হিন্দুত্ববাদী হাইকোর্ট থেকেও ইসলামিক স্কলারের জামিন প্রত্যাখ্যান
মাওলানা মোহাম্মদ উমর গৌতম। ফাইল ফটো।
মোহাম্মদ উমর গৌতম একজন সম্মানিত ইসলামিক স্কলার এবং ইসলামিক দাওয়াহ সেন্টার (IDC) এর প্রতিষ্ঠাতা। উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুরে একটি হিন্দু পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড ২০২১ সালে উমর গৌতমকে ‘জোর করে ধর্মান্তরিত করার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট গত ১৬ ডিসেম্বর মোহাম্মদ উমর গৌতমকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এই বছরের মে মাসেও লখনউয়ের বিশেষ বিচারক, এনআইএ/এটিএস/অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কর্তৃক তার জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবার পর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
মোহাম্মদ উমর গৌতম প্রায় ১০০০ অমুসলিমকে ইসলামের সৌন্দর্য্য ও সত্যতার দাওয়াত দিয়ে মুসলিম বানিয়েছেন। এছাড়া মুফতি জাহাঙ্গির কাসিমকেও আটক করেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
পুলিশের অভিযোগ, তারা জোরপূর্বক এক হাজার হিন্দুকে মুসলিম বানিয়েছে। কিন্তু, মজার বিষয় হলো, হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হওয়া ওই এক হাজার ব্যক্তির মধ্যে কেউই এমন অভিযোগ করেননি। এমনকি হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত হওয়া ওই মুসলিমরা তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো মামলা বা অভিযোগ করেননি। এছাড়া তারা ভারতের কোনো গণমাধ্যমের সামনেও বলেননি যে, তাদের জোর করে মুসলিম বানানো হয়েছে।
হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া ব্যক্তিরা ও অনেক হিন্দু পুলিশের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সাথে তারা এটাও বলেছেন যে, অনেক হিন্দুত্ববাদী গণমাধ্যম মাওলানা উমর গৌতমকে অপরাধী বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। এছাড়া তারা মাওলানার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে শঙ্কিত।
সৌরভ দত্ত শর্মা মুসলিম হয়ে বর্তমানে মোহাম্মদ সুফিয়ান নাম ধারণ করেছেন। তিনি মাওলানা উমর গৌতম সম্পর্কে মুসলিম মিররকে বলেন, “আমি ২০১৩ সাল থেকে উমর গৌতমের সাথে আছি। তিনি কখনোই আমাকে মুসলিম হবার জন্য চাপ দেননি। তাকে ভারতের গণমাধ্যম খারাপভাবে চিত্রিত করছে। এ ব্যাপারটা আমাদের দেশ ভারতের জন্য ভালো নয়।”
আরেকজন নওমুসলিম দিনেশ বলেন, “আমি তখনই মাওলানা উমর গৌতমের সাথে সাক্ষাৎ করি যখন আমি বুঝতে পারি যে ইসলাম সত্য ধর্ম। তিনি ওই সময়ই আমাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলেননি। বরং, তিনি আমাকে কিছু ইসলামী বই দেন এবং তা ভালোভাবে পড়তে বলেন। তিনি আমাকে বলেন, তখনই তুমি আমার কাছে আসবে যখন ইসলাম ধর্মের প্রতি তুমি সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত হবে।”
শর্মা ও দিনেশের মতো আরো অনেক ধর্মান্তরিত মুসলিম ও বহু হিন্দু মাওলানা উমর গৌতম সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে চমৎকার সব তথ্য দিয়েছেন। তাদের এসব কথার ভিডিও প্রকাশ করেছে মুসলিম মিরর, মিল্লাত টাইমস ও মাকতুব মিডিয়া।
সৌরভ দত্ত শর্মা বলেন, মাওলানা উমর গৌতম ও তার সংগঠন ইসলামিক দাওয়া সেন্টার (আইডিএলসি) ইসলামের প্রকৃত সত্য প্রচার করছে। তিনি ও তার সংগঠনের কর্মীরা ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করেন। এছাড়া আইডিএলসি ধর্মান্তরিত মুসলিমদের নতুন আইনি পরিচয়পত্র দেয়। এসব পরিচয়পত্র ভারতীয় সংবিধান অনুসারে করা হয়। ভারতের সংবিধানে ব্যক্তি ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। সংবিধান অনুসারে ব্যক্তি যে কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে পারে। তারপরেও তিনি মুসলিম হওয়ায় হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন তাদের নিজেদের সংবিধানেরও কোন তোয়াক্কা করছে না। তিনি কাউকে জোরপূর্বক কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে মুসলিম বানান নাই, তবুও হিন্দুত্ববাদীরা তার পিছনে উঠেপড়ে লেগেছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইতিমধ্যেই গ্যাংস্টার অ্যাক্ট এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের (এনএসএ) অধীনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রায় ৫৫০ দিনের মত জেলে অতিবাহিত করার পরও হিন্দুত্ববাদী হাইকোর্ট মোহাম্মদ উমর গৌতমের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। মুসলিম ছাড়া অন্যদের সাথে এমনটা করা হয় না। শুধুমাত্র ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারণেই তারা এমনটা করছে।
তথ্যসূত্র:
১। 545 days in jail; no bail for Mohammad Umar Gautam – https://tinyurl.com/rymn88bb
২। Maulana Mohammad Umar Gautam – https://tinyurl.com/2yr2w5pp
মাওলানা মোহাম্মদ উমর গৌতম। ফাইল ফটো।
মোহাম্মদ উমর গৌতম একজন সম্মানিত ইসলামিক স্কলার এবং ইসলামিক দাওয়াহ সেন্টার (IDC) এর প্রতিষ্ঠাতা। উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুরে একটি হিন্দু পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড ২০২১ সালে উমর গৌতমকে ‘জোর করে ধর্মান্তরিত করার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট গত ১৬ ডিসেম্বর মোহাম্মদ উমর গৌতমকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এই বছরের মে মাসেও লখনউয়ের বিশেষ বিচারক, এনআইএ/এটিএস/অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কর্তৃক তার জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবার পর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
মোহাম্মদ উমর গৌতম প্রায় ১০০০ অমুসলিমকে ইসলামের সৌন্দর্য্য ও সত্যতার দাওয়াত দিয়ে মুসলিম বানিয়েছেন। এছাড়া মুফতি জাহাঙ্গির কাসিমকেও আটক করেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
পুলিশের অভিযোগ, তারা জোরপূর্বক এক হাজার হিন্দুকে মুসলিম বানিয়েছে। কিন্তু, মজার বিষয় হলো, হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হওয়া ওই এক হাজার ব্যক্তির মধ্যে কেউই এমন অভিযোগ করেননি। এমনকি হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত হওয়া ওই মুসলিমরা তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো মামলা বা অভিযোগ করেননি। এছাড়া তারা ভারতের কোনো গণমাধ্যমের সামনেও বলেননি যে, তাদের জোর করে মুসলিম বানানো হয়েছে।
হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া ব্যক্তিরা ও অনেক হিন্দু পুলিশের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সাথে তারা এটাও বলেছেন যে, অনেক হিন্দুত্ববাদী গণমাধ্যম মাওলানা উমর গৌতমকে অপরাধী বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। এছাড়া তারা মাওলানার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে শঙ্কিত।
সৌরভ দত্ত শর্মা মুসলিম হয়ে বর্তমানে মোহাম্মদ সুফিয়ান নাম ধারণ করেছেন। তিনি মাওলানা উমর গৌতম সম্পর্কে মুসলিম মিররকে বলেন, “আমি ২০১৩ সাল থেকে উমর গৌতমের সাথে আছি। তিনি কখনোই আমাকে মুসলিম হবার জন্য চাপ দেননি। তাকে ভারতের গণমাধ্যম খারাপভাবে চিত্রিত করছে। এ ব্যাপারটা আমাদের দেশ ভারতের জন্য ভালো নয়।”
আরেকজন নওমুসলিম দিনেশ বলেন, “আমি তখনই মাওলানা উমর গৌতমের সাথে সাক্ষাৎ করি যখন আমি বুঝতে পারি যে ইসলাম সত্য ধর্ম। তিনি ওই সময়ই আমাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলেননি। বরং, তিনি আমাকে কিছু ইসলামী বই দেন এবং তা ভালোভাবে পড়তে বলেন। তিনি আমাকে বলেন, তখনই তুমি আমার কাছে আসবে যখন ইসলাম ধর্মের প্রতি তুমি সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত হবে।”
শর্মা ও দিনেশের মতো আরো অনেক ধর্মান্তরিত মুসলিম ও বহু হিন্দু মাওলানা উমর গৌতম সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে চমৎকার সব তথ্য দিয়েছেন। তাদের এসব কথার ভিডিও প্রকাশ করেছে মুসলিম মিরর, মিল্লাত টাইমস ও মাকতুব মিডিয়া।
সৌরভ দত্ত শর্মা বলেন, মাওলানা উমর গৌতম ও তার সংগঠন ইসলামিক দাওয়া সেন্টার (আইডিএলসি) ইসলামের প্রকৃত সত্য প্রচার করছে। তিনি ও তার সংগঠনের কর্মীরা ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করেন। এছাড়া আইডিএলসি ধর্মান্তরিত মুসলিমদের নতুন আইনি পরিচয়পত্র দেয়। এসব পরিচয়পত্র ভারতীয় সংবিধান অনুসারে করা হয়। ভারতের সংবিধানে ব্যক্তি ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। সংবিধান অনুসারে ব্যক্তি যে কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে পারে। তারপরেও তিনি মুসলিম হওয়ায় হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন তাদের নিজেদের সংবিধানেরও কোন তোয়াক্কা করছে না। তিনি কাউকে জোরপূর্বক কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে মুসলিম বানান নাই, তবুও হিন্দুত্ববাদীরা তার পিছনে উঠেপড়ে লেগেছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইতিমধ্যেই গ্যাংস্টার অ্যাক্ট এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের (এনএসএ) অধীনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রায় ৫৫০ দিনের মত জেলে অতিবাহিত করার পরও হিন্দুত্ববাদী হাইকোর্ট মোহাম্মদ উমর গৌতমের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। মুসলিম ছাড়া অন্যদের সাথে এমনটা করা হয় না। শুধুমাত্র ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারণেই তারা এমনটা করছে।
তথ্যসূত্র:
১। 545 days in jail; no bail for Mohammad Umar Gautam – https://tinyurl.com/rymn88bb
২। Maulana Mohammad Umar Gautam – https://tinyurl.com/2yr2w5pp
Comment