‘দা কাশ্মীর ওয়ালা’ বন্ধ করে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকার
কাশ্মীর ওয়ালা সাইটের এই ছবিটি ভেসে বেড়াচ্ছে নেট দুনিয়ায়
কাশ্মীরে শ্রীনগরভিত্তিক স্বাধীন সংবাদমাধ্যম “দা কাশ্মীর ওয়ালা” বন্ধ করে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কাশ্মীর ওয়ালা জানিয়েছে যে, তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি ভারতে বন্ধ হয়ে পড়েছে।
নিউজ আউটলেট সংশ্লিষ্টরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তারা তাদের সার্ভার পরিষেবা প্রদানকারীর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন যে, ভারতের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২০০০ সালের আইটি আইনের অধীনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আর এই আইটি আইন, ২০০০ হলো এমন একটি প্রাথমিক আইন, যা সাইবার অপরাধ এবং ইলেকট্রনিক কমার্স সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে প্রণয়ন করা হয়েছিল।
“আইটি আইন, ২০০০ এর অধীনে ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে” – এমন একটু মেসেজের স্ক্রিনশট বর্তমানে নেট দুনিয়া ও ভারতের সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এবিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাশ্মীর ওয়ালার কর্মীরা জানিয়েছেন যে, তাদের এক্স (পূর্বনাম টুইটার) অ্যাকাউন্টটিও “আইনি দাবির প্রেক্ষিতে” বন্ধ করা হয়েছে এবং তাদের ফেসবুক পেইজটিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মীরা আরও জানিয়েছেন যে, তারা একটি উচ্ছেদের নোটিশ পেয়েছেন এবং ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে তাদের অফিস ভবন ছেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
তবে নিউজ পোর্টালটি বলছে যে, ভারত কেন তাদের পোর্টাল ব্লক করেছে, তার নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনো তারা কিছুই জানেন না। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “আমাদের কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি বা এখনও পর্যন্ত আমাদের পাবলিক ডোমেইনের নানান কার্যক্রমের কোনটির সম্পর্কে কোনও সরকারী আদেশও জারি করা হয়নি।”
দা কাশ্মীর ওয়ালার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ফাহাদ শাহকে গত বছর একটি “সন্ত্রাস বিরোধী” আইনের অধীনে ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাকে তখন “সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করা” এবং “ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়ার” অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
স্টাফদের প্রকাশিত বিবৃতিতে জনাব ফাহাদ শাহের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়, “রাজ্য তদন্ত সংস্থা (এসআইএ) শ্রীনগরে আমাদের অফিসে এবং ফাহাদ শাহের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। অভিযানের সময় আমাদের বেশিরভাগ গ্যাজেট জব্দ করা হয়েছিল, প্রতিবেদকদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং সমস্ত নথিপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয়েছিল।”
“তারপর থেকে, আমাদের অন্তর্বর্তী সম্পাদককে একাধিকবার এসআইএ তলব করেছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ফাহাদ শাহ এই মামলায় জম্মুর কোট ভালওয়াল কারাগারে বন্দী রয়েছেন, যা তার বাড়ি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে।”
সাজাদ গুল নামে কাশ্মীর ওয়ালার আরেক সদস্য গত জানুয়ারি মাসে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জেরে গ্রেপ্তার হন। তিনি বর্তমানে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি কারাগারে জননিরাপত্তা আইনের অধীনে আটক রয়েছেন।
ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার ২০১৯ সালে এই অঞ্চলের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর থেকে এই অঞ্চলের স্বাধীন গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরেছে। বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাদের কাজের বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। বাদ যান নি সিদ্দিক কাপ্পানের মতো বিশ্বমিডিয়ায় পরিচিত সাংবাদিকও।
এক্স (পূর্বনাম টুইটার) অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, “দা কাশ্মীর ওয়ালা কয়েকটি পোর্টালের মধ্যে একটি, যারা ক্ষমতাধরদের কাছে সত্য কথা বলার সাহস করেছিল, তাদেরকেও নীরব করে দেওয়া হলো।”
ভারতীয় সংবাদ সংস্থাগুলির একটি সম্মিলিত ডিজিআইপিইউবি (DGIPUB) নিউজ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন বলেছে যে, কোনও পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই দ্য কাশ্মীর ওয়ালা বন্ধ করা “কাশ্মীরের সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর আরেকটি পদক্ষেপ।” সাংবাদিকরা “দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে যাওয়ার ভয়ে জীবনযাপন করছেন।”
তথ্যসূত্র:
1. India blocks independent news outlet The Kashmir Walla
– http://tinyurl.com/2xw96ts3
কাশ্মীর ওয়ালা সাইটের এই ছবিটি ভেসে বেড়াচ্ছে নেট দুনিয়ায়
কাশ্মীরে শ্রীনগরভিত্তিক স্বাধীন সংবাদমাধ্যম “দা কাশ্মীর ওয়ালা” বন্ধ করে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কাশ্মীর ওয়ালা জানিয়েছে যে, তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি ভারতে বন্ধ হয়ে পড়েছে।
নিউজ আউটলেট সংশ্লিষ্টরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তারা তাদের সার্ভার পরিষেবা প্রদানকারীর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন যে, ভারতের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২০০০ সালের আইটি আইনের অধীনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আর এই আইটি আইন, ২০০০ হলো এমন একটি প্রাথমিক আইন, যা সাইবার অপরাধ এবং ইলেকট্রনিক কমার্স সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে প্রণয়ন করা হয়েছিল।
“আইটি আইন, ২০০০ এর অধীনে ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে” – এমন একটু মেসেজের স্ক্রিনশট বর্তমানে নেট দুনিয়া ও ভারতের সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এবিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাশ্মীর ওয়ালার কর্মীরা জানিয়েছেন যে, তাদের এক্স (পূর্বনাম টুইটার) অ্যাকাউন্টটিও “আইনি দাবির প্রেক্ষিতে” বন্ধ করা হয়েছে এবং তাদের ফেসবুক পেইজটিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মীরা আরও জানিয়েছেন যে, তারা একটি উচ্ছেদের নোটিশ পেয়েছেন এবং ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে তাদের অফিস ভবন ছেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
তবে নিউজ পোর্টালটি বলছে যে, ভারত কেন তাদের পোর্টাল ব্লক করেছে, তার নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনো তারা কিছুই জানেন না। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “আমাদের কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি বা এখনও পর্যন্ত আমাদের পাবলিক ডোমেইনের নানান কার্যক্রমের কোনটির সম্পর্কে কোনও সরকারী আদেশও জারি করা হয়নি।”
দা কাশ্মীর ওয়ালার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ফাহাদ শাহকে গত বছর একটি “সন্ত্রাস বিরোধী” আইনের অধীনে ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাকে তখন “সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করা” এবং “ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়ার” অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
স্টাফদের প্রকাশিত বিবৃতিতে জনাব ফাহাদ শাহের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়, “রাজ্য তদন্ত সংস্থা (এসআইএ) শ্রীনগরে আমাদের অফিসে এবং ফাহাদ শাহের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। অভিযানের সময় আমাদের বেশিরভাগ গ্যাজেট জব্দ করা হয়েছিল, প্রতিবেদকদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং সমস্ত নথিপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয়েছিল।”
“তারপর থেকে, আমাদের অন্তর্বর্তী সম্পাদককে একাধিকবার এসআইএ তলব করেছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ফাহাদ শাহ এই মামলায় জম্মুর কোট ভালওয়াল কারাগারে বন্দী রয়েছেন, যা তার বাড়ি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে।”
সাজাদ গুল নামে কাশ্মীর ওয়ালার আরেক সদস্য গত জানুয়ারি মাসে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জেরে গ্রেপ্তার হন। তিনি বর্তমানে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি কারাগারে জননিরাপত্তা আইনের অধীনে আটক রয়েছেন।
ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার ২০১৯ সালে এই অঞ্চলের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর থেকে এই অঞ্চলের স্বাধীন গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরেছে। বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাদের কাজের বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। বাদ যান নি সিদ্দিক কাপ্পানের মতো বিশ্বমিডিয়ায় পরিচিত সাংবাদিকও।
এক্স (পূর্বনাম টুইটার) অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, “দা কাশ্মীর ওয়ালা কয়েকটি পোর্টালের মধ্যে একটি, যারা ক্ষমতাধরদের কাছে সত্য কথা বলার সাহস করেছিল, তাদেরকেও নীরব করে দেওয়া হলো।”
ভারতীয় সংবাদ সংস্থাগুলির একটি সম্মিলিত ডিজিআইপিইউবি (DGIPUB) নিউজ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন বলেছে যে, কোনও পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই দ্য কাশ্মীর ওয়ালা বন্ধ করা “কাশ্মীরের সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর আরেকটি পদক্ষেপ।” সাংবাদিকরা “দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে যাওয়ার ভয়ে জীবনযাপন করছেন।”
তথ্যসূত্র:
1. India blocks independent news outlet The Kashmir Walla
– http://tinyurl.com/2xw96ts3