ভারতে ইতিমধ্যেই মুসলিমদের গণহত্যা শুরু হয়ে গেছে : গ্লোবাল সামিটে বিশেষজ্ঞরা
ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের চলমান মুসলিম বিদ্বেষী কার্যক্রমগুলোকে গণহত্যার প্রক্রিয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অনেক মুসলিম ও অমুসলিম বিশ্লেষক।
বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের নেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা ২৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ‘ইন্ডিয়া অন দ্য ব্রিঙ্ক: প্রিভেনটিং জেনোসাইড’ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য একত্রিত হয়েছেন।
কার্যত, ঐ তিন দিনের বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলনে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং গণহত্যা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে- যেহেতু গণহত্যা একটি প্রক্রিয়া এবং একবারের ঘটনা নয়, তাই বলা যেতে পারে যে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই হিন্দুত্ববাদীরা গণহত্যা শুরু করে দিয়েছে।
রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক অ্যাটর্নি গ্রেগ গর্ডন বলেছেন, “আমরা সম্প্রতি ভারতে [গণহত্যার জন্য] সরাসরি প্রকাশ্যে আহ্বান জানাতে দেখেছি। এমনকি শর্তসাপেক্ষে মুসলিমদের উপর হামলা চালানোর আহ্বানও শুনেছি যে, -‘যদি তারা এটি করে তবে আমরা তা করব’ – এটিও উসকানি।”
কম্বোডিয়ার জেনোসাইড ডকুমেন্টেশন সেন্টারের একজন গবেষক মং জার্নি বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, ভারত কেবল দ্বারপ্রান্তে নয়- বরং ইতিমধ্যেই একটি প্রকাশ্য গণহত্যার প্রক্রিয়ায় রয়েছে৷ হিন্দুত্ববাদী হত্যাকারীরা দুর্বল জনগোষ্ঠীকে তাদের ধর্মের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে চিত্রিত করেছে। যখন কোন দেশে এই মানবনির্মূলীকরণ শুরু হয়, তখন ঐ দেশ ইতিমধ্যেই গণহত্যা প্রক্রিয়ার গভীরে চলে যায়। যদিও পূর্ণ মাত্রায় হত্যাকাণ্ড শুরু হতে কিছুটা দেরী হতে পারে।”
মানবাধিকার অ্যাটর্নি মিতালি জৈন ভারতে ঘৃণাত্মক বক্তৃতা এবং ভুল তথ্যের মাত্রাকে “একটি গণহত্যামূলক চরিত্রের, মায়ানমার এবং ইথিওপিয়াতে যা দেখা গেছে তার মতোই” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও যোগ করেছেন, “আমরা ঘৃণাত্মক বক্তৃতা সম্পর্কে একটি সূক্ষ বোঝাপড়ার পক্ষে সমর্থন করি, যা সেই ধরনের বক্তৃতাকে বিবেচনা করে।”
শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজকদের দ্বারা জারি করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যাডামা ডিয়েং বলেছেন, “… কিন্তু বর্তমানে হিন্তুত্ববাদীদের মুসলিম বিদ্বেষ বেড়ে গণহত্যার রুপ নিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকারী দুই ভারতীয় সাংবাদিক – আলিশান জাফরি এবং কৌশিক রাজ – নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কীভাবে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা বেড়েছে- তা নিয়ে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের মন্ত্রীরা কোন ব্যবস্থা না নিয়েই গণহত্যার জন্য নিজেরাই এ জাতীয় আহ্বান জারি এবং সমর্থন করেছে।’
ক্রিস্টোফার টাকউড, সেন্টিনেল প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক, দুজনের কথার সাথে আরেকটু প্রসারিত করে বলেছেন, যে ভারতে গণহত্যা প্রতিরোধ করা কঠিন হবে, কারণ রাষ্ট্র নিজে এমন অপরাধ লিপ্ত এবং অন্যান্য অপরাধীদের সক্রিয়ভাবে রক্ষক।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির দর্শনের অধ্যাপক এবং হাউ ফ্যাসিজম ওয়ার্কসের লেখক জেসন স্ট্যানলি, ভারতে এখন যা ঘটছে তা নাৎসি জার্মানির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আরএসএসের উচ্চপদস্থ চিন্তাবিদরা স্পষ্ট পরামর্শ দিয়েছে যে, ‘ভারতের নাৎসি মডেল অনুসরণ করা উচিত’। যার জন্য এনআরসি “সিএএ এর মতো আইন করছে। মুসলমানদের কাছ থেকে অধিকার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়ার আন্দোলন চলছে।”
ভারতে গণহত্যার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান এখন ব্যাপক রূপ লাভ করেছে। অতি সম্প্রতি কর্ণাটকের এক কিশোর হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের সদস্য বলেছে যে, যারা হিজাব প্রচার করবে তাদের সবাইকে “শিবাজীর তরবারি দিয়ে কেটে ফেলা হবে।” এর আগে, হরিদ্বার ‘ধর্ম সংসদ’-এ, একাধিক হিন্দুত্ববাদী নেতা সমর্থকদের মুসলমানদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছিল।
তবে হিন্দুস্তানের মুসলিমদের জন্য আরো পরিতাপের বিষয় হল এই যে। প্রকাশ্য গণহত্যার আলামত শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের একদল ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা হিন্দুত্ববাদী ভারতের সাথে বন্ধুত্ব ও আনুগত্যের সবক দিচ্ছে। এই হিন্দুত্ববাদের উচ্ছিষ্টভোগী শ্রেণীটিকে পাশ কাটিয়ে তাই মুসলিমদেরকে হিন্দুত্ববাদী ঝড় মকাবেলায় সচেতন হওয়ার লাগাতার আহ্বান জানাচ্ছেন হক্কপন্থী উলামাগণ।
তথ্যসূত্র:
1. Process of Genocide Already Underway in India: Experts at Global Summit
ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের চলমান মুসলিম বিদ্বেষী কার্যক্রমগুলোকে গণহত্যার প্রক্রিয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অনেক মুসলিম ও অমুসলিম বিশ্লেষক।
বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের নেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা ২৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ‘ইন্ডিয়া অন দ্য ব্রিঙ্ক: প্রিভেনটিং জেনোসাইড’ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য একত্রিত হয়েছেন।
কার্যত, ঐ তিন দিনের বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলনে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং গণহত্যা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে- যেহেতু গণহত্যা একটি প্রক্রিয়া এবং একবারের ঘটনা নয়, তাই বলা যেতে পারে যে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই হিন্দুত্ববাদীরা গণহত্যা শুরু করে দিয়েছে।
রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক অ্যাটর্নি গ্রেগ গর্ডন বলেছেন, “আমরা সম্প্রতি ভারতে [গণহত্যার জন্য] সরাসরি প্রকাশ্যে আহ্বান জানাতে দেখেছি। এমনকি শর্তসাপেক্ষে মুসলিমদের উপর হামলা চালানোর আহ্বানও শুনেছি যে, -‘যদি তারা এটি করে তবে আমরা তা করব’ – এটিও উসকানি।”
কম্বোডিয়ার জেনোসাইড ডকুমেন্টেশন সেন্টারের একজন গবেষক মং জার্নি বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, ভারত কেবল দ্বারপ্রান্তে নয়- বরং ইতিমধ্যেই একটি প্রকাশ্য গণহত্যার প্রক্রিয়ায় রয়েছে৷ হিন্দুত্ববাদী হত্যাকারীরা দুর্বল জনগোষ্ঠীকে তাদের ধর্মের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে চিত্রিত করেছে। যখন কোন দেশে এই মানবনির্মূলীকরণ শুরু হয়, তখন ঐ দেশ ইতিমধ্যেই গণহত্যা প্রক্রিয়ার গভীরে চলে যায়। যদিও পূর্ণ মাত্রায় হত্যাকাণ্ড শুরু হতে কিছুটা দেরী হতে পারে।”
মানবাধিকার অ্যাটর্নি মিতালি জৈন ভারতে ঘৃণাত্মক বক্তৃতা এবং ভুল তথ্যের মাত্রাকে “একটি গণহত্যামূলক চরিত্রের, মায়ানমার এবং ইথিওপিয়াতে যা দেখা গেছে তার মতোই” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও যোগ করেছেন, “আমরা ঘৃণাত্মক বক্তৃতা সম্পর্কে একটি সূক্ষ বোঝাপড়ার পক্ষে সমর্থন করি, যা সেই ধরনের বক্তৃতাকে বিবেচনা করে।”
শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজকদের দ্বারা জারি করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যাডামা ডিয়েং বলেছেন, “… কিন্তু বর্তমানে হিন্তুত্ববাদীদের মুসলিম বিদ্বেষ বেড়ে গণহত্যার রুপ নিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকারী দুই ভারতীয় সাংবাদিক – আলিশান জাফরি এবং কৌশিক রাজ – নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কীভাবে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা বেড়েছে- তা নিয়ে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের মন্ত্রীরা কোন ব্যবস্থা না নিয়েই গণহত্যার জন্য নিজেরাই এ জাতীয় আহ্বান জারি এবং সমর্থন করেছে।’
ক্রিস্টোফার টাকউড, সেন্টিনেল প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক, দুজনের কথার সাথে আরেকটু প্রসারিত করে বলেছেন, যে ভারতে গণহত্যা প্রতিরোধ করা কঠিন হবে, কারণ রাষ্ট্র নিজে এমন অপরাধ লিপ্ত এবং অন্যান্য অপরাধীদের সক্রিয়ভাবে রক্ষক।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির দর্শনের অধ্যাপক এবং হাউ ফ্যাসিজম ওয়ার্কসের লেখক জেসন স্ট্যানলি, ভারতে এখন যা ঘটছে তা নাৎসি জার্মানির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আরএসএসের উচ্চপদস্থ চিন্তাবিদরা স্পষ্ট পরামর্শ দিয়েছে যে, ‘ভারতের নাৎসি মডেল অনুসরণ করা উচিত’। যার জন্য এনআরসি “সিএএ এর মতো আইন করছে। মুসলমানদের কাছ থেকে অধিকার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়ার আন্দোলন চলছে।”
ভারতে গণহত্যার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান এখন ব্যাপক রূপ লাভ করেছে। অতি সম্প্রতি কর্ণাটকের এক কিশোর হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের সদস্য বলেছে যে, যারা হিজাব প্রচার করবে তাদের সবাইকে “শিবাজীর তরবারি দিয়ে কেটে ফেলা হবে।” এর আগে, হরিদ্বার ‘ধর্ম সংসদ’-এ, একাধিক হিন্দুত্ববাদী নেতা সমর্থকদের মুসলমানদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছিল।
তবে হিন্দুস্তানের মুসলিমদের জন্য আরো পরিতাপের বিষয় হল এই যে। প্রকাশ্য গণহত্যার আলামত শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের একদল ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা হিন্দুত্ববাদী ভারতের সাথে বন্ধুত্ব ও আনুগত্যের সবক দিচ্ছে। এই হিন্দুত্ববাদের উচ্ছিষ্টভোগী শ্রেণীটিকে পাশ কাটিয়ে তাই মুসলিমদেরকে হিন্দুত্ববাদী ঝড় মকাবেলায় সচেতন হওয়ার লাগাতার আহ্বান জানাচ্ছেন হক্কপন্থী উলামাগণ।
তথ্যসূত্র:
1. Process of Genocide Already Underway in India: Experts at Global Summit
Comment