হিন্দুত্ববাদী ভারতঃ বিহারে ইসলামিক নাম ব্যবহার করে হিন্দুদের জমি দখল
হিন্দু কৃষকদের জমি দখল করে সেখানে গকুল হোম সোসাইটি গড়ে তুলছে প্রতারক পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন। ছবিঃ BOOM
ভারতের বিহারে ইসলামিক নাম ব্যবহার করে হিন্দু কৃষকদের ভয় দেখিয়ে পানির দামে তাদের জমি কিনে নিয়েছে একদল প্রতারক হিন্দু। জমি কেনা শেষে মুসলিম নাম পালটে হিন্দু নাম ধারণ করেছে সংগঠনটি।
প্রতারক হিন্দু রভি প্রকাশ মহাজন ২০০২ সালে তানজিম-এ-জারখেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে একজন মুসলিম ম্যানেজার নিয়োগ করে। অন্যদিকে গো-রক্ষা ও পরিবেশ রক্ষার কথা বলে প্রায় ১০০ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সে সময়ই প্রায় এক কোটি রুপি সংগ্রহ করে।
তারপর শুরু হয় তার মূল মিশন। খারগোন এলাকার হিন্দু কৃষকদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে, মুসলিমদের সংগঠন তানজিম-এ-জারখেজ সেখানে একটি মুসলিম আবাসিক এলাকা, একটি কবরস্থান ও একটি বড় কশাই খানা খুলবে। পাশাপাশি হিন্দুদের মনে ভীতি ছড়াতে থাকে যে, সেখানে কশাই খানা খুললে তাদের জমির দাম কমে যাবে।
রভি প্রকাশ মহাজনের ফাঁদে পড়ে যায় রাজপুরা পঞ্চায়েতের ৭/৮ জন সহজ সরল হিন্দু কৃষক। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ একর জমি পানির দামে কিনে নেয় সংগঠনটি।
রাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চাশ বছর বয়সী রাম নারায়ণ কুশওয়াহা বলেছে, ২০০৪-০৫ সালে আশেপাশের গ্রামগুলিতে একটি শক্তিশালী গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে একটি মুসলিম সংগঠন একটি কসাই ঘর খুলছে এবং বেশিরভাগ জমি কিনে নিয়েছে। সেচ্ছায় বিক্রি না করলে এই মুসলিম সংগঠন হিন্দু গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ হতে বাধ্য করবে।
সে আরও বলে, “আমার মনে পড়ে ‘বাবলু খান’ নামে একজন এজেন্ট প্রায়ই গ্রামে আসতো জমির মালিকদেরকে তাদের খালি জমি বিক্রি করতে রাজি করাতে।
“সে [বাবলু খান] আমাদের এই বলে বুঝাতো যে, একবার তারা কসাই ঘর খুললে, আপনার জমি কোন কাজে আসবে না এবং আপনি কম দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। আমার ভাই তার ফাঁদে পড়েন এবং স্বল্প পরিমাণে চার একর জমি বিক্রি করে দেয়।”
রাজপুরা গ্রামের আরেক কৃষক, ৬৫ বছর বয়সী নন্দ কিশোর কুশওয়াহা দাবি করেছে, “কোন উপায় না দেখে, আমি আমার পাঁচ একর জমি ৮০,০০০ রুপিতে বিক্রি করেছি। কিন্তু তারা আমাকে মাত্র ৪০,০০০ রুপি দিয়েছে।”
জমি কেনা শেষ হলে, সংগঠনটি নাম পালটে পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন নাম ধারণ করে সেখানে একটি আবাসন প্রকল্প শুরু করে। উল্লেখ্য যে, এই আবাসন প্রকল্পে কোন মুসলিম বাসিন্দা নেই।
আবাসন প্রকল্পের সামনে হিন্দু নামের ব্যানার দেখে কৃষকদের মনে সন্দেহ হলে তারা খারগোন পুলিশের কাছে অভিযোগে দায়ের করে।
রাম নারায়ণ কুশওয়াহা বলেছে, “আমরা জানতে পেরেছি যে, মুসলিম সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন করা হয়েছে এবং সমস্ত জমি এখন তাদেরই। মুসলিম নামটি ছিল শুধুই ধোঁকা দেওয়ার জন্য।”
প্রতারক রভি প্রকাশ মহাজনের প্রতারণা এখানেই শেষ নয়। তার আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলোতেও সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ রুপি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতারক সংগঠন পিসি মহাজন ফাউন্ডেশনের সভাপতি হচ্ছে বজরং দলের নেতা রঞ্জিত সিং। অবশ্য রাজপুরার কৃষকদের জমি কেনার সময় এই হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী তানজিম-এ-জারখেজ এর সাথে যুক্ত ছিল না বলে দাবি করেছে রভি প্রকাশ মহাজন।
বাস্তবতা হচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এবং মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য প্রয়োজনে স্বজাতি হিন্দুদেরকেও সর্বস্বান্ত করতে দ্বিধা করে না। মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা যেকোন ছল, কৌশল অবলম্বন করতে পারে। নিজেরাই হিন্দুদের ঘর বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে তার দোষ মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দেয়ার মতো ঘটনাও অনেক ঘটেছে হিন্দুত্ববাদী ভারতে।
তথ্যসূত্র:
——-
হিন্দু কৃষকদের জমি দখল করে সেখানে গকুল হোম সোসাইটি গড়ে তুলছে প্রতারক পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন। ছবিঃ BOOM
ভারতের বিহারে ইসলামিক নাম ব্যবহার করে হিন্দু কৃষকদের ভয় দেখিয়ে পানির দামে তাদের জমি কিনে নিয়েছে একদল প্রতারক হিন্দু। জমি কেনা শেষে মুসলিম নাম পালটে হিন্দু নাম ধারণ করেছে সংগঠনটি।
প্রতারক হিন্দু রভি প্রকাশ মহাজন ২০০২ সালে তানজিম-এ-জারখেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে একজন মুসলিম ম্যানেজার নিয়োগ করে। অন্যদিকে গো-রক্ষা ও পরিবেশ রক্ষার কথা বলে প্রায় ১০০ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সে সময়ই প্রায় এক কোটি রুপি সংগ্রহ করে।
তারপর শুরু হয় তার মূল মিশন। খারগোন এলাকার হিন্দু কৃষকদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে, মুসলিমদের সংগঠন তানজিম-এ-জারখেজ সেখানে একটি মুসলিম আবাসিক এলাকা, একটি কবরস্থান ও একটি বড় কশাই খানা খুলবে। পাশাপাশি হিন্দুদের মনে ভীতি ছড়াতে থাকে যে, সেখানে কশাই খানা খুললে তাদের জমির দাম কমে যাবে।
রভি প্রকাশ মহাজনের ফাঁদে পড়ে যায় রাজপুরা পঞ্চায়েতের ৭/৮ জন সহজ সরল হিন্দু কৃষক। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ একর জমি পানির দামে কিনে নেয় সংগঠনটি।
রাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চাশ বছর বয়সী রাম নারায়ণ কুশওয়াহা বলেছে, ২০০৪-০৫ সালে আশেপাশের গ্রামগুলিতে একটি শক্তিশালী গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে একটি মুসলিম সংগঠন একটি কসাই ঘর খুলছে এবং বেশিরভাগ জমি কিনে নিয়েছে। সেচ্ছায় বিক্রি না করলে এই মুসলিম সংগঠন হিন্দু গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ হতে বাধ্য করবে।
সে আরও বলে, “আমার মনে পড়ে ‘বাবলু খান’ নামে একজন এজেন্ট প্রায়ই গ্রামে আসতো জমির মালিকদেরকে তাদের খালি জমি বিক্রি করতে রাজি করাতে।
“সে [বাবলু খান] আমাদের এই বলে বুঝাতো যে, একবার তারা কসাই ঘর খুললে, আপনার জমি কোন কাজে আসবে না এবং আপনি কম দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। আমার ভাই তার ফাঁদে পড়েন এবং স্বল্প পরিমাণে চার একর জমি বিক্রি করে দেয়।”
রাজপুরা গ্রামের আরেক কৃষক, ৬৫ বছর বয়সী নন্দ কিশোর কুশওয়াহা দাবি করেছে, “কোন উপায় না দেখে, আমি আমার পাঁচ একর জমি ৮০,০০০ রুপিতে বিক্রি করেছি। কিন্তু তারা আমাকে মাত্র ৪০,০০০ রুপি দিয়েছে।”
জমি কেনা শেষ হলে, সংগঠনটি নাম পালটে পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন নাম ধারণ করে সেখানে একটি আবাসন প্রকল্প শুরু করে। উল্লেখ্য যে, এই আবাসন প্রকল্পে কোন মুসলিম বাসিন্দা নেই।
আবাসন প্রকল্পের সামনে হিন্দু নামের ব্যানার দেখে কৃষকদের মনে সন্দেহ হলে তারা খারগোন পুলিশের কাছে অভিযোগে দায়ের করে।
রাম নারায়ণ কুশওয়াহা বলেছে, “আমরা জানতে পেরেছি যে, মুসলিম সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন করা হয়েছে এবং সমস্ত জমি এখন তাদেরই। মুসলিম নামটি ছিল শুধুই ধোঁকা দেওয়ার জন্য।”
প্রতারক রভি প্রকাশ মহাজনের প্রতারণা এখানেই শেষ নয়। তার আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলোতেও সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ রুপি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতারক সংগঠন পিসি মহাজন ফাউন্ডেশনের সভাপতি হচ্ছে বজরং দলের নেতা রঞ্জিত সিং। অবশ্য রাজপুরার কৃষকদের জমি কেনার সময় এই হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী তানজিম-এ-জারখেজ এর সাথে যুক্ত ছিল না বলে দাবি করেছে রভি প্রকাশ মহাজন।
বাস্তবতা হচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এবং মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য প্রয়োজনে স্বজাতি হিন্দুদেরকেও সর্বস্বান্ত করতে দ্বিধা করে না। মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা যেকোন ছল, কৌশল অবলম্বন করতে পারে। নিজেরাই হিন্দুদের ঘর বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে তার দোষ মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দেয়ার মতো ঘটনাও অনেক ঘটেছে হিন্দুত্ববাদী ভারতে।
তথ্যসূত্র:
——-
- How A Trust Used Urdu Name And Islamophobia To ‘Dupe’ Farmers – https://tinyurl.com/39br4uah
Comment