Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফিলিস্তিন ভূমি যেন এক উন্মুক্ত কারাগার

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফিলিস্তিন ভূমি যেন এক উন্মুক্ত কারাগার



    ফিলিস্তিনের যেকোন শহর, গ্রাম কিংবা ফিলিস্তিনের যে কোন স্থানে যাকে ইচ্ছা তাকেই গ্রেফাতার করে ইসরাইলি বাহিনী।

    ইসরাইলি বাহিনীর কাছে বেপরোয়াভাবে গ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনি মুসলিমরা। আবার ইসরাইলের রাজনৈতিক ও সামরিক আগ্রাসন এবং অন্যায় অবরোধের কারণে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিন। বর্তমানে ফিলিস্তিনে হয়তো এমন কোন পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যাদের কোন না কোন সদস্য ইসরাইলিদের হাতে বন্দী হয়নি বা নির্যাতনের শিকার হয়নি।

    ফিলিস্তিন দখলের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি বন্দী হয়েছে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে। অন্যদিকে চলতি বছর অর্ধেক সময় পার হতে না হতেই (জুন মাসের রিপোর্ট অনুযায়ী) এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের মধ্যে ৫৭০ জনই শিশু, যাদের বয়স ১০-১৭ এর মধ্যে।

    ফিলিস্তিনি প্রিজনার সাপোর্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, বর্তমানে ইসরাইলি কারাগারে অন্তত ৫ হাজার ফিলিস্তিনি মুসলিম বন্দী রয়েছেন। তার মধ্যে ১৬০ জন শিশু ও ৩০ জন মুসলিম নারী।

    ফিলিস্তিনি শিশুকে চোখ বেধে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।

    বন্দী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১,০১৬ জনকে কথিত প্রশাসনিক বন্দী হিসেবে আটকে রেখেছে ইসরাইল। যেসকল ফিলিস্তিনি মুসলিমকে কোন কারণ ছাড়াই বন্দী করা হয়, তাদেরকে প্রশাসনিক বন্দী হিসেবে কারাগারে আটকে রাখে ইসরাইল। এসকল বন্দীকে কোন বিচার ও আইনি লড়াইয়ের সুযোগ দেয় হয় না। ফলে বছরের পর বছর কোন বিচার ছাড়াই বন্দী জীবন পার করতে হয় তাদের। এমন বন্দীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৩০ জনে, যা চলতি বছর দ্বীগুন বৃদ্ধি হয়ে ১,০১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

    কোন কারণ ছাড়াই বন্দী করা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের।

    সম্প্রতি এসব বন্দীদের বেশ কয়েকজন মুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে। যদিও এসবের ফলে খুব কমই মুক্তি মেলে। এর আগে গত ২ মে খাদের আদনান নামে এক ফিলিস্তিনি বন্দী ইসরাইলি কারাগারে নিহত হয়। প্রশাসনিক বন্দীদশা থেকে মুক্তি লাভের আশায় একটানা ৫৫ দিন খাবার-পানীয় থেকে বিরত থেকে অনশন করে যাচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় তাঁর।

    প্রশাসনিক বন্দীদশা থেকে মুক্তির আশায় বর্তমানে গত ১৮ দিন ধরে অনশন করছেন তিনি।

    কেবল বন্দী থাকাটাই শেষ নয়, ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর চালানো হয় অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বন্দীদের অনেককে নির্জন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে থাকতে বাধ্য করা হয়। পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে ও অসুস্থ হলে চিকিৎসা দেয়া হয় না। এমন নির্যাতনের ফলে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩৫ জন মুসলিম ইসরাইলি কারাগারে নিহত হয়ছেন।

    কারাগারে পুরুষদের পাশাপাশি মুসলিম নারীদেরকেও করা হয় অকথ্য শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। আর এভাবেই ফিলিস্তিনি বন্দীদের মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করে যাচ্ছে জালিম ইসরাইল।

    অন্যদিকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূ-খণ্ডে বিগত ৫৬ বছর ধরে অবরোধ সৃষ্টি করে রেখেছে ইসরাইল। ফলে দারিদ্রতা ও বেকারত্ব চরম অবস্থা ধারণ করেছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায়। মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রায় সবগুলো থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন ফিলিস্তিনি মুসলিমরা। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-এর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেখানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি পরিবারের সংখ্যা ৪০ শতাংশ। আর ৭০ ভাগ মানুষ টিকে আছে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে। পরিসংখ্যান বলছে, ১৫-২৯ বছর বয়সী গাজার জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশই বেকার। তরুণদের বেকারত্বের হারের বিবেচনায় এটিই বিশ্বে সর্বোচ্চ।

    অন্যদিকে জনসংখ্যা ঘনত্বের তুলনায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা সারা বিশ্বে সবার শীর্ষে। শ’খানেক বর্গমাইল আয়তনের গাজা উপত্যকায় বসবাস করেন প্রায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি। এখানে প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে ৭ জনই শরনার্থী। ১৯৪৮ সালে ইহুদিরা দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার সময় উচ্ছেদ হয়ে এখানে চলে আসেন এসকল ফিলিস্তিনিরা। গাজার স্কুলগুলোর ওপর সংখ্যার প্রচন্ড চাপের কারণে ৯৪ শতাংশ স্কুলই দু’শিফট করে চলে, একটি সকালে আরেকটি বিকালে।

    গাজার বেশির ভাগ স্কুলে ক্লাস হয় দুই শিফটে।

    উপরন্তু এখানে বিদ্যুতের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় চরম ব্যাঘাত ঘটছে। দিনে মাত্র ২-৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। ফলে পড়াশোনা ও বিদ্যুতের ওপর নির্ভর্শীল সব কিছুর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মুসলিমরা। এখানে মানুষের মধ্যে ব্যাপক দারিদ্র্যতা, বেকারত্ব, আর কঠোর সীমান্ত প্রহরা আর ইসরাইলি অবরোধের কারণে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার সুযোগও অতি সীমিত।


    গাজা উপত্যকায় ভাল কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থাও নেই মুসলিমদের জন্য। অবরোধের কারণে ভাল কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম আনতে পারে না মুসলিমরা। ফলে জরুরী বা উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে গাজাবাসীকে ইসরাইলে যেতে হয়। তবে এটিও কোন সহজসাধ্য বিষয় নয়, এর জন্য ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ আবেদনই প্রত্যাখান করে থাকে, কিংবা অনুমতি দিলেও বেশ সময় নেয়, যা রোগীর জন্য আরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    এতসব কারণে ফিলিস্তিন নিজ ভূমি হওয়া সত্বেও নিজেরাই এখানে অপরাধী- এমন ধারণা নিয়েই বেড়ে উঠে প্রতিটি ফিলিস্তিনি শিশু। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত মানুষের মৌলিক চাহিদার সবগুলো থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এমন জীবনকে এক প্রকারের কারাগার ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে!



    তথ্যসূত্র:

    1. Israeli occupation has turned Palestine into an ‘open-air prison,’ says UN expert
    https://tinyurl.com/mpsa25ks
    2. Gaza: The world’s largest open-air prison
    https://tinyurl.com/5n7xwaz8
    3. Palestinian Prisoners Day 2023
    https://tinyurl.com/4ca8dtwu
    4. Palestinian dies after falling into coma while in Israeli custody
    https://tinyurl.com/63wz3p2k
    5. Israel has detained over 3,370 Palestinians in 2023
    https://tinyurl.com/2vkf78wn
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    আজ মুসলিম বলে আমি নির্যাতিত।
    আজ মুসলিম বলে আমি অবহেলিত।
    আজ মুসলিম বলে আমার শরীর থেকে রক্ত ঝরে।
    আজ মুসলিম বলে আমার বোন ধর্ষিত।
    আজ মুসলিম বলে আমার বাড়িঘর ভাঙ্গা হচ্ছে।
    আজ মুসলিম বলে আমার বেঁচে থাকার স্বাধীনতা টুকু নেই।
    আজ মুসলিম বলে আমাকে জেলে বন্দি করা হচ্ছে।

    হে আল্লাহ আর কতদিন এভাবে চলবে!!

    Comment


    • #3
      প্রতিদিন খবর আসে আমরা ভাল নেই, কেন? আজ আমাদের এই অবস্থা কেন? আজ আমরা কেন মার খাচ্ছি? একটাই কারণ, আমরা আল্লাহর দেয়া সঠিক বিধান ভুলে গেছি। আজ জিহাদের পথ ভুলে গেছি। আল্লাহ আমাদের সঠিক দ্বীনের উপর চলার তাওফিক দিন। আমিন।
      Last edited by Rakibul Hassan; 08-06-2023, 05:45 PM.

      Comment


      • #4
        আল্লাহ এই উম্মাহ কে হেফাজত করুন। আমরা যদি আমাদের শরয়ী দায়িত্ব পালন করে যেতাম তাহলে হয়তো আজ এই দিন দেখতে হতো না।

        Comment


        • #5
          আল্লাহ উনার দুনিয়াকে উনার ইচ্ছে মত পরিচালনা করে নিয়ে যাচ্ছেন , এই প্রতিকুল পরিবেশ থেকেই উনি জান্নাতের জন্য উপযুক্ত বান্দা বের করবেন
          فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِيَآءَ الشَّيْطٰنِ

          Comment


          • #6
            হে আল্লাহ! আমাদের মজলুম ভাইবোনদের সাহায্যার্থে এগিয়ে না যাওয়ার পেছনের অপারগতাকে আপনি ক্ষমা করুন, এবং আমাদের তৌফিক দান করুন তাদের সাহায্যার্থে সর্বপ্রকারের সাহায্য সমর্থন নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার।

            Comment

            Working...
            X