Announcement

Collapse
No announcement yet.

সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার আগ্রাসন : ইউক্রেন আক্রমণে মুসলিমদের জন্য বার্তা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার আগ্রাসন : ইউক্রেন আক্রমণে মুসলিমদের জন্য বার্তা

    সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার আগ্রাসন : ইউক্রেন আক্রমণে মুসলিমদের জন্য বার্তা

    খ্রিস্টান ও জায়নবাদী শক্তিগুলো গোটা বিশ্বের উপর তাদের কর্তৃত্ব কায়েম রাখতে এলাকা ভাগ করে নিয়েছিল, যেন নিজেদের মধ্যে বড় সংঘাত এড়িয়েই তাঁদের এই কর্তৃত্ব কায়েম রাখা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকেই সাম্রাজ্যবাদী এই বিশ্বমোড়লদের মধ্যে এমন একটা অলিখিত সমঝোতা বিরাজ করতে থাকে।তবে এই শক্তিগুলোর একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার বা কৌশলে পরাজিত করার তৎপরতা কখনোই থেমে থাকেনি। কখনো তাদের প্রক্সি যুদ্ধ চলেছে তৃতীয় কোন দেশের ভূখণ্ডে, কখনো সরাসরি নিজেরাই তৃতীয় কোন দেশে আগ্রাসন চালিয়েছে, আবার মাঝে সাঁঝে নিজেরাও মুখোমুখি অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।তবে তৃতীয় ক্ষেত্রে এই মোড়লদের বিরোধ-মীমাংসাকারী কথিত জাতিসংঘ এসে তাঁদের মাঝে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যাতে এই কথিত মোড়লরা একে অপরের সাথে সরাসরি যুদ্ধে না জড়ায়।তবে হ্যাঁ, এই সাম্রাজ্যবাদী মোড়লরা যখন কোন মুসলিম ভূখণ্ডের উপর আগ্রাসন, হত্যাযজ্ঞ, জুলুম আর লুটপাট চালিয়েছে, তখন কিন্তু ঐ কথিত জাতিসংঘ ঠুনকো বিবৃতি দেওয়া ছাড়া কোন কার্যকর পদক্ষেপ খুব একটা নেয়নি।
    সাম্রাজ্যবাদী এই বিশ্বমোড়লরাই আবার ঐ কথিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫টি সদস্যপদ দখল করে রেখেছে – অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। কথিত আছে যে, নিরাপত্তা পরিষদের ঐ ৫ স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে অ্যামেরিকা ও ব্রিটেন প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টানদের প্রতিনিধিত্ব করে, ফ্রান্স ক্যাথলিকদের, রাশিয়া অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের এবং চীন প্রতিনিধিত্ব করে মুশরিক তথা মূর্তিপূজকদের। আর এই তালিকায় যুক্ত হতে জোড় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী ভারত, জাপান ও জার্মানি।মুসলিমদের সর্বশেষ খিলাফত উসমানী সাম্রাজ্যকে এই সকল বিশ্বমোড়লের সাথেই একযোগে লড়তে হয়েছে। একদিক থেকে ফ্রান্স, ব্রিটেন, আর তাদের পিছন থেকে সাহায্য-সমর্থন করেছে অ্যামেরিকা; অপর দিক থেকে রাশিয়া। এছাড়া গ্রিস, অষ্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি সহ অন্যান্য পূর্ব ইউরোপীয় রাষ্ট্রের আক্রমণ তো ছিলই।আর বিশ্বজুড়ে এই কথিত মোড়ল রাষ্ট্রগুলোই আবার মুসলিম দেশসমূহকে নিজেদের উপনিবেশ বানিয়ে রেখেছিল শতাব্দীর পর শতাব্দী জুড়ে।
    রাশিয়া কি কখনো তার সাম্রাজ্যবাদী আদর্শ পরিত্যাগ করেছিল?আফগান যুদ্ধে পরাজিত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ধীরে ধীরে ভেঙ্গে যেতে শুরু করে, ভেঙ্গে পরে এর অর্থনৈতিক শক্তিমত্তাও। তাছাড়া বিশেষ করে সন্ত্রাসী অ্যামেরিকা বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে উঠে আসলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পরে রাশিয়া।তবে রাশিয়া কি কখনো তার সাম্রাজ্যবাদী দুরভিসন্ধি থেকে সরে এসেছিলো.? যারা কথায় কথায় শুধুমাত্র পশ্চিমাদেরকে নব্য উপনিবেশবাদী বলে রাশিয়াকে পুতঃ পবিত্র সাব্যস্ত করতে সচেষ্ট থাকেন, তাদের জন্য- এর উত্তর হচ্ছে “না।”রাশিয়া কখনোই তার সাম্রাজ্যবাদী আদর্শ থেকে সরে আসেনি। যুদ্ধবাজ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার রাশিয়ান জগতের ওঠা প্রচার করে আসছে তার শাসনামলের শুরু থেকেই। তার এই রাশিয়ান জগতের ব্যাখ্যাই তার সোভিয়েত আমলে রাশিয়াকে ফিরিয়ে নেওয়ার বাসনা প্রকাশ করে।২০০১ সালে প্রবাসী রাশিয়ানদের এক সম্মেলনে পুতিন প্রথম এই রাশিয়ান জগতের ধারনার কথা বলেছিল। সে বলেছিল, “রাশিয়ান জগতের ধারনাটা রাশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সীমান্ত থেকেও বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এবং জাতিগত রাশিয়ানদের বাইরেও এটার বিস্তার অনেক ব্যাপক।”সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে অ্যামেরিকা ও পশ্চিমারা সামগ্রিকভাবে ইসলাম ও মুসলিমদের রুখতে তাদের কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই ফাঁকে চীনের পাশাপাশি ধীরে ধীরে শক্তিবৃদ্ধি করতে থাকে রাশিয়াও। পুতিন রাশিয়াকে আগের শক্তিশালী অবস্থানের কাছাকাছি নিয়ে যেতে থাকে।২০০৮ সালে জর্জিয়া আক্রমণ করে সে দক্ষিণ ওতেশিয়া স্বাধীন করেছে। সিরিয়া যুদ্ধে সে শামের কসাই বাসার আল আসাদের পক্ষে সৈন্য পাঠিয়েছে। লিবিয়ায় আরেক যুদ্ধবাজ নেতা খলীফা হাফতারের পক্ষেও সে তার ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার-কে পাঠিয়েছে। ২০১ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে দখল করে নিয়েছে ক্রিমিয়া। আর এখন মালিতেও সে তার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীকে পাঠিয়েছে।আর পুতিনের শক্তির জায়গা হল রাশিয়ার কট্টর জাতীয়তাবাদী জনগণ ও নেতারা।পাভেল সপেরভ রাশিয়ান পার্লামেন্টের কট্টর জাতীয়তাবাদী অংশের সাবেক সদস্য, সে বেশ প্রভাবশালী এবং পুতিনের আস্থাভাজন। পার্লামেন্টের ডেপুটি থাকাকালে সে বলেছিল, “সাবেক সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলো মূলত আমাদের ভূমি, যেগুলো সাময়িকভাবে রাশিয়া থেকে ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে। আর সীমান্ত স্থায়ী কোন রেখা নয়, আমরা আবার সাবেক রাশিয়ার সীমানায় ফিরে যাবো।”আরেক কট্টর জাতীয়তাবাদী নেতা আলেকজান্ডার বারোডি; সে ইউক্রেনের সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং বর্তমানে রাশিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য। তার মতে, ” রাশিয়াকে তার ক্ষমতার প্রদর্শনী করতে হবে না, তবে তাদের যে সেটা প্রয়োগের ক্ষমতা আছে, সেটা দেখাতে হবে। কেননা দুর্বলকে কেউ সম্মান করে না।”
    সে আরও বলেছে যে রাশিয়ার একমাত্র মিত্র হল তার সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।তৃতীয় আলেকজান্ডার খ্যাত পুতিনের এই আস্থাভাজন নেতার ও অন্যান্য জাতীয়তাবাদী নেতাদের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট ছিল যে, সাবেক সোভিয়েত আমলের দেশগুলো ধীরে ধীরে আবার দখলে নিবে রাশিয়া। ২০০৮ এর জর্জিয়া আক্রমণ, ২০১৪ এর ক্রিমিয়া দখল এবং সর্বশেষ গত সপ্তাহের ইউক্রেন আক্রমণ ও দখলাভিজান এটা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, রাশিয়া তার আগের সীমানা পুরোপুরি উদ্ধার না করে থামবে না।উপরোক্ত ঘটনাগুলোকে অনেকেই হয়তো জিও-পলিটিকাল ইস্যু ও পশ্চিমাদের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করতে সচেষ্ট হবেন। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসন ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাব বেশ পুরনো। উসমানী খিলাফতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া দখল দিয়ে শুরু, এরপর ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে একে সম্পূর্ণ মুসলিমমুক্ত করেছিল রাশিয়া।এরপর ধীরে ধীরে ককেশাস অঞ্চল ও মধ্য এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলো দখল করতে করতে রাশিয়া আফগানিস্তানে এসে পৌঁছেছিল তারা। আর পূর্ব তুর্কিস্তানে চীনের দখলদারিত্বে রাশিয়ার ছিল পূর্ণ সমর্থন।
    ইউক্রেন ও মধ্য এশিয়ায় রাশিয়া :পশ্চিমাদের নাকের ডগার উপর দিয়ে ক্রিমিয়া দখল ও সর্বশেষ গোটা ইউক্রেন আক্রমণ করে বসলো রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভেও ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। বিশ্লেষকরা তাই বলছেন যে, ইউক্রেন নামক দেশটির আবারো রাশিয়ার মাঝে বিলীন হয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার।ইউক্রেনে যতদিন রুশপন্থী সরকার ছিল, ততদিন দেশটি দখল করা নিয়ে মাথা ঘামায়নি রাশিয়া। তবে ২০১৯ সালে অ্যামেরিকা পন্থী জেলেনস্কি ক্ষমতায় আসার পর একে একে রাশিয়ার স্বার্থবিরোধী সব সিদ্ধান্ত নিতে থাকে সে। ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল ইউক্রেন। ইউক্রেনের এই ইহুদী প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনকে পুরোপুরি রাশিয়ান বলয় থেকে বের করে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল। রাশিয়া টাই বিশ্বকে চমকে হঠাৎ করে রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে সেনা পাঠাল। আর তার পরেই ত্রিমুখী আগ্রাসন চালিয়ে ইউক্রেনে দখলদারিত্ব কায়েম করল।অপরদিকে, আফগানিস্তান যুদ্ধে বিপর্যস্ত ও পরাজিত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ধীরে ধীরে ভেঙ্গে পড়ছিল, ইউনিয়নভুক্ত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোও তখন একে একে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। তবে, সোভিয়েত আমলের সমাজতন্ত্রপন্থী নেতারাই নতুন স্বাধীনতা ঘোষণা করা দেশগুলোর সরকার গঠন করে। ফলে নামে স্বাধীন হলেও ঐ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো অনেকটা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থেকে যায়।এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়- মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও তাজিকিস্তানে সোভিয়েত প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মতো। দেশগুলোর প্রায় সবক’টিই খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও, এদের মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছিল কাজাকিস্তান। কাজাকিস্তানের দিকে টাই নজরটাও একটু বেশি রাশিয়ার।তবে রাশিয়ার কট্টর জাতীয়তাবাদী নেতারা সর্বদাই মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার শাসন ফিরিয়ে আনার কথা বলে থাকে অন্য রাখঢাক না রেখেই। জাতিগত রুশরা এমনটা দাবি করে যে, মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলোকে সভ্য করেছে।আর পশ্চিমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাশিয়া যখন ইউক্রেন দখল করে নিয়েছে, এবং সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকেও দখলের হুমকি দিয়ে রেখেছে, তাই আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে মধ্য এশিয়ার সাবেক সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলোতে আগ্রাসন চালাতে রাশিয়া দ্বিতীয়বার ভাববে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।কাজাকিস্তানে সাম্প্রতিক রুশ আগ্রাসন :ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সাথে যুক্ত করার ৯ মাসের মাথায়, পুতিনকে এক সংবাদ সম্মেলনে একজন শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেছিল, ‘কাজাকিস্তানের ইউক্রেনের মতো পরিণতি হবে কি না?’
    উত্তরে পুতিন কোন রাখঢাক না রেখেই বলেছিল, “কাজাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক সোভিয়েত যুগের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নাজারবায়েভ এক অনন্য অর্জন করেছেন। তিনি এমন এক ভূখণ্ডে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছেন, যেখানে আগে কখনোই কোন রাষ্ট্র ছিলনা। কাজাখদের আগে কখনোই কোন রাষ্ট্র ছিলনা, তিনিই এটা সৃষ্টি করেছেন।”আগ্রাসী পুতিন আরও বলেছে, “সোভিয়েত পরবর্তী সময়ে ৫ টি দেশ নয়ে যে ইউরেশিয়ান ইকোনোমিক ইউনিয়ন গহন করা হয়, কাজাকিস্তান তার সদস্য ছিল। এই ইউনিয়ন তাদেরকে বৃহৎ রাশিয়ান জগতের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে সাহায্য করেছে। এই রাশিয়ান জগত বিশ্ব সভ্যতার একটা অংশ।”পুতিন এমনকি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে কাজাকিস্তান টিভি’র এক প্রশ্নের জবাবে বলে, ” আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, কাজাকিস্তান সত্যিকার অর্থেই সম্পূর্ণ রুশভাষী একটি দেশ।”উল্লেখ্য কাজাকিস্তানের প্রধান ভাষা রুশ। তবে যখনি রাশান ভাষা বাদ দিয়ে কাজাখ ভাষাকে দেশটির প্রধান ভাষা করার দাবি জানাও হয়েছে, তখনি রুশ জাতীয়তাবাদীরা করা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।তবে নূর সুলতান নাজারবায়েভ পুতিনের এই কাজাখ ইতিহাস অস্বীকার করে দেওয়া বক্তব্যের করা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এই নাজারবায়েভই কাজাকিস্তানের স্বাধীনতার স্থপতি, রাশিয়ার লেজুড়বৃত্তি করার কারিগরও সে। তবে এখন রাশিয়ার দুরভিসন্ধি কিছুটা আঁচ করতে পেরে হয়তো সে সরে আসতে চাচ্ছে। কাজাকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট কাশিম জোমার তোকায়েভও নাজারবায়েভের আস্থাভাজন। তবে নাজারবায়েভের মেয়ে দারোগা নাজায়ভাকে ধীরে ধীরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট কাশিম তোকায়েভের সাথে তার স্বার্থের টানাপড়েন শুরু হয়।
    পুতিন এই সুযোগ ভালভাবেই নিয়েছে।পেট্রোল-ডিজেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কাজাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আল-মাতিতে বিক্ষোভ শুরু হলে টা সারা দেশে ছড়িয়ে পরে এবং সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। বিক্ষোভের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তোকায়েভের প্রশাসন দেশের আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানকে গ্রেফতার করে। আর ঐ গোয়েন্দা-প্রধান ছিল সুলতান নজরভায়েভের ঘনিষ্ঠ।বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হয়ে একসময় প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ ‘সিএসটিও’ চুক্তির অধীনে রাশিয়ার সাহায্য চাইলে রুশ ও আর্মেনিয়ান সেনারা সেখানে আগ্রাসন চালায়। কাজাখ বিক্ষোভকারিদের উপর তাদের নির্বিচার গুলি বর্ষণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্ববাসী দেখেছে।
    এটাকে তাই কাজাকিস্তান দখলের ড্রাই প্র্যাকটিস হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকগণ।কাজাকিস্তানে সেনা মোতায়েনকে রাশিয়া নিরাপত্তা ইস্যু নয়, বরং আদর্শিক কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছে, এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কি সেই আদর্শিক কারণ?
    ইসলামি চিন্তাবিদগণ বলছেন, এই আদর্শ হল বৃহৎ রাশিয়ান জগতের ধারনার আদর্শ, এই আদর্শ হল সাবেক সোভিয়েত আমলের সীমায় ফিরে যাওয়ার আদর্শ।এখানে কাজাকিস্তানের দুশ্চিন্তার আরেকটি কারণ হচ্ছে, দেশটির জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ হল জাতিগত রুশ এবং এর প্রধান ভাষা রাশিয়ান ভাষা। মধ্য এশিয়ার অনন্য দেশেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রুশভাষী নাগরিক রয়েছে। এখন রাশিয়া যদি রুশভাষীদের রক্ষার কথা বলে ক্রিমিয়া ও ইউক্রেন দখল করতে পারে, তাহলে মধ্য এশিয়ার এই সাবেক সোভিয়েতভুক্ত মুসলিম প্রধান দেশগুলো দখল করতে তাকে ‘আদর্শিক কারণ’ দাড় করাতে বেগ পেতে হবে না। শেষাংশ : তালিবানের কাবুল বিজয়ের পরপরই রাশিয়া মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশ উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান ও তুর্কমেনিস্তানকে নিয়ে অনেকটা জোরপূর্বক সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে।গর্তে লুকিয়ে থাকা পুরনো সাপ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একে একে তারা মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়তো সেরেও ফেলে থাকতে পারে। আর মধ্য এশিয়ার এই মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে আগ্রাসন চালালে পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়া যে কতটুকু হবে, সেটা সাম্প্রতিক ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ইস্যুতে সিবিএস নিউজের একটি অনুষ্ঠানেই স্পষ্ট হয়েছে।
    সিবিএস নিউজের এক সাংবাদিক অনুষ্ঠানে দাবি করে যে, ‘ইউক্রেন একটি সভ্য ইউরোপীয় রাষ্ট্র, ইউক্রেন আফগানিস্তান বা ইরাক নয়।’মধ্য এশিয়া ও তৎসংলগ্ন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে তাই ভাবতে হবে, তারা কি সেই দানবের কোলেই নিশ্চিন্তে বসে থাকবে, যে দানব কিছুক্ষণ পরেই তাদেরকে গিলে খাবে! নাকি তারা সম্ভাবনাময় কোন উদীয়মান ইসলামিক রাষ্ট্রের শক্তিবৃদ্ধিতে সাহায্য করতে থাকবে, যে তাদেরকে হয়তো ঐ দানবের কবল থেকে রক্ষা করতে পারবে।
    লিখেছেন : আব্দুল্লাহ বিন নজর














    পূর্ববর্তী নিবন্ধইউক্রেন যুদ্ধ | মিডয়া ও পশ্চিমাদের ভণ্ডামি



    সম্পর্কিত নিবন্ধসমূহলেখক থেকে আরো


    সম্পাদকীয়
    অ্যামেরিকার চাপের নীতি ও হিন্দুস্তানের সম্ভাব্য যুদ্ধ : ফ্যাক্টর বাংলাদেশ





    সম্পাদকীয়
    মালি || সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের নতুন কবরস্তান





    সম্পাদকীয়
    অমুসলিমরা কখনোই তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হবে না!









    2 মন্তব্যসমূহ
    মন্তব্য করুন






    পরবর্তীতে কমেন্ট করার জন্য এই ব্রাউজারে আমার নাম, ইমেইল এবং ওয়েবসাইট সেভ করুন








    আজকের দিন-তারিখ
    • সোমবার (সকাল ১০:৪৬)
    • ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২
    • ২৬শে রজব, ১৪৪৩
    সর্বশেষ পোস্টসমূহ

    Last edited by tahsin muhammad; 03-10-2022, 08:49 PM.
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    মুসলিম রা ত মার খায় শুধু মাত্র জিহাদ ও খিলাফত বিমুখ থাকার জন্যই।এরা আফগান ইসলামিক ইমারতকে সাহায্য করবেনা। যখন মাইর খাবে তখন হা করে তাকিয়ে থাকবে ঃ আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে? হাস্যকর মুসলিম জাতি।
    Last edited by tahsin muhammad; 02-28-2022, 08:34 PM.

    Comment


    • #3
      অত্যান্ত উপকারী পোস্ট আলহামদু লিল্লাহ্‌। জাযাকাল্লাহু খাইরান।।

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা কলমে আরো জোর দান করুক। আমীন।
        আমাদেরও বেশ ভাবতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এ চিত্র থেকে সবক নেয়ার তৌফিক দান করেন। আমীন।

        Comment


        • #5
          তারা সামান্য ক্ষমতা বিস্তারের জন্য এমন ভয়াবহ আগ্রাসন চালাতে পারে আর মুসলিমরা আল্লাহর মহান আদর্শ বিস্তারের জন্য আগ্রাসন চালালে সেটা সন্ত্রাসবাদ হয়ে যায়। কত বড় বেইনসাফি কথা তারা বলে বেড়ায়।
          Last edited by tahsin muhammad; 03-10-2022, 07:21 PM.
          পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

          Comment


          • #6
            জাযাকাল্লাহু খাইরান
            Last edited by tahsin muhammad; 03-11-2022, 02:52 PM.

            Comment


            • #7
              এই সব ড্রাগন এবং দানবরা আল্লাহর শক্তির সামনে কিছুই না বরং জয় পরাজয় সর্বদা আল্লাহর সিদ্ধান্তে হয়ে থাকে। মুসলিমরা যদি পূর্নাঙ্গভাবে ইসলামী শরীয়তকে আঁকড়ে ধরে থাকতে পারে তাহলে বিজয় মুসলিমদের জন্য নির্ধারিত এবং এটির প্রমাণ‌ আমরা পিছনের ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টি দিলেও পেতে পারি।
              Last edited by tahsin muhammad; 03-10-2022, 07:24 PM.
              পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

              Comment


              • #8
                মা-শা-আল্ল-হ! খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা!

                লেখাটিতে অনেক বানানগত ভুল আছে, আশাকরি সেগুলো ঠিক করে দিলে পাঠকদের পড়ে আরো ভালো লাগবে।

                আল্লাহ তা'য়ালা আপনাদের মেহনত কবুল করুন, আমিন!
                Last edited by tahsin muhammad; 03-10-2022, 07:25 PM.
                হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

                Comment


                • #9
                  জাজাকাল্লাহ খাইরান আঁখি । অনেক সুন্দর লেখা লিখেছেন । কিন্তু লেখা ভিতরের অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলোর ব্যাপারে একটু সজাগ থাকলে ভালো হয় । কারণ এখানে কিছু কিছু ভুল এমনও রয়েছে যেগুলোর কারণে কিছু কিছু বাক্যে,কি বুঝানো হয়েছে তাই বুঝা যাচ্ছে না । আশা করি বুঝতে পেরেছেন । যদি কোনো ভুল অথবা বেয়াদবি হয়ে থাকে তবে ক্ষমা করে দিবেন । আফওয়ান ।

                  Comment


                  • #10
                    মাশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আপনার লেখায় আরো শক্তি দান করেন।

                    Comment

                    Working...
                    X