কাশ্মীরে বিধবার ঘর ভাঙচুর করে ১৪ বছরের ছেলেকে গ্রেফতার
কাশ্মীরে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সেনাবাহিনী বহু বছর ধরে সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক অত্যাচার করছে। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, যাকে ইচ্ছা তাকে সন্ত্রাসী বলে গুলি করে হত্যা করছে, বাচ্চাদের নির্যাতন করছে এবং মাঝে মাঝে জনসমাবেশ গুলোতেও উন্মুক্ত গুলি বর্ষণ করছে।
সংবাদ মাধ্যম গ্রেটার কাশ্মীর থেকে এমনি এক বিধবার করুন অবস্থার কথা জানা যায়।
গত ৭ জানুয়ারি ২০১৯ কাশ্মীরের পত্রিকাটি এমন রিপোর্ট করে যে, মাহমুদা নামক এক মুসলিম বোনের বাড়িঘরে ভারত দখলদারবাহিনী হামলা চালিয়ে বিধ্বস্ত করে তার ১৪ বছরের ছেলেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
মুসলিম এই বোন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “প্রথমে তারা আমার বাসা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে পরে তারা আমার সন্তান ফয়সাল কে বন্দি করে নিয়ে যায়, তারা কেন আমার ছেলে কে নিয়ে গেল, আমাদের কি দোষ?”
মেহবুবা তার ছেলেকে ছাড়াতে ত্রাল পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তার ১৪ বছরের ছোট ছেলেকে ছাড়তে মানা করে দিয়েছে। মা কাঁদতে কাঁদতে ফিরলে সকলে তাকে সান্ত্বনা দেয়। হাজার হাজার লোক তার ভাঙা বাড়ির সামনে এসে তার জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা সবাই তাকে এই বলে সান্ত্বনা দেয় যে “আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছে আমাদের”। কারণ মেহবুবা শুধু একা নয়, কাশ্মিরবাসী সকল মুসলিমই ভারতের নির্যাতনের শিকার।
রাতের কথা মনে করে করে উনি বলছিলেন, “শীতের কুয়াশা ঢাকা শনিবার সকালে(গত ৫ জানুয়ারি) এক মুখোশধারী উগ্রসৈনিক আমার বাসায় প্রবেশ করে এবং কোন মুক্তিবাহিনীর লোকদের উপস্থিতি আছে কী জিজ্ঞাসা করে। আমি তাদের বলি এখানে কেউ নেই কারণ আমি আর আমার সন্তানরা ছাড়া সেখানে আর কেউ ছিল না। কিন্তু তবু তারা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে আর আমাকে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে।”
বোনটি ক্রন্দনরত অবস্থায় আরও বলেছেন, “আমি তাদের নিশ্চয় করে বলে দিয়েছিলাম যে আমার বাড়িতে কোন মুক্তিবাহিনী লুকিয়ে নেই তারপরও তারা আমার কথা শুনলো না আর আমার ঘর ভেঙে শেষ করে ফেলল। তারা ইচ্ছা করেই এমন জঘন্য কাজটা করেছে কিন্তু শেষে কাউকে খুঁজে পায়নি।“
বোনটির স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তার আয়ের এক মাত্র উপায় হল ঝাড়ু দেওয়া। এই কাজ করেই সে তার দুই ছেলে ও এক মেয়েকে দরিদ্রতার সাথে জীবনযাপন করছিলেন। কিন্তু ভারত সেনাবাহিনী অকারণেই তার বসবাসের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে।
তার চাচাত ভাই আসিফ আহমেদ মীর সাংবাদিকদের জানান, “তারা ১৪ বছরের ছেলেটিকে ধরে নিয়ে এই বক্তব্য দিতে বাধ্য করছে যে সেই বাড়িটি মুক্তিকামীসেনাদের গোপন আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত হত।
Comment