Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ#| ২২ রবিউল আখির, ১৪৪৫ হিজরী।। ০৭ নভেম্বর, ২০২৩ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ#| ২২ রবিউল আখির, ১৪৪৫ হিজরী।। ০৭ নভেম্বর, ২০২৩ ঈসায়ী

    ‘ফিলিস্তিন ইস্যু গোটা উম্মাহর লড়াই’




    শায়খ-মুসলিহ-আলওয়ানি, মসজিদে খুতবাকালীন ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেয়া ছবি।


    সিরিয়ার ইদলিব শহরের একটি মসজিদে জুমার খুতবায় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন শায়েখ মুসলিহ আলওয়ানি। তিনি একজন সৌদি নাগরিক। শামের জিহাদে শরীক হতে তিনি সৌদি থেকে হিজরত করেছেন। খুতবায় তিনি উল্লেখ করেন যে, ফিলিস্তিনের সমস্যা কেবল ফিলিস্তিনিদের নয়, এটি গোটা উম্মাহর সমস্যা, গোটা উম্মাহর লড়াই। তাই ফিলিস্তিনের সাহায্যে গোটা উম্মাহকে এগিয়ে আসা উচিৎ।

    শায়েখের প্রদত্ত খুতবার বাংলা অনুবাদ আমরা আল-ফিরদাউসের সম্মানিত পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করছি –
    “হে হামাস, তোমারা কেনো ইহুদিদের সাথে যুদ্ধ করতে গেলে? কেনো তাদেরকে গাজার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করলে? এ কারণেই তারা গাজা ধ্বংস করে ফেলছে। হে হামাস, তোমাদের কি উচিৎ ছিল না, তোমরা ইহুদিদের অনুগত হয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে (তাদের গোলামী স্বীকার করে থাকতে)? ফলে তারা সাধারণ মানুষকে বোমাবর্ষণ করতো না।

    তোমাদের কি উচিৎ ছিল না যে, তোমরা ইহুদিদেরকে তোমাদের দেশ ও তোমাদের জমিনে শাসন করতে দিতে? তারা তোমাদের লাঞ্ছিত করতো! এতে তারা তোমাদের দেশ ও জাতি ওপর বোমা বর্ষণ করতো না!

    কিছু মুসলিমের মনে এসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে! তারা ফিলিস্তিন সংঘাতের বাস্তবতা বুঝে না। তারা জানে না যে, ইহুদিরা চায় মুসলিমরা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করুক। ফলে তারা তাদের শাসন করবে এবং অপমান করবে। যেমনটা তারা ফিলিস্তিনের অন্যান্য অঞ্চলে করেছে।

    (প্রকৃত অর্থে) যদি মুজাহিদরা আমাদের দেশকে ইহুদিদের হাত থেকে প্রতিরক্ষা না করতো, তাহলে ইহুদিদের অত্যাচার আরও বৃদ্ধি পেত।

    তারা (শাসকগোষ্ঠী) আপনাকে আশ্বস্ত করতে চায় যে, এই যুদ্ধ কেবল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ। তারা আপনাকে আশ্বস্ত করতে চায়, তারা এক টুকরো জমি নিয়ে (ফিলিস্তিনে) যুদ্ধ করছে। আর সেই জমিতে তাদের সবারই হক রয়েছে!

    এমনটা তারা আপনাকে আগেও বুঝিয়েছে যে, এটি সিরিয়া ও তাদের শাসকের মধ্যকার সমস্যা, এর সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক নেই! এমনটা তারা আপনাকে আগেও বুঝিয়েছে যে, এটি ইরাকিদের সাম্প্রদায়িক সমস্যা। এটি জালিম কাফিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়। এমনটা তারা আপনাকে আগেও বুঝিয়েছে যে, এটি লিবিয়াবাসীর পারস্পরিক সমস্যা, এটি তিউনিসদের সমস্যা। তাদের মধ্যে হস্তক্ষেপ করবেন না।

    তারা চায় এভাবেই মুসলিম উম্মাহ দেশে দেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক। আপনি শুধু দলিল দিয়ে নীরবে আন্দোলন করতে পারবেন না। [তারা চায়] আপনি নিজের দেশে থাকুন, তাদের (নির্যাতিতদের) সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক নেই! তারা চায় না যে, আপনি বুঝে ফেলুন এই যুদ্ধ ঈমান ও অস্তিত্বের।

    পশ্চিমারা এই যুদ্ধে জায়নবাদীদের (ইহুদিদের) কাতারে একত্র হয়েছে। আর সাধারণ মুসলিম জনগণ ফিলিস্তিনিদের কাতারে জড়ো হয়েছে। কুকুরগুলো গাজার উপর হামলে পড়েছে। এমনকি আমেরিকার কুকুর বাইডেন বললো যে, যদি সেখানে ইসরায়েল না থাকতো আমরা সেটিকে অস্তিত্বে আনতাম এবং সেখানে একটি নতুন ইসরায়েল গঠন করতাম। তারা তাদের জন্য ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বোঝাই যুদ্ধ জাহাজ পাঠিয়েছে। এছাড়াও ইসরায়েলের সাহায্যে ২০০০ সৈন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

    একইভাবে পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স; সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মিডিয়া প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তারা শিশু, নারী ও অসুস্থদেরকে হত্যা করতে সামান্য কুণ্ঠাবোধ করেনি। খ্রিস্টান মিশনারি হাসপাতাল আমাদের থেকে বেশি দূরে নয়। তেল আবিব সম্মেলনে তাদের কুকুরেরা (পশ্চিমা নেতারা) উপস্থিত থাকাকালীন সময়েও তারা শিশু ও নারীদের হত্যা করতে ভ্রুক্ষেপ করেনি।

    (মূলত) ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংঘাতের মূল কারণ সম্পর্কে অবগত। তাই তারা সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এটি হলো তাদের সংগঠনের চিত্র। এটি হলো তাদের শাসকদের যুদ্ধের প্রস্তুতি।

    আর আমাদের সংগঠনগুলো, আমাদের শাসকেরা, আমাদের নেতারা এবং আমাদের সেনাবাহিনী এই সম্মুখ যুদ্ধের জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছে? আমাদের শাসকদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী লোকটি সে, যে সাহস করে ইসরায়েলের নিন্দা করে বিবৃতি প্রদান করেছে। এটা কেমন সাহসিকতা হলো? এই সাহসী নেতা বিবৃতি প্রদান করলো এবং বললো, আমরা সমস্যা সমাধানকল্পে পরমার্শ সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি!

    তোমরা কোন পরমার্শ করার কথা বলছো? যেই পরমার্শ সভা বাশারকে (সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট) আরব লীগে ফিরিয়ে এনেছে? নাকি সেই পরমার্শ সভা, যা আমাদের বাসিন্দাদেরকে উত্তর সিরিয়াতে বন্দী করে রেখেছে, বিশেষ করে ইদলিবে।

    তারা তো মুসলিমদেরকে গাজায় অপদস্থ করেছে এবং এর পূর্বে মুসলিমদেরকে অপদস্থ করেছে সিরিয়াতেও। এরা কেবলই নিজেদের স্বার্থ দেখে। অচিরেই সময়ের পরিবর্তন হবে। তখন বিপদের সময় তারা কোনো সাহায্যকারী পাবে না।

    নবীজি (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে অপমান অপদস্থতার জায়গায় ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তা’আলা তাকে এমন জায়গায় অপমান করবেন, যেখানে সে তার সাহায্য কামনা করে।

    আপনারা যখন কাপুরুষ হয়ে গেলেন, আপনারা গাজায় আমাদের ভাইদের সাহায্য করতে পারছেন না, তাহলে যারা তাদের সাহায্য করতে চায়, তাদের জন্য জায়গা তৈরি করুন। যদি আপনাদের শক্তি থেমে গিয়ে থাকে এবং আপনারা ক্ষমতা হারানোর ভয় পান, তবে আপনার ওখানে এমন লোক রয়েছে যারা নিজেদের আত্মা হাতে বহন করে। তাদেরকে যেতে দিন, তারা যাবে।

    এ যুদ্ধ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এটি আমাদের যুদ্ধ। এটি গোটা উম্মাহর লড়াই। এ যুদ্ধে কারো অবহেলা করার অধিকার নেই। কারো জন্য জাতিকে বলা জায়েজ নয় যে, ‘আমি তোমাদের অনুমতি দিচ্ছি’ বা ‘আমি তোমাদের অনুমতি দিচ্ছি না।’

    আমরা দেখছি, মুসলিমদের ইজ্জত ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। আমরা দেখছি, সাধারণ মানুষ ও নারীরা আমাদের কাছে চিৎকার করে সাহায্য চাইছে। আমরা দেখছি, হাসপাতালে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। আমরা দেখছি, শিশুদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

    আজ যুদ্ধের দিন। অপরাধীদের প্রতি মমতা বা অনুগ্রহ করার দিন নয়। শপথ মহা জগতের রবের, যিনি গোটা বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। আমরা কিছুতেই শান্ত হবো না, এবং আমরা কখনোই নিজেদেরকে অপমানিত করবো না, উত্তেজিত থাকবো। যুদ্ধের আগুন প্রজ্বলিত রয়েছে, এবং এর লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের হৃদয়গুলো ক্ষোভে দাউ দাউ করে জ্বলছে।

    মুনাফিক দেশগুলো আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ো হয়েছে। তাদের স্লোগান হলো আমরা শক্তিশালী, পরাজিত হবো না। তারা একত্র হয়েছে অহংকারী ও অত্যাচারী কাফিরদের কাছ থেকে অস্ত্র-সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। তারা নারীদের হত্যা করেছে, নারীদের ইজ্জতের পরোয়া করছে না। তারা শিশুদের হত্যা করেছে, অথচ এটি সবার কাছেই ঘৃণিত।

    হে উম্মতের কোটি কোটি মানুষেরা! আমাদের বোনেরা সাহায্য চেয়ে যুদ্ধের ময়দানে কতবার ডেকে বলছে, তোমাদের অস্ত্র নিয়ে আসো। সেটাই অসহায় জাতির উপকারে আসবে। বয়ান ও বিবৃতির প্রয়োজন নেই। ছুটে চলো সেই স্থায়ী জান্নাতের দিকে, যা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে রাখা হয়েছে, এবং তা আম্বর (সুগন্ধি) দিয়ে সাজানো হয়েছে।

    তোমরা কি আমার রবের নাজিল করা আয়াতগুলো বুঝো না যে, তোমরা আল্লাহর জন্য নিজের প্রাণ বিক্রি করবে, আল্লাহ তা ক্রয় করবেন। আমরা তো সেই জাতি, যারা মুহাম্মাদ (ﷺ) এর হাতে জিহাদের বাইআত হয়েছি দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে। আমাদের দ্বীনের সাহায্যের জন্য আমাদের স্বত্ত্বাকে বিক্রি করেছি। এমন জাতি কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, গৌরব অর্জন করে।

    বর্তমানে জায়নবাদীদের মাঝে অন্তর্দ্বন্দ্ব ব্যাপক, (তবে বর্তমানে) আমদের মাঝেও মতভেদ বেশ প্রবল। আল্লাহ তা’আলা বলেন, আপনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করেন, অথচ তাদের অন্তর শতধাবিভক্ত। (সূরা হাশর, ১৪)

    (আল কাসসামের অভিযানে) ঐ দেখুন ইহুদিদের লাশে রাস্তা ভরে গেছে। ঐ দেখুন তাদের আহত ব্যক্তিরা নারীদের মতো কাঁদছে। ঐ দেখুন তাদের সৈন্যবাহিনী পশুর মতো দিশেহারা।

    আল্লাহ তা’আলা বলেন, তাদের পশ্চাদ্ধাবনে শৈথিল্য করো না, যদি তোমরা আঘাত প্রাপ্ত হয়ে থাকো, তবে তারাও তো তোমাদের মতই আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, এবং তোমরা আল্লাহর কাছে এমন কিছু আশা করো, যা তারা আশা করে না। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা, ১০৪)

    এই মুহূর্তে বিশেষভাবে ফিলিস্তিনবাসীর সকল সামর্থবান ব্যক্তির জন্য আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে বের হওয়া ও আক্রমণকারী শত্রুকে প্রতিহত করা ওয়াজিব। ফিলিস্তিনের বাহিরের প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার ভাইদের যথাসম্ভব সাহায্য করা ওয়াজিব।

    পাশাপাশি, ইহুদিদের পরিত্যাগ করা ও মুসলিমদের পরিত্যাগ না করা ওয়াজিব। এবং সশরীরে ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করা, যদি না পারে তবে নিজের সম্পদ দ্বারা, যদি না পারে, তবে নিজের জবান দ্বারা, যদি না পারে তবে নিজের লিখনি ও বয়ান দ্বারা, যদি না পারে তবে নিজের দুআ এবং চিন্তা-পরিকল্পনা দ্বারা সাহায্য করা ওয়াজিব।



    তথ্যসূত্র:

    ১। চলমান গাজা, ফিলিস্তিন ও হামাস নিয়ে জুম’আ খুৎবা – শায়খ মুসলিহ আলওয়ানি
    https://tinyurl.com/bdh5965k
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    “হে হামাস, তোমরা কেনো ইহুদিদের সাথে যুদ্ধ করতে গেলে? কেনো তাদেরকে গাজার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করলে? এ কারণেই তারা গাজা ধ্বংস করে ফেলছে। হে হামাস, তোমাদের কি উচিৎ ছিল না, তোমরা ইহুদিদের অনুগত হয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে (তাদের গোলামী স্বীকার করে থাকতে)? ফলে তারা সাধারণ মানুষকে বোমাবর্ষণ করতো না।

    তোমাদের কি উচিৎ ছিল না যে, তোমরা ইহুদিদেরকে তোমাদের দেশ ও তোমাদের জমিনে শাসন করতে দিতে? তারা তোমাদের লাঞ্ছিত করতো! এতে তারা তোমাদের দেশ ও জাতি ওপর বোমা বর্ষণ করতো না!
    আল্লাহ্‌ তাআলা এধরনের অপবাদ আরোপকরনেওয়ালাদের থেকে উম্মাহ কে হিফাজত করুন, আমীন
    Last edited by Rakibul Hassan; 11-08-2023, 06:49 PM.

    Comment

    Working...
    X