ইসলামি শরিয়াতের অনুপস্থিতিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন মুসলিম শিক্ষার্থীরা।এবার বোরখা পরে শরয়ী পর্দা মেনে ভাইভাতে (মৌখিক পরীক্ষা) অংশ নেওয়ায় ছাত্রীকে জঙ্গি বলে হেনস্তা করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিন।
জানা যায়, গত ২১ আগস্ট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৪র্থ সেমিস্টারের ‘Business Statistics-2 ও (FIN-222) কোর্সের ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পর্দা করায় এক ছাত্রীকে ‘মৌলবাদী জঙ্গী’ বলে সম্বোধন করে এবং ভাইভাতে ম্যানার জানেন না বলে হেনস্তা করে।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সিনিয়রদের জানালে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।অভিযুক্ত শিক্ষক পর্দানশীন ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, আপনি কি ভাইভা দেওয়ার ম্যানার শিখেন নাই? ভাইবা দেয়ার ম্যানার হলো মুখ খুলে আসতে হবে। এতো পড়াশোনা করে কি করবেন আগে মেনারস শিখেন। আপনি এইভাবে ভাইবা দিতে আসছেন জঙ্গী মৌলবাদীদের মতো। নিকাব খুলেও তো ভাইবা দেওয়া যায়।
এছাড়াও, ওই রুমে ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করা হয় ভার্সিটি এডমিশন দিসেন কেমনে, ছাত্রীটি তখন উত্তর দেন তখন পর্দার বুঝ ছিলো না জানতাম না পর্দা যে ফরজ, বুঝ আসার পর থেকে পর্দা করা শুরু করেছি।
স্যার তখন বলল, মুখ খোলা রেখেও তো পর্দা করা যায়। আর তখন আপনি এডাল্ট ছিলেন আর একটা এডাল্ট মেয়ে তো সব বুঝে। আমি বলেছি স্যার সবাই তো আর পর্দার বুঝটা আগে থেকে পায় না। আমি নাকি তর্ক করেছি তাই আমাকে বের করে দিয়েছে।
ওই ছাত্রী জানিয়েছেন যে, কথিত সংবিধানেও যেখানে যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমার পর্দা নিয়ে পারসোনাল এট্যাক করা হয়েছে। এমনকি একাডেমিক টপিকের চেয়ে বেশি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমি পর্দা করা নিয়ে।একই ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নারী শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলার অভিযোগ রয়েছে।
ভাইভাতে গিয়ে ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরণের কথা বলে হেনস্তা করেন। বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা, মেয়েরা এত সুন্দরী হয় কিভাবে, কি ধরণের ছেলে পছন্দ এসব জানতে চায় ঐ নামধারী শিক্ষক। আর এই লম্পটদেরকেই আপনি দেখবেন পর্দার বিরুদ্ধে অধিক সোচ্চার। কারণ নারীরা শরিয়া মেনে পর্দা করলে এই লম্পটরা এদের চোখের চাহিদা পূরণ করতে পারে না।শিক্ষার্থীরা ঐ শিক্ষক সম্পর্কে আরও বলেন, মেয়েদের একাডেমিক খুবই কম প্রশ্ন করে সে। ছেলেদের সাথে পারসনাল কথা বলে না, একাডেমিকই বলে। পর্দা করা মেয়েদেরকে সে নাকি বিভিন্ন সময়ে হেনস্তা করে বিভিন্ন কথা বলে।
মুসলিমদের দুর্বলতার ফলে আজ প্রত্যেটি অঙ্গনে ইসলামবিদ্বেষী শক্তি প্রকাশ্যে আমাদের দ্বীন পালন নিয়ে কটাক্ষ করছে। শরিয়াত বিরোধী নোংরা পোশাককে বলা হচ্ছে ম্যানার আর শরিয়াত অনুযায়ী পর্দা করাকে বলা হচ্ছে জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের আলামত। ইসলামের সামান্যতম উপস্থিতিও এরা মেনে নিতে চাইছে না! এদের চেয়ে উগ্রবাদী আর কেউ আছে কি?
আজকে এই পর্দানশীন ছাত্রীকে হেনস্তা করায় ওই শিক্ষকের কী কোন শাস্তি হবে? হবে না। অথচ, গত কিছুদিন আগে নরসিংদীতে যখন একজন বয়স্ক নারী নোংরা পোশাক পরিহিত এক মেয়েকে শালীন পোশাক পড়তে অনুরোধ করেন, এবং পরবর্তীতে বেয়াদবি করায় তার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান, তাঁকে কিন্তু ঠিকই আটক করেছিল দালাল সরকার।
ইসলামপ্রিয় জনগণকে তাই এজাতীয় ইসলামবিদ্বেষী ঘটনার বিরুদ্ধে এখনি সোচ্চার হতে বলেছেন ইসলামি চিন্তাবিদগণ; নাহলে এরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধর্মহীন করার চক্রান্ত বাস্তবায়নে সফল হয়ে যেতে পারে।
প্রতিবেদক : মুহাম্মাদ ইব্রাহীম
তথ্যসূত্র :
———
১। পর্দা করে ভাইভাতে আসায় ছাত্রীকে জঙ্গি বলার অভিযোগ-
– https://tinyurl.com/2p8trcsm
Comment