কেমন আছেন ভারতের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা || পর্ব-৫ || “আমি চিৎকার করে কাঁদতাম।”
ফাইল ফটো।
ফারজানা রহমানের বয়স ২০ বছর। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে কথা বলছেন তিনি। বলছেন ডিটেনশন সেন্টারে কাটানো দিনগুলোর কথা। সেখানে শিশুদের শিক্ষার অনুমতি না দেওয়া, খেলাধুলা কিংবা পড়াশোনার কোনো জায়গা না থাকার বিষয়গুলো ওঠে এসেছে তার বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, প্রায়ই শিশুদের মুখে ও শরীরে দেখা যেত ফুসকুড়ি।
“খাবার ছিল পঁচা। কেউই খেতে পারবে না এগুলো,” বলছেন ফারজানা রহমান। “যখন বন্দীরা ভোজ্য খাবার দেওয়ার অনুরোধ করতেন, তাদের অপমান করা হতো, গালিগালাজ করা হতো।”
“মাঝেমাঝে আমি মুক্ত বাতাসে একটু নিঃশ্বাস নেওয়া এবং কিছু ভালো খাবার খাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিৎকার করে কাঁদতাম, দেয়ালে আঁচড়াতাম,” বলছিলেন ফারজানা রহমান। কিন্তু ফারজানার এমন আকুতিতেও মন গলতো না হিন্দুত্ববাদী নরপশু কর্মকর্তাদের। ফারজানা বলেন, “এরপর যখন কর্মকর্তারা আমাকে হুমকি দিতো, আমি নত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বাধ্য হতাম। তখন তারা আমাকে ক্ষমা করতো।”
মুহাম্মাদ হাবিব খান। বয়স ২২ বছর। সক্ষম এই যুবকও ভিকাশপুরিতে চাকরিহীন জীবনযাপন করছেন। তিনি হিন্দুত্ববাদীদের ডিটেনশন সেন্টারে প্রায় ২৪ মাস কাটিয়েছেন। আবারও তাকে বন্দী করা হতে পারে, এমন ভয়ে আছেন তিনি।
বন্দীদের কেউই বুঝতে পারেন না, ঠিক কেন তাদেরকে বন্দী করা হয়েছে। কোনো অপরাধ না করেও কেন তাদেরকে কারাবরণ করতে হচ্ছে! আমি যেসকল বন্দীর সাথে কথা বলেছি, তাদের সবাইকেই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’ শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের প্রদান করা পরিচয়পত্রও তাদের সাথে আছে।
মুহাম্মাদ হাবিব খান বলেছেন, ভারতীয় সরকার এবং ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে প্রায়ই দেখা করে। দেখা করার সময় তারা রোহিঙ্গাদের হুমকি দিয়ে বলে, যদি রোহিঙ্গারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা করে, তবে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করা হবে তাদের।
হাবিব খান আরও বলেছেন, “তারা আমাদেরকে ডিটেনশন সেন্টার থেকে বের করেছে আমরা প্রায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আগ মুহূর্তে। তারা আসলে আমাদের মৃত দেহ চায় না।”
[চলবে ইনশাআল্লাহ…]
অনুবাদ: সাইফুল ইসলাম
তথ্যসূত্রঃ
১। Rohingya Refugees Recall Desperate Conditions With No Legal Recourse In Delhi Detention Centre – https://tinyurl.com/yvxps73w
আগের পর্বগুলো পড়ুনঃ
https://alfirdaws.org/2022/10/29/60260/
ফাইল ফটো।
ফারজানা রহমানের বয়স ২০ বছর। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে কথা বলছেন তিনি। বলছেন ডিটেনশন সেন্টারে কাটানো দিনগুলোর কথা। সেখানে শিশুদের শিক্ষার অনুমতি না দেওয়া, খেলাধুলা কিংবা পড়াশোনার কোনো জায়গা না থাকার বিষয়গুলো ওঠে এসেছে তার বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, প্রায়ই শিশুদের মুখে ও শরীরে দেখা যেত ফুসকুড়ি।
“খাবার ছিল পঁচা। কেউই খেতে পারবে না এগুলো,” বলছেন ফারজানা রহমান। “যখন বন্দীরা ভোজ্য খাবার দেওয়ার অনুরোধ করতেন, তাদের অপমান করা হতো, গালিগালাজ করা হতো।”
“মাঝেমাঝে আমি মুক্ত বাতাসে একটু নিঃশ্বাস নেওয়া এবং কিছু ভালো খাবার খাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিৎকার করে কাঁদতাম, দেয়ালে আঁচড়াতাম,” বলছিলেন ফারজানা রহমান। কিন্তু ফারজানার এমন আকুতিতেও মন গলতো না হিন্দুত্ববাদী নরপশু কর্মকর্তাদের। ফারজানা বলেন, “এরপর যখন কর্মকর্তারা আমাকে হুমকি দিতো, আমি নত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বাধ্য হতাম। তখন তারা আমাকে ক্ষমা করতো।”
মুহাম্মাদ হাবিব খান। বয়স ২২ বছর। সক্ষম এই যুবকও ভিকাশপুরিতে চাকরিহীন জীবনযাপন করছেন। তিনি হিন্দুত্ববাদীদের ডিটেনশন সেন্টারে প্রায় ২৪ মাস কাটিয়েছেন। আবারও তাকে বন্দী করা হতে পারে, এমন ভয়ে আছেন তিনি।
বন্দীদের কেউই বুঝতে পারেন না, ঠিক কেন তাদেরকে বন্দী করা হয়েছে। কোনো অপরাধ না করেও কেন তাদেরকে কারাবরণ করতে হচ্ছে! আমি যেসকল বন্দীর সাথে কথা বলেছি, তাদের সবাইকেই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’ শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের প্রদান করা পরিচয়পত্রও তাদের সাথে আছে।
মুহাম্মাদ হাবিব খান বলেছেন, ভারতীয় সরকার এবং ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে প্রায়ই দেখা করে। দেখা করার সময় তারা রোহিঙ্গাদের হুমকি দিয়ে বলে, যদি রোহিঙ্গারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা করে, তবে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করা হবে তাদের।
হাবিব খান আরও বলেছেন, “তারা আমাদেরকে ডিটেনশন সেন্টার থেকে বের করেছে আমরা প্রায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আগ মুহূর্তে। তারা আসলে আমাদের মৃত দেহ চায় না।”
[চলবে ইনশাআল্লাহ…]
অনুবাদ: সাইফুল ইসলাম
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ভারতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হালাত নিয়ে তৈরি “Rohingya Refugees Recall Desperate Conditions With No Legal Recourse In Delhi Detention Centre” এই শিরোনামে article14 এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমরা ধারাবাহিক ভাবে বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করছি।
তথ্যসূত্রঃ
১। Rohingya Refugees Recall Desperate Conditions With No Legal Recourse In Delhi Detention Centre – https://tinyurl.com/yvxps73w
আগের পর্বগুলো পড়ুনঃ
https://alfirdaws.org/2022/10/29/60260/
Comment