ব্যাংকে ডলার সংকট ও দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় বেপরোয়া দুর্নীতির ফল
বেশ দুর্বল হয়ে পড়ছে দেশের ব্যাংক খাত, ডলার সংকট চরমে। অনেক ব্যাংকে ডলার একদম শুন্যের কোটায়। দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী এগুলোকে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব বলে চালিয়ে দিতে চায়! কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ব্যাংক খাতে বেপরোয়া দুর্নীতি, ব্যাংক পরিচালনায় রাজনৈতিক ও পরিচালকদের হস্তক্ষেপ এবং খেলাপি ঋণের মাত্রাতিরিক্ত ঊর্ধ্বগতির কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের মানুষের সঞ্চয়কৃত টাকায় দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী বেপরোয়াভাবে নিজেদের পকেট ভারি করেছে। ঋণের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এসব ঋণের পরিমাণ এতো বেশি যে, খেলাপির মধ্যে কুঋণের পরিমাণই হচ্ছে সোয়া ৮৮ শতাংশ। বড় জালিয়াতদের ঋণের বড় অংশই এখন কুঋণে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এইসব অর্থ দিয়ে চার-পাঁচটি পদ্মা সেতুর মতো বড় অবকাঠামো করা সম্ভব।
ডলারের সংকট ব্যাংক খাতকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে। ডলার না থাকায় ব্যাংক আমদানির এলসি খুলতে পারছে না। এমনকি অনেক ব্যাংক এলসির টাকা সময়মত পরিশোধ করতে না পারায় বিদেশে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। আর অদূর ভবিষ্যতে এলসি করতে না পারলে খাদ্যশস্যসহ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পন্যের গভীর সংকট সৃষ্টি হবে। ফলে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এভাবে দেশের গোটা অর্থনীতিকেই এখন এক মহাবিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই কথিত গণতান্ত্রিক এলিটশ্রেণি, দুর্নীতি আর পরাশক্তিদের দালালি যাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাতে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যাংকের পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাংকাররা জড়িত। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে ৮টি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা চলমান। তিনটি ব্যাংকের এমডি পলাতক রয়েছে।
২০১২ থেকে ২০১৭ সাল-এ সময়ে ১২টি বড় ঋণ জালিয়াতির কারণে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপের কারণে বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এ দুটি গ্রুপ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া ঋণের প্রায় সবই এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। ওইসব ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সুইটজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট হাজার দু’শ ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে, এই অর্থের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিনশ ৪৭ কোটি টাকা। একইভাবে প্রতি বছর হাজার হাজার টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে সেখানে।
সুইস ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে কয়েক বছরের যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে তাতে এই বৃদ্ধি এক বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ। এই হিসেব অনুযায়ী, এক বছরেই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দু’হাজার নয়শ ২৮ কোটি টাকা বেড়েছে।
এছাড়াও, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত ছিল। গত ছয় বছর অতিবাহিত হলেও এই অর্থ ফেরত আনতে পারেনি দুর্নীতিবাজ সরকার। এ অর্থ চুরির পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে কখনোই চুরি সম্ভব ছিল না বলে মত আইটি বিশেষজ্ঞদের।
এগুলো মিডিয়ায় উঠে আসা কিছু দুর্নীতির ছিটেফোঁটা মাত্র। বাস্তবে এতো বেশি অর্থ চুরি আর দেশ থেকে পাচার হয়েছে যে, দেশে ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী এতোটাই দুর্নীতিগ্রস্ত যে এর নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত প্রমাণিত চোর। এদের ক্ষমতা শেষ হলেই দুর্নীতির ফিরিস্তি সামনে আসে। তাদের একদল হয় দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, অন্যরা দেশের সব ডলার চুরি ও পাচার করে ধ্বংস করে দেয় ব্যাংক খাত। এরা ছাগল চুরি, টাকা চুরি, ট্যান্ডার চুরি, গরিবের চাল চুরি, টিন চুরি ইত্যাদিসহ এমন কোন চুরি নেই যা করেনি। এক দল করে কুইকরেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে চুরি, অন্য দল করে কারেন্টের খাম্বার নামে চুরি; সবই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
এতকিছুর পরেও, ব্যাংকের এ অবস্থার জন্য দুর্নীতিবাজ গণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী হাস্যকরভাবে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে সামনে তুলে ধরে জাতিকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিবৃতিতে মনে হয় যেন, রশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয়ভার তারাই বহন করছে। আবার, এই চেতনবাজ সরকার- কোন ব্যাংক দেউলিয়া হলে আমানতকারীরা মাত্র ১ লাখ টাকা করে পাবেন বলে আইনও জারি করেছে গত বছর। তা সেই আমানতকারীর যত টাকাই জমা থাকুক ব্যাংকে, তিনি পাবেন মাত্র ১ লাখ টাকা।
আবার, আরেকদল, যাদেরকে বর্তমান সরকার পতন হলে ক্ষমতায় দেখতে চায় পশ্চিমারা, তারাও বর্তমান দুর্নীতিবাজ সরকারকে প্রস্তাব দিচ্ছে – যেন তারা ‘সেইফ এক্সিট’ নিয়ে চলে যায়। তারা এখন থেকেই নিজেদেরকে এই দেশ, দেশের জনগণ ও দেশের সম্পদের মালিক ভাবছে; আর এজন্যই তারা জনগণের সম্পদ পাচারকারি বর্তমান সরকারকে বিনা বিচারে কথিত ‘সেইফ এক্সিট’ দেওয়ার প্রস্তাব করছে।
সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা এই দেশ আল্লাহ তা’য়ালার দেয়া নেয়ামতে পরিপূর্ণ। এছাড়াও আপামর মুসলিম জনতা যুগ যুগ ধরে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছে এই দেশকে। কিন্তু কখনোই এর ফল ভোগ করতে পারেনি দেশের মানুষ। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশরা প্রায় ২০০ বছর শোষণ করেছে, এরপর তাদের উত্তরসূরি যথাক্রমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আর স্বাধীনতা পরবর্তী কথিত গণতান্ত্রিক এলিটরা, যাদের শোষণ এখনো চলমান। কয়েক শত বছর ধরেই এদেশের মুসলিমরা ব্রিটিশ ও তাদের গণতন্ত্রপন্থী উত্তরসুরিদের শোষণের জিঞ্জিরে আবদ্ধ হয়ে আছে। আর এদের সবার লক্ষ্য উদ্দেশ্যই এক – এদেশের মুসলিমদেরকে ইসলাম ও শরিয়াহ থেকে বঞ্চিত করে রাখা।
এসব দুর্নীতিবাজ পশ্চিমাদের দালাল শাসকগোষ্ঠীর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই দেশের সকল মানুষকে তন্ত্র-মন্ত্র পরিত্যাগ করে ইসলামের সুশিতল ছায়াতলে একত্রিত হতে হবে। ভেঙে ফেলতে হবে পশ্চিমা সেক্যুলার শাসন ব্যবস্থার জিঞ্জির, ফিরিয়ে আনতে হবে ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা।
তথ্যসূত্র:
১। ব্যাংক খাত নিয়ে দুশ্চিন্তা-
– https://tinyurl.com/597makfj
২। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ‘টাকার পাহাড়’-
– https://tinyurl.com/597makfj
৩। বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলায় অর্থ চুরি-
– https://tinyurl.com/44w84vvd
বেশ দুর্বল হয়ে পড়ছে দেশের ব্যাংক খাত, ডলার সংকট চরমে। অনেক ব্যাংকে ডলার একদম শুন্যের কোটায়। দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী এগুলোকে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব বলে চালিয়ে দিতে চায়! কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ব্যাংক খাতে বেপরোয়া দুর্নীতি, ব্যাংক পরিচালনায় রাজনৈতিক ও পরিচালকদের হস্তক্ষেপ এবং খেলাপি ঋণের মাত্রাতিরিক্ত ঊর্ধ্বগতির কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের মানুষের সঞ্চয়কৃত টাকায় দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী বেপরোয়াভাবে নিজেদের পকেট ভারি করেছে। ঋণের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এসব ঋণের পরিমাণ এতো বেশি যে, খেলাপির মধ্যে কুঋণের পরিমাণই হচ্ছে সোয়া ৮৮ শতাংশ। বড় জালিয়াতদের ঋণের বড় অংশই এখন কুঋণে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এইসব অর্থ দিয়ে চার-পাঁচটি পদ্মা সেতুর মতো বড় অবকাঠামো করা সম্ভব।
ডলারের সংকট ব্যাংক খাতকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে। ডলার না থাকায় ব্যাংক আমদানির এলসি খুলতে পারছে না। এমনকি অনেক ব্যাংক এলসির টাকা সময়মত পরিশোধ করতে না পারায় বিদেশে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। আর অদূর ভবিষ্যতে এলসি করতে না পারলে খাদ্যশস্যসহ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পন্যের গভীর সংকট সৃষ্টি হবে। ফলে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এভাবে দেশের গোটা অর্থনীতিকেই এখন এক মহাবিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই কথিত গণতান্ত্রিক এলিটশ্রেণি, দুর্নীতি আর পরাশক্তিদের দালালি যাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাতে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যাংকের পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাংকাররা জড়িত। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে ৮টি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা চলমান। তিনটি ব্যাংকের এমডি পলাতক রয়েছে।
২০১২ থেকে ২০১৭ সাল-এ সময়ে ১২টি বড় ঋণ জালিয়াতির কারণে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপের কারণে বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এ দুটি গ্রুপ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া ঋণের প্রায় সবই এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। ওইসব ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সুইটজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট হাজার দু’শ ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে, এই অর্থের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিনশ ৪৭ কোটি টাকা। একইভাবে প্রতি বছর হাজার হাজার টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে সেখানে।
সুইস ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে কয়েক বছরের যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে তাতে এই বৃদ্ধি এক বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ। এই হিসেব অনুযায়ী, এক বছরেই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দু’হাজার নয়শ ২৮ কোটি টাকা বেড়েছে।
এছাড়াও, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত ছিল। গত ছয় বছর অতিবাহিত হলেও এই অর্থ ফেরত আনতে পারেনি দুর্নীতিবাজ সরকার। এ অর্থ চুরির পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে কখনোই চুরি সম্ভব ছিল না বলে মত আইটি বিশেষজ্ঞদের।
এগুলো মিডিয়ায় উঠে আসা কিছু দুর্নীতির ছিটেফোঁটা মাত্র। বাস্তবে এতো বেশি অর্থ চুরি আর দেশ থেকে পাচার হয়েছে যে, দেশে ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠী এতোটাই দুর্নীতিগ্রস্ত যে এর নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত প্রমাণিত চোর। এদের ক্ষমতা শেষ হলেই দুর্নীতির ফিরিস্তি সামনে আসে। তাদের একদল হয় দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, অন্যরা দেশের সব ডলার চুরি ও পাচার করে ধ্বংস করে দেয় ব্যাংক খাত। এরা ছাগল চুরি, টাকা চুরি, ট্যান্ডার চুরি, গরিবের চাল চুরি, টিন চুরি ইত্যাদিসহ এমন কোন চুরি নেই যা করেনি। এক দল করে কুইকরেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে চুরি, অন্য দল করে কারেন্টের খাম্বার নামে চুরি; সবই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
এতকিছুর পরেও, ব্যাংকের এ অবস্থার জন্য দুর্নীতিবাজ গণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী হাস্যকরভাবে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে সামনে তুলে ধরে জাতিকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিবৃতিতে মনে হয় যেন, রশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয়ভার তারাই বহন করছে। আবার, এই চেতনবাজ সরকার- কোন ব্যাংক দেউলিয়া হলে আমানতকারীরা মাত্র ১ লাখ টাকা করে পাবেন বলে আইনও জারি করেছে গত বছর। তা সেই আমানতকারীর যত টাকাই জমা থাকুক ব্যাংকে, তিনি পাবেন মাত্র ১ লাখ টাকা।
আবার, আরেকদল, যাদেরকে বর্তমান সরকার পতন হলে ক্ষমতায় দেখতে চায় পশ্চিমারা, তারাও বর্তমান দুর্নীতিবাজ সরকারকে প্রস্তাব দিচ্ছে – যেন তারা ‘সেইফ এক্সিট’ নিয়ে চলে যায়। তারা এখন থেকেই নিজেদেরকে এই দেশ, দেশের জনগণ ও দেশের সম্পদের মালিক ভাবছে; আর এজন্যই তারা জনগণের সম্পদ পাচারকারি বর্তমান সরকারকে বিনা বিচারে কথিত ‘সেইফ এক্সিট’ দেওয়ার প্রস্তাব করছে।
সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা এই দেশ আল্লাহ তা’য়ালার দেয়া নেয়ামতে পরিপূর্ণ। এছাড়াও আপামর মুসলিম জনতা যুগ যুগ ধরে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছে এই দেশকে। কিন্তু কখনোই এর ফল ভোগ করতে পারেনি দেশের মানুষ। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশরা প্রায় ২০০ বছর শোষণ করেছে, এরপর তাদের উত্তরসূরি যথাক্রমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আর স্বাধীনতা পরবর্তী কথিত গণতান্ত্রিক এলিটরা, যাদের শোষণ এখনো চলমান। কয়েক শত বছর ধরেই এদেশের মুসলিমরা ব্রিটিশ ও তাদের গণতন্ত্রপন্থী উত্তরসুরিদের শোষণের জিঞ্জিরে আবদ্ধ হয়ে আছে। আর এদের সবার লক্ষ্য উদ্দেশ্যই এক – এদেশের মুসলিমদেরকে ইসলাম ও শরিয়াহ থেকে বঞ্চিত করে রাখা।
এসব দুর্নীতিবাজ পশ্চিমাদের দালাল শাসকগোষ্ঠীর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই দেশের সকল মানুষকে তন্ত্র-মন্ত্র পরিত্যাগ করে ইসলামের সুশিতল ছায়াতলে একত্রিত হতে হবে। ভেঙে ফেলতে হবে পশ্চিমা সেক্যুলার শাসন ব্যবস্থার জিঞ্জির, ফিরিয়ে আনতে হবে ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা।
লেখক : মুহাম্মাদ ইব্রাহীম
তথ্যসূত্র:
১। ব্যাংক খাত নিয়ে দুশ্চিন্তা-
– https://tinyurl.com/597makfj
২। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ‘টাকার পাহাড়’-
– https://tinyurl.com/597makfj
৩। বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলায় অর্থ চুরি-
– https://tinyurl.com/44w84vvd
Comment