Announcement

Collapse
No announcement yet.

মানবিক বিপর্যয়ের মুখে গাজা, দৃঢ়ভাবে পাশে নেই কেউ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মানবিক বিপর্যয়ের মুখে গাজা, দৃঢ়ভাবে পাশে নেই কেউ



    ইহুদিবাদী আগ্রাসনের প্রতিউত্তরে ফিলিস্তিনি মুজাহিদিন কর্তৃক ইসরাইলে ব্যাপক আক্রমণে আনন্দ প্রকাশ করেছে মুসলিম উম্মাহ। তবে বরাবরের মতোই মুসলিমদের প্রতিরোধ যুদ্ধকে সন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে দখলদার ইসরাইলকে সমর্থন করছে পশ্চিমারা। তবে এরই মাঝে ইসরাইলের আক্রমণে গাজা ভূখণ্ডে যে ব্যাপক প্রাণহানি ও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, তার আলোচনা কিছুটা আড়ালে পড়েছে।

    গত ৮ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গতকাল ১১ অক্টোবর রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে যে, ইসরাইল স্থল ও বিমান হামলা চালিয়ে এপর্যন্ত ১২০০ ফিলিস্তিনি মুসলিমকে হত্যা করেছে। টাইমস অফ গাজা গত রাতে একটি এক্স পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। হামলার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও।
    ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ হাজার মুসলিম।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় গাজায় ইসরাইলি হামলার ধ্বংসযজ্ঞের নানান ছবি ও ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। গোটা গাজা ভূখণ্ডকে যেন এক ধ্বংসস্তুপে পরিণত করার মিশন হাতে নিয়েছে ইসরাইল।

    গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও আক্রমণ চালাচ্ছে ইহুদি সেনারা। গত রাত পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৩০ জন মুসলিমকে খুন করেছে ইসরাইল। ইসরাইলি হামলায় সেখানে আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৫০ জন।

    গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৬০ শিশু নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় ২২ হাজার ৬০০টির বেশি আবাসিক ভবন, ১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৪৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইল চতুর্দিক দিয়ে অবরোধ করে রেখেছে দীর্ঘদিন থেকে। জল-স্থল ও আকাশপথে এই অবরোধ কার্যকর করে গাজা ভূখণ্ডকে গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে দেশটি। এমনকি পার্শ্ববর্তী মুসলিম প্রধান দেশ মিশরও ইসরাইলের সাথে তাল মিলিয়ে গাজার সাথে নিজেদের সীমান্ত সিল করে দেয়। ফলে গাজাবাসী নিজেদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়ার জন্য আর কোন জায়গা পাচ্ছে না।
    এখন আবার ইসরাইল নিত্যপ্রোয়োজনীয় সামগ্রীও প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সেখানে। আর সেখানে পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্ট ঘোষণা দিয়েছে, গাজাকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি অঞ্চলটিতে খাদ্য বা জ্বালানি, কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

    এদিকে জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। ফলে অন্ধকারে নিমজ্জিত গোটা গাজা; রাতের অন্ধকারকে আলোকিত করতে ইসরাইলের বোমা হামলায় সৃষ্ট আলো ছাড়া আর কোন আলো পাচ্ছে না গাজার অধিবাসীরা!
    বিদ্যুৎ না থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোকে এখন কেবল জেনারেটরের ওপর ভরসা করে চলতে হবে। সেটিও চালানো যাবে আর বড়জোর দুই থেকে চার দিন, এরপর শেষ হয়ে যাবে মজুদকৃত জ্বালানিও। বিদ্যুৎ না থাকার অর্থ, উপত্যকায় পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

    গাজার ওপর ইসরাইলের এই সর্বাত্মক অবরোধ যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, তবে এব্যাপারে ঠুনকো সতর্কতামূলক বিবৃতি জারি করা ছাড়া আর কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি জতসংঘ। তবে শুরুতে তারা আল-কাসসাম ব্রিগেডের অভিযানের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছিল ঠিকই।

    জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান হামলার কারণে আড়াই লাখের বেশি ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা থেকে দুই লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জনের বেশি মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

    এতোকিছুর পরেও ইসরাইলকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে অ্যামেরিকা। তারা এমনকি বিশাল নৌবহর পাঠিয়েছে ইসরাইলের সাহায্যার্থে; সেই সাথে রয়েছে অস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধউপকরণ প্রেরণ। আমেরিকার অবস্থান দেখে বুঝা যাচ্ছে যে, এটা তাদেরই যুদ্ধ। তারাও এই যুদ্ধের প্রত্যক্ষ একটা পক্ষ, যারা ইসরায়েলের পক্ষে।

    সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, গাজা সীমান্তে অত্যাধুনিক ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও ভারি অস্ত্র সহ প্রায় ৩ লাখ সেনা মোতায়েন করেছ ইসরাইল।

    অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, গাজাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে গোটা অঞ্চলটিকে নিজেদের দখলে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। একই সময়ে লেবানন ও পশ্চিম তীরেও আক্রমণ শুরু করায় তাদের গ্রেটার ইসরাইল বাস্তবায়নের বিষয়ে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। মুসলিমদের নিরাপত্তা বিধানে এখন পর্যন্ত তেমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না কাউকেই; প্রকাশ্য সমর্থন ঘোষণাকারীরাও এখনো নির্বিকার।


    তথ্যসূত্র:
    1. ‘We have no water’: Gaza faces deeper humanitarian crisis as Israel tightens its hold
    https://tinyurl.com/2p8934jw
    2. 1100 Palestinians killed in the lsraeli aggression on Gaza.
    https://tinyurl.com/4bu7wwe8
    3. Israel pulverises Gaza after Hamas attack as it collects its dead
    https://tinyurl.com/45hhkea4
    4. Israeli defense minister orders ‘complete siege’ of Gaza, as Hamas threatens hostages
    https://tinyurl.com/mnz2ebd7
    5. গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২৬০ শিশু নিহত
    https://tinyurl.com/4fmuuw27
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    পাশে না থাকার মূল কারণ, ওয়াহান্।
    রাসুল ছাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ওয়াহান্ হচ্ছে দুনিয়া ভালোবাসা আর মৃত্যকে অপছন্দ করা।

    Comment

    Working...
    X