হিন্দু রাষ্ট্র সম্মেলনে মুসলিমদের ‘ক্যান্সার’ আখ্যা ও ঘরে ঢুকে হত্যার হুমকি
ভারতের চারিদিকে শুধুই মুসলিম বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে, চলছে মুসলিম গণহত্যার চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আর সেই আগুনে নিয়মিত ঘি ঢেলে যাচ্ছে সাধু সন্ন্যাসীর নামধারী উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসী ধর্মগুরু ও হিন্দুত্ববাদী নেতা নেত্রীরা।
তারই ধারাবহিকতায় এবার বেঙ্গালুরুতে ‘বেঙ্গালুরু হিন্দু রাষ্ট্র সম্মেলনে’র মুসলিম বিদ্বেষী আয়োজন করে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী। সেখানে ৩০০ জনেরও বেশি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী জমায়েত হয়। শহরের রাজাজিনগর পাড়ায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন জনজাগৃতি এটির আয়োজন করে।
আয়োজকদের মতে, সম্মেলনের উদ্দেশ্য হল খুব সহজে – ভারতকে একটি ‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ পরিণত করার বিষয়ে পরিকল্পনা করা।
হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির কর্ণাটকের মুখপাত্র ও সংগঠক-মোহন গৌড়া বলেছে, “তারা (মুসলিমরা) আমাদের দেশকে রোগের মতো গ্রাস করছে। সে হিন্দুদের ক্ষেপিয়ে তুলতে মিথ্যে তথ্য দিয়ে বলেছে, একটি হিন্দু শিশুর বিপরীতে পাঁচটি মুসলিম শিশু রয়েছে। তবুও মুসলমানরা সংখ্যালঘু। এই কারণেই আমরা এই সভার আয়োজন করেছি মানুষকে সচেতন করতে যে আমাদের একটি হিন্দু রাষ্ট্র দরকার।
হিন্দু রাষ্ট্র বলতে সে কী বোঝাতে চাচ্ছে- জানতে চাইলে গৌড়া হেসে বলেছে, “এটা কি স্পষ্ট নয়? যেখানে শুধু হিন্দুরাই থাকে।”
উল্লেখ্য, ভারতে জনসংখ্যার মাত্র ১৪% মুসলিম। সে হিসেবে একটি হিন্দু শিশুর বিপরীতে পাঁচটি মুসলিম শিশু পাওয়া যাওয়া তো দূরের কথা পাঁচটি হিন্দু শিশুর বিপরীতেও একটি মুসলিম শিশু পাওয়া যাবে না।
আরেক উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজকুমার, একজন প্রাক্তন সাংবাদিক যে এখন কন্নড় নিউজ চ্যানেলগুলিতে বিতর্কে উপস্থিত হয় এবং নিয়মিতভাবে মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করে।
সে বলেছে, “আমরা এত বছর ধরে মুসলমানদের তাদের বিশ্বাস অনুশীলন করতে দিয়েছি। তারা আমাদের সহৃদয়তার সুযোগ নিয়ে যেখানে খুশি সেখানে মসজিদ নির্মাণ ও নামাজ পড়তে দিয়েছে। এখন, আমরা তাদের লাউডস্পিকার অপসারণ করতে বলেছি কারণ এটি হিন্দুদের বিরক্ত করতে শুরু করেছে।
সে সবাইকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মতো হতে অনুরোধ করে। কারণ হিন্দুত্ববাদী যোগী সম্প্রতি মসজিদে লাউডস্পিকারের উপর ক্র্যাক ডাউন করেছে। বহু মসজিদ থেকে মাইক নামিয়ে নিয়েছে। যোগী আরো বলেছে, যদি কর্ণাটকের মসজিদগুলি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের লাউডস্পিকার না সরিয়ে দেয়, তাহলে আমাদের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে যতক্ষণ না তারা বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য, ঐ মুসলিম বিদ্বেষী অনুষ্ঠানের বক্তাদের মধ্যে ছিল মোহন গৌড়া, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির রাজ্য মুখপাত্র। এস ভাস্করন, বিশ্ব সনাতন পরিষদ। জি এম নটরাজ, কর্ণাটক হাইকোর্টের আইনজীবীর মতো হিন্দুত্ববাদী নেতারা।
আইনজীবী জিএম নটরাজ মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার বিষয়ে আইনগতভাবে কীভাবে যেতে পারে সে সম্পর্কে কথা বলেছে। সে তার বক্তৃতা শুরু করেছে দেশের বিভিন্ন শব্দ দূষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার কথিত আইন তুলে ধরে। সে বলেছে, মসজিদের লাউডস্পিকার ওই সব আইন লঙ্ঘন করে।
তার ভাষায়,- “মুসলিমরা পাল্টা বলে যে তারা এটি মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য ব্যবহার করে। তবে এটা শুধু নামাযের আযান নয়। এটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য মসজিদ থেকে জাগ্রতকরণ এবং নামায় আদায় করার আহ্বান। এবং এই সংকল্প করা যে তারা অন্যদের হত্যা করবে। এমন ডাক শুনলে হিন্দুরা ভয় পেয়ে যায়। মসজিদের আশেপাশে জোরে আযান দেওয়ার সময় হিন্দু পরিবারগুলোর বুক ধড়ফড় করে এবং আতঙ্কিত হয়। কারণ তারা জানে যে এটি মুসলমানদের হিন্দুদের হত্যা করতে বলছে। এটা কি মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানি নয়?
নটরাজ তখন দর্শকদের জানায় যে তারা কীভাবে মসজিদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করতে পারে। “প্রথমে আপনার প্রতিটি এলাকার সব মসজিদের তালিকা তৈরি করুন। এই তালিকাটি নিয়ে থানায় যান এবং তাদের জিজ্ঞাসা করুন যে মসজিদগুলি লাউডস্পিকার স্থাপনের অনুমতি নিয়েছে কিনা। পুলিশ আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নেবে। আর আপনাকে আপনার অবস্থানে দাঁড়াতে হবে। উচ্চস্বরে এবং আত্মবিশ্বাসী হোন এবং তাদের বলুন কিভাবে মসজিদের লাউডস্পিকার শব্দ দূষণের নিয়ম লঙ্ঘন করে। আপনার এলাকার মসজিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের না করা পর্যন্ত থানা ছেড়ে যাবেন না। যদি প্রয়োজন হয়, পুলিশকে মসজিদে নিয়ে যান এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের অনুমতি আছে কি না?”
একজন সদস্য উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলেন, “ঘর মে ঘুসকে মারেঙ্গে, এক ভি মুল্লে কো নাহি ছাড়েঙ্গে” (আমরা তাদের ঘরে ঢুকে মারব, একজন মুসলমানকেও ছাড়ব না।)
এভাবেই প্রকাশ্যে মুসলিম নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে উগ্র হিন্দু নেতারা মুসলিম গণহত্যা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত ধপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা তাই বলছেন, মুসলিমরা যদি এখনো সচেতন না হোন, কিংবা নিজেদের জান-মাল-ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতের ফিকির শুরু না করেন, তাহলে হয়তো তাদের জন্য অপেক্ষা করছে রক্তাক্ত এক নিকট ভবিষ্যৎ।
প্রতিবেদক : উসামা মাহমুদ
তথ্যসূত্র
——-
1. “Muslims Are Cancer”: Witnessing A Hindu Rashtra Convention In Bengaluru
– https://tinyurl.com/y5s27fa7
2. Suresh Chavhanke Administers Oath to Make India ‘Hindu Rashtra’, BJP MLA Present
– https://tinyurl.com/4kz8b269
3. CM Yogi Adityanath’s group took pledge to convert India into a Hindu Rashtra.
– https://tinyurl.com/23sk522e
4. “A nation was created for them [Muslims] on the basis of religion, go and live there, this nation [India] belongs to Hindus.” – Says BJP parliamentarian Sadhvi Pragya,
– https://tinyurl.com/3fsmbd2s
ভারতের চারিদিকে শুধুই মুসলিম বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে, চলছে মুসলিম গণহত্যার চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আর সেই আগুনে নিয়মিত ঘি ঢেলে যাচ্ছে সাধু সন্ন্যাসীর নামধারী উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসী ধর্মগুরু ও হিন্দুত্ববাদী নেতা নেত্রীরা।
তারই ধারাবহিকতায় এবার বেঙ্গালুরুতে ‘বেঙ্গালুরু হিন্দু রাষ্ট্র সম্মেলনে’র মুসলিম বিদ্বেষী আয়োজন করে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী। সেখানে ৩০০ জনেরও বেশি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী জমায়েত হয়। শহরের রাজাজিনগর পাড়ায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন জনজাগৃতি এটির আয়োজন করে।
আয়োজকদের মতে, সম্মেলনের উদ্দেশ্য হল খুব সহজে – ভারতকে একটি ‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ পরিণত করার বিষয়ে পরিকল্পনা করা।
হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির কর্ণাটকের মুখপাত্র ও সংগঠক-মোহন গৌড়া বলেছে, “তারা (মুসলিমরা) আমাদের দেশকে রোগের মতো গ্রাস করছে। সে হিন্দুদের ক্ষেপিয়ে তুলতে মিথ্যে তথ্য দিয়ে বলেছে, একটি হিন্দু শিশুর বিপরীতে পাঁচটি মুসলিম শিশু রয়েছে। তবুও মুসলমানরা সংখ্যালঘু। এই কারণেই আমরা এই সভার আয়োজন করেছি মানুষকে সচেতন করতে যে আমাদের একটি হিন্দু রাষ্ট্র দরকার।
হিন্দু রাষ্ট্র বলতে সে কী বোঝাতে চাচ্ছে- জানতে চাইলে গৌড়া হেসে বলেছে, “এটা কি স্পষ্ট নয়? যেখানে শুধু হিন্দুরাই থাকে।”
উল্লেখ্য, ভারতে জনসংখ্যার মাত্র ১৪% মুসলিম। সে হিসেবে একটি হিন্দু শিশুর বিপরীতে পাঁচটি মুসলিম শিশু পাওয়া যাওয়া তো দূরের কথা পাঁচটি হিন্দু শিশুর বিপরীতেও একটি মুসলিম শিশু পাওয়া যাবে না।
আরেক উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজকুমার, একজন প্রাক্তন সাংবাদিক যে এখন কন্নড় নিউজ চ্যানেলগুলিতে বিতর্কে উপস্থিত হয় এবং নিয়মিতভাবে মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করে।
সে বলেছে, “আমরা এত বছর ধরে মুসলমানদের তাদের বিশ্বাস অনুশীলন করতে দিয়েছি। তারা আমাদের সহৃদয়তার সুযোগ নিয়ে যেখানে খুশি সেখানে মসজিদ নির্মাণ ও নামাজ পড়তে দিয়েছে। এখন, আমরা তাদের লাউডস্পিকার অপসারণ করতে বলেছি কারণ এটি হিন্দুদের বিরক্ত করতে শুরু করেছে।
সে সবাইকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মতো হতে অনুরোধ করে। কারণ হিন্দুত্ববাদী যোগী সম্প্রতি মসজিদে লাউডস্পিকারের উপর ক্র্যাক ডাউন করেছে। বহু মসজিদ থেকে মাইক নামিয়ে নিয়েছে। যোগী আরো বলেছে, যদি কর্ণাটকের মসজিদগুলি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের লাউডস্পিকার না সরিয়ে দেয়, তাহলে আমাদের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে যতক্ষণ না তারা বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য, ঐ মুসলিম বিদ্বেষী অনুষ্ঠানের বক্তাদের মধ্যে ছিল মোহন গৌড়া, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির রাজ্য মুখপাত্র। এস ভাস্করন, বিশ্ব সনাতন পরিষদ। জি এম নটরাজ, কর্ণাটক হাইকোর্টের আইনজীবীর মতো হিন্দুত্ববাদী নেতারা।
আইনজীবী জিএম নটরাজ মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার বিষয়ে আইনগতভাবে কীভাবে যেতে পারে সে সম্পর্কে কথা বলেছে। সে তার বক্তৃতা শুরু করেছে দেশের বিভিন্ন শব্দ দূষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার কথিত আইন তুলে ধরে। সে বলেছে, মসজিদের লাউডস্পিকার ওই সব আইন লঙ্ঘন করে।
তার ভাষায়,- “মুসলিমরা পাল্টা বলে যে তারা এটি মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য ব্যবহার করে। তবে এটা শুধু নামাযের আযান নয়। এটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য মসজিদ থেকে জাগ্রতকরণ এবং নামায় আদায় করার আহ্বান। এবং এই সংকল্প করা যে তারা অন্যদের হত্যা করবে। এমন ডাক শুনলে হিন্দুরা ভয় পেয়ে যায়। মসজিদের আশেপাশে জোরে আযান দেওয়ার সময় হিন্দু পরিবারগুলোর বুক ধড়ফড় করে এবং আতঙ্কিত হয়। কারণ তারা জানে যে এটি মুসলমানদের হিন্দুদের হত্যা করতে বলছে। এটা কি মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানি নয়?
নটরাজ তখন দর্শকদের জানায় যে তারা কীভাবে মসজিদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করতে পারে। “প্রথমে আপনার প্রতিটি এলাকার সব মসজিদের তালিকা তৈরি করুন। এই তালিকাটি নিয়ে থানায় যান এবং তাদের জিজ্ঞাসা করুন যে মসজিদগুলি লাউডস্পিকার স্থাপনের অনুমতি নিয়েছে কিনা। পুলিশ আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নেবে। আর আপনাকে আপনার অবস্থানে দাঁড়াতে হবে। উচ্চস্বরে এবং আত্মবিশ্বাসী হোন এবং তাদের বলুন কিভাবে মসজিদের লাউডস্পিকার শব্দ দূষণের নিয়ম লঙ্ঘন করে। আপনার এলাকার মসজিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের না করা পর্যন্ত থানা ছেড়ে যাবেন না। যদি প্রয়োজন হয়, পুলিশকে মসজিদে নিয়ে যান এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের অনুমতি আছে কি না?”
একজন সদস্য উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলেন, “ঘর মে ঘুসকে মারেঙ্গে, এক ভি মুল্লে কো নাহি ছাড়েঙ্গে” (আমরা তাদের ঘরে ঢুকে মারব, একজন মুসলমানকেও ছাড়ব না।)
এভাবেই প্রকাশ্যে মুসলিম নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে উগ্র হিন্দু নেতারা মুসলিম গণহত্যা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত ধপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা তাই বলছেন, মুসলিমরা যদি এখনো সচেতন না হোন, কিংবা নিজেদের জান-মাল-ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতের ফিকির শুরু না করেন, তাহলে হয়তো তাদের জন্য অপেক্ষা করছে রক্তাক্ত এক নিকট ভবিষ্যৎ।
প্রতিবেদক : উসামা মাহমুদ
তথ্যসূত্র
——-
1. “Muslims Are Cancer”: Witnessing A Hindu Rashtra Convention In Bengaluru
– https://tinyurl.com/y5s27fa7
2. Suresh Chavhanke Administers Oath to Make India ‘Hindu Rashtra’, BJP MLA Present
– https://tinyurl.com/4kz8b269
3. CM Yogi Adityanath’s group took pledge to convert India into a Hindu Rashtra.
– https://tinyurl.com/23sk522e
4. “A nation was created for them [Muslims] on the basis of religion, go and live there, this nation [India] belongs to Hindus.” – Says BJP parliamentarian Sadhvi Pragya,
– https://tinyurl.com/3fsmbd2s