Announcement

Collapse
No announcement yet.

শিক্ষা কারিকুলামে নাটক, পরীক্ষা বাতিল ও অনৈসলামিক উপাদান প্রসঙ্গ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শিক্ষা কারিকুলামে নাটক, পরীক্ষা বাতিল ও অনৈসলামিক উপাদান প্রসঙ্গ

    শিক্ষা কারিকুলামে নাটক, পরীক্ষা বাতিল ও অনৈসলামিক উপাদান প্রসঙ্গ


    দীর্ঘদিন ধরে চলমান শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে বাংলাদেশ সরকার নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। গতানুগতিক পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তে আনা হয়েছে মূল্যায়ন পদ্ধতি।

    ষষ্ঠ শ্রেণির ছেলে-মেয়েদেরও পড়ানো হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক পড়া, আর পড়াশোনার বদলে করানো হচ্ছে নাটক, অভিনয়!অভিভাবকরা এই বিষয়গুলো নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একজন অভিভাবক বলেছেন, “রিলিজিয়ন (ধর্ম) পরীক্ষার দিন বাচ্চাদেরকে দিয়ে প্লে (নাটক) করানো হয়েছে।”

    আরেকজন বলেন, “এই পুরো বছরটাতে তারা একটা লাইন পর্যন্ত শিখে নাই। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে। গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞান কিংবা ধর্ম- কিছুই শেখা হচ্ছে না। আর ধর্ম-তে করতে হচ্ছে নাটক!”ছাত্র জীবনের মূল উদ্দেশ্য জ্ঞান অর্জন, সেটা আনন্দের সাথে করা দোষনীয় নয়। কিন্তু আসল কাজ রেখে শুধু যদি মজা আর আনন্দই শুধু করা হয়, তাহলে এমন ছাত্রজীবন পুরো জীবনের ধ্বংসই ডেকে আনবে শুধু।ছাত্রদের ঠিকঠাক পড়াশোনা ও জ্ঞান অর্জন হচ্ছে কি না- সেটা মূল্যায়নের পদ্ধতি হলো পরীক্ষা গ্রহণ।

    ‘ছাত্র জীবন বড়ই সুখের জীবন, যদি না থাকে এক্সামিনেশন!’ দেশে প্রচলিত এই কথার পেছনের কথা হলো- ছাত্র জীবনে পরীক্ষা না থাকলে পড়াশোনার চাপও থাকে না; আড্ডা-ঘুরাঘুরিতেই দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। আর পড়াশোনা না থাকলে সেটা আর ছাত্রজীবন থাকে কী?পরীক্ষা হচ্ছে কি না, কতটুকু পড়ানো হচ্ছে— এ সবকিছুর আগে দেখা দরকার- জ্ঞান অর্জনের নামে কোন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।নতুন এই শিক্ষা কারিকুলামের অন্যতম ভয়ানক দিক হলো- শিক্ষার নামে পাঠ্যপুস্তকে থাকা ইসলামবিদ্বেষী কুশিক্ষা। জ্ঞানার্জনের মোড়কে মুসলিম শিশুদের ঈমান হরণের সব উপাদানে ভরপুর বইগুলো।

    আমরা নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তকে থাকা কিছু ইসলামবিরোধী ও ঈমান বিধ্বংসী বিষয় এখানে তুলে ধরছি।

    নতুন শিক্ষাক্রমের তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে হিন্দু ধর্ম ও ইসলাম ধর্মের উৎসবে একে অপরের যোগদানে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। হিন্দুদের পূজা ধর্মীয় ইবাদত, তাদের এই ইবাদত হলো আল্লাহর সাথে শিরক। একজন মুসলিম কীভাবে এমন শিরকি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে?
    তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে দেখানো হয়েছে- বড় পরিবার তথা দুয়ের অধিক সন্তান যেখানে রয়েছে, সেই পরিবারগুলো দরিদ্র, মূর্খ, অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে। আর ছোট পরিবার ভালো, পরিচ্ছন্ন থাকে। পরিবার ছোট-বড় হওয়ার সাথে আসলেই কি এসবের কোন সম্পর্ক আছে?পরিবার ছোট-বড় হওয়া মূল নির্ণায়ক নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষা, পরকালের ভীতি, নীতি-নৈতিকতা এগুলো ঠিক থাকা না থাকাটাই সফলতা-ব্যর্থতার নির্ণায়ক।

    প্রিয়নবী (ﷺ) আমাদেরকে অধিক সন্তান গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর তার বিরুদ্ধে গিয়ে অধিক ভাই-বোনের পরিবারকে দরিদ্রতা সহ নানান সমস্যার উৎস হিসেবে উপস্থাপন করাটা শিশুদের মনে নবীজির প্রতি অবাধ্যতার বিষ ঢেলে দেওয়ার শামিল।

    ৪র্থ শ্রেণির বাংলা বইয়ে বেগম রোকেয়ার একটি কাল্পনিক ঘটনায় দেখানো হয়েছে, বাড়িতে মেহমান এলে মুসলিম নারীরা ঘরের সিঁড়ির নিচে, চিলেকোঠায়, দরজার আড়ালে লুকিয়ে থাকেন! এমনকি নারী আত্মীয়ের সাথে দেখা করতেও নাকি তাদের বাধা দেওয়া হয়।
    বাস্তবে, মুসলিমরা বরং আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে এলে যথাসম্ভব আপ্যায়ন করে; ছেলেরা পুরুষ আত্মীয়দেরকে আর মহিলারা নারী আত্মীয়দের সময় দেন। কিন্তু, নারীর পর্দার বিধানের প্রতি অবজ্ঞাভাব শিশুদের মনে গেঁথে দিতে, বেগম রোকেয়ার মনগড়া বিদ্বেষমূলক লেখা পাঠ্যবইয়ে তুলে দেওয়া হয়েছে।

    আবার মেয়েদেরকে কেন ছেলেদের সাথে বা ছেলেদের মতো বাহিরে খেলতে দেওয়া হবে না- পাঠ্য বইয়ে সেই বিষয়ে আপত্তি তুলে ছেলে-মেয়ে একসাথে চলাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে হারাম ফ্রিমিক্সিং-এ অভ্যস্ত করে গড়ে তোলার প্রয়াস এটি। আর এই ফ্রি-মিক্সিং এর সামাজিক প্রেক্ষাপটও আমরা দেখেছি দিহান-আনুশকার ঘটনার মতো স্পর্শকাতর ঘটনাগুলোতে।

    একইভাবে, সব পেশায় নারীদের ছবি দেওয়ার মাধ্যমে ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের মন-মগজে নারীবাদী চেতনা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ৪র্থ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে। নারী পাইলট, নারী ট্রেন চালক, নারী কর্মী ইত্যাদি পেশায় নারীদের কাজ করাকে দেখানো হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন হিসেবে! বিপরীতে, কথিত প্রগতিশীলরা নারীদের গৃহে অবস্থান করে সন্তান লালন-পালন ও সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার মহান দায়িত্ব পালনকে তারা ‘নারী চার দেয়ালে বন্দী’ বলে কটাক্ষ করে।

    ৪র্থ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে অত্যাচারী, লম্পট রাজা লক্ষণ সেনকে সুপণ্ডিত কবি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাকে পরাজিত করা বীর মুজাহিদ ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজীকে অতি সাধারণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মুসলিম শাসকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে আরও কয়েক জায়গায় মুসলিম শাসকদেরকে অন্য উপনিবেশবাদী শাসকদের মতো করে দেখানো হয়েছে।

    অথচ মুসলিমরা উপমহাদেশে স্থায়ী হয়ে মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করেছেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন ভারতীয় উপমহাদেশকে করেছেন ইসলামের আলোয় আলোকিত। ভারতীয় উপমহাদেশের সোনালি সময় ছিল মুসলিম শাসনামল। সেই বিষয়গুলো তুলে না ধরে, ইংরেজ লুটেরা শাসকদের সাথে মুসলিম শাসকদের নামও একই কাতারে রাখা হয়েছে।

    আবার, নির্মুলেন্দু গুণের সূর্যের প্রতি প্রার্থনামূলক কবিতাকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশে হিন্দু ধর্মীয় এসব শিরকি প্রার্থনামূলক কবিতা মুসলিম বাচ্চাদের ঈমান ধ্বংসের আয়োজন ছাড়া আর কী হতে পারে?

    মানব বিকাশের বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা বিবর্তনবাদে ছাত্রদের শেখানো হচ্ছে- মানুষ এসেছে বানর থেকে বিবর্তিত হয়ে। অথচ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, আদম-হাওয়া (আলাইহিমুসসালাম) থেকে মানব জাতির বিস্তৃতি ঘটেছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত যেখানে ডারউইনের ধারণাপ্রসূত বিবর্তনবাদকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে, সেখানে জাফর ইকবাল গংরা প্রচার করছে যে, স্বনামধন্য বিজ্ঞানীরা নাকি ডারউইন তত্ত্বকে সত্যায়িত করেছে! এভাবে মুসলিম শিশুদের মনে এই ধারণা গেঁথে দেওয়া হচ্ছে যে- কুরআনের বর্ণনা ভুল, তাই এটি কোন ঐশী বাণী নয়। (নাঊযুবিল্লাহ্)

    ট্রান্সজেন্ডার নামে আরেকটি জঘন্য পাপাচারের পাঠ জুড়ে দেওয়া হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ে। নিজেদের লিঙ্গ পরিবর্তন করে বা না করেও নিজেদেরকে ভিন্ন লিঙ্গের হিসেবে পরিচয় দেওয়া সহ নানান অশ্লীল অবাস্তব ধারনার আঁধার এই ট্রান্সজেন্ডারিজম; এদেরকে জন্মগত হিজড়াদের মতো বিবেচনা করে প্রমোট করার মাধ্যমে বিশ্ব কুফরী ব্যবস্থার অন্যতম অস্ত্রকে মুসলিম শিশুদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার।

    ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে বাচ্চাদেরকে তাদের বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়ার শিক্ষাও দেওয়া হচ্ছে পাঠ্যবইয়ে। ভাল-মন্দের স্বরূপ অনুধাবনে অক্ষম অনভিজ্ঞ ছেলে-মেয়েদের শিখানো হচ্ছে যে- ‘তুমি নিজে তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, নিজে যা হতে চাও তাই হবে, নিজের যা করতে ভাল লাগে তাই করবে। এবিষয়ে তোমার বাবা-মা, মুরব্বি সমাজ যা-ই বলুক না কেন!’

    অথচ ইসলামি শরীয়তে এটা স্পষ্ট যে, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর এমন সন্তানেরা তো দুনিয়া-আখিরাত সর্বত্রই ব্যর্থ। বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে ছেলেবন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো তো অহরহই দৃশ্যমান।এই শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতির উপাদান এতই বেশি যে, হয়তো সেগুলোর প্রত্যেকটি নিয়ে আলাদা আলাদা করে আলোচনা করলে হয়ত একটি বইই হয়ে যাবে।

    অভিভাবক ও দেশবাসী যদিও নতুন শিক্ষাক্রমের ব্যাপারে অনেকটাই সোচ্চার, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ও জীবনযুদ্ধে সংগ্রামরত অনেক সাধারণ অভিভাবক এখনো জানেন না যে, তাদের আদরের সন্তানকে কীভাবে ধর্ম-নীতি-মানবিকতা বিবর্জিত এক অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে থলে দেওয়া হচ্ছে।

    এই শিক্ষাব্যবস্থা বাতিলে সরকারকে বাধ্য করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে, ভয়ানক এক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে সমগ্র জাতির জন্য। সচেতন অভিভাবকরা তাই হন্যে হয়ে বিকল্প খুঁজছেন। আর তাই মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে।


    তথ্যসূত্র:
    ১. বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস, কিচ্ছু পারে না’
    https://www.youtube.com/watch?v=ZFsr2QZbJJQ
    ২. স্কুলে ভর্তি করে সন্তানের জীবন নষ্ট করছেন না তো!
    https://www.youtube.com/watch?v=8whv3qOO5rU
    ৩. ‘নেশার টাকা’ না পাওয়ায় ছেলেকে হত্যার পর নিজের মাকে খুন
    https://tinyurl.com/5n8vc342
    ৪. গাইবান্ধায় নেশার টাকা না পেয়ে মাকে পিটিয়ে হত্যা
    https://tinyurl.com/4dk39tnb
    ৫. প্রেমে বাধা দেওয়ায় মাকে হত্যা: ভাড়াটে ২ খুনির মৃত্যুদণ্ড, মেয়ে ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন
    https://tinyurl.com/3ux8zysk

    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    ইয়া রব্বাল আলামিন, আপনার দ্বীনকে যারা মুখের ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, তাদের উপর আমাদের শক্তিশালী করে দিন। এমন প্রচণ্ড আঘাত করার তাওফিক দিন, যেন আগামী হাজার বছর পরও তাদের কোন উত্তরসূরি দুনিয়ার বুকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লক্ষবার ভাবে।

    Comment


    • #3
      Originally posted by Sabbir Ahmed View Post
      ইয়া রব্বাল আলামিন, আপনার দ্বীনকে যারা মুখের ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, তাদের উপর আমাদের শক্তিশালী করে দিন। এমন প্রচণ্ড আঘাত করার তাওফিক দিন, যেন আগামী হাজার বছর পরও তাদের কোন উত্তরসূরি দুনিয়ার বুকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লক্ষবার ভাবে।
      আমীন, ছুম্মা আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        ট্রান্সজেন্ডার নামে আরেকটি জঘন্য পাপাচারের পাঠ জুড়ে দেওয়া হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ে। নিজেদের লিঙ্গ পরিবর্তন করে বা না করেও নিজেদেরকে ভিন্ন লিঙ্গের হিসেবে পরিচয় দেওয়া সহ নানান অশ্লীল অবাস্তব ধারনার আঁধার এই ট্রান্সজেন্ডারিজম; এদেরকে জন্মগত হিজড়াদের মতো বিবেচনা করে প্রমোট করার মাধ্যমে বিশ্ব কুফরী ব্যবস্থার অন্যতম অস্ত্রকে মুসলিম শিশুদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার।
        আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তায়ালা এই উম্মত কে এসকল ফিতনা মোকাবেলার তৌফিক দিন

        Comment

        Working...
        X