উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য ভারত : যেখানে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়েও পার পাওয়া যায় সহজেই
ভারতে সম্প্রতি ১০ এপ্রিলে হিন্দুদের রাম নবমীসহ তার আগের বেশ কয়েকদিন ধরেই একের পর এক মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও জিঘাংসার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে এই সত্য আবারো প্রমাণিত হয়েছে যে, গণতন্ত্রের মুখোশ পরা হিন্দুত্ববাদী ভারতে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়েও হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের মদদে সহজেই পার পাওয়া যায়।
রাম নবমীকে কেন্দ্র করে হিন্দুত্ববাদীরা চরম ঘৃণাসূচক বিবৃতি দিয়েছে। কয়েকটি রাজ্যে মুসলিমদের উপর সহিংসতা পর্যন্ত হয়েছে। মুসলিমরা খুন হয়েছে, আহত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুটপাট হয়েছে।
দক্ষিণের হায়দ্রাবাদ শহরে, কট্টর হিন্দু দল বিজেপির একজন এমপি- যাকে ২০২০ সালে ঘৃণা ছড়ানোর দায়ে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা হয়-সে নিজের গলায় একটি গান গেয়েছে। সেই গানের কথা ছিল- 'যে যারা হিন্দু দেবতা রামের নাম করবে না, তাকে ভারত থেকে বের করে দেয়া হবে।'
তার কয়েকদিন আগে, অনলাইনে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একজন হিন্দু ধর্মগুরু প্রকাশ্যে মুসলিম নারীদের অপহরণ এবং ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে।
প্রায় একই সময়ে আরেক বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী ধর্মগুরু জ্যোতি নরসিংহানান্দ রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়। সেই ভাষণে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার ডাক দেয় সে। এই গুরু এর আগেও মুসলিমদের বিরদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ তুলে এমন ঘৃণা ছড়িয়েছিল। তারপরও ওই গুরুর বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন।
ভারতে অনেক দিন ধরেই প্রকাশ্যে এমন মুসলিম বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বিবৃতি দেয়ার রীতি চালু হয়েছে।
১৯৯০ সালে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা লাল-কৃষ্ণ আদভানি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ চত্বরে রাম মন্দির নির্মাণের আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল। তার পরে দলবদ্ধ হিন্দুরা কয়েক শ’ বছরের পুরনো মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয় যার পরিণতিতে ব্যাপক হিন্দু-মুসলিম প্রগরম শুরু হয়ে যায়।
‘আগে সাধারণত নির্বাচনের আগে এসব ঘৃণাসূচক কথাবার্তা শোনা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো ও বক্তব্য বিবৃতি দেয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। ঘৃণাসূচক বক্তব্য বিবৃতির ‘বিরতিহীন বিস্তার ঘটছে।’
টিভি নিউজ চ্যানেল এনডিটিভি ২০০৯ সালে ‘ভিআইপি হেট স্পিচ' নামে একটি কর্মসূচি নেয় যেখানে তারা বড় বড় রাজনীতিক, মন্ত্রী-এমপিদের ঘৃণাসূচক বক্তব্য-বিবৃতির ওপর নজর রাখা হয়। জানুয়ারি মাসে এনডিটিভি জানায়, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রবণতা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
বেশ কজন শীর্ষ বিজেপি নেতা-যাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও রয়েছে- এরা সবাই মুসলিম বিদ্বেষমূলক বিবৃতি দিয়েও সহজে পার পেয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে ভারতে কথিত আইন রয়েছে। মুসলিমদের নিয়ে ঘৃণা ছড়ানোর কারণে সেই আইনের প্রয়োগ করা হয় না।
ঘৃণা ছড়ানোর কিছু মামলাও মাঝে মধ্যেই আদালতে আসে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী আদালত মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে হিন্দুদেরকে যা ইছা তাই বলার অনুমতি দেয়, আর মুসলিমদের বেলায় মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরে পর বছর কারাগারে নির্যাতন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন ঘৃণা ছড়ানোর প্রবণতা সমাজে যখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়, তার পরিণতি ভয়াবহ। আর এই ব্যাপারে ইতিপূর্বেই ডঃ উইলিয়াম স্ট্যান্টন সহ অন্যান্য গণহত্যা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভারতে ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র পরিসরে মুসলিম গণহত্যা শুরু হয়ে গেছে; এবং যেকোনো সময় সেটা ব্যাপক আকার ধারন করতে পারে।
ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রুপকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে এবং সাধারণ হিন্দুদের মাঝেও মুসলিমবিদ্বেষ ও জিঘাংসা উস্কে দিতে এই উগ্র নেতাদের ঘৃণাসূচক বক্তব্য-বিবৃতির অবদানই যে সবচেয়ে বেশি, এই ব্যাপারে একমত প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকগণ।
আর মুসলিমদেরকেও এমন পরিস্থিতিটে এখন শুধুই নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যপারে ফিকির করতে বলেছেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
ভারতে সম্প্রতি ১০ এপ্রিলে হিন্দুদের রাম নবমীসহ তার আগের বেশ কয়েকদিন ধরেই একের পর এক মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও জিঘাংসার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে এই সত্য আবারো প্রমাণিত হয়েছে যে, গণতন্ত্রের মুখোশ পরা হিন্দুত্ববাদী ভারতে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়েও হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের মদদে সহজেই পার পাওয়া যায়।
রাম নবমীকে কেন্দ্র করে হিন্দুত্ববাদীরা চরম ঘৃণাসূচক বিবৃতি দিয়েছে। কয়েকটি রাজ্যে মুসলিমদের উপর সহিংসতা পর্যন্ত হয়েছে। মুসলিমরা খুন হয়েছে, আহত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুটপাট হয়েছে।
দক্ষিণের হায়দ্রাবাদ শহরে, কট্টর হিন্দু দল বিজেপির একজন এমপি- যাকে ২০২০ সালে ঘৃণা ছড়ানোর দায়ে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা হয়-সে নিজের গলায় একটি গান গেয়েছে। সেই গানের কথা ছিল- 'যে যারা হিন্দু দেবতা রামের নাম করবে না, তাকে ভারত থেকে বের করে দেয়া হবে।'
তার কয়েকদিন আগে, অনলাইনে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একজন হিন্দু ধর্মগুরু প্রকাশ্যে মুসলিম নারীদের অপহরণ এবং ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে।
প্রায় একই সময়ে আরেক বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী ধর্মগুরু জ্যোতি নরসিংহানান্দ রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়। সেই ভাষণে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার ডাক দেয় সে। এই গুরু এর আগেও মুসলিমদের বিরদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ তুলে এমন ঘৃণা ছড়িয়েছিল। তারপরও ওই গুরুর বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন।
ভারতে অনেক দিন ধরেই প্রকাশ্যে এমন মুসলিম বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বিবৃতি দেয়ার রীতি চালু হয়েছে।
১৯৯০ সালে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা লাল-কৃষ্ণ আদভানি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ চত্বরে রাম মন্দির নির্মাণের আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল। তার পরে দলবদ্ধ হিন্দুরা কয়েক শ’ বছরের পুরনো মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয় যার পরিণতিতে ব্যাপক হিন্দু-মুসলিম প্রগরম শুরু হয়ে যায়।
‘আগে সাধারণত নির্বাচনের আগে এসব ঘৃণাসূচক কথাবার্তা শোনা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো ও বক্তব্য বিবৃতি দেয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। ঘৃণাসূচক বক্তব্য বিবৃতির ‘বিরতিহীন বিস্তার ঘটছে।’
টিভি নিউজ চ্যানেল এনডিটিভি ২০০৯ সালে ‘ভিআইপি হেট স্পিচ' নামে একটি কর্মসূচি নেয় যেখানে তারা বড় বড় রাজনীতিক, মন্ত্রী-এমপিদের ঘৃণাসূচক বক্তব্য-বিবৃতির ওপর নজর রাখা হয়। জানুয়ারি মাসে এনডিটিভি জানায়, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রবণতা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
বেশ কজন শীর্ষ বিজেপি নেতা-যাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও রয়েছে- এরা সবাই মুসলিম বিদ্বেষমূলক বিবৃতি দিয়েও সহজে পার পেয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে ভারতে কথিত আইন রয়েছে। মুসলিমদের নিয়ে ঘৃণা ছড়ানোর কারণে সেই আইনের প্রয়োগ করা হয় না।
ঘৃণা ছড়ানোর কিছু মামলাও মাঝে মধ্যেই আদালতে আসে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী আদালত মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে হিন্দুদেরকে যা ইছা তাই বলার অনুমতি দেয়, আর মুসলিমদের বেলায় মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরে পর বছর কারাগারে নির্যাতন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন ঘৃণা ছড়ানোর প্রবণতা সমাজে যখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়, তার পরিণতি ভয়াবহ। আর এই ব্যাপারে ইতিপূর্বেই ডঃ উইলিয়াম স্ট্যান্টন সহ অন্যান্য গণহত্যা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভারতে ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র পরিসরে মুসলিম গণহত্যা শুরু হয়ে গেছে; এবং যেকোনো সময় সেটা ব্যাপক আকার ধারন করতে পারে।
ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রুপকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে এবং সাধারণ হিন্দুদের মাঝেও মুসলিমবিদ্বেষ ও জিঘাংসা উস্কে দিতে এই উগ্র নেতাদের ঘৃণাসূচক বক্তব্য-বিবৃতির অবদানই যে সবচেয়ে বেশি, এই ব্যাপারে একমত প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকগণ।
আর মুসলিমদেরকেও এমন পরিস্থিতিটে এখন শুধুই নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যপারে ফিকির করতে বলেছেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
প্রতিবেদক : উসামা মাহমুদ
তথ্যসূত্র :
১। Karauli, Rajasthan: During Shobha Yatra on hindu new year, heavy stone pelting lead injuries to many. Houses and Shops were burnt.
– https://tinyurl.com/yckknp2k
২। হামলার ভিডিও
– https://tinyurl.com/4kk75ayw
৩। এবার দিল্লিতে হিন্দুদের সাধু সম্মেলনে আবারও উস্কানি মূলক বক্তব্য দিয়েছে কুখ্যাত সাধু নরসিংহানন্দ
– https://tinyurl.com/rdb96vuf
৪। UP: Hindu monk on loudspeaker in police presence says “will rape Muslim women in open”
– https://tinyurl.com/4yzf2sws
video link:
– https://tinyurl.com/2p923kun
৫। Hindutva speech during Ram Navami rally
- https://tinyurl.com/mry6x3wd
৬। ভারতে কেন সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়িয়ে পার পাওয়া যায়
- https://tinyurl.com/2k23sjxn
Comment