সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস (SNHR) জানিয়েছে যে, সিরিয়ায় চলতি বছরের প্রথমার্ধেই বিবাদমান দলগুলোর হাতে ৫০০ জনেরও বেশি বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
SNHR-এর ২৯-পৃষ্ঠার রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ৫০১ জন বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে কেবল জুন মাসেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ শিশু এবং ১৯ জন মহিলা সহ ১১৮ জন বেসামরিক নাগরিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, এই বছর সিরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন এমন ৫০১ জন বেসামরিক নাগরিকের মধ্যে ৫ শিশু এবং ৪ মহিলা সহ অন্তত ৬২ জনকে হত্যা করেছে আসাদ সরকার; আর দখলদার রাশিয়ান বাহিনী হত্যা করেছে ৫ বেসামরিক নাগরিককে। সেই সাথে মার্কিন বাহিনী হত্যা করেছে আরও ৩ জনকে।
প্রতিবেদনে আরও দেখানো হয়েছে যে, সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) একজন শিশু এবং একজন মহিলা সহ ৯ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। একই সময় কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) পাঁচ শিশু এবং দুই নারীসহ ২০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। একই সময়ে তুর্কী সীমান্তরক্ষীদের দ্বারা হত্যার শিকার হয়েছে অন্তত ১১ জন, আর জর্ডান বাহিনীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন আরও ৭ জন মুসলিম। এছাড়াও অন্যান্য পক্ষের হাতে ৬০ শিশু ও ৩৩ জন নারীসহ ৩৯৪ জন বেসামরিক নাগরিক হত্যার শিকার হয়েছেন।
প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের জুন মাসে সিরিয়ায় বিবদমান বাহিনীর হাতে ১৫ শিশু এবং ১৯ জন নারী (প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা) সহ ১১৮ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যার তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, বিস্ফোরণ, মাইন এবং অজানা আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে ২১১ জন বেসামরিক লোক মারা গেছেন। তাছাড়া ১০২ জন বেসামরিক ব্যক্তি এমন পক্ষের দ্বারা হত্যার শিকার হয়েছেন, যাদের পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসাদ সরকার এবং তৎসংশ্লিষ্ট মিলিশিয়া বাহিনী বিচারবহির্ভূত অনেক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। এক্ষেত্রে অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন এবং অনেককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ভিকটিমরা সরকারি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন নাকি বন্দী আছেন তাও অজানা।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, অধিকাংশ ভুক্তভোগী পরিবার আসাদ শাসনের কাছ থেকে তাদের স্বজনদের মৃত্যুর বা বেঁচে থাকার কোন তথ্য পান না। এছাড়া শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে কথা বলতেও অনেক পরিবার এজন্য ভয় পাচ্ছেন যে, তাদেরকেও হয়তো বন্দী করা হবে বা নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হতে হবে। এরকমভাবে ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে নির্যাতনের কারণে একজন শিশু ও একজন নারীসহ মোট ২০ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, সিরিয়ায় বিবাদমান পক্ষগুলো বিশেষ করে আসাদ বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা এখনো শামের মুসলিমদের উপর নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে।
Comment