ভারতের বহরমপুরে মুসলিমদের ফ্ল্যাট ও ঘরভাড়া দিতে নিষেধাজ্ঞা
বাংলার মুসলিম সংখ্যালঘু প্রধান মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর। সেই বহরমপুর শহরে মুসলিমদের ঘর-ভাড়া কিংবা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ নেই। মুর্শিদাবাদে গত ৭-৮ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার ফলে গ্রামাঞ্চল ও মফস্সল থেকে প্রচুর মুসলিম সদর শহর বহরমপুরে আসছেন। শিক্ষা, ব্যবসা ও চাকরির টানেই বহরমপুরে আসা। আগে অবশ্য জেলার জনসংখ্যার অনুপাতে বেমানানভাবে বহরমপুরে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কম ছিল। এখন এই সংখ্যা খানিকটা বৃদ্ধি পেলেও বহরমপুর শহরে জমি, ঘরভাড়া বা বেসরকারি আবাসনে তাদেরকে অপাঙ্ক্তেয় করে রাখা হয়েছে। সম্প্রীতির বাংলায় এমনই এক ঘটনার কথা উঠে এসেছে এই রিপোর্টে।
খোদ বহরমপুর শহরে শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার অপরাধে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হচ্ছে না। এমনকী কয়েকজন শিক্ষিত মুসলিমের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য বায়না বাবদ আগাম টাকা নেওয়ার পরও ফ্ল্যাট দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় ক্লাবের দোহাই দিয়ে তথাকথিত হিন্দু-মাতব্বরেরা প্রোমোটারকে টাকা অর্থাৎ বায়না ফেরত দিতে বাধ্য করছে। কিন্তু কোনওভাবেই মুসলমানকে ফ্ল্যাট বিক্রি করা যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। সম্প্রতি বহরমপুর শহরের কিষাণ ঘোষ লেনে নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট নিয়ে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। ৬ জন মুসলিম ফ্ল্যাট-ক্রেতার নিকট বায়নাবাবদ আগাম নিয়েও মুসলিম হওয়ার কারণে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুর। এখন শিক্ষায়-চাকরিতে অনেকটা এগিয়ে মুসলিমদের অনেকেই মেডিক্যাল অফিসার, কলেজ শিক্ষক, পুলিশ অফিসার,সাধারণ প্রশাসনে উঁচু পদে চাকরি করছেন। ফলে বহরমপুর শহরে নিজস্ব বাসস্থানের প্রয়োজনে এইসব সরকারি আধিকারিকরা ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন। ব্যাঙের ছাতার মতো বহরমপুর শহরে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও প্রায় সব প্রোমোটারের অলিখিত সিদ্ধান্ত, কোনও মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি নয়।
সম্প্রতি বহরমপুর জজকোর্টের নিকট কিষাণ ঘোষ লেনে ফ্ল্যাট তৈরি করছেন প্রোমোটার ইজারুল সেখ। এই ফ্ল্যাটে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত দু’জন চিকিৎসক, বহরমপুর গার্লস কলেজ ও জিয়াগঞ্জ শ্রীপত সিং কলেজের দুই শিক্ষক, পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর সহ ৬ জন প্রতিষ্ঠিত মুসলিমের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য দাম চূড়ান্ত করে দশ শতাংশ টাকা বায়না বাবদ অগ্রিম নেওয়া হয়। এই ফ্ল্যাট যেখানে গড়ে উঠছে তার কাছেই রয়েছে সুহৃদ সংঘ নামে একটি ক্লাব। অভিযোগ, কিষাণ ঘোষ লেনের বাসিন্দারা প্রোমোটারকে স্থানীয় ওই ক্লাবে ডেকে পরিষ্কার জানিয়েছে, কোনও মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি করা চলবে না। যাদের বায়না নিয়েছেন তা ফেরত দিতে হবে। না হলে এখানে ফ্ল্যাট তৈরি করতে বাধা দেব। এমনকি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, প্রোমোটার ইজারুল সেখ জানিয়েছেন যে ব্যবসা করতে এসে অনেক কিছু আপস করতে হয়। বাধ্য হয়ে যেসব মুসলিমদের অগ্রিম নিয়েছিলাম তা ফেরত দিয়েছি। এখন অমুসলিমদের এই ফ্ল্যাট বিক্রি করতে হবে। তাতে সব মিলে ৫০ লক্ষ টাকা কমদামে ফ্ল্যাট বিক্রি করতে হবে। লোকসান হলেও উপায় নেই। আসলে বহরমপুর শহরে জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট, সব কিছুতেই হিন্দু ক্রেতার থেকে মুসলিম ক্রেতারা অনেক বেশি দাম দেয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে স্বর্ণময়ী রোড, মানকুমারী রোডে অনেকগুলি ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে। কোথাও কোনও প্রোমোটার মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে না। এমনকী উকিলপাড়া মোড়ে সকলের সামনে পুকুরের মাঝে ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে। সেখানেও মুসলিমরা অচ্ছুত। পুকুরের মাঝে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও পরিবেশবিদ থেকে প্রশাসন সকলেই চুপ করে আছে।
সূত্র: পুবের কলম
বাংলার মুসলিম সংখ্যালঘু প্রধান মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর। সেই বহরমপুর শহরে মুসলিমদের ঘর-ভাড়া কিংবা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ নেই। মুর্শিদাবাদে গত ৭-৮ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার ফলে গ্রামাঞ্চল ও মফস্সল থেকে প্রচুর মুসলিম সদর শহর বহরমপুরে আসছেন। শিক্ষা, ব্যবসা ও চাকরির টানেই বহরমপুরে আসা। আগে অবশ্য জেলার জনসংখ্যার অনুপাতে বেমানানভাবে বহরমপুরে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কম ছিল। এখন এই সংখ্যা খানিকটা বৃদ্ধি পেলেও বহরমপুর শহরে জমি, ঘরভাড়া বা বেসরকারি আবাসনে তাদেরকে অপাঙ্ক্তেয় করে রাখা হয়েছে। সম্প্রীতির বাংলায় এমনই এক ঘটনার কথা উঠে এসেছে এই রিপোর্টে।
খোদ বহরমপুর শহরে শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার অপরাধে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হচ্ছে না। এমনকী কয়েকজন শিক্ষিত মুসলিমের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য বায়না বাবদ আগাম টাকা নেওয়ার পরও ফ্ল্যাট দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় ক্লাবের দোহাই দিয়ে তথাকথিত হিন্দু-মাতব্বরেরা প্রোমোটারকে টাকা অর্থাৎ বায়না ফেরত দিতে বাধ্য করছে। কিন্তু কোনওভাবেই মুসলমানকে ফ্ল্যাট বিক্রি করা যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। সম্প্রতি বহরমপুর শহরের কিষাণ ঘোষ লেনে নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট নিয়ে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। ৬ জন মুসলিম ফ্ল্যাট-ক্রেতার নিকট বায়নাবাবদ আগাম নিয়েও মুসলিম হওয়ার কারণে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুর। এখন শিক্ষায়-চাকরিতে অনেকটা এগিয়ে মুসলিমদের অনেকেই মেডিক্যাল অফিসার, কলেজ শিক্ষক, পুলিশ অফিসার,সাধারণ প্রশাসনে উঁচু পদে চাকরি করছেন। ফলে বহরমপুর শহরে নিজস্ব বাসস্থানের প্রয়োজনে এইসব সরকারি আধিকারিকরা ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন। ব্যাঙের ছাতার মতো বহরমপুর শহরে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও প্রায় সব প্রোমোটারের অলিখিত সিদ্ধান্ত, কোনও মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি নয়।
সম্প্রতি বহরমপুর জজকোর্টের নিকট কিষাণ ঘোষ লেনে ফ্ল্যাট তৈরি করছেন প্রোমোটার ইজারুল সেখ। এই ফ্ল্যাটে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত দু’জন চিকিৎসক, বহরমপুর গার্লস কলেজ ও জিয়াগঞ্জ শ্রীপত সিং কলেজের দুই শিক্ষক, পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর সহ ৬ জন প্রতিষ্ঠিত মুসলিমের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য দাম চূড়ান্ত করে দশ শতাংশ টাকা বায়না বাবদ অগ্রিম নেওয়া হয়। এই ফ্ল্যাট যেখানে গড়ে উঠছে তার কাছেই রয়েছে সুহৃদ সংঘ নামে একটি ক্লাব। অভিযোগ, কিষাণ ঘোষ লেনের বাসিন্দারা প্রোমোটারকে স্থানীয় ওই ক্লাবে ডেকে পরিষ্কার জানিয়েছে, কোনও মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি করা চলবে না। যাদের বায়না নিয়েছেন তা ফেরত দিতে হবে। না হলে এখানে ফ্ল্যাট তৈরি করতে বাধা দেব। এমনকি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, প্রোমোটার ইজারুল সেখ জানিয়েছেন যে ব্যবসা করতে এসে অনেক কিছু আপস করতে হয়। বাধ্য হয়ে যেসব মুসলিমদের অগ্রিম নিয়েছিলাম তা ফেরত দিয়েছি। এখন অমুসলিমদের এই ফ্ল্যাট বিক্রি করতে হবে। তাতে সব মিলে ৫০ লক্ষ টাকা কমদামে ফ্ল্যাট বিক্রি করতে হবে। লোকসান হলেও উপায় নেই। আসলে বহরমপুর শহরে জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট, সব কিছুতেই হিন্দু ক্রেতার থেকে মুসলিম ক্রেতারা অনেক বেশি দাম দেয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে স্বর্ণময়ী রোড, মানকুমারী রোডে অনেকগুলি ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে। কোথাও কোনও প্রোমোটার মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে না। এমনকী উকিলপাড়া মোড়ে সকলের সামনে পুকুরের মাঝে ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে। সেখানেও মুসলিমরা অচ্ছুত। পুকুরের মাঝে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও পরিবেশবিদ থেকে প্রশাসন সকলেই চুপ করে আছে।
সূত্র: পুবের কলম
Comment