Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ#| ১৪ মুহাররম, ১৪৪৫ হিজরী।। ০২ আগস্ট, ২০২৩ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ#| ১৪ মুহাররম, ১৪৪৫ হিজরী।। ০২ আগস্ট, ২০২৩ ঈসায়ী

    মোদী-যোগীর প্রশংসা আর ৩ মুসলিমকে খুন হিন্দু পুলিশ কনস্টেবলের



    ভারতের মহারাষ্ট্রে, ট্রেনের ভিতর তিনজন মুসলিম যাত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে দেশটির এক উগ্রবাদী হিন্দু পুলিশ, চেতন সিং।
    গত সোমবার ৩১ জুলাই জয়পুর-মুম্বাই সেন্ট্রাল এক্সপ্রেস ট্রেনে এই ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি যখন পালঘর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে আসে, তখন পুলিশ কনস্টেবল চেতন সিং ট্রেনে আরোহণকারী তিনজন মুসলিমকে গুলি করে হত্যার জন্য তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করে। এই হত্যাকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করলে অপর এক পুলিশ সদস্যকেও গুলি করে হত্যা করে চেতন সিং।

    সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে চেতন সিং নামে পরিচিত ঐ কনস্টেবলকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করতে শোনা যায়।

    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চেতন সিং ট্রেনের তিনটি পৃথক কোচে গিয়ে দাড়িওয়ালা ৩ জন মুসলিমকে টার্গেট করে তার হাতের অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে ১২ রাউন্ড গুলি চালায়। এতে নিহত হন আব্দুল কাদের (৬০), সদর মোহাম্মদ হোসেন ও আসগর আব্বাস আলী (৩৫) নামের ৩ জন মুসলিম।

    এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর চেতন সিং মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক গালিগালাজ শুরু করে। “…পাকিস্তান ছে অপারেটিং হুয়ে ইয়ে, অওর মিডিয়া ইয়েহি কভারেজ দিখা রাহি হ্যায়, উনকো সব পাতা চল রাহা হ্যায় ইয়ে কেয়া কার রাহে হ্যায়… আগর ভোট দেনা হ্যায়, আগার হিন্দুস্তান মে রেহনা হ্যায়, তো ম্যায় কেহতা হু মোদি অর যোগী, ইয়ে দো হ্যায়।” শেষ লাইনে তিনি বলেছেন যে, ভারতে থাকতে হলে আপনাকে মোদী ও যোগীর স্লোগান দিতে হবে।

    হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিম গণহত্যা বাস্তবায়নে কতটা মুখিয়ে আছে, আর ভারতের রাষ্ট্র ব্যবস্থার কতটা গভিরে হিন্দুত্ববাদ খুঁটি গেড়ে নিয়েছে – চেতন সিংয়ের এই ঘটনা তার জলজ্যান্ত সাক্ষী বহন করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া ভারত যে বৃহৎ পরিসরে মুসলিম গণহত্যা বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে, সেই সতর্কতা গ্রেগরি স্ট্যান্টনের মতো গণহত্যা বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন।

    তথ্যসূত্র:
    ——-
    1. Breaking News। Mumbai Train Incident । Firing in Train by RPF Constable Chetan Singh। Millat Times
    https://tinyurl.com/2p8anedv
    2. Railway Protection Force constable shoots dead 3 Muslim passengers on board Jaipur-Mumbai train
    https://tinyurl.com/4z5w7n6j

    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    নারী নিখোঁজের তালিকায় কাশ্মীর দ্বিতীয়, ২০১৯ থেকে নিখোঁজ ১০ হাজার



    ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ১০ হাজার মহিলা জম্মু কাশ্মীর থেকে নিখোঁজ হয়েছেন বলে রাজ্য সভাকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র। ভারতীয় সংসদকে জানানো হয়েছে যে, ২০১৯ সালের পর থেকে ১৮ বছরের উপরের ও নিচের ৯৭৬৫ জন মহিলা কাশ্মীরে নিজেদের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন।

    গত জুলাই মাসের ২৬ তারিখ বুধবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্র এই তথ্য প্রকাশ করেন।
    ২০১৯ থেকে ২০১২১ সাল পর্যন্ত প্রতিবেদনে রাজ্য থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জম্মু কাশ্মীরে এই তিন বছরে ১৮ বছর বয়সের নিচে ১ হাজার ১৪৮ জন মেয়ে এবং ১৮ এর উপরে ৮ হাজার ৬১৭ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন।
    প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই মহিলাদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায় নি।

    ২০১৯ সালে ১৮ বছরের কম বয়সী ৩৫৫ জন এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সের ২,৭৩৮ জন মহিলা নিখোঁজ হন। পরের বছর ২০২০ সালে ১৮ এর কম বয়সি মেয়ে ৩৫০ জন এবং ১৮ এর বেশি বয়সি ২৭০১ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন।
    এরপর ২০২১ সালে ৩ হাজার ১৭৮ জন ১৮ বছরের বেশি বয়সি মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন, আর ১৮ বছরের কম বয়সী নিখোঁজ মেয়ের সংখ্যা ৪৪৩ জন।

    উল্লেখ্য, জম্মু কাশ্মীর এই ইউটি তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। মহিলা নিখোঁজ হওয়ার মামলার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দিল্লিতে ২২ হাজার ৯১৯ জন ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ে এবং ৬১ হাজার ৫০জন ১৮ বছর বয়সের উপরে নিখোঁজ হয়েছে।

    তবে ২০২১ সালে মহারাষ্ট্র এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। রাজ্যটিতে সেবছর ১৮ বছরের বেশি বয়সী নিখোঁজ মহিলাদের ৫৬ হাজার ৪৯৮ টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।
    নিখোঁজের এই তালিকা এবং পরিসংখ্যানগুলোই প্রমাণ করে যে, নারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

    জম্মু কাশ্মীরে মহিলাদের নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কিত সমস্যাগুলির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকার। তবে ২০১৯ সাল থেকেই এই অঞ্চলের মহিলাদের নিখোঁজ হওয়ার পরিসংখ্যান ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে দেখা গেছে যে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে অ-কাশ্মীরিরা সেখানে জমি কিনার ও বসতি স্থাপন করার সুযোগ পেয়ে যায়। তখন বিজেপি, আরএসএস ও বজরং দলের সদস্যরা সহ গোটা ভারত থেকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করার সুযোগ লাভ করতে পারবে এই আনন্দ প্রকাশ করতে থাকে নেট দুনিয়ায়।



    তথ্যসূত্র:

    1. Nearly 10,000 women have gone missing in Jammu Kashmir since 2019
    https://tinyurl.com/4y2h7tsh
    https://tinyurl.com/53aferra

    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      মুসলিম বিরোধী হিন্দুত্ববাদী বক্তাকে পুরস্কৃত করলো ইংল্যান্ডের লিচেস্টারশায়ার পুলিশ




      উগ্রবাদী হিন্দু ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী


      মুসলিমবিরোধী চরমপন্থী বক্তব্য-বিবৃতির জন্য পরিচিত ২৭ বছর বয়সী হিন্দু ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীকে পুরস্কৃত করেছে লিচেস্টারশায়ার পুলিশ। গত ২২ জুলাই শহরের প্রজাপতি হলে একটি বিশাল সমাবেশে বক্তৃতা করেন শাস্ত্রী। সেখানেই লিচেস্টারের স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতি তার সমর্থনের জন্য লিচেস্টারশায়ার পুলিশ ‘পরিষেবার স্বীকৃতি স্বরূপ’ তাকে এনপিএ কমান্ডার পুরস্কার প্রদান করে।

      ২৭ বছর বয়সী এই হিন্দু ধর্মগুরু বাগেশ্বর ধাম বাবা নামে নামেও পরিচিত। কথিত এই হিন্দু গুরু নিয়মিতভাবে তার বক্তৃতায় মুসলমানদের লক্ষ্য করে বিদ্বেষমূলক কথা বলেন। তার ভক্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ বিজেপি নেতা ও এর পাশাপাশি উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যাই বেশি।

      শাস্ত্রী প্রকাশ্যে “বুলডোজার রাজনীতি”কে সমর্থন করেছে, যা হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের মুসলিমদের বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংসের ‘চূড়ান্ত সমাধান’ হিসাবে প্রয়োগ ও পছন্দ করে। সে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের একত্রিত হতে, বুলডোজার কিনতে এবং পাথর নিক্ষেপকারীদের অর্থাৎ মুসলিমদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলতে আহ্বান জানিয়েছে। সে এই বক্তব্যও দিয়ে থাকে যে ‘ভারত শুধুমাত্র হিন্দুদের’।

      মধ্যপ্রদেশের খারগোনে মুসলিম বিরোধী সহিংসতার পর মুসলমানদের বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলার সময় তাকে প্রফুল্লভাবে হাততালি দিতে এবং হাসতে দেখা গেছে।

      অপর এক বক্তৃতায় সে হিন্দুদের সশস্ত্র হওয়াকে সমর্থন করে বলেছে, “হিন্দুদের প্রার্থনার মালার সাথে সাথে বর্শাও রাখতে হবে।”
      ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার বিষয়ে সে বলেছে, “হিন্দুরা এক হও! রামচরিতমানস (হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থ) সংবিধান (ভারতের জন্য) তৈরি করা হবে এবং ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হবে।”
      “যদি তোমরা (হিন্দুরা) ঐক্যবদ্ধ হও, তাহলে তোমরা ভারত ও পাকিস্তানকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করবে।”

      এছাড়াও সে মুসলমানদেরকে হুমকি দিয়ে বলেছে, “যদি ভারতে থাকতে চাও তাহলে সীতা রাম বলো। নিজের ভালোর জন্য, সীমার মধ্যে থাকো।”

      এরকম অসংখ্য সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ও ঘৃণাসূচক স্পষ্ট বক্তৃতা দেওয়ার পরেও তাকে স্থানীয়দের সমর্থন দেওয়ার জন্য এনপিএ কমান্ডার পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

      এবিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিচেস্টারশায়ার পুলিশ ফাইভ পিলারসকে জানিয়েছে, “এমন একটি বড় ইভেন্টের পরে কিছু চ্যালেঞ্জিং লজিস্টিকাল সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সাথে সাথেই যার সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। ফলে স্থানীয় ইস্ট লিচেস্টারের চিফ ইন্সপেক্টর, ইন্সপেক্টর এবং পিসিএসও জনসাধারণের অব্যাহত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এই ইভেন্টে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, তার স্বীকৃতি প্রদান করতে চেয়েছিল। অতএব পূর্ব লিচেস্টারে এমন একটি জটিল এবং ব্যস্ত সমাবেশে প্রদত্ত সাহায্যের প্রশংসা হিসেবে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানোর উদ্দেশ্যে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। লিচেস্টারশায়ার পুলিশ কর্তৃক জারি করা অন্য কোন আনুষ্ঠানিক পুরষ্কার বা প্রশংসার সাথে এটিকে তাই এক করে দেখা উচিত নয়। বরং এটির উদ্দেশ্য ছিল, যারা জনসাধারণকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করেছে তাদের ধন্যবাদ জানানো।”

      তবে মুসলিম সংগঠন MEND লিচেস্টারশায়ার পুলিশের কাছে এবিষয়ে আরও তদন্তের দাবি করেছে।
      মেন্ড বলেছে, “মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য তার প্রকাশ্য আহ্বান, মুসলমানদের বাড়িঘরকে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসের পক্ষে অবস্থান এবং একটি মুসলিম-মুক্ত ভারত-পাকিস্তান অঞ্চল গঠন সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি তার অতি-বিপজ্জনক মনোভাবের তীব্রতা প্রকাশ করে।

      বিবৃতিতে লিচেস্টার পুলিশের সমালোচনা করে বলা হয়, “লেচেস্টার পুলিশ শাস্ত্রীর আদর্শের চরমপন্থী প্রকৃতিকে চিনতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, যা উদ্বেগজনক। তার প্রশংসা করার মাধ্যমে তারা ইসলামফোবিয়া এবং মুসলমানদের কল্যাণের প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করেছে, যা ভয় ও বৈষম্যের পরিবেশকে স্থায়ী করতে প্ররোচনা যোগাবে।”

      লিচেস্টারের পুলিশকে শাস্ত্রীর প্রশংসাপত্র প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে মেন্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমরা লিচেস্টারশায়ার পুলিশকে অবিলম্বে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর প্রশংসা প্রত্যাহার করতে এবং তার আদর্শ ও প্রকৃতির একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করতে আহ্বান জানাচ্ছি। এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী একজন ব্যক্তিকে বরণ করে নেওয়া শুধুমাত্র আন্তঃসম্প্রদায়িক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।”

      লিচেস্টারের হিন্দুদেরকেও ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর ইসলামফোবিক বক্তৃতাকে প্রত্যাখ্যান করার অনুরোধ জানানো হয় মেন্ডের পক্ষ থেকে।



      তথ্যসূত্র:

      1. Leicestershire Police give award to anti-Muslim Hindutva extremist
      https://tinyurl.com/3ppzrdar

      আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        আসামে মসুলিম যুবকদের গণপিটুনি, নিহতের লাশে পদাঘাত


        আসামের মরিগাঁও জেলায় সাদ্দাম হুসাইন নামের এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা এবং অপর কয়েকজনকে গুরুতর আহত করেছে হিন্দু জনতা। গত ২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় আসামের মরিগাঁও জেলার আহতগুরি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

        নিহত সাদ্দাম তার পাঁচ সাথী সহযোগে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের নরমারি গ্রাম থেকে স্থানীয় কাবাডি লীগের ফাইনাল খেলা দেখে বাইকে করে নিজ বাড়ি আহতপাম গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আহতগুরি গ্রামের হিন্দু জনতা গাভী চুরির অভিযোগ তুলে তাদেরকে মারধোর শুরু করে। তখন হুসেনের সাথী আনারুল হক, সামসুল হক এবং আবুল হুসাইন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, জনতার পিটুনিতে প্রাণ হারান সাদ্দাম হুসাইন; গুরুতর আহত হন বিলাল হুসাইন ও মিরাজুল হক।

        সাদ্দাম হুসাইনের সাথী আনারুল হক এই অঞ্চলের একজন সুপরিচিত ফুটবল খেলোয়াড়। তার ভাই মিরাজুল হকও গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছেন। অথচ তারা কেউই অত্র এলাকায় অপরিচিত কোন মুখ ছিলেন না।
        আনারুল হক মাক্তুব মিডিয়াকে বলেন, “আপনি হয়তো বলতে পারেন যে আমাকে তারা চিনতে পারে নি, অথচ আমি ফুটবল খেলায় ভাল হওয়ার কারণে এলাকায় তারা আমাকে মেসি হিসাবে চেনে।”

        আক্রমণের শুরুর বর্ণনা দিতে গিয়ে আনারুল বলেন, “খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা আমাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম এবং সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে (মঙ্গলবার সকালে) আহতগুরিতে পৌঁছি। বৃষ্টি হচ্ছিল বিধায় আমরা রাস্তার ধারে একটি টিনের ছায়ার নীচে থামলাম। ঠিক সেই মুহুর্তে ৭-৮ জনের একটি দল আমাদের ঘেরাও করে। তাদের মধ্যে একজন বলেছিল ‘যে আপনি মেসি না?”
        আনারুল যেহেতু নিশ্চিত হয়েছিলেন যে প্রত্যেকে তাকে চেনে, তাই তিনি তার পরিচয় নিশ্চিত করে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দেন।

        তিনি বলেন, “তারা আমাদের প্রত্যেককে চিনত। তবুও তারা আমাদের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ করেছে। তখন আমি বলেছিলাম যে আমরা চোর নই এবং কাবাডি ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম; আর এটি তাদেরকে যাচাই করে দেখতেও বলি। কিন্তু তারা আমাকে এত জোরালোভাবে আঘাত করেছিল যে আমার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।“
        পরে আরও লোকজন আক্রমণকারীদের সাথে যোগ দিয়ে তাদের মারধরে শরীক হয়েছিল।

        আনারুল বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমাদের শেষ করে দেওয়া। তাই আমি আমার সাথীদের সবাইকে জীবন বাঁচানোর জন্য পালাতে বলি। যদিও আমি সবকিছু ঝাপসা দেখছিলাম, তবু আমি তাদের বলছিলাম যে, তোমরা নিজেদের জীবন বাঁচাতে আমাকে অনুসরণ করে দৌড়াতে থাক।”

        এভাবে আনারুল, সামসুল এবং আবুল হিন্দু জনতার আক্রমণ থেকে বেঁচে পালাতে পেরেছিলেন, কিন্তু সাদ্দাম হুসাইন সহ অন্য তিনজন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের হাতে আটকা পড়ে যায়।

        পালিয়ে বাঁচা আনারুল তার বড় ভাই মাইনুল হকের কাছে গিয়ে তাদের ছোট ভাই মিরাজুলকে বাঁচাতে বলেন। ঘটনা শুনে মাইনুল তার ১০ বছরের ছেলেকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও, মাইনুলকে ঐ তিন জনের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু তাকে এবং তার ১০ বছরের ছেলেকেও মারধোর করে ঐ হিন্দুরা। তারপর সেখান থেকে কোনরকমে ছুটে মাইনুল পুলিশের কাছে যায় সহায়তার আশায়।
        এরই মধ্যে সাদ্দামের বড় ভাই শামসউদ্দিনও স্থানীয় দারুমতল পুলিশ স্টেশনে যায়।

        শামসউদ্দিন পুলিশ নিয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল, কিন্তু পুলিশও ঐ তিন যুবককে উদ্ধার করতে পারেনি। পরের দিন সকালে অতিরিক্ত পুলিশ পৌছানর পরেই কেবল ১১ টার দিকে আক্রান্তদেরকে হিন্দু গ্রাম থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়েছিল।
        সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলিতেও দেখা যায় যে, রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।

        সেখান থেকে উদ্ধারের পর সাদ্দামকে মৃত ঘোষণা করা হয়; আর মিরাজুল এবং বিলালকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

        তাদের মোটরবাইক দুটি ঐ গ্রামের হিন্দু জনতা পুড়িয়ে ফেলে। হিন্দু জনতা ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া স্থানীয় মিডিয়ার যানবাহনগুলিতেও আক্রমণ করেছিল।

        সাদ্দামের অন্য বড় ভাই নাসির মকতুব মিডিয়াকে বলেছেন, “এটি কেবল ঐ ছয়জনকে আক্রমণ করার বিষয় নয়। পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত নয় এমন একজন মাছ বিক্রেতা ভোরের দিকে ঐ রাস্তা দিয়ে মরিগাঁও শহরে যাচ্ছিলেন। আজিম উদ্দিন নামের ঐ মাছ বিক্রেতাকেও যাওয়ার জন্য নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল।”

        নাসির আক্ষেপের স্বরে বলছিলেন যে, সাদ্দাম সাধারণ একজন শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো; কখনও কাজের সন্ধানে মেঘালয়ের কয়লাখনিতে আবার কখনো দক্ষিণের রাজ্যে কাজ করতে যেত সে। এভাবে তার চার সদস্যের পরিবারকে তিনি চালিয়ে নিতেন। কাজ বাদে তিনি তেমন বাইরে বের হতেন না। আর কাজ থেকে ফিরে তার পাঁচ বছরের মেয়ের সাথে সময় দিতেন। সাদ্দামের ৭ বছরের ছেলে এবং কন্যা এখন এতিম হয়ে গেল।

        পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও হিন্দু জনতা নিহত সাদ্দাম এবং আহত অপর দুই জনের শরীরে লাথি মারছিল। মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে এরকম বর্বরোচিত দৃশ্য দেখা যায়।

        পুলিশ অবশ্য গণপিটুনিতে জড়িত আট জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে গ্রেপ্তারের সময় আনারুল বলেছিলেন, “যারা রাতে আমাদের আক্রমণ করেছিল তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা দরিদ্র হওয়ায় আমরা কি ন্যায়বিচারের প্রাপ্য না? আমরা মুসলমান, কেন আমরা কোনও ন্যায়বিচার পাচ্ছি না?

        তথ্যসূত্র:
        ————-
        1. Muslim youth lynched to death in Assam’s Morigaon, survivor says familiar men among mob
        https://tinyurl.com/5bsmrdu9

        আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          এই পৃষ্ঠায় চারটা খবর পড়লাম। প্রতিটি খবর পড়ে যে কোন আহলে ঈমানের অন্তরে এই সব যুলুমের হিসাব চুকিয়ে দেবার জযবা উঠে যেতে বাধ্য।
          Last edited by Rakibul Hassan; 08-03-2023, 10:46 AM.

          Comment


          • #6
            Originally posted by Talib Khan View Post
            এই পৃষ্ঠায় চারটা খবর পড়লাম। প্রতিটি খবর পড়ে যে কোন আহলে ঈমানের অন্তরে এই সব যুলুমের হিসাব চুকিয়ে দেবার জযবা উঠে যেতে বাধ্য।
            হে আল্লাহ আমাদের কিছু একটা করার তাওফিক দান করেন, আমাদের ভাইবোনদের সাহায্য করেন।
            Last edited by Rakibul Hassan; 08-05-2023, 09:33 PM.

            Comment


            • #7
              সবকিছু জানা বুঝার পরেও আজ মুসলিমরা দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত । জিহাদ নামে যে একটা শব্দ আছে অনেক মুসলিমরাও এটা শুনতে পারে না ।
              সামনে এমন একটা সময় আসতেছে মুসলমান হত্যার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করে দিবে ।
              আগেই ইনশাআল্লাহ আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে ।

              Comment


              • #8
                হে আল্লাহ! মুসলিদের প্রতি রহম করুন! আমাদের কে মাফ করুন ! আমরা আমাদের দুর্দশা আমরা নিজেরাই নিয়ে আসছি! আমাদের সঠিক পথে আসার তাওফিক দিন! আমাদের নববী মানহায জীহাদের পথে আসার দাওফিক দিন, আমিন।
                Last edited by tahsin muhammad; 08-06-2023, 05:02 PM.

                Comment


                • #9
                  Originally posted by motasim billah View Post
                  হে আল্লাহ! মুসলিদের প্রতি রহম করুন! আমাদের কে মাফ করুন ! আমরা আমাদের দুর্দশা আমরা নিজেরাই নিয়ে আসছি! আমাদের সঠিক পথে আসার তাওফিক দিন! আমাদের নববী মানহায জীহাদের পথে আসার দাওফিক দিন, আমিন।
                  আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

                  Comment

                  Working...
                  X