ভারতের পানিতে বন্যায় ডুবছে পাঁচ জেলা, হাহাকার সাধারণ মানুষের
হঠাৎ করে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়া এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বর্ষণের কারণে পদ্মা-ধলেশ্বরীসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, পাবনাসহ পদ্মা-ধলেশ্বরীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীভাঙনে ইতোমধ্যেই কয়েকশ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে চলে গেছে আবাদী জমিও। এছাড়া বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসলের খেত। এদিকে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে কুষ্টিয়ার শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে।
নয়া দিগন্তের রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার বিকেলে দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মায় শুরু হয়েছে তীব্র ঘূর্ণায়মান স্রোত ও নদী ভাঙন। এর ফলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তের ১ ও ২ নং ফেরিঘাটের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক বাণিজ্য আবু আবদুল্লাহ জানায়, দৌলতদিয়ায় ৬টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নং ফেরিঘাটে স্রোতের তীব্রতা বেশি। সেখানে ঘূর্ণি স্রোতের কারণে ফেরি ভেড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ দুটি ফেরিঘাটের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি ৪টি ঘাট সচল আছে।
পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এরই মধ্যে নতুন করে রাজবাড়ী জেলার সাতটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবোগ্রাম ইউনিয়নে পদ্মার তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি। এতে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। দফায় দফায় পদ্মার পানি বাড়ায় ভাঙনের মুখে বিলীন হচ্ছে নদী পাড়ের ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি। আতঙ্কিত এলাকাবাসী শত শত ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। পানিতে প্লাবিত ইউনিয়নগগুলো হলো গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম, দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানুপুর, চন্দনী, খানগঞ্জ, বরাট ও কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া।
ভাঙ্গনের শিকার স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়, গত ৫দিনে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশ বিঘা ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই এলাকার আরো প্রায় ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।
ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে রাজবাড়ীর প্রতিনিধি বলেন, এভাবে ভাঙতে থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাট রক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়বে।
ফরিদপুরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫টি গ্রামের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। চরভদ্রাসন উপজেলায় ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বুধবার বিকেল তিনটায় বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেছে, বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে তার এলাকায় ৭৭ একর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। ১৫টি গ্রামের দুই হাজার লোক এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, নতুন করে পদ্মা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারত অংশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় ওই পানি বাংলাদেশে পদ্মা অববাহিকা দিয়ে গড়িয়ে যাওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
সূত্র: https://alfirdaws.org/2019/10/03/27552/
হঠাৎ করে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়া এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বর্ষণের কারণে পদ্মা-ধলেশ্বরীসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, পাবনাসহ পদ্মা-ধলেশ্বরীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীভাঙনে ইতোমধ্যেই কয়েকশ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে চলে গেছে আবাদী জমিও। এছাড়া বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসলের খেত। এদিকে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে কুষ্টিয়ার শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে।
নয়া দিগন্তের রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার বিকেলে দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মায় শুরু হয়েছে তীব্র ঘূর্ণায়মান স্রোত ও নদী ভাঙন। এর ফলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তের ১ ও ২ নং ফেরিঘাটের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক বাণিজ্য আবু আবদুল্লাহ জানায়, দৌলতদিয়ায় ৬টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নং ফেরিঘাটে স্রোতের তীব্রতা বেশি। সেখানে ঘূর্ণি স্রোতের কারণে ফেরি ভেড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ দুটি ফেরিঘাটের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি ৪টি ঘাট সচল আছে।
পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এরই মধ্যে নতুন করে রাজবাড়ী জেলার সাতটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবোগ্রাম ইউনিয়নে পদ্মার তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি। এতে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। দফায় দফায় পদ্মার পানি বাড়ায় ভাঙনের মুখে বিলীন হচ্ছে নদী পাড়ের ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি। আতঙ্কিত এলাকাবাসী শত শত ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। পানিতে প্লাবিত ইউনিয়নগগুলো হলো গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম, দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানুপুর, চন্দনী, খানগঞ্জ, বরাট ও কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া।
ভাঙ্গনের শিকার স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়, গত ৫দিনে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশ বিঘা ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই এলাকার আরো প্রায় ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।
ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে রাজবাড়ীর প্রতিনিধি বলেন, এভাবে ভাঙতে থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাট রক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়বে।
ফরিদপুরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫টি গ্রামের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। চরভদ্রাসন উপজেলায় ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বুধবার বিকেল তিনটায় বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেছে, বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে তার এলাকায় ৭৭ একর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। ১৫টি গ্রামের দুই হাজার লোক এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, নতুন করে পদ্মা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারত অংশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় ওই পানি বাংলাদেশে পদ্মা অববাহিকা দিয়ে গড়িয়ে যাওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
সূত্র: https://alfirdaws.org/2019/10/03/27552/
Comment