Announcement

Collapse
No announcement yet.

বেলফোর ঘোষণার ১০৫ বছর: মুসলিম উম্মাহর ঘুম ভাঙা জরুরী নয় কি?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বেলফোর ঘোষণার ১০৫ বছর: মুসলিম উম্মাহর ঘুম ভাঙা জরুরী নয় কি?

    বেলফোর ঘোষণার ১০৫ বছর: মুসলিম উম্মাহর ঘুম ভাঙা জরুরী নয় কি?




    ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায় বেলফোর ঘোষণা। ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিন ভূখন্ডে অভিশপ্ত ইহুদিদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ব্রিটেনের অবস্থানের কথা ঘোষণা করে। এ বিষয়ে ইহুদি লেখক আর্থার কোয়েস্টলার মন্তব্য করেছে, এর মাধ্যমে একটি জাতি অন্য একটি জাতিকে তৃতীয় জাতির ভূমি দখলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।বেলফোর ঘোষণা কী?

    বেলফোর ঘোষণা ছিল ফিলিস্তিনে ইহুদিদের স্থায়ী বসবাসের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ১৯১৭ সালে যুক্তরাজ্যের দেয়া একটি প্রতিশ্রুতি। তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক চিঠিতে ব্রিটিশ ইহুদি নেতা লিওনেল ওয়াল্টার রথসচাইল্ডকে এই প্রতিশ্রুতি দেয়। অথচ সেসময় ফিলিস্তিনে অল্প কিছু ইহুদি বসবাস করতো, যা ছিল জনসংখ্যার দিক থেকে মাত্র ৯ শতাংশ।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সময় ফিলিস্তিন অটোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে বেলফোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা শুরু করে ব্রিটিশরা।

    ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনে এনে বসবাসের সুযোগ করে দিতে থাকে ব্রিটিশ সরকার।এর ফলে ১৯২২ সাল থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে সেখানে ইহুদি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ২৭ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। ধীরে ধীরে ১৯৪৮ সালে সেখানে ইহুদীদের সংখ্যা ৬ লাখে উন্নীত হয়।বেলফোর ঘোষণায় ‘ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন করে এমন কিছু করা হবে না’ বলে প্রতিশ্রুতি থাকলেও, গাদ্দার ব্রিটিশরা নিজেদের করা প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভঙ্গ করে। ইহুদি জনগোষ্ঠীকে স্বনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করার পাশাপাশি প্রায় ত্রিশ হাজার ইহুদিকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে সেনা প্রশিক্ষণ দেয় ব্রিটিশরা।১৯১৮ সাল থেকে ব্রিটেনের সহযোগিতায় গঠিত ইসরাইলের গুপ্ত ইহুদী বাহিনী “হাগানাহ” ইহুদীবাদীদের অবৈধ রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব ছিল ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদীদের সহায়তা করা। তবে পরবর্তীকালে তারা সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়। ফিলিস্তিনী জনগণের বাড়িঘর ও ক্ষেত-খামার দখল করে তাদেরকে বিতাড়িত করা এবং বাজার ও রাস্তাঘাটসহ জনসমাবেশ স্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফিলিস্তিনীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করাই ছিল হাগানাহ বাহিনীর প্রধান কাজ।

    মানবতার ‘ঠিকাদার’ জাতিসঙ্ঘ ও পশ্চিমারা দখলদার ইহুদিদের পক্ষে!

    মুসলিমদের প্রথম কিবলা বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেন্দ্র করে ইহুদি ও পশ্চিমা বিশ্বের ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্র আরও প্রকাশ্য রূপ ধারণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডটি একটি স্বাধীন ও একচ্ছত্র মুসলিম এলাকা হওয়া সত্ত্বেও, ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়।পশ্চিমাদের চক্রান্তকে সফল করার জন্য সমগ্র মুসলিম বিশ্বের বিরোধিতাকে তোয়াক্কা না করে ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে ইহুদীদের ক্রীড়নক জাতিসংঘ। এই প্রস্তাব অনুসারে মাত্র ৪৫ শতাংশ থাকে ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের দিয়ে দেয়া হয়।একই সাথে আমেরিকা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে চাপ দিতে থাকে জাতিসংঘে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য।

    আমেরিকার প্রবল চাপ ও মুসলিমদের দুর্বলতার সুযোগে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ব্রিটিশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন ইহুদিদের কাছে ছেড়ে দেয়।পরদিনই, ১৯৪৮ সালের ১৫ মে, ইহুদি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় সাড়ে সাত লাখেরও বেশি মুসলিম ফিলিস্তিন ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত হয়। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা ভেবেছিল, যুদ্ধ শেষ হলে তারা বাড়ি ফিরে আসতে পারবে। কিন্তু পশ্চিমা ক্রুসেডারদের প্রত্যক্ষ মদদে দখলদার ইসরাইল তাদেরকে আর কখনোই বাড়িতে ফিরতে দেয়নি। এভাবেই ক্রুসেডার যুক্তরাজ্য ও দালাল জাতিসংঘের সাহায্যে ইসরাইল নামক একটি অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
    ১৯৪৮ সালে ইহুদি নির্যাতনের কারণে বাস্তু-চ্যুত ফিলিস্তিনিরা।অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপর ইতিহাসের সবচেয়ে নির্লজ্জ নিপীড়ন চালিয়ে আসছে ইহুদিরা। আর অভিশপ্ত ইহুদের এসব নিপীড়নে এখনো প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে দালাল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্ব।এদিকে মুসলিম উম্মাহর কিছু অংশ আজ ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত, কিছু অংশ ব্যস্ত ফুরুয়ি ইখতিলাফ নিয়ে, কিছু অংশ তাকিয়ে আছে পশ্চিমাদের দিকে তথাকথিত গণতান্ত্রিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের জন্য।

    আর কিছু অংশ বসে আছে এই ভেবে যে, ইমাম মাহদি আলাইহিস সালাম আসলে সব সমাধান হয়ে যাবে।ইতিহাস সাক্ষী, এমন শতধা বিভক্ত জাতি কখনও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। মুসলিমদের প্রথম কিবলা রক্ষায় প্রয়োজন শীশাঢালা প্রাচীরের ন্যায় একটি ঐক্যবদ্ধ মুসলিম জাতি, যাদের লক্ষ্য অভিন্ন, যারা তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে পূর্ণরূপে ওয়াকেবহাল এবং যারা লক্ষ্য অর্জনে সকল ধরনের কুরবানি করতে প্রস্তুত।


    লেখক : ইউসুফ আল-হাসান


    তথ্যসূত্র :
    ১। বেলফোর ঘোষণা
    https://tinyurl.com/mwywrnup






    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    হে আল্লাহ্ আমা‌দের আপনার সৈ‌নিক হিসা‌বে কবুল করুন।
    আল্লাহর জ‌মি‌নে, আল্লাহর সং‌বিধান প্রতিষ্ঠা করাই আমা‌দের লক্ষ‌্য।

    Comment


    • #3
      বেলফোর ডিক্লেয়ারেশন তখন সংঠোটিত হয়েছিলো, যখন মুসলিমরা তাদের অধঃপতনের সূচনা পর্বে ছিলো। শত বর্ষ গত হয়েছে। মুসলিমরা অধঃপতিত হয়েছে। পরাজিত হয়েছে।...অতঃপর এই পর্বে এসে সংখ্যায় নগণ্য হলেও প্রজন্ম আবার চেতনা ফিরে পেয়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উম্মাহর ওই অংশ যারা জীবিত, হারানো সম্মান পুনরুদ্ধারের মরণ শপথ নিয়ে পথ চলা শুরু করেছে। রবের সাথে সম্পর্ক গড়ে নিয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাও তার ওয়ায়াদা পুর্ণ করেছেন। উম্মাহ আবার তার উত্থানের পথে তার সফর শুরু করেছে। খোরাসানের বিজয় এই উম্মাহর প্রেরণা। বেলফোর ডিক্লেয়ারেশন প্রতিশোধের স্পৃহা।

      Comment

      Working...
      X