বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩০তম বার্ষিকী পালন করায় ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা
গত ৬ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি কর্মসূচি পালন করেছেন। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠানটি করার ‘ঠুনকো’ কারণ দেখিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
অনুষ্ঠান চলাকালে মুসলিম শিক্ষার্থীরা ৬ ডিসেম্বরকে ব্ল্যাক ডে বা ‘কালো দিবস’ বলে পোস্টারিং করে। অনুষ্ঠানটির পর থেকেই হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর অন্যায় হুমকি বাস্তবায়নে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
গত ৭ ডিসেম্বর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি শহরে একটি মহাপঞ্চায়েত করে এবং মুসলিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। বিজেপির যুব শাখা ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা বলেছিল ১২ ডিসেম্বর, সোমবারের মধ্যে এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলে তারা আলিগড় পুলিশ সুপারের অফিসে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ছাত্রদের তৈরি পোস্টার এবং ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের গজল “হাম দেখেঙ্গে” থেকে একটি নির্দিষ্ট শ্লোক ব্যবহার করার বিষয়েও আপত্তি জানায়।
এফআইআর-এর অনুলিপি অনুসারে জানা যায়, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা 505 (statements conducting to public mischief বা জনসাধারণকে উসকে দেওয়া), 188 (disobedience to order duly promulgated by public servant বা সরকারি কর্মচারী দ্বারা যথাযথভাবে প্রচারিত আদেশের অবাধ্যতা), 295-এ (acts intended to outrage religious feelings বা ক্ষোভের উদ্দেশ্যে ক্রিয়াকলাপ) ধর্মীয় অনুভূতি) এবং 298 (uttering words, etc with deliberate intent to wound the religious feelings of any person বা কোন ব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে শব্দ উচ্চারণ করা)।এর অধীনে মামলা করেছে।
ফরিদ নামে একজন মুসলিম ছাত্র মাকতুব মিডিয়াকে বলেন, “সেদিন আমরা যে ছাত্র সমাবেশ করেছিলাম, সেখানে আপত্তিকর কিছু ছিল না এবং সব অভিযোগই ভিত্তিহীন।…এই ছাত্র সমাবেশ কোন ধর্মের বিরুদ্ধে ছিল না। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২-এ, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মাধ্যমে মুসলিমদের কলিজায় আঘাত দেওয়ার পাশাপাশি সংবিধানকেও উপহাস করা হয়েছিল। এই কারণেই আমরা একত্রিত হয়েছিলাম এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছি।…আমাদের পরীক্ষার চলছে। এরই মাঝখানে সেই অনুষ্ঠানের কারণে আমাদের মানসিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
এমএ প্রথম বর্ষের আরেকজন ছাত্র সালমান গৌরী বলেন, “আমরা কখনই কোনো ধর্মকে আঘাত করিনি।… ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। সালমান তখন প্রশ্ন করেন, ছাত্ররা কি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আলোচনাও করতে পারবে না?”
আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওয়াসিম আলি মাকতুব মিডিয়াকে বলেন: “৬ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রতিবাদ হয়নি। মাত্র কয়েকজন ছাত্র তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে জড়ো হয়েছিল। ছাত্রদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর নিয়ে আলাদা তদন্ত চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। আমরা এবং আমাদের ছাত্ররা আমাদের পূর্ণ সম্ভাব্য সহযোগিতার সাথে তদন্তের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ শান্তি বিরাজ করছে।”
হিন্দুত্ববাদী ভারতে কথিত গণতান্ত্রিক কথা মেনে কেউ প্রতিবাদ করলেও সেটা সহ্য করা হবে না- এটাই এখন সেখানকার বাস্তবতা। অর্থাৎ, মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা কোন অধিকার বা আইনের তোয়াক্কা করে না, যে অধিকার বা আইনগুলো তারা নিজেরাই নির্ধারণ করেছিল।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Aligarh Muslim University students booked for ‘30 years of Babri’ program
– https://bit.ly/3uMQPrB
গত ৬ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি কর্মসূচি পালন করেছেন। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠানটি করার ‘ঠুনকো’ কারণ দেখিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
অনুষ্ঠান চলাকালে মুসলিম শিক্ষার্থীরা ৬ ডিসেম্বরকে ব্ল্যাক ডে বা ‘কালো দিবস’ বলে পোস্টারিং করে। অনুষ্ঠানটির পর থেকেই হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর অন্যায় হুমকি বাস্তবায়নে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
গত ৭ ডিসেম্বর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি শহরে একটি মহাপঞ্চায়েত করে এবং মুসলিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। বিজেপির যুব শাখা ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা বলেছিল ১২ ডিসেম্বর, সোমবারের মধ্যে এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলে তারা আলিগড় পুলিশ সুপারের অফিসে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ছাত্রদের তৈরি পোস্টার এবং ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের গজল “হাম দেখেঙ্গে” থেকে একটি নির্দিষ্ট শ্লোক ব্যবহার করার বিষয়েও আপত্তি জানায়।
এফআইআর-এর অনুলিপি অনুসারে জানা যায়, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা 505 (statements conducting to public mischief বা জনসাধারণকে উসকে দেওয়া), 188 (disobedience to order duly promulgated by public servant বা সরকারি কর্মচারী দ্বারা যথাযথভাবে প্রচারিত আদেশের অবাধ্যতা), 295-এ (acts intended to outrage religious feelings বা ক্ষোভের উদ্দেশ্যে ক্রিয়াকলাপ) ধর্মীয় অনুভূতি) এবং 298 (uttering words, etc with deliberate intent to wound the religious feelings of any person বা কোন ব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে শব্দ উচ্চারণ করা)।এর অধীনে মামলা করেছে।
ফরিদ নামে একজন মুসলিম ছাত্র মাকতুব মিডিয়াকে বলেন, “সেদিন আমরা যে ছাত্র সমাবেশ করেছিলাম, সেখানে আপত্তিকর কিছু ছিল না এবং সব অভিযোগই ভিত্তিহীন।…এই ছাত্র সমাবেশ কোন ধর্মের বিরুদ্ধে ছিল না। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২-এ, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মাধ্যমে মুসলিমদের কলিজায় আঘাত দেওয়ার পাশাপাশি সংবিধানকেও উপহাস করা হয়েছিল। এই কারণেই আমরা একত্রিত হয়েছিলাম এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছি।…আমাদের পরীক্ষার চলছে। এরই মাঝখানে সেই অনুষ্ঠানের কারণে আমাদের মানসিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
এমএ প্রথম বর্ষের আরেকজন ছাত্র সালমান গৌরী বলেন, “আমরা কখনই কোনো ধর্মকে আঘাত করিনি।… ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। সালমান তখন প্রশ্ন করেন, ছাত্ররা কি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আলোচনাও করতে পারবে না?”
আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওয়াসিম আলি মাকতুব মিডিয়াকে বলেন: “৬ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রতিবাদ হয়নি। মাত্র কয়েকজন ছাত্র তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে জড়ো হয়েছিল। ছাত্রদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর নিয়ে আলাদা তদন্ত চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। আমরা এবং আমাদের ছাত্ররা আমাদের পূর্ণ সম্ভাব্য সহযোগিতার সাথে তদন্তের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ শান্তি বিরাজ করছে।”
হিন্দুত্ববাদী ভারতে কথিত গণতান্ত্রিক কথা মেনে কেউ প্রতিবাদ করলেও সেটা সহ্য করা হবে না- এটাই এখন সেখানকার বাস্তবতা। অর্থাৎ, মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা কোন অধিকার বা আইনের তোয়াক্কা করে না, যে অধিকার বা আইনগুলো তারা নিজেরাই নির্ধারণ করেছিল।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Aligarh Muslim University students booked for ‘30 years of Babri’ program
– https://bit.ly/3uMQPrB
Comment