শুক্রবার ও জুমুআ’র নামায নিয়ে ইসলাম-বিদ্বেষী দম্পতির বেফাঁস মন্তব্য : মুসলিম ভূখণ্ডে নাস্তিক্যবাদীদের আস্বফালন
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ভূখণ্ডে দাঁড়িয়ে মুসলিমদের পবিত্র জুমার দিনকে অবমাননা করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের এদেশীয় দালালেরা। এবার প্রকাশ্যে ইসলামের বিধান জুমার নামাজকে কটাক্ষ করে দৃষ্ঠতা দেখিয়েছে অধ্যাপক রতন সিদ্দিকি। সে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করে যে, ‘আমাদের জীবন থেকে শুক্রবারটা বেহাত (হাতছাড়া) হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার আর আমাদের নেই।’ এটা নাকি সে ভাল করেই বুঝতে পেরেছে।
রতন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রগতি (নাস্তিক্যবাদী) লেখক সংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর এদেশে উদীচী’র ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন মহল সম্পূর্ণ অবগত। তাঁরা সংস্কৃতি ও প্রগতির নামে এদেশে বহুকাল ধরে হিন্দুত্ববাদের হাতকে শক্তিশালী করার কাজ করে আসছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে তারা ইসলাম-বিদ্বেষের বীজ বপন করার কাজ খুব নিষ্ঠার সাথেই করে আসছে।
রতনীর স্ত্রী আবার উত্তরায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি। ঘাদানিক-কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই; কথিত স্বাধীনতার অসাম্প্রদায়িক চেতনার নামে তারা এই দেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিম নির্মূলের ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছে কোন রাখঢাক না রেখেই।
ঘটনার সূত্রপাত :
গত ১ জুলাই রাজধানী উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরের ৬/এ নং সড়কের কাছে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মুসল্লীদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে রতন সিদ্দিকি ও মুসল্লীদের একজন। গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে শুরু হয় এ ঘটনা।
উক্ত সময় মসজিদের পাশে নিজ বাসায় ফিরছিল রতন সিদ্দিকি ও তার স্ত্রী, মুসল্লিরা তখন নামাজরত ছিলেন। রতন সিদ্দিকি ইচ্ছে করেই কয়েকটি হর্ণ বাজায়; এটি রতনের কথা থেকেই বুঝা যায়। সে দাবি করেছে যে সে ২ টা হর্ণ দিয়েছে। একজন মুসল্লী এর প্রতিবাদ জানালে রতন সিদ্দিকির স্ত্রী চরম দৃষ্ঠতা প্রদর্শন করে বলে, “এখানে নামাজের নামে ভণ্ডামি হয়।”
নামাজরত কয়েকজন মুসল্লী স্পষ্ট এ কথা শুনতে পেয়ে নামাজ শেষে তাদেরকে জিজ্ঞেস করে- কেন তারা নামাজকে কটাক্ষ করেছে। এঘটনায় মুসল্লী ও রতন দম্পতির মধ্যে বাকবিতন্ডা চলতে থাকে। শেষে মুসল্লীরা তার স্ত্রীকে নামাজ নিয়ে কটাক্ষ করায় ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু রতন সিদ্দিকি তার স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে গেইট তালা লাগিয়ে দেয়। এবং দাবি করে যে তার স্ত্রী নামাজ নিয়ে কোন কথা বলেনি, তাই তার স্ত্রী মাফ চাইবে না।
এ ঘটনায় মুসল্লীরা প্রতিবাদ জানায়। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে যথারীতি মুসল্লীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরবর্তীতে রতন সিদ্দিকি অজ্ঞাতনামা ৪০০ মুসল্লীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এ ঘটনায় দেশের বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী শক্তি নানাভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে হিন্দুত্ববাদী নীতি দেশে চাপিয়ে দিতে চাইছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ দেশ মৌলবাদীদের হাতে নিরাপদ নয়, দেশকে আবার স্বাধীন করতে হবে অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদী ভারতের গোলামে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু এরা জুমুআ’র নামাজ নিয়ে একটা হট্টগোল তৈরি করে ভারতের মত এদেশেও খোলা জায়গায় নামাজ বন্ধ করার পায়তারা করছে কি না- সে প্রশ্ন এখন করা জরুরী। এই হট্টগোল সৃষ্টি করে তারা কি এদেশে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের অগ্রবাহিনী হিসেবেই কাজ করছে কি না – সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
এই বামপন্থীরা সব সময় ডবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি অনুসরণ করে চলে। তারা সবসময় নিজেদের তথাকথিত বাকস্বাধীনতার কথা বলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের হুকুম আহকাম নিয়ে কটুক্তি করে৷ এগুলোকে তারা বাকস্বাধীনতা বলে প্রচার করে। কিন্তু হাসিনা-খালেদা, মুজিব-জিয়াকে নিয়ে কিছু বললে জেলে পুরে দেয়। ইসলামের হক্ক কথা বললে, বা তাদের মুনিবদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কিছু বললে রাষ্ট্র-দ্রোহীতা বলে আলেম-উলামা ও ইসলামপ্রিয় সাধারণ মুসলিমদেরকে বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখে বিনা বিচারে। তাদের কাছে ইসলামকে নিয়ে কটুক্তি করা কোন অপরাধ নয় – এমনই জঘন্য তাদের ডবল স্ট্যান্ডার্ড, তাদের দ্বিচারিতা।
শুক্রবার ও জুমুআ’র নামাজ নিয়ে রতন দম্পতির কটাক্ষ করার ঘটনায়ও মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে করে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো যথাক্রমে-
১। উত্তরায় নিজ বাসায় অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর ওপর নগ্ন হামলা ও নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার সাথে জড়িত মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ভূখণ্ডে দাঁড়িয়ে মুসলিমদের পবিত্র জুমার দিনকে অবমাননা করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের এদেশীয় দালালেরা। এবার প্রকাশ্যে ইসলামের বিধান জুমার নামাজকে কটাক্ষ করে দৃষ্ঠতা দেখিয়েছে অধ্যাপক রতন সিদ্দিকি। সে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করে যে, ‘আমাদের জীবন থেকে শুক্রবারটা বেহাত (হাতছাড়া) হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার আর আমাদের নেই।’ এটা নাকি সে ভাল করেই বুঝতে পেরেছে।
রতন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রগতি (নাস্তিক্যবাদী) লেখক সংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর এদেশে উদীচী’র ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন মহল সম্পূর্ণ অবগত। তাঁরা সংস্কৃতি ও প্রগতির নামে এদেশে বহুকাল ধরে হিন্দুত্ববাদের হাতকে শক্তিশালী করার কাজ করে আসছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে তারা ইসলাম-বিদ্বেষের বীজ বপন করার কাজ খুব নিষ্ঠার সাথেই করে আসছে।
রতনীর স্ত্রী আবার উত্তরায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি। ঘাদানিক-কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই; কথিত স্বাধীনতার অসাম্প্রদায়িক চেতনার নামে তারা এই দেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিম নির্মূলের ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছে কোন রাখঢাক না রেখেই।
ঘটনার সূত্রপাত :
গত ১ জুলাই রাজধানী উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরের ৬/এ নং সড়কের কাছে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মুসল্লীদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে রতন সিদ্দিকি ও মুসল্লীদের একজন। গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে শুরু হয় এ ঘটনা।
উক্ত সময় মসজিদের পাশে নিজ বাসায় ফিরছিল রতন সিদ্দিকি ও তার স্ত্রী, মুসল্লিরা তখন নামাজরত ছিলেন। রতন সিদ্দিকি ইচ্ছে করেই কয়েকটি হর্ণ বাজায়; এটি রতনের কথা থেকেই বুঝা যায়। সে দাবি করেছে যে সে ২ টা হর্ণ দিয়েছে। একজন মুসল্লী এর প্রতিবাদ জানালে রতন সিদ্দিকির স্ত্রী চরম দৃষ্ঠতা প্রদর্শন করে বলে, “এখানে নামাজের নামে ভণ্ডামি হয়।”
নামাজরত কয়েকজন মুসল্লী স্পষ্ট এ কথা শুনতে পেয়ে নামাজ শেষে তাদেরকে জিজ্ঞেস করে- কেন তারা নামাজকে কটাক্ষ করেছে। এঘটনায় মুসল্লী ও রতন দম্পতির মধ্যে বাকবিতন্ডা চলতে থাকে। শেষে মুসল্লীরা তার স্ত্রীকে নামাজ নিয়ে কটাক্ষ করায় ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু রতন সিদ্দিকি তার স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে গেইট তালা লাগিয়ে দেয়। এবং দাবি করে যে তার স্ত্রী নামাজ নিয়ে কোন কথা বলেনি, তাই তার স্ত্রী মাফ চাইবে না।
এ ঘটনায় মুসল্লীরা প্রতিবাদ জানায়। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে যথারীতি মুসল্লীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরবর্তীতে রতন সিদ্দিকি অজ্ঞাতনামা ৪০০ মুসল্লীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এ ঘটনায় দেশের বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী শক্তি নানাভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে হিন্দুত্ববাদী নীতি দেশে চাপিয়ে দিতে চাইছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ দেশ মৌলবাদীদের হাতে নিরাপদ নয়, দেশকে আবার স্বাধীন করতে হবে অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদী ভারতের গোলামে পরিণত করতে হবে।
কিন্তু এরা জুমুআ’র নামাজ নিয়ে একটা হট্টগোল তৈরি করে ভারতের মত এদেশেও খোলা জায়গায় নামাজ বন্ধ করার পায়তারা করছে কি না- সে প্রশ্ন এখন করা জরুরী। এই হট্টগোল সৃষ্টি করে তারা কি এদেশে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের অগ্রবাহিনী হিসেবেই কাজ করছে কি না – সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
এই বামপন্থীরা সব সময় ডবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি অনুসরণ করে চলে। তারা সবসময় নিজেদের তথাকথিত বাকস্বাধীনতার কথা বলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের হুকুম আহকাম নিয়ে কটুক্তি করে৷ এগুলোকে তারা বাকস্বাধীনতা বলে প্রচার করে। কিন্তু হাসিনা-খালেদা, মুজিব-জিয়াকে নিয়ে কিছু বললে জেলে পুরে দেয়। ইসলামের হক্ক কথা বললে, বা তাদের মুনিবদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কিছু বললে রাষ্ট্র-দ্রোহীতা বলে আলেম-উলামা ও ইসলামপ্রিয় সাধারণ মুসলিমদেরকে বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখে বিনা বিচারে। তাদের কাছে ইসলামকে নিয়ে কটুক্তি করা কোন অপরাধ নয় – এমনই জঘন্য তাদের ডবল স্ট্যান্ডার্ড, তাদের দ্বিচারিতা।
শুক্রবার ও জুমুআ’র নামাজ নিয়ে রতন দম্পতির কটাক্ষ করার ঘটনায়ও মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে করে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো যথাক্রমে-
২। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাহাত্তরের সংবিধান পুনর্বহাল করে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৩। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশে অবিলম্বে আইন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং দেশের সকল মসজিদ-মাদ্রাসায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪। বিভিন্ন ধর্মীয় সভা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৫। সকল ধরনের মাদ্রাসায় নিয়মিত জাতীয় সংগীত বাজানো, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, শহীদ মিনার নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানো বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তাদের কর্মকাণ্ড দেখে বুঝার উপায় নেই এটা মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ নাকি ভারতের কোন অঙ্গরাজ্য। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এটা ভারতের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও কসাই মোদির ভারত। চাইলেই বাধা দিবে নামজে, কোরবানিতে, মসজিদ নির্মাণে। তবে এ অবস্থা কোন অংশে কম নয় বাংলাদেশে।
পবিত্র নামাজকে কটুক্তি করার পরও রতন সিদ্দিকি পার পেয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রতিবাদকারী মুসল্লীদের এখন পোহাতে হবে মামলা-হামলার দূর্ভোগ। শুধু রতন সিদ্দিকি নয়, অসংখ্য কথিত প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে ইসলামের হুকুম-আহকামের বিরোধিতা করছে।
এখানে উল্লেখ্য, কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নড়াইলের স্বপন কুমার বিশ্বাসের কথা বলেছে। নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস তার কলেজে খুব দাপুটে লোক। তাকে কিছুদিন আগেই জুতার মালা পড়িয়ে সকলের সামনে করজোড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছে ছাত্ররা। মোটাদাগে এই লাইন পরে পাঠকের করুণা হতে পারে স্বপন কুমারের উপর। আর ঐ ছাত্ররা- যারা কিনা শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পড়াল, স্যেকুলারদের সাথে সুর মিলিয়ে আপনিও তাদের বিচার চাইতে পারেন। তবে তার আগে ঘটনার পেছনের ঘটনাটা জেনে নেওয়া জরুরী।
স্বপন কুমার বিশ্বাসের মূল ঘটনা :
নড়াইলে ঘটনার সূত্রপাত ১৭ জুন। ওই দিন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র নিজের ফেসবুক আইডিতে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে পোস্ট করে- ‘প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম’। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের কিছু ছাত্র তাকে সেটি মুছে (ডিলিট) ফেলতে বলেন, কিন্তু সে মুছেনি।
এরপর ১৮ জুন সকালে অভিযুক্ত ছাত্র কলেজে আসলে তার সহপাঠীসহ সব মুসলিম ছাত্র তার গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বহিষ্কারের দাবি তুলে অধ্যক্ষের কাছে বিচার চায়। ঐ হিন্দু ছাত্রকে তারা ধরে নিয়ে যায় অধ্যক্ষ স্বপন কুমারের কাছে। কিন্তু ওই সময় স্বপন কুমার রাহুলের কোন বিচার করেনি, বিচারের আশ্বাসও দেয়নি। উলত সে তার ‘স্বজাতির’ ছাত্রকে রক্ষা করতে প্রতিবাদকারী ছাত্রদের দমন করতে পুলিশে খবর দেয়। ‘ক্ষমতাধর’ স্বপনের ফোন পেয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে লাঠিচার্জ করতে শুরু করে।
বিষয়টি তখন কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। নবীপ্রেমী ছাত্র-জনতা কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও কঠোর প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অভিযুক্ত ছাত্র ও অধ্যক্ষের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষভ প্রদর্শন করে। আরও উত্তাল হয়ে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাস। এরপর পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। দিনভর পুলিশ ও ছাত্র-জনতা দফায় দফায় সংঘর্ষে দুই পুলিশ ও অন্তত ২০ জন ছাত্র আহত হন।
এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের উপস্থিতিতে উত্তেজিত জনতা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সাময়িক ঠাণ্ডা করে। এ সময় গ্রেফতারের দাবি জানালে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস, অভিযুক্ত রাহুল দেব রায় ও তার বাবা বাবুল রায়কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এসব ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে আসে। এরপর থেকেই এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে কথিত প্রগতিবাদী-চেতনাবাদী-নাস্তিক্যবাদীরা। তারা বলছে- পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এ ধরনের পাশবিক উপায়ে ‘সম্মানিত’ অধ্যক্ষকে অপমানিত করা হয়েছে, তাতে নাকি সারা দেশের শিক্ষক সমাজ ও শান্তিপ্রিয় জনগণকে অপমান করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজশাহী পলিটেকনিকের অধ্যক্ষকে যখন ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা চ্যাংদোলা করে পানিতে ফেলে দিয়েছিল, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষকদেরকে যখন শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছিল – তখন কি শিক্ষক জাতির অপমান হয়নি! তখন এই চেতনাবাজ স্যেকুলার-প্রগতিশীলদের বজ্রকন্ঠ শীতল হয়ে গিয়েছিল কেন?
প্রিয় পাঠক, এদেশের মোদীপ্রেমিক ও হিন্দুত্ববাদের দালালদের ধৃষ্টতা লক্ষ্য করুণ। ভারতে নুপুর শর্মা নবীজি সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করলো, মুসলিম বিশ্ব ফুঁসে উঠল, প্রতিবাদী মুসলিমদের ধরপাকড় করলেও মোদী লোক দেখানর জন্য হলেও নুপুরকে বহিস্কার করল। অর্থাৎ তাত্ত্বিকভাবে হলেও মোদী পিছিয়ে আসলো, হার মানলো। কিন্তু ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত এদেশে কসাই মোদীর দোসরেরা তাকে হেরে যেতে দিবেনা। সতর্ক করার পরেও রাহুল দেব নূপুরকে সমর্থন করা তার পোস্টটি মুছলোনা, অধ্যক্ষ স্বপন কুমারের কাছে বিচার চাইলে সে রাহুলের বিচার না করে উল্টো প্রতিবাদী ছাত্রদের সায়েস্তা করতে পুলিশ ডাকলো। যদিও সেলিম ওসমানের মত করেই ‘পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে’ স্বপনকে জুতার মালা পরানো হল আর রাহুলকে সাময়িক গ্রেফতার করা হল। কিন্তু এখন চেতনাবাজ আর নাস্তিকদের আওয়াজে রাহুল-স্বপনদের সব দোষ ঢাকা পরে গেল। পুলিশ এখন একে একে প্রতিবাদী ছাত্রদেরকে গ্রেফতার করা শুরু করলো। পরিস্থিতি দেখে যেকেউ বলবে- এই দেশ হিন্দুত্ববাদী অখণ্ড ভারতের অঙ্গরাজ্য হওয়ার আর বাকি নেই।
বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিশীল যারা সর্বদাই দিল্লীর পদলেহনে ব্যাস্ত, তারা এ দেশকে হিন্দুত্ববাদী ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। মুসলমদের সুপরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের দাসে পরিণত করতে যাচ্ছে এ চক্রটি। রতন সিদ্দিকর মতো আত্মস্বীকৃত ধর্মদ্রোহী এদেশের জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিল। পাঠক নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন , যে ব্যাক্তি জুমুআ’র দিনটিকে তাদের থেকে বেহাত হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করতে পারে, তারা মুসলিমদের শিক্ষা-সংস্কৃতির কতটুকু ক্ষতি করতে পারে তা অনুমেয়। এর ফল ইতিমধ্যে ভগ করতে শুরু করেছে পরবর্তী মুসলিম প্রজন্ম।
ভারতীয় দালাল কথিত বুদ্ধিজীবী ও নাস্তিক্যবাদীদের যদি এখনই লাগাম টেনে না ধরা হয়, তাহলে এ দেশকেও তারা রাম রাজত্বে পরিণত করেই ক্ষান্ত হবে।
ইসলামি চিন্তাবীদগণ তাই বলছেন, মুসলিমদের এখনই জেগে উঠেতে এসব দালালদের বিরুদ্ধে; প্রতিরোধ করতে হবে তাদেরকে – যারা এদেশের মুসলিম শিশুদের বিজাতীয় সঙ্গীত গাইতে বাধ্য করতে চায়, রাম-কৃষ্ণের কীর্তন গাইয়ে শিশুদেরকে গায়রুল্লাহর নামে উৎসর্গকৃত প্রসাদ খাওয়াতে চায়, গো-ভক্তির সবকওয়ালা গল্প বাচ্চাদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, মুজিবের ভাস্কর্য পূজা করতে বাধ্য করতে চায়, দেশে বাহাত্তরের সংবিধান পুনর্বহাল তথা ধর্মহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
লেখক : ইউসুফ আল-হাসান
তথ্যসূত্র :
১। আমাদের জীবন থেকে শুক্রবারটা বেহাত হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার আর আমাদের নেই।
– https://tinyurl.com/23y9kxnd
২। অধ্যাপক রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলার অভিযোগে অজ্ঞাত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
– https://tinyurl.com/mrx6unwm
৩। শিক্ষকের গলায় জুতার মালাঃ কাকে নিন্দা জানাবো ?
– https://tinyurl.com/4735epp7
৪। নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা
– https://tinyurl.com/4ejhwp9f