প্রকল্প বাস্তবায়নে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে ব্যাপকভাবে
প্রকল্প বাস্তবায়ন খরচে দিন দিন শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। নানাভাবে খরচের খাত দেখিয়ে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্পে যানবাহনের প্রয়োজন না থাকলেও কেনা হচ্ছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জেলা কক্সবাজারের জন্য মহাপরিকল্পনা করতেই প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচে ১১টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাশাপাশি কারিগরি কমিটির সদস্য করা হচ্ছে ৮৭ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে। আর মহাপরিকল্পনা তৈরিতে দুটি খাতে পরামর্শক ব্যয় ১৭৪ কোটি টাকার প্রস্তাব গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার তথ্য থেকে জানা গেছে, কক্সবাজারে পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। পর্যটন খাতের উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, পরীবিক্ষণ এবং এর দীর্ঘ স্থায়িত্বের জন্য এই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে কক্সবাজারের একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই একটি পত্র জারি করা হয়। পরবর্তীতে একনেক সভা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও কক্সবাজারের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য গুরুত্ব দেয়া হয়। তিন বছরে এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ২০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়।
পটভূমিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন স্থান। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ এবং দেশের সর্বদক্ষিণের শেষ বিন্দু পর্যন্ত বিস্তৃত। মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপিং, পাহাড়, নদী, বন, সব মিলিয়ে এটি দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য একটি অন্যতম পর্যটন স্থান। কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পরিমণ্ডলে কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমগুলো হলো- সার্ভে ও ডাটা কালেকশন, কনসালটেশন, সেমিনার ও কনফারেন্স, দেশীয় ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, মৌজার সিট ও স্যাটেলাইট ইমেজ ক্রয়, জিআইএস ও প্ল্যানিং ল্যাব স্থাপন, সার্ভে ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়, কম্পিউটার ক্যামেরা ও এক্সেসরিজ ক্রয়, মেশিনারিজ, অফিস ইক্যুইপমেন্ট ও আসবাবপত্র ক্রয়, ১টি জিপ, ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ, একটি মাইক্রোবাস, ৫টি মোটরসাইকেল ও ২টি স্পিডবোট ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক কাজ।
প্রকল্পের ব্যয় বিভাজন থেকে দেখা যায়, সমীক্ষা প্রকল্পে ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি জিপ, ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ১টি মাইক্রোবাস, ২টি স্পিডবোট, ৫টি মোটরসাইকেল ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে মোট ১১টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব। আর মোটর ভেহিক্যাল মেরামত খাতে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে কনসালটেশন, সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে। আবার সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের কনসালটেন্ট খাতে ব্যয় ১৭০ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার টাকা। প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং খাতে ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবের পর আবার পাবলিকেশন খাতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের আওতায় মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ এবং প্রসেসিং বাবদ ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকার সংস্থাপন থাকলেও আবার মৌজার সিট কেনার জন্য আলাদাভাবে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
প্রকল্প দলিলে ৮৭ জনের বেশি সংখ্যক সদস্য নিয়ে টেকনিক্যাল বা কারিগরি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন উল্লেখ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য অনধিক ১০ সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।
কমিশনের এই বিভাগটি বলছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ট্রাভেল ও ট্রান্সফার বাবদ ৫৮ লাখ টাকা প্রকল্প দলিল থেকে বাদ দেয়া আবশ্যক। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অত্যধিক।
বিভিন্ন কমিটির সম্মানী বাবদ ব্যয় ৯২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা অধিক। এই সব খাতের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা আবশ্যক। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অফিস থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারে প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট অফিস ভাড়া বাবদ ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে বাদ দেয়া বাঞ্ছনীয়।
নয়া দিগন্ত
প্রকল্প বাস্তবায়ন খরচে দিন দিন শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। নানাভাবে খরচের খাত দেখিয়ে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্পে যানবাহনের প্রয়োজন না থাকলেও কেনা হচ্ছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জেলা কক্সবাজারের জন্য মহাপরিকল্পনা করতেই প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচে ১১টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পাশাপাশি কারিগরি কমিটির সদস্য করা হচ্ছে ৮৭ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে। আর মহাপরিকল্পনা তৈরিতে দুটি খাতে পরামর্শক ব্যয় ১৭৪ কোটি টাকার প্রস্তাব গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার তথ্য থেকে জানা গেছে, কক্সবাজারে পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। পর্যটন খাতের উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, পরীবিক্ষণ এবং এর দীর্ঘ স্থায়িত্বের জন্য এই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে কক্সবাজারের একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই একটি পত্র জারি করা হয়। পরবর্তীতে একনেক সভা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও কক্সবাজারের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য গুরুত্ব দেয়া হয়। তিন বছরে এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ২০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়।
পটভূমিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন স্থান। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ এবং দেশের সর্বদক্ষিণের শেষ বিন্দু পর্যন্ত বিস্তৃত। মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপিং, পাহাড়, নদী, বন, সব মিলিয়ে এটি দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য একটি অন্যতম পর্যটন স্থান। কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পরিমণ্ডলে কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমগুলো হলো- সার্ভে ও ডাটা কালেকশন, কনসালটেশন, সেমিনার ও কনফারেন্স, দেশীয় ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, মৌজার সিট ও স্যাটেলাইট ইমেজ ক্রয়, জিআইএস ও প্ল্যানিং ল্যাব স্থাপন, সার্ভে ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়, কম্পিউটার ক্যামেরা ও এক্সেসরিজ ক্রয়, মেশিনারিজ, অফিস ইক্যুইপমেন্ট ও আসবাবপত্র ক্রয়, ১টি জিপ, ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ, একটি মাইক্রোবাস, ৫টি মোটরসাইকেল ও ২টি স্পিডবোট ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক কাজ।
প্রকল্পের ব্যয় বিভাজন থেকে দেখা যায়, সমীক্ষা প্রকল্পে ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি জিপ, ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ১টি মাইক্রোবাস, ২টি স্পিডবোট, ৫টি মোটরসাইকেল ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে মোট ১১টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব। আর মোটর ভেহিক্যাল মেরামত খাতে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে কনসালটেশন, সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে। আবার সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের কনসালটেন্ট খাতে ব্যয় ১৭০ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার টাকা। প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং খাতে ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবের পর আবার পাবলিকেশন খাতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সার্ভে ও ডাটা কালেকশনের আওতায় মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ এবং প্রসেসিং বাবদ ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকার সংস্থাপন থাকলেও আবার মৌজার সিট কেনার জন্য আলাদাভাবে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
প্রকল্প দলিলে ৮৭ জনের বেশি সংখ্যক সদস্য নিয়ে টেকনিক্যাল বা কারিগরি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন উল্লেখ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য অনধিক ১০ সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।
কমিশনের এই বিভাগটি বলছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ট্রাভেল ও ট্রান্সফার বাবদ ৫৮ লাখ টাকা প্রকল্প দলিল থেকে বাদ দেয়া আবশ্যক। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অত্যধিক।
বিভিন্ন কমিটির সম্মানী বাবদ ব্যয় ৯২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা অধিক। এই সব খাতের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা আবশ্যক। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অফিস থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারে প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট অফিস ভাড়া বাবদ ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে বাদ দেয়া বাঞ্ছনীয়।
নয়া দিগন্ত
Comment