২০১৮ সালের নভেম্বরে দেশটির চাকামা অঞ্চল থেকে তাঁকে আটক করেন পূর্ব আফ্রিকাভিত্তিক আল-কায়েদা শাখা আল-শাবাব মুজাহিদিন। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টান মিশনারি এক্টিভিটির সাথে জড়িত সন্দেহেই তাঁকে আটক করা হয়েছিলো।
দীর্ঘ ১৮ মাস বন্দী ছিলেন মুজাহিদিনের হাতে। এ সময় গণমাধ্যম এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার কাছেও কোনো তথ্য ছিলো না সিলভিয়ার ব্যাপারে।
অবশেষে সম্প্রতি বন্দীদশা থেকে মুক্তি পান তিনি। একটি বিশেষ ফ্লাইটে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু থেকে তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয় ইতালিতে। বিমান থেকে নামলেন হিজাব পরিহিত অবস্থায়। হাস্যজ্বল মুখে আলিঙ্গন করলেন পরিবারের সদস্যদেরকে।
এর আগে রাজধানী মোগাদিশুর ইতালিয়ান দূতাবাসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় তিনি জানান, ‘আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি। কোনোধরনের জোর-জবরদস্তি কিংবা বিবাহ সম্পর্ক ছাড়াই স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছি। তাঁরা(মুজাহিদিন) আমার সাথে অনেক ভালো আচরণ করেছেন। আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি তাঁরা আমাকে কুরআন পড়তে দিয়েছেন এবং আমাকে ইসলামি সংস্কৃতি বুঝিয়েছেন।
মুজাহিদিনের হাতে বন্দী অবস্থায় ইসলাম গ্রহণের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকজন সংবাদ ও মানবাধিকারকর্মী মুজাহিদিনের হাতে বন্দী অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
২০০১ সাল। নাইন-ইলেভেনের মোবারক হামলা-পরবর্তী সময়। ব্রিটিশ সাংবাদিক ইয়োভনি রেডলি পেশাগত কাজে পাড়ি জমান আফগানিস্তানে। সংবাদ সংগ্রহকালীন বন্দী হন তালিবান মুজাহিদিনের হাতে।
পরবর্তীতে তালিবান মুজাহিদিনের নিষ্ঠা ও মানবিকতায় মুগ্ধ হয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া ফেলে।
গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি তালিবান যোদ্ধাদের কর্মকাণ্ড দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি। একজন বন্দীকে মানুষ এতো চমৎকারভাবে ট্রিট করতে পারে তা আমার জানা ছিলো না।’
এমনকি ইসলাম গ্রহণের পরে তিনি একটি বইও লেখেন ‘ইন দ্য হ্যান্ড অব তালিবান’ নামে।
২০১১ সালে ওয়েরন উইন্সটেন নামে এক মার্কিন নাগরিকও আল-কায়েদার হাতে বন্দী অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। এরকম ঘটনা আরো অনেক আছে।
অপরদিকে আমেরিকাসহ কুফফার জোটগুলোর হাতে মুসলিম বন্দীদের ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়। কুফফার বর্বররা নির্যাতনের এমন কোনো কৌশল নেই যেটা তারা মুসলিমদের উপর প্রয়োগ বাদ রাখে। মুসলিম নারী বন্দীদের ধর্ষণ করাটা কুফফার সেনাদের যেন রুটিনওয়ার্ক।
২০০৮ সালে মিথ্যা অভিযোগে পাকিস্তানের খ্যাতিমান স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকিকে তাঁর তিন সন্তানসহ অপহরণ করে পাক গোয়েন্দাসংস্থা। তারপর তাঁকে তুলে দেয়া হয় সন্ত্রাসী মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে।
তাঁকে নিয়ে আসা হয় নিউইয়র্কে। মার্কিন আদালত তাঁকে বিনাবিচারে ৮৬ বছর কারাদণ্ড দেয়। শুরু হয় পাশবিক নির্যাতন। এই লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দেয়া সুস্থ-বিবেকসম্পন্ন মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
কারাগার থেকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি লিখেন, ‘ওরা আমাকে প্রতিদিন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আমার সেলের মধ্যে ওদের প্রশিক্ষিত কুকুর ছেড়ে দেয়। ওরা আমার একটি কিডনি পর্যন্ত নষ্ট করে ফেলেছে। আমার বুকে গুলি চালিয়েছে। প্রতিনিয়ত আমাকে বৈদ্যুতিক শক দিচ্ছে।’
আবু গারিব কারাগারের সেই পাষবিক নির্যাতনের কথা কে ভুলেছে? বোন ফাতিমার সেই চিঠির আপ্তবাক্য কি কোনো মুসলিম কখনো বিস্মৃত হতে পারে? গুয়ান্তানামো-বে কারাগারে কী ভয়ঙ্কর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন মুজাহিদিনরা!
এতোকিছুর পরেও মুজাহিদিনরা ওদের বন্দীদের সাথে কখনো নিষ্ঠুরতা দেখায় না। ওরা আমাদের বোনদের ধর্ষণ করে, আর মুজাহিদিনরা ওদের নারীদের গায়ে হিজাব তুলে দেয়। ওদের নির্যাতনের দরুন বোন ফাতিমা গর্ভনিরোধক বড়ি চায়, আর মুজাহিদিনের হিউম্যানিটি দেখে ওদের নারীরা ইসলাম গ্রহণ করে নেয়।
কে প্রকৃত সন্ত্রাসী?
হে মুসলিম, এখনো কি তুমি সংশয়ে ভুগো, কে প্রকৃত সন্ত্রাসী? মিডিয়ার মিথ্যা প্রোপাগান্ডায় তুমি সত্যিকারের মানুষ চিনতে ভুল করলেও, ভুল করেনি সিলভিয়া রোমানোরা, ভুল করেনি ইয়োভন রেডলিরা। তুমি মুজাহিদিনের বিরোধিতা করে হলে মুনাফিক, আর তারা মুজাদিনকে চিনতে পেরে হয়ে গেলো মুসলিম।
সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/05/17/37834/
Comment