ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত শতাধিক
ভোলা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৮ পিএম | আপডেট : ৪:০০ পিএম, ২০ অক্টোবর, ২০১৯
AddThis Website Tools
ফেসবুকে নবীকে নিয়ে কটূক্তি: ভোলায় পুলিশ ও মুসল্লিদের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত দেড় শতাধিক
ফেসবুকে মহা নবী (সঃ)কে কটূক্তি করা নিয়ে ভোলায় সাধারণ তৌহীদি জনতার বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষে চার জন নিহত ও ১০ পুলিশসহ প্রায় দের শতাধিক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আহত প্রায় শতাধিক মুসল্লিকে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ৪০ জনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং গুরুতর ১০-১৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হয়েছে। নিহতরা হলেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেনের কলেজ পড়–য়া ছেলে শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজান (৪০)।
জানা যায়, গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের ম্যাসেঞ্জার রসুল (সঃ)কে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজ পাঠায়। এনিয়ে আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে সর্বস্তরের তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলে আয়োজন করা হয়। এ বিক্ষোভ মিছিলটি না করার জন্য বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা মিজানকে পুলিশ অনুরোধ জানায়। এবং সাধারণ মানুষ আসার আগে বিক্ষোভটি বন্ধ ঘোষণা করতে বলেন। তাদের অনুরোধে এ দুই ইমাম সকাল ১০টার দিকেই যে সকল লোক আসছে তাদেরকে নিয়ে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি সমাপ্ত করেন। কিন্তু এতক্ষণে বোরহানউদ্দিনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার লোক এসে ঈদগাহে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা ওই দুই ইমামের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এবং সেখানে থাকা পুলিশের উপর চড়াও হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্তে ওই মসজিদের ইমামের রুমে আশ্রয় নেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা নিজেদের বাঁচানোর জন্য উত্তেজিত মুসল্লীদের উপর ফাকা গুলি ছুড়ে। এতে সেখানে থাকা মুসল্লীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর আক্রমন চালায়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর এক টা পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশের সাথে মুসল্লীদের সংঘর্ষ হয়। এতে চার মুসল্লী নিহত হয়েছে। এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ প্রায় দেড় শতাধিক মুসল্লী আহত হয়। এদের মধ্যে অনেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবং বাকীদের বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক জন মাদ্রাসা ছাত্র ও কলেজের ছাত্র।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রনে বোরহানউদ্দিনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়োন করা হয়েছে।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিপ্লব চন্দ শুভ নামের এক যুবকের ফেইসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। আমরা হ্যাকের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আটক করেছি। আমরা এ নিয়ে গত রাতে স্থানীয় আলেমদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলছে আজকের প্রোগ্রাম হবে না। কিন্তু সকাল থেকে আমাদের কাছে খবর আসে সেখানে মাইকিং হচ্ছে এবং স্টেজ বানানো হচ্ছে। সেখানে গিয়ে আমরা উপস্থিত মুসল্লীদের সাথে কথা বলেছি। এবং আমি নিজে সেখানে বক্তব্য দিয়েছি। তারা সবাই আমার বক্তব্য শুনেছে। যখন আমি স্টেজ থেকে নেমে আসি তখন এক দল উত্তেজিত জনতা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা আত্মরক্ষার্থে একটি রুমে গিয়ে আশ্রয় নেই। যখন তারা আমাদের রুমের জানালা ভেঙ্গে ফেলছে তখন আমরা প্রথমে সর্টগানের ফাকা গুলি ছুড়ি। পরবর্তীতে এতে কাজ না হওয়ায় উপরের দিকে গুলি চালায়। এতে আমার জানা মতে একজন পুলিশ সদস্যের বুকে গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়। আমরা আহত অবস্থায় যাদের হাসপাতালে পাটিয়েছি তাদের মধ্যে তিন জন নিহত হয়েছে। তবে বাকী আরও থাকতে পারে সেটা আমাদের কাছে তথ্য নেই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে বলে জানান পুলিশ।
ভোলা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৮ পিএম | আপডেট : ৪:০০ পিএম, ২০ অক্টোবর, ২০১৯
AddThis Website Tools
ফেসবুকে নবীকে নিয়ে কটূক্তি: ভোলায় পুলিশ ও মুসল্লিদের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত দেড় শতাধিক
ফেসবুকে মহা নবী (সঃ)কে কটূক্তি করা নিয়ে ভোলায় সাধারণ তৌহীদি জনতার বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষে চার জন নিহত ও ১০ পুলিশসহ প্রায় দের শতাধিক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আহত প্রায় শতাধিক মুসল্লিকে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ৪০ জনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং গুরুতর ১০-১৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হয়েছে। নিহতরা হলেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেনের কলেজ পড়–য়া ছেলে শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজান (৪০)।
জানা যায়, গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের ম্যাসেঞ্জার রসুল (সঃ)কে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজ পাঠায়। এনিয়ে আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে সর্বস্তরের তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলে আয়োজন করা হয়। এ বিক্ষোভ মিছিলটি না করার জন্য বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা মিজানকে পুলিশ অনুরোধ জানায়। এবং সাধারণ মানুষ আসার আগে বিক্ষোভটি বন্ধ ঘোষণা করতে বলেন। তাদের অনুরোধে এ দুই ইমাম সকাল ১০টার দিকেই যে সকল লোক আসছে তাদেরকে নিয়ে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি সমাপ্ত করেন। কিন্তু এতক্ষণে বোরহানউদ্দিনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার লোক এসে ঈদগাহে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা ওই দুই ইমামের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এবং সেখানে থাকা পুলিশের উপর চড়াও হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্তে ওই মসজিদের ইমামের রুমে আশ্রয় নেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা নিজেদের বাঁচানোর জন্য উত্তেজিত মুসল্লীদের উপর ফাকা গুলি ছুড়ে। এতে সেখানে থাকা মুসল্লীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর আক্রমন চালায়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর এক টা পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশের সাথে মুসল্লীদের সংঘর্ষ হয়। এতে চার মুসল্লী নিহত হয়েছে। এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ প্রায় দেড় শতাধিক মুসল্লী আহত হয়। এদের মধ্যে অনেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবং বাকীদের বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক জন মাদ্রাসা ছাত্র ও কলেজের ছাত্র।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রনে বোরহানউদ্দিনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়োন করা হয়েছে।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিপ্লব চন্দ শুভ নামের এক যুবকের ফেইসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। আমরা হ্যাকের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আটক করেছি। আমরা এ নিয়ে গত রাতে স্থানীয় আলেমদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলছে আজকের প্রোগ্রাম হবে না। কিন্তু সকাল থেকে আমাদের কাছে খবর আসে সেখানে মাইকিং হচ্ছে এবং স্টেজ বানানো হচ্ছে। সেখানে গিয়ে আমরা উপস্থিত মুসল্লীদের সাথে কথা বলেছি। এবং আমি নিজে সেখানে বক্তব্য দিয়েছি। তারা সবাই আমার বক্তব্য শুনেছে। যখন আমি স্টেজ থেকে নেমে আসি তখন এক দল উত্তেজিত জনতা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা আত্মরক্ষার্থে একটি রুমে গিয়ে আশ্রয় নেই। যখন তারা আমাদের রুমের জানালা ভেঙ্গে ফেলছে তখন আমরা প্রথমে সর্টগানের ফাকা গুলি ছুড়ি। পরবর্তীতে এতে কাজ না হওয়ায় উপরের দিকে গুলি চালায়। এতে আমার জানা মতে একজন পুলিশ সদস্যের বুকে গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়। আমরা আহত অবস্থায় যাদের হাসপাতালে পাটিয়েছি তাদের মধ্যে তিন জন নিহত হয়েছে। তবে বাকী আরও থাকতে পারে সেটা আমাদের কাছে তথ্য নেই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে বলে জানান পুলিশ।
Comment