Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ্ নিউজ # ১৫ই জিলহজ, ১৪৪১ হিজরী # ০৬ আগষ্ট, ২০২০ঈসায়ী।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ্ নিউজ # ১৫ই জিলহজ, ১৪৪১ হিজরী # ০৬ আগষ্ট, ২০২০ঈসায়ী।

    ফিরে দেখা: মালাউনদের আগ্রাসনের কবলে কাশ্মীরীদের বিগত বছর

    ৫ আগস্ট, ২০১৯।এক বছর আগের কথা। সেদিন ভারত দখলকৃত কাশ্মীরের সব সুবিধা বাতিল করে দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। দেওয়া হয়েছিল নতুন কাশ্মীর গঠনের মিথ্যা আশাবাদ। বলা হয়েছিল, নতুন কাশ্মীরে থাকবে না সহিংসতা, উন্নতিতে শীর্ষে উঠবে উপত্যকা অঞ্চলটি। কিন্তু, এক বছর পর তার কতটুকু পূরণ হয়েছে?

    হ্যাঁ, একটি বিষয়ে সংখ্যাবৃদ্ধি হয়েছে। কারাগারগুলো আটক ব্যক্তিতে উপচে পড়েছে। অনেক কাশ্মীরি জানেনই না, তাদের স্রেফ ‘উবে যাওয়া’ আত্মীয়স্বজন আদৌ বেঁচে আছেন কিনা! বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে সরকার পার্লামেন্টে একটি হিসাব দিয়েছিল। তাতে প্রকাশ, ওই বছরের ৪ আগস্ট থেকে প্রায় ৫ হাজার ১৬১ জন কাশ্মীরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর গ্রেপ্তার না দেখানো আটকের কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। পাবলিক সেফটি অ্যাক্টের (পিএসএ) আওতায় কতজনকে আটক করা হয়েছে এবং কতজন এখনো পর্যন্ত কারাগারে আটক আছে—তার সঠিক হিসাব কেউই দিতে পারে না। বিবিসি কাশ্মীরের পুলিশ বিভাগের প্রধান বিজয় কুমারের কাছে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিল। তিনি উত্তরে বলেছেন, এত ‘স্পর্শকাতর তথ্য’ জানানো সম্ভব নয়।

    শ্রীনগরভিত্তিক মানবাধিকার কর্মী পারভেজ ইমরোজ বিবিসিকে বলেন, এই আটক ও গ্রেপ্তারের মূল উদ্দেশ্য ভয় সৃষ্টি করা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এই কাজে সরকার সফল। কাশ্মীরিদের মুখ বন্ধ রাখতে এমন ধরপাকড় ভালো কাজে দিয়েছে। সরকার চেয়েছিল, সাধারণ কাশ্মীরিরা যেন নতুন আইনের বিরোধিতায় ঘর থেকে বের না হয়। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।

    ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য জম্মু-কাশ্মীরে জনমিতিসংক্রান্ত পরিবর্তন আনতেই এই কাজ করে বিজেপি। মোদি নিজে বলেছিলেন, এর মধ্য দিয়ে ভারতে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। কারণ তাঁর মতে, জম্মু-কাশ্মীরের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ভারতবিরোধী সহিংসতা সৃষ্টির প্রধান কারণ।

    এই অঞ্চলে যাতে জনমিতি-সংশ্লিষ্ট পরিবর্তন না হতে পারে, সেই জন্যই কাশ্মীরের অনাবাসিক ভারতীয়রা সেখানে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন না। তবে নতুন আইনে জম্মু-কাশ্মীরের সব বিশেষ সুযোগ-সুবিধা রদ করে দেয় মোদি সরকার। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এর রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চল এখন সরাসরি কেন্দ্রশাসিত এলাকায় পরিণত হয়েছে।

    আল জাজিরার এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশেষ মর্যাদা রদের পরের ছয় মাস জম্মু-কাশ্মীর ছিল কঠোর নিরাপত্তামূলক লকডাউনের আওতায়। ইন্টারনেট সুবিধা ছিল না বললেই চলে। ল্যান্ডফোন ও মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। হাজারো রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়।

    বিশেষ সুবিধা রদের এক বছর পূর্তির দিনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি ছবির গল্প প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ায় ঘেরা এক কাশ্মীরকে। রাস্তায় রাস্তায় ছিল কড়া নিরাপত্তা, ছিল ড্রোন থেকে শুরু করে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। শ্রীনগরের রাস্তায় চোখে পড়েছে সেনাযানও।

    কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা রদের পক্ষে বিজেপি সরকারের একটি প্রধান যুক্তি ছিল, সহিংসতা দমন। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল ডট ইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সহিংসতার পরিমাণ অন্যান্য বছরের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। কথিত ‘জঙ্গি’ অভিযানের নামে হত্যা করা হয়েছে ১১৮ জনকে। হতাহতের সংখ্যা বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরে রক্ত ঝরেছে প্রচুর।
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    প্রিয়জনদের ফেরার অপেক্ষায় এক বছর অতিক্রম করলেন কাশ্মিরিরা

    গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতের সরকার জম্মু এবং কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করেছিল।

    বিতর্কিত এই পদক্ষেপের আগে ভারত সরকার কাশ্মিরে হাজার হাজার মানুষকে আটক করে। এদের অনেকেই ভারতের নানা জায়গায় জেলে এখনো বন্দী। তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে গুরুতর সব* অভিযোগ।

    ৬ আগস্ট রাতে তাসলিমা ওয়ানি আর তার পরিবার ছিলেন গভীর ঘুমে। হঠাৎ দরোজায় জোরে জোরে ধাক্কার শব্দে তারা জেগে উঠলেন।

    তার আগের দিন দিল্লিতে ভারত সরকার এমন এক ঘোষণা দিয়েছেন, যা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করেছে। যে সাংবিধানিক ধারা বলে জম্মু এবং কাশ্মিরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, সেটি ভারতের উগ্রবাদী সরকার বাতিল করে। জম্মু এবং কাশ্মির রাজ্যকে দুই ভাগে ভাগ করে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। পুরো কাশ্মির উপত্যকা জুড়ে এক অভূতপূর্ব কারফিউ জারি করে বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

    তাসলিমা ওয়ানির বাড়িতে যারা এসেছিল, তারা সেনাবাহিনী আর পুলিশের এক যৌথ দল।

    “ওরা চিৎকার করে আমাদের দরজা খুলতে বলছিল। আমরা ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম”, বলছিলেন তিনি।

    “ওরা আমাকে ঘরের ভেতরে পাঠিয়ে দিল। তারপর আমার দুই ছেলেকে ঘরের বাইরে নিয়ে গেল। ওদের ১৫ মিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলো। তারপর ওরা চলে গেল।”

    কিন্তু পরে আবার তারা ফিরে এলো। এবার তারা বড় ছেলে ১৯ বছরের নাদিমকে বললো, এক প্রতিবেশির বাড়ি চিনিয়ে দেয়ার জন্য তাদের সঙ্গে যেতে হবে। সেটাই ছিল ছেলের সঙ্গে তাসলিমা ওয়ানির শেষ দেখা।

    নাদিমকে একটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আটক করা হয়। এরপর পাঠিয়ে দেয়া হয় এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের এক জেলখানায়।

    নাদিম ওয়ানি সম্পর্কে ভারতীয় পুলিশের একটি গোপন ফাইল বিবিসি দেখেছে। এটিতে নাদিম ওয়ানিকে একজন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ বা প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মী বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কাশ্মিরের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর যেসব সদস্য সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত নয়, কিন্তু অন্যান্য কাজে সাহায্য করে, তারাই হচ্ছে মালু বাহিনীর ভাষায় ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার।’

    নাদিম ওয়ানির বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে আছে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়ে পোস্টার লাগানো। সেসময় নাদিমের বয়স ছিল ১৫।

    তাসলিমা ওয়ানি বলেন, “আমি আমার ছেলেকে জানি। ও কখনো কোন বেআইনি কাজে অংশ নেয়নি। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, দয়া করে আমার ছেলেকে মুক্তি দিন।”

    তাসলিমা ওয়ানির স্বামী মোহাম্মদ আশরাফ ওয়ানি গত এক বছরের মধ্যে মাত্র একবার জেলে তার ছেলেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন।

    নাদিমের মতো আরও হাজার হাজার কাশ্মিরি এভাবে জেলখানায় বন্দী হয়ে আছে। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে শুরু হওয়া এক ব্যাপক

    অভিযানে তাদের ধরা হয়। এই অভিযান অব্যাহত ছিল কয়েক সপ্তাহ ধরে।

    রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট থেকে শুরু করে যাদের বিরুদ্ধেই কোন প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যোগ দেয়ার অভিযোগ আছে, বা দের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করা হয়, তাদেরকেই ধরা হয়েছে। কাউকে ধরে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অনেককে গৃহবন্দী করা হয়েছে।

    ভারত সরকারের এই পদক্ষেপ স্বদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। কিন্তু ভারত সরকার দাবি করে, কাশ্মির অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এর দরকার আছে। কারণ সেখানে সম্প্রতি স্বাধীতাকামীসদের তৎপরতা বেড়েছে।

    নাদিম সহ অনেক কাশ্মিরিকেই আটক করা হয়েছিল বিতর্কিত এক জননিরাপত্তা আইন, পাবলিক সেফটি এ্যাক্টে (পিএসএ)। এই আইনে কোন অভিযোগ না এনেই কাউকে দুবছর পর্যন্ত আটক রাখা যায়।

    এই ব্যাপক অভিযানে কত কাশ্মিরিকে আটক বা কারাবন্দী করা হয় তা স্পষ্ট নয়। গত বছরের ২০ নভেম্বর সরকার পার্লামেন্টে জানিয়েছিল, আগস্টের ৪ তারিখ হতে তারা মোট ৫ হাজার ১৬১ জনকে গ্রেফতার করে। এদের কতজনের বিরুদ্ধে পাবলিক সেফটি অ্যাক্টে অভিযোগ আনা হয়েছে বা কতজন এখনো বন্দী তা জানা যায়নি।

    ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়া কাশ্মিরিদের বাবা-মায়েরা মিলে গড়ে তুলেছেন একটি নাগরিক সংগঠন । আদালতের যেসব নথি তারা সংগ্রহ করেছেন, তাতে দেখা যায়, ২০১৯ সালে পাবলিক সেফটি অ্যাক্টে আটক কাশ্মীরিদের আটকাদেশ চ্যালেঞ্জ করে মোট ৬৬২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১২টিই করা হয় ৫ আগস্টের পর।

    কাশ্মির পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল বিজয় কুমারের কাছে এধরণের গ্রেফতারের তথ্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, ‘এরকম স্পর্শকাতর তথ্য’ তার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।

    কাশ্মিরের মানবাধিকার কর্মীদের ধারণা, এসব গণগ্রেফতার এবং আটক করার ঘটনা সেখানকার মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে করা।

    শ্রীনগরের একজন মানবাধিকার কর্মী পারভেইজ ইমরোজ বলেন, “এসব গ্রেফতারের উদ্দেশ্য জনগণকে চুপ করিয়ে দেয়া। অনেককেই ধরা হয়েছে পাবলিক সেফটি অ্যাক্টে। কাউকে কাউকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা ভয় ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। সরকার এটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিল কেউ যেন তাদের বাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে নতুন আইনের প্রতিবাদ না করে।”

    একই কথা বললেন শ্রীনগরের সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার হারুন রেশি।

    “৫ আগস্ট যা করা হয়েছিল, তা এক বিরাট ঘটনা। ভারত সরকার জানতো এটা কাশ্মিরে গণঅসন্তোষ তৈরি করবে। তারা এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিক্রিয়া শোনা যাক, সেটা তারা চায়নি”, বলছেন তিনি।

    বন্দী দশা থেকে যারা মুক্তি পেয়েছেন, তারা বলছিলেন, আটক থাকার সময় তাদের কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।

    কাশ্মীরের একটা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা ‘কাশ্মীরিয়াত।’ এটির সম্পাদক কামার জামান কাজি জানান, কয়েকটি ‘টুইট*’ করার ব্যাখ্যা চেয়ে তাকে একবার তলব করা হয়। এর কদিন পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।

    ৫ আগস্টের আগে পুরো কাশ্মির অঞ্চলে ব্যাপক সৈন্য সমাবেশ ঘটানো হচ্ছিল। সরকার তখনো কোন ইঙ্গিত দেয়নি, কী ঘটতে চলেছে। পুরো অভিযানটির প্রস্তুতি চলছিল খুবই গোপনে।

    ২৬ জুলাই কামার জামান কাজি একটি টুইট করেন, যাতে তিনি এই সৈন্য চলাচল নিয়ে কথা বলেন। তার টুইটটি স্থানীয় পুলিশের নজরে পড়ে। এরপর তাকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তাকে আটক করা হয়।

    ৮ আগস্ট তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় ভারত শাসিত কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের কেন্দ্রীয় জেলে।

    “সেখানে আমাদের উলঙ্গ করে করে রাখা হয়। আমরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনি”, বলছিলেন তিনি।

    তিনি জানান, সেখানেই তাকে বলা হয়েছিল, পাবলিক সেফটি অ্যাক্টে তাকে আটক করা হয়েছে। তাকে এখন উত্তর প্রদেশের বেরিলি জেলে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

    “ওরা যখন আমাদের সামরিক বিমানে তুলছিল, তখন আমরা উর্দূ কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের সেই প্রতিরোধের কবিতা আবৃত্তি করছিলাম, ‘হাম দেখেঙ্গে।’

    তার পরিবার জানতেন না, তাকে কোথায় রাখা হয়েছে। তারা কাশ্মিরের চারটি জেলখানায় ঘুরে তার খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের ৫২ দিন লেগেছিল তার হদিস পেতে। যখন তারা কামার জামান কাজিকে খুঁজে পেলেন, দেখলেন, তার পরনে তখনো সেই শার্টটি, যেটি পরে তিনি থানায় পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।

    একজন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট তার বিরুদ্ধে জারি করা আটকাদেশটি প্রত্যাহার করে নেয়ার পর তিনি মুক্তি পেয়েছেন। তিনি আমাকে জেলখানায় পরা সেই টি শার্টটি দেখাছিলেন। সেটির জীর্ণ অবস্থা, ১১৯ টি ছিদ্র সেটিতে।

    “সবচেয়ে বাজে ব্যাপার ছিল, আমি বার বার অনুরোধ করার পরও জেলখানায় ওরা আমাকে কোন কাগজ-কলম দেয়নি। নয় মাস ধরে যে যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে আমি গিয়েছি, সেগুলো আমি লিখতে চেয়েছিলাম।”

    এ সপ্তাহের শুরুতে আবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে একটি রিপোর্ট লেখার জন্য। কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে বলেছে, ৬ আগস্টের পর যখন কারফিউ তুলে নেয়া হবে, তখন যেন তারা জামিনের আবেদন করে।

    পুরো কাশ্মির জুড়ে হাজার হাজার পরিবার তাদের প্রিয়জনের নিরাপত্তা নিয়ে এখনো উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির পর।

    এরকম একটি পরিবারের মা সারা বেগম। তার ছেলে ওয়াসিম আহমদ শেখ গত বছরের ৮ আগস্ট হতে জেলে বন্দী। সেদিন তিনি থানায় গিয়েছিলেন পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে। তার আগের দিন পুলিশ ওয়াসিমদের বাড়িতে এসেছিল তার সন্ধানে।

    তার বিরুদ্ধে পুলিশের দিকে ঢিল ছোঁড়া এবং মুক্তিকামীদের সাহায্য করার অভিযোগ আনা হয়।

    আটক করার পর ওয়াসিমকেও বহু দূরে উত্তর প্রদেশের এক জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত পরিবারের কেউ ওয়াসিমকে দেখেননি।

    মা সারা বেগমের আশংকা, তিনি বা তার ছেলে দুজনের কেউ একজন হয়তো করোনাভাইরাসে মারা যাবেন, তার আগে মা-ছেলের মধ্যে আর দেখা হবে না।

    “আমরা দুজন এক সঙ্গে মরতে চাই। আমার আদরের সন্তানকে আমি গত ১১ মাসে একবারও দেখিনি”, কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন তিনি।

    “আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি, তারা আমার ছেলেকে যদি মুক্তি দিতে নাও চায়, তাকে যেন অন্তত কাশ্মিরের কোন জেলখানায় নিয়ে আসে।”
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      শহীদ বাবরি মসজিদ স্থানে রাম মন্দির: মুসলিম হৃদয়ে রক্তক্ষরণের নতুন মাত্রা

      ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ। ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের প্রত্যেক মুসলমানের হৃদয়ে ধারণ করা এক আবেগ ও ভালবাসার নাম। ১৫২৮ সালে ঐতিহাসিক এ মসজিদটি নির্মাণ করেন মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি।

      সেনাপতি মীর বাকি বাবরি মসজিদ নির্মাণের ৩৫৭ বছর পর ১৮৮৫ সালে মসজিদটি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও আইনি লড়াই। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে মহন্ত রঘবীর দাসের দায়ের করা এক মামলা থেকে সেনাপতি মীর বাকি নির্মিত বাবরি মসজিদ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। মহন্ত রঘবীর দাসের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেয় ব্রিটিশ আদালত।

      এরপর ১৯৪৯ সালের ২২ডিসেম্বর রাতে বাবরি মসজিদে রাম ও সীতা মূর্তি রেখে আসে অজ্ঞাতনামা* হিন্দু উগ্রবাদীরা। এঘটনাকে অলৌকিক দাবী করে প্রার্থনা শুরু করে মন্দিরপন্থীরা। এ ঘটনার পর ১৯৫০সালে মসজিদে তালা দেয় ভারতীয় আদালত।

      ১৯৫৯সালে হিন্দুদের পক্ষে জমি চেয়ে মামলা করেন নির্মোহী আখড়া। অপরদিকে ১৯৬১ সালে মসজিদের জমির মালিকানা দাবী করে মুসলমানদের পক্ষে আদালতের দারস্থ হন উত্তর প্রদেশ মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড।১৯৮০-র দিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও তাদের রাজনৈতিক সহযোগী কট্টোর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ওই স্থানে রাম মন্দির নির্মানে প্রচারাভিযান চালায়।

      ১৯৮৬সালে আদালত মসজিদের তালা খোলার নির্দেশ দিলে ১৯৯০সালে এ প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে বেশ কিছু শোভাযাত্রা ও মিছিল বের করে লাল কৃষ্ণ আদভানি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি দেড় লাখ কর সেবক নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করে। পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্য এদিনে শোভাযাত্রা চলাকালীন সময়ে উগ্রবাদী হিন্দুরা সহিংস হয়ে ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত এমসজিদটি শহীদ করে মুসলিমদের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে।

      পরবর্তীকালের অনুসন্ধানে ঘৃণ্য এ অপরাধে ৬৮ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, যাদের অধিকাংশই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপির নেতা বলে জানা যায়। ৩ এপ্রিল ১৯৯৩ সালে সংসদে এক আইন পাশ করিয়ে এ জমি দখল করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রামলালা, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এই তিনভাগে জমিটি ভাগ করার রায় দেয় এলাহাবাদের তিন বিচারকের বেঞ্চ। কিন্তু ২০১১ সালের ৯মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় এবং ৯ নভেম্বর শনিবার ২০১৯ অযোধ্যার এ জমিটিতে হিন্দুদের মন্দির নির্মাণ ও মুসলিমদের বিকল্প ৫একর জমি দেওয়ার বিতর্কিত ও সাম্প্রদায়িক এক রায় দেয় ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট।

      ১৮৮৫সালে বাবরি মসজিদ নিয়ে ১৩৪ বছরের বিতর্কের পর ৫ আগস্ট বাবরি মসজিদস্থলে রাম মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী মোদী সরকার।

      মোদী সরকারে এমন কাজ মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করছেন ইসলামী ব্যক্তিত্বরা।

      এদিকে ভারতীয় মুসলমানদের জনপ্রিয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি মাওলানা অলি রহমানি বলেছেন, তাওহীদের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র এবং আল্লাহর ঘর খানায়ে কাবাও একটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শিরক ও মূর্তিপূজার আখড়া ছিল। অবশেষে মক্কা বিজয়ের পর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাধ্যমে পুনরায় তা তাওহীদের মারকায হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা পুরোপুরি আশাবাদী, শুধু বাবরি মসজিদই নয়; এই পুরো বাগান একদিন তাওহীদের সুরে মুখরিত হবে। আমাদের কর্তব্য হলো, এ কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেরা গুনাহ থেকে তওবা করা। নিজ নিজ স্বভাব ও আচরণকে সুন্দর করা। ঘর এবং সমাজে দ্বীনদার বানানো। এবং পূর্ণ সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় গ্রহণ করা।
      আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        শহীদ বাবরি মসজিদের স্থলে রামমন্দির নির্মাণ মুসলিমদের জন্য বেদনাদায়ক: মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানী

        ভারতের ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’- এর সেক্রেটারি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানী বলেছেন, অবৈধভাবে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ শহীদ করার পরে একইস্থানে রামমন্দির নির্মাণ মুসলিম উম্মাহর জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক খবর। তিনি মসজিদের স্থলে মন্দির নির্মাণকে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।




        মঙ্গলবার ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রেরিত ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’- এর এক বিবৃতিতে দেশটির শীর্ষ এই আলেম এসব কথা বলেন।

        বিবৃতিতে তিনি জানান, বাবরি মসজিদের স্থলে যাতে রামমন্দির নির্মিত না হয়- এজন্য ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’ হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত সর্বশক্তি দিয়ে আইনি লড়াই করেছে।এমনকি সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্তের পরে আমরা বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্যও আহবান জানাই, কিন্তু আফসোস হলো- মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়নি- সুপ্রিমকোর্ট এই কথা স্বীকার করার পরও তাদের নিজস্ব বিশ্বাসের ভিত্তিতে এরকম ফায়সালা দিয়েছেন।




        মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানী আরো বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের অসন্তুষ্টি দূর করতে সুপ্রিমকোর্টের পক্ষ থেকে এই রায় এসেছে- এখানে মুসলমানদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি।

        সূত্র: মিল্লাত টাইমস
        আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          শহীদ বাবরি মসজিদের জায়গায় মালাউনদের রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

          ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় গত বুধবার রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মালাউন নরেন্দ্র মোদি।

          ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি অযোধ্যায় যান। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা থাকে। রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমিপুজায় অংশ নেন।

          ১৯৮৪ সালের পর বিজেপির অন্যতম রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা আসলে ছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণ। এই অ্যাজেন্ডা সামনে রেখেই ফের উত্থান হয় বিজেপির। এরপর ধর্ম ও বিভক্তিকে মূল সূত্র মেনেই ১৯৯১ সালের নির্বাচনে শতাধিক আসনে জিতেছিল লালকৃষ্ণ আদভানির বিজেপি। এরপরই ঘটে বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনা।

          রামমন্দিরকে ঘিরে তৈরি বিজেপির মূল অ্যাজেন্ডার প্রধান* ছিলেন মালাউন লালকৃষ্ণ আদভানি। ১৯৯০–এর দশকে রথযাত্রা বের করে মন্দির ইস্যুকে আলোচনার কেন্দ্রে এনেছিলেন আদভানি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের কাঠামো ধ্বংসের অনুষ্ঠানে প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। এখনো তাঁর বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংসে মদদ দেওয়ার মামলা চলছে। চলছে মুরলী মনোহর যোশীর বিরুদ্ধেও।

          এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, দিল্লি থেকে বিশেষ ফ্লাইটে করে বুধবার সকালে অযোধ্যার উদ্দেশে রওনা দেবেন মোদি। অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে মোদির সঙ্গে থাকবেন আরও চার ব্যক্তি।

          বলা হচ্ছে, রুপার তৈরি একটি ৪০ কেজি ওজনের ইট পুঁতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। দেশজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই এমন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
          আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            হে আল্লাহ্ গো মুত্র পানকারী মালুদের ধ্বংস করুন,তারা সিমালঙ্ঘন করেছে,এই নাপাক জাতি মুসলিমদের পবিত্র অন্তর ক্ষত বিক্ষত করেছে,তাদেরকে লান্চিত করুন,আপনার আজাবে পাকড়াও করুন হে রব্ব,তাদের সমূলে উপড়ে দিন,
            হে আল্লাহ্ এ কলঙ্ক মুছতে মুজাহিদদের সাহায্য করুন,এ জাতিকে জাগিয়ে দিন,
            আমাদের সবাইকে দ্বিন বিজয়ী এ কাফেলাই কবুল করুন এবং আমাদের রক্ত গ্রহন করুন হে রব্ব। আমীন।

            Comment


            • #7
              হে আল্লাহ্ গো মুত্র পানকারী মালুদের ধ্বংস করুন,তারা সিমালঙ্ঘন করেছে,এই নাপাক জাতি মুসলিমদের পবিত্র অন্তর ক্ষত বিক্ষত করেছে,তাদেরকে লান্চিত করুন,আপনার আজাবে পাকড়াও করুন হে রব্ব,তাদের সমূলে উপড়ে দিন,
              হে আল্লাহ্ এ কলঙ্ক মুছতে মুজাহিদদের সাহায্য করুন,এ জাতিকে জাগিয়ে দিন,
              আমাদের সবাইকে দ্বিন বিজয়ী এ কাফেলাই কবুল করুন এবং আমাদের রক্ত গ্রহন করুন হে রব্ব। আমীন।

              Comment


              • #8
                হে আল্লাহ আপনি নাপাক মুলুদের ধ্বংস করুন,।
                মুসলিমদের সাহায্য করুন,আমীন।
                হে আল্লাহ আপনি আল ফিরদাউস মিডিয়া টিমের সকল ভাইদেরকে সুস্থ ও নিরাপদে রাখুন,আমীন।
                ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

                Comment

                Working...
                X