তিস্তার পানি পাওয়া অনিশ্চিত , ফেনী নদীর পানি চায় ভারত
আন্ত:সীমান্ত নদীগুলোর পানি প্রত্যাহার এবং ব্যারাজগুলোর গেট আটকানো ও খুলে দেয়ায় ভারতের ‘একগুয়ে আচরণ’ যত প্রবল হচ্ছে ততই যেন দুর্বল হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের ‘পানি কূটনীতি’। জোরদার যেটা হচ্ছে সেটা আন্তদেশীয় কানেকটিভিটি, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রস্তাব। সেটাও ভারতের ‘ট্রানজিট প্লান’ এবং ‘বিনিয়োগ প্লানে’র বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন আন্তআঞ্চলিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের কেউ এটাকে দেখছেন সরকারের ‘কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ’ হিসেবে।
বিষয়টি খুব বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরকে ঘিরে। চার দিনের সফরে ৩ অক্টোবর সে নয়াদিল্লি পৌঁছেছে।
পানির প্রাপ্যতা এবং তিস্তা চুক্তির ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘হাসিনা-মোদির বৈঠকে তিস্তার সঙ্গে সব আন্তসীমান্ত নদী নিয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের (কাঠামো চুক্তি) বিষয়ে আলোচনা হবে।’
এমনিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে শুধু গঙ্গা ছাড়া বাকি সবগুলো নদীর পানি প্রাপ্যতার ইস্যুটি এখনও অমিমাংসিত এবং অনিশ্চিত। ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে চুক্তি অনুযায়ী কখনোই পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ। সেখানে ভারতে কূট চাল আর প্রচার-প্রপাগান্ডায় ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে থেকে শুধু তিস্তা চুক্তির ইস্যুটি ‘বার্নিং ইস্যুতে’ রূপ পেয়েছে। একই কৌশলে বাংলাদেশের পানি কূটনীতিকেও শুধু তিস্তার মধ্যে গন্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। আর এবারের এজেন্ডা থেকে উধাও হয়ে গেল সেই তিস্তা চুক্তির ইস্যুটিও।
যাকে ‘কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ’ বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক নদী আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে এসেছিল। সবকিছু ঠিক থাকার পরও তাঁদের নিজস্ব কারণে ওই সময়ে চু্ক্তিটি হয়নি। এরপর ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশ সফর করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তখনও চুক্তিটি হয়নি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেও চুক্তি হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ওই মেয়াদকালেই চুক্তি সইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু টানা প্রায় দশ বছর পরে এসে এবার আমরা দেখছি আলোচনা থেকেই বাদ হয়ে গেল ইস্যুটি। সুতরাং এখন যেটা ঘটছে সেটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।
এদিকে এবারের সফরে অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় উভয় দেশের সম্মতিতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করার কথা বলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এর মাধ্যমে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়ে ফেনী নদী থেকে পানি চাচ্ছে ভারত!
গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের পানি সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপন করে ভারত। দীর্ঘ ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মা ব্যারাজ নির্মাণে ভারতীয় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা; আন্তসীমান্ত নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা সসম্প্রসারণসহ ছয়টি প্রস্তাব করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারত মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা বা জলঢাকা এবং দুধকুমার বা তরসা নদীর পানি বণ্টন এবং ফেনী নদী থেকে দৈনিক ৪৪,৫২,৭৬৮ লিটার (১.৮২ কিউসেক) পানি উত্তোলনের মাধ্যমে ত্রিপুরার সাবরুমে ‘ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম’ বাস্তবায়নসহ চারটি প্রস্তাব করে।
বৈঠকে গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের ভালো-মন্দ যাচাইয়ের জন্য একটি যৌথ কমিটি এ বছরের মধ্যে গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া মনু, ফেনী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও মুহুরি নদীর পানি প্রবাহের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পানি বণ্টনের চুক্তির খসড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবারে হাসিনা-মোদি বৈঠকে ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলনের বিষয়টি তোলা হবে কিনা জানা যায়নি। তবে ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করার কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই নিশ্চিত করেছে।
ফেনী নদী থেকে পানি চাওয়া প্রসঙ্গে আসিফ নজরুলের বক্তব্য, গত প্রায় চার দশক ধরে আলোচনার পরও আমরা তিস্তা নদীর পানি পাচ্ছিনা। অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানির ওপরও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারছি না। এসব আমাদের ন্যায্য দাবি। সেখানে ফেনী নদীর পানি দেয়ার বিষয়ে আমরা কীভাবে বিবেচনা করি, তা আমার বোধগম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, এখানেতো ভারতের অধিকার নেই। সীমান্তে তাদের সামান্য অংশ থাকতে পারে। সেখানে কীভাবে তারা ফেনী নদীর পানি চাওয়ার চিন্তা করে।
আর পুরো ঘটনাটিকে ‘ডিপ্লোমেটিক শিফট’ বলছেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ। তিনি বলেন, পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির ইস্যুতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্খায় কোথাও ঘাটতি ঘটেনি। কিন্তু সরকারের আলোচনায় তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকারের কূটনৈতিক আলোচনার তালিকায় অগ্রাধিকার পাচ্ছে কানেকটিভিটি, ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, কানেকটিভিটিতে যে আঞ্চলিক রূপ দেয়া যাচ্ছে তাও নয়। *ভুটানকে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না, নেপালকে পাওয়া যাচ্ছে না। সেটা ভারতের জন্যই। বাংলাদেশগামী ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে আটকানোর খবর আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি। ফলে কানেকটিভিটিতে যেটুকু অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে সেটা ভারতের সঙ্গে এবং ভারতের জন্যে।
অনুসন্ধানেও দেখা যাচ্ছে, নৌ প্রটোকল চুক্তি, এশিয়ান হাইওয়ে, ক্রসবর্ডার রোড নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়ান সাব রিজিওনাল ইকোনোমিক কোঅপারেশন রোড কানেকটিভিটি, রামগড় স্থল বন্দর, শেওলা স্থল বন্দর নির্মাণসহ এ জাতীয় যতগুলো প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার বাস্তবায়ন করছে সবগুলোই ভারতের ট্রানজিট প্লান বাস্তবায়নেরই অংশ।
এদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্যোগগুলোকেও ভারতের ‘বিনিয়োগ প্লানে’র বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরের মূল উদ্দেশ্যও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘ইন্ডিয়া ইকনোমিক সামিটে’ যোগদান। বলা হচ্ছে, ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম আয়োজিত এ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কাহিনী শুনাতেই শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
সূত্র: https://alfirdaws.org/2019/10/05/27622/
আন্ত:সীমান্ত নদীগুলোর পানি প্রত্যাহার এবং ব্যারাজগুলোর গেট আটকানো ও খুলে দেয়ায় ভারতের ‘একগুয়ে আচরণ’ যত প্রবল হচ্ছে ততই যেন দুর্বল হয়ে পড়ছে বাংলাদেশের ‘পানি কূটনীতি’। জোরদার যেটা হচ্ছে সেটা আন্তদেশীয় কানেকটিভিটি, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রস্তাব। সেটাও ভারতের ‘ট্রানজিট প্লান’ এবং ‘বিনিয়োগ প্লানে’র বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন আন্তআঞ্চলিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের কেউ এটাকে দেখছেন সরকারের ‘কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ’ হিসেবে।
বিষয়টি খুব বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরকে ঘিরে। চার দিনের সফরে ৩ অক্টোবর সে নয়াদিল্লি পৌঁছেছে।
পানির প্রাপ্যতা এবং তিস্তা চুক্তির ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘হাসিনা-মোদির বৈঠকে তিস্তার সঙ্গে সব আন্তসীমান্ত নদী নিয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের (কাঠামো চুক্তি) বিষয়ে আলোচনা হবে।’
এমনিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে শুধু গঙ্গা ছাড়া বাকি সবগুলো নদীর পানি প্রাপ্যতার ইস্যুটি এখনও অমিমাংসিত এবং অনিশ্চিত। ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে চুক্তি অনুযায়ী কখনোই পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ। সেখানে ভারতে কূট চাল আর প্রচার-প্রপাগান্ডায় ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে থেকে শুধু তিস্তা চুক্তির ইস্যুটি ‘বার্নিং ইস্যুতে’ রূপ পেয়েছে। একই কৌশলে বাংলাদেশের পানি কূটনীতিকেও শুধু তিস্তার মধ্যে গন্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। আর এবারের এজেন্ডা থেকে উধাও হয়ে গেল সেই তিস্তা চুক্তির ইস্যুটিও।
যাকে ‘কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ’ বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক নদী আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে এসেছিল। সবকিছু ঠিক থাকার পরও তাঁদের নিজস্ব কারণে ওই সময়ে চু্ক্তিটি হয়নি। এরপর ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশ সফর করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তখনও চুক্তিটি হয়নি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেও চুক্তি হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ওই মেয়াদকালেই চুক্তি সইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু টানা প্রায় দশ বছর পরে এসে এবার আমরা দেখছি আলোচনা থেকেই বাদ হয়ে গেল ইস্যুটি। সুতরাং এখন যেটা ঘটছে সেটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। কূটনৈতিক আত্মসমর্পণ ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।
এদিকে এবারের সফরে অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় উভয় দেশের সম্মতিতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করার কথা বলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এর মাধ্যমে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়ে ফেনী নদী থেকে পানি চাচ্ছে ভারত!
গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের পানি সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপন করে ভারত। দীর্ঘ ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মা ব্যারাজ নির্মাণে ভারতীয় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা; আন্তসীমান্ত নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা সসম্প্রসারণসহ ছয়টি প্রস্তাব করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, ভারত মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা বা জলঢাকা এবং দুধকুমার বা তরসা নদীর পানি বণ্টন এবং ফেনী নদী থেকে দৈনিক ৪৪,৫২,৭৬৮ লিটার (১.৮২ কিউসেক) পানি উত্তোলনের মাধ্যমে ত্রিপুরার সাবরুমে ‘ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম’ বাস্তবায়নসহ চারটি প্রস্তাব করে।
বৈঠকে গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের ভালো-মন্দ যাচাইয়ের জন্য একটি যৌথ কমিটি এ বছরের মধ্যে গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া মনু, ফেনী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও মুহুরি নদীর পানি প্রবাহের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পানি বণ্টনের চুক্তির খসড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবারে হাসিনা-মোদি বৈঠকে ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলনের বিষয়টি তোলা হবে কিনা জানা যায়নি। তবে ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করার কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই নিশ্চিত করেছে।
ফেনী নদী থেকে পানি চাওয়া প্রসঙ্গে আসিফ নজরুলের বক্তব্য, গত প্রায় চার দশক ধরে আলোচনার পরও আমরা তিস্তা নদীর পানি পাচ্ছিনা। অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানির ওপরও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারছি না। এসব আমাদের ন্যায্য দাবি। সেখানে ফেনী নদীর পানি দেয়ার বিষয়ে আমরা কীভাবে বিবেচনা করি, তা আমার বোধগম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, এখানেতো ভারতের অধিকার নেই। সীমান্তে তাদের সামান্য অংশ থাকতে পারে। সেখানে কীভাবে তারা ফেনী নদীর পানি চাওয়ার চিন্তা করে।
আর পুরো ঘটনাটিকে ‘ডিপ্লোমেটিক শিফট’ বলছেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ। তিনি বলেন, পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির ইস্যুতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্খায় কোথাও ঘাটতি ঘটেনি। কিন্তু সরকারের আলোচনায় তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকারের কূটনৈতিক আলোচনার তালিকায় অগ্রাধিকার পাচ্ছে কানেকটিভিটি, ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, কানেকটিভিটিতে যে আঞ্চলিক রূপ দেয়া যাচ্ছে তাও নয়। *ভুটানকে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না, নেপালকে পাওয়া যাচ্ছে না। সেটা ভারতের জন্যই। বাংলাদেশগামী ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে আটকানোর খবর আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি। ফলে কানেকটিভিটিতে যেটুকু অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে সেটা ভারতের সঙ্গে এবং ভারতের জন্যে।
অনুসন্ধানেও দেখা যাচ্ছে, নৌ প্রটোকল চুক্তি, এশিয়ান হাইওয়ে, ক্রসবর্ডার রোড নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়ান সাব রিজিওনাল ইকোনোমিক কোঅপারেশন রোড কানেকটিভিটি, রামগড় স্থল বন্দর, শেওলা স্থল বন্দর নির্মাণসহ এ জাতীয় যতগুলো প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার বাস্তবায়ন করছে সবগুলোই ভারতের ট্রানজিট প্লান বাস্তবায়নেরই অংশ।
এদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্যোগগুলোকেও ভারতের ‘বিনিয়োগ প্লানে’র বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরের মূল উদ্দেশ্যও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘ইন্ডিয়া ইকনোমিক সামিটে’ যোগদান। বলা হচ্ছে, ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম আয়োজিত এ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কাহিনী শুনাতেই শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
সূত্র: https://alfirdaws.org/2019/10/05/27622/
Comment