Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ#| ২৩ রবিউল আওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী।। ০৯ অক্টোবর, ২০২৩ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ#| ২৩ রবিউল আওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী।। ০৯ অক্টোবর, ২০২৩ ঈসায়ী



    ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গ্রুপ হামাস ইসরাইলের উপর এক অতর্কিত অভিযানে ইসরাইলসহ পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। রকেট বৃষ্টির পাশাপাশি স্থল পথে, সমুদ্র পথে ও আকাশ পথে প্যারা গ্লাইডিং করে কমপক্ষে ১০০০ ফিলিস্তিনি ইসরাইলে প্রবেশ করে এই অভিযান পরিচালনা করেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে এখনও সংঘর্ষ চলমান আছে। এছাড়া ড্রোনের মাধ্যমেও তারা হামলা চালাচ্ছেন।

    গত ৫০ বছরের মধ্যে আগ্রাসী ইসরাইলের উপর পরিচালিত মুসলিমদের এটিই সবচেয়ে বড় সফল অভিযান। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে হাজারেরও বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, ইহুদী হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

    পাশাপাশি, ইসরাইলি সেনা অফিসারসহ অন্তত ১০০ ইহুদী সৈন্য ও নাগরিককে যুদ্ধ বন্দী করেছে ফিলিস্তিনিরা। এদের মধ্যে এক ইসরাইলি জেনারেল আছে বলেও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। আরও অন্তত ৭৫০ ইহুদী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছি ইসরাইলের বিভিন্ন সূত্র।
    ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা জায়নবাদী আগ্রাসনের প্রতিবাদে হামাস এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। ফিলিস্তিন ও মসজিদুল আকসা স্বাধীন না করা পর্যন্ত তারা পুরো দমে লড়াই চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হামাস।

    ফলে, ইসরাইলও নির্বিচারে ফিলিস্তিনের আবাসিক এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালানো শুরু করে। ইসরাইলি সৈন্যদের গুলিতে এবং বিমান হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে; আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০০০ জন।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরাইল বেছে বেছে ফিলিস্তিনি আবাসিক এলাকা, মসজিদ, হাসপাতাল, এম্বুল্যান্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। একাধিক মসজিদ ও উঁচু আবাসিক ভবন ধ্বসে পরেছে এসব বিমান হামলায়।

    পরিস্থিতি অশান্ত হতে থাকলে হামাস নেতারা লেবাননের হিজবুল্লাহকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়। হামাসের আহবানে সাড়া দিয়ে লেবানন থেকে গাইডেড মিসাইল ও মর্টাল শেল দিয়ে ইসরাইলি লক্ষ্যে আক্রমণ চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

    এদিকে হামাসের হামলার পর, খুব অল্প সময়ের মধ্যে পশ্চীমা বিশ্বের নেতারা একে একে ইসরাইলের পক্ষে বিবৃতি প্রদান করতে থাকে।
    জেরুজালেমে অবস্থিত আমেরিকান এম্বেসির চার্জ ডি’এফেয়ার্স, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, চেক রিপাবলিক, ফ্রান্স, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইটালি ইসরাইলের পক্ষে বিবৃতি প্রদান করেছে।
    তাদের বক্তব্য হচ্ছে, নিজেদের প্রতিরক্ষা করার অধিকার ইসরাইলি জনগণের আছে।

    কিন্তু, ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন নতুন নয়। ২০১৪ সালে ফিলিস্তিনিদের উপর সবচেয়ে ভয়ংকর আগ্রাসন চালিয়েছিল ইসরাইল।

    টানা সাত সপ্তাহ ধরে চলা সে ইহুদী আগ্রাসনে ২,২০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। সেসময় ফিলিস্তিনের ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় ৬,০০০ এরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। এসব হামলায় অন্তত ১৮,০০০ ফিলিস্তিনি বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে যায়।

    কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের কোনো নেতাকে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিরাপত্তার অধিকার নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি। এমনকি মুসলিম বিশ্বের নেতারাও ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলি আগ্রাসনের ব্যাপারে কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করে।

    এদিকে, পুরো বিশ্বে মুসলিম দেশগুলোর উপর সবচেয়ে বেশি আগ্রাসন চালানো আমেরিকা আরও এক ধাপ এগিয়ে ইসরাইলের পক্ষে বলেছে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষার জন্য যা করা দরকার, আমেরিকা তাই করবে।
    আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছে, ইসরাইলকে সব রকমের সহায়তা করার জন্য ওয়াশিংটন প্রস্তুত আছে। “আমরা কখনও ইসরাইলের পক্ষে দাঁড়াতে পিছপা হবো না।”

    বিশেষজ্ঞদের মতে, বাইডেনের এই বক্তব্য আসলে ফিলিস্তিনের উপর পূর্ণ সামরিক আগ্রাসন চালানোর জন্য ইসরাইলকে গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছে। একই সাথে তারা তাদের যুদ্ধ জাহাজ ও বিমানগুলোকে ইজরায়েলের কাছাকাছি আনছে ইজরাইলকে সমর্থন দেখানোর জন্য।

    এদিকে, জাতিসংঘও কার্যত ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসনে নিপীড়িত-নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে সহমর্মিতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মধ্য প্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার জাতিসংঘ কোঅরডিনেটর টম ওয়েনসল্যান্ড বলেছে, “এমন প্রশ্নে আমি কিছুটা আশ্চর্য হয়েছি।”

    এদিকে, মুসলিম বিশ্বের মধ্যে সৌদি আরব, মিশর ও তুরস্ক এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও সরাসরি ফিলিস্তিনি মুসলিমদের পক্ষে বিবৃতি না দিয়ে, উভয় পক্ষকে নিজেদের কার্যক্রমে লাগাম টানার পরামর্শ দিয়েছে।

    ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপর পরিচালিত জায়নবাদী ইসরাইলি আগ্রাসনই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। স্বাধীনতা এবং প্রতিরক্ষা ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ন্যায্য অধিকার।
    বিবৃতিতে, ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ন্যায্য ও ঐতিহাসিক অধিকারের পক্ষে পূর্ণ সমর্থনও জ্ঞাপন করেছে তালিবান প্রশাসন। পাশাপাশি, নিপীড়িত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য সকল মুসলিম দেশ, অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন এবং আন্তর্জাতিক মহলকে আহ্বান জানিয়েছে তালিবান সরকার।

    এদিকে, হামাসের অভিযানকে সমর্থন দিয়ে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “উম্মাহর উচিৎ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করা।”

    এছাড়াও, কাতার ও ইরান সরাসরি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে, চলমান অস্থিরতার জন্য ইসরাইল এককভাবে দায়ী। বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরাইল যেন এসব ঘটনাকে ভিত্তি করে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের উপর অযৌক্তিক যুদ্ধ শুরু না করে।

    ইরানের সুপ্রিম লিডার আলী হুসাইনি খোমেনির এক উপদেষ্টা বলেছে, ইসরাইলের উপর পরিচালিত ফিলিস্তিনি হামলাকে ইরান সমর্থন করে।

    মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের বাইরে মিশরের আল-আজহার আল-শরিফ মসজিদের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বন্দ্বের বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের পদক্ষেপগুলোরও নিন্দা জানানো হয়েছে তাদের বিবৃতিতে। “ফিলিস্তিনের প্রসঙ্গ আসলে [আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়] শুধু দ্বিমুখীতারই আশ্রয় নেয়।”
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    ‘হে ইহুদীরা! খাইবারের কথা স্মরণ করো’



    ফিলিস্তিনের আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদদের সাম্প্রতিক অপারেশন ‘তুফান আল-আকসা’র (The Aqsa Storm) প্রশংসা করে এবং ইহুদিদের আসন্ন বিপর্যয় সম্পর্কে সতর্ক করে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে আল-কায়েদা উপমহাদেশ (একিউএস/AQS)।

    “হে ইহুদীরা, খাইবারের বিজয়েকে স্মরণ করো… মুহাম্মদ (সাঃ) এর সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে এসেছে!” – এই শিরনামে প্রকাশিত প্রেস রিলিজের শুরুতেই অবৈধ দখলদার ইহুদিদের জুলুমের প্রতিবাদস্বরূপ ইসরাইলের ভূখণ্ডে পরিচালিত ‘তুফান আল-আকসা’ অপারেশনের কারণে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, উম্মাহর আদর্শ, বিশ্বাস ও হৃদয়ের সাথে জড়িয়ে থাকা আল-আকসাময় ফিলিস্তিন ভূমিতে বীর মুজাহিদরা সাধারণ মুসলিমদের সহায়তায় যে প্রতিআক্রমণ পরিচালনা করেছেন, তা মুসলিমদের অন্তরে শীতলতা প্রদান করেছে।

    মুসলিমদেরকেও ইহুদি-খ্রিস্টান সম্মিলিত জোট-বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়েয় প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রকাশনাটিতে।

    বিস্তারিত আসছে, ইনশাআল্লাহ্‌…

    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      সিরিয়ায় আসাদ-ইরান-রাশিয়ার সম্মিলিত আক্রমণ, হতাহত ২০০ ছাড়িয়ে



      মুসলিম উম্মাহ্ বর্তমানে ফিলিস্তিনি মুজাহিদিন কর্তৃক ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলকৃত ভূখণ্ডে ব্যাপক আক্রমণে আনন্দিত, এবং ইসরাইল কর্তৃক পুনরায় বর্বর আক্রমণ চালানো নিয়ে শঙ্কিত। তবে এরই মাঝে নীরবতার আড়ালে চাপা পরে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার মুসলিমদের উপর চালানো বর্বর গণহত্যা। উম্মাহর জন্য আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, ফিলিস্তিনে যারা মুসলিমদের পাশে দাঁড়াচ্ছে বা দাঁড়ানোর কথা বলছে, তাদের কেউ কেউ আবার সিরিয়ান মুসলিমদের উপর হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করছে।

      অতি সম্প্রতি সিরিয়ার ইদলিব ও আলেপ্পোর বিভিন্ন শহর এবং গ্রামাঞ্চল, আসাদ-ইরান ও রুশ বাহিনীর আর্টিলারি এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। টানা তিনদিন ধরে চলা এই বর্বরোচিত হামলায় কমপক্ষে ২০০ বেসামরিক নাগরিক হতাহতের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে; হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি নারী ও শিশুরাও৷

      স্থানীয় সূত্রমতে গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অতর্কিতভাবে এই নৃশংস আক্রমণ শুরু করে আসাদ-ইরান-রুশ সম্মিলিত বাহিনী। প্রথম দিনের হামলায় নিহত হন ১৩ জন, যাদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ২ জন শিশুও রয়েছে। একই দিনের হামলায় আহত হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ১৩ জন নারী ও ১৮ জন শিশু বলে জানা যায়।

      হামলার দ্বিতীয় দিন, তথা ৬ অক্টোবর শুক্রবার নিহতের সংখ্যা ছিল ১১, যাদের মধ্যে ১ জন নারী ও ৩ জন শিশু। দ্বিতীয় দিনের হামলায় আহতদের সংখ্যা পৌঁছে যায় ৮১ তে, যাদের মধ্যে ১৪ নারী ও ২৪ শিশু রয়েছে।

      এরপর, ৭ অক্টোবর হামলার তৃতীয় দিন শনিবারে নিহত হন ১১ জন মুসলিম, যাদের মধ্যে ১ জন নারী ও ৫ জন শিশু ছিল। এদিন আহত হন ২৪ জন, যাদের মধ্যে ১ জন নারী আর ৭ জন ছিল শিশু।

      যৌথ বাহিনীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আক্রমণের শিকার হয় ইদলিব শহর ও এর আশেপাশের এলাকা, যেমন- জিসর আল-শুগৌর, জাবাল আল-জাবিয়া, মারাত আন-নাসান, কাফর নুরান শহর, আল-মাসতুমা, মার প্লেট, জেরিকো, সারমিয়ান, আল-আতারিব, দারাত আজ্জা, আদ-দানা, টারমানিন, মাহম্বল, কামিনাস, নীরাব, ইফিসাস, বিনিশ, মুসাইবিনসহ আরও অন্যান্য শহর ও গ্রাম৷

      ইরান এই হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছে। আর ইরান যেখানে যায়, হিজবুল্লাহ্ সেখানে অবধারিতভাবেই তাদের সাথে যোগ দেয়; সিরিয়াতেও এমনটাই ঘটেছে ও ঘটছে।

      অথচ, এই দুটি পক্ষকেই আমরা দেখেছি যে, তারা ইসরাইলের দখলকৃত ভুখণ্ডে হামাসের আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদদের অপারেশন আল-আকসা ফ্লাডে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে ও সমর্থন প্রদান করেছে।
      দুই ভূখণ্ডের মুসলিমদের প্রতি তাদের দুই রকম আচরণ।

      সুতরাং, এব্যাপারে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যায় যে, শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো তাদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করেই কেবল সমর্থন প্রদান বা বিরোধিতা করে থাকে।

      ফিলিস্তিনি মুসলিমদের মতো করেই তাই উম্মাহর উচিৎ সিরিয়ার মুসলিমদের সাহায্যার্থেও যথাসাধ্য প্রচেষ্টা ব্যয় করা।

      আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        বেসামরিক স্থাপনায় কেনিয়ান বিমান হামলা, শাবাবের বিবৃতি



        গত ১৮ রবিউল আউয়াল মোতাবেক ৪ সেপ্টেম্বর রাতে কেনিয়ার যুদ্ধবিমান সোমালিয়ার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে জুবা ও জাদু রাজ্যের বুয়ালী (بؤالي) এবং আইল আদী শহরে নৃশংস বোমাবর্ষণ করেছে।

        রাত আনুমানিক নয়টার দিকে কেনিয়ার ৪ টি বিমান বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে জুবা রাজ্যের বুয়াল শহরের আশেপাশের এলাকায় বোমাবর্ষণ করে। ক্রুসেডারদের বিমান থেকে চালানো বোমা হামলার ফলে শিশুদের দার আল-হুদা স্কুল, নিরস্ত্র বেসামরিকদের ঘরবাড়ি এবং একটি গাড়ি ধ্বংস হয়। গ্যারেজটি শহরের একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন ছিল।

        উক্ত বিমান হামলায় যদিও কোন প্রাণহানির ঘটনা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি, তবে বাসিন্দাদের সম্পত্তি এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রেকর্ড করা হয়েছে।

        একই রাতে কেনিয়ার বিমানগুলিও জাদু রাজ্যের আইল আদী শহরে বোমাবর্ষণ করেছে। সেখানে, আনুমানিক রাত ১ টার দিকে তারা শহরের আশেপাশের এলাকাগুলিকে ৩টি অবস্থান লক্ষ্য করে বোমা ফেলে। এর ফলে বাসিন্দাদের সম্পত্তি এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সধিত হয়েছে৷ তবে সেখানেও কোন প্রাণহানির খবর পাওয়া যায় নি।

        শাহাদা এজেন্সি কেনিয়ার বোমা হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দার আল-হুদা স্কুলের ছাত্ররা বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ ভবনের পাশে ছিঁড়ে যাওয়া কোরআন হাতে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য রয়েছে। ছবিতে শিশুদেরকে তাদের স্কুলের ধ্বংসাবশেষের আশেপাশে অবস্থান করতে দেখা যায়।

        কয়েকটি ছবিতে পার্কিং গ্যারেজে কেনিয়ার বোমা হামলার ফলে সৃষ্ট ধ্বংসের প্রভাবও দেখায়, যেখানে গ্যারেজের পাশে সারিবদ্ধ গাড়িগুলি মারাত্মকভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

        আইল আদী শহরের ছবিগুলির মধ্যে বেসামরিক বাড়িতে বোমা হামলার ফলে সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের নিচে ঘর এবং আসবাবপত্র দেখা যাচ্ছে। বাসিন্দারা তখন বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার দিকে তাকিয়ে ছিল।

        আল্লাহর রহমতে কোন মুসলিমের হতাহতের ঘটনা না ঘটার কারণ এটিও যে, দক্ষিণের রাজ্যগুলোর বাসিন্দারা যখনই আকাশে কেনিয়ান বিমানগুলোর গর্জন শুনতে পেত, তখনই তারা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে দূরের এলাকায় আশ্রয় নিতে অভ্যস্ত। আর তারা জানেন যে, শত্রু ক্রুসেডারদের বিমানগুলো সরাসরি বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা করে থাকে।

        কেনিয়া এর আগেও অসংখ্য বোমা হামলা চালিয়েছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে রাতের বেলায় বিমান হামলাগুলো চালানো, যার ফলে নিহত ও আহত হয়েছে অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

        কেনিয়ার বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে একটি মসজিদও ছিল। সেই সাথে হামলার কবলে পড়েছে মসজিদটিতে আশ্রয় নিতে যাওয়া একজন মহিলা এবং তার শিশুরা।

        কেনিয়ার এই আগ্রাসি হামলার বিপরীতে আশ-শাবাবের সামরিক নেতৃত্ব কেনিয়ার প্রতি একটি সতর্কীকরণ বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, বেসামরিকদের উপর এই কাপুরুষোচিত হামলার জন্য কেনিয়াকে মূল্য দিতে হবে। সোমালিয়ার দক্ষিণে কেনিয়ার ক্রমাগত বোমা হামলার কারণে কেনিয়ার ভূখণ্ডে সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।

        যেহেতু আশ-শাবাবের একটি জিহাদি শাখা রয়েছে, আর যেহেতু এটির সোমালিয়ার যুদ্ধের মতো দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে নেওয়ার পক্ষে শক্তিশালী জনভিত্তি এবং সরঞ্জাম ও দক্ষতা রয়েছে, সুতরাং এই হামলা কেনিয়ার জন্য খুবই মূল্যসাপেক্ষ হবে, যাদের অর্থনীতি কিনা পর্যটনের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে৷”

        পর্যবেক্ষকরা মনে করেন যে, কেনিয়ার হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন কর্তৃক শরিয়া শাসনের অধীনে পরিচালিত ইসলামী অঞ্চলগুলিতে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে। পাশাপাশি কেনিয়া এবং আশ-শাবাবের মধ্যকার সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করার ক্ষেত্রে এটি শাবাবকে নৈতিক ভিত্তি প্রদান করবে। কেনিয়ার বোমা হামলায় সৃষ্ট সোমালিদের জনসন্তুষ্টি কেনিয়ার বিরুদ্ধে শাবাবের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াকে বৃহত্তর বৈধতা এবং গ্রহণযোগ্যতা প্রদান করবে।

        এইভাবে, কেনিয়ার ক্ষণিকের প্রতিশোধ গ্রহণে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে না, বরং তা কেনিয়া এবং তার স্বার্থকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আল-শাবাবের লক্ষ্যে পরিণত করবে।

        বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে কেনিয়ার বোমা হামলাগুলি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলির নীরবতার মাধ্যমেই ইন্ধন পাচ্ছে। অথচ এই হামলাগুলি বেসামরিকদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিকে স্থায়ী রূপ দিচ্ছে। সোমালি নাগরিকদের বিরুদ্ধে কেনিয়ার লাগাতার যুদ্ধাপরাধের পরেও সোমালি জনগণের বিরুদ্ধে তাদের আগ্রাসনে কথিত বিশ্ব সম্প্রদায় কীভাবে সন্তুষ্টচিত্তে অংশ নিতে পারে, এনিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
        আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

        Comment

        Working...
        X