ অর্থ রয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। তার স্ত্রীর নামে লাইসেন্স নেয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বৈধ করে! এসব রেকর্ডে মিজানের স্ত্রী নীপা মিজানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান অনুসন্ধান কর্মকর্তা হামিদুল হাসান। কিন্তু কমিশনের উপর মহল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে অদৃশ্য ইশারায় অনুসন্ধান নথিভুক্তির সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আবদুস সোবহানের অনুসন্ধান চলার সময় নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকবার এসপি মিজানুর রহমানকে দুদকে আসতে দেখা যায় বলে জানিয়েছে ‘যুগান্তর’। এ সময় সে সাক্ষাৎ করে দুদকের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও অনুসন্ধান কর্মকর্তার সঙ্গে। আর এর ফলে পুনঃঅনুসন্ধান প্রতিবেদনেও তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়েরের পরিবর্তে নথিভুক্তির সুপারিশ আসে!!
সূত্র:বার্তাসংস্থা ‘যুগান্তর’
Comment