ভারতে কৃষক আন্দোলনের আদ্যোপান্ত
গত ১৩ ফেব্রুয়ারী কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে পাঞ্জাব থেকে দিল্লীমুখী হয় ভারতের নিপীড়িত কৃষক সমাজ। এর প্রেক্ষিতে দিল্লির সীমান্তবর্তী হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশ রাজধানীতে প্রবেশে বাধা দিতে কৃষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এছাড়াও রাজধানীর একাধিক প্রবেশ পথ কাঁটাতার, স্পাইক ও সিমেন্টের ব্লক দিয়ে সিলগালা করে দেয় মোদীর বিজেপি প্রশাসন।
যেকারণে রাস্তায় কৃষকরা
কৃষকদের প্রধান দাবি সরকার যেন প্রতিশ্রুত ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন’ কার্যকর করে, যাতে তাদের ফসল উৎপাদনের হার স্থিতিশীল হয় এবং তারা উপযুক্ত উপার্জন নিশ্চিত করতে পারেন। ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী সরকার দুই বছর আগে কৃষকদেরকে ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন’ বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
দ্বিতীয়ত, ঋণ মওকুফের দাবিতে ক্ষমতাসীন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার আশা করছেন তারা। তারা বলছেন, চাষের জন্য বেশি খরচ করেও এর বিপরীতে তাদের কোন উপার্জন হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে চরম আবহাওয়া বৃদ্ধির পাশাপাশি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, ফলন প্রভাবিত এবং কৃষকদের ঋণের গভীরে ঠেলে দেওয়ার কারণে কৃষি শিল্প মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার কৃষক আত্মহত্যা করে। ২০২২ সালে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) সংগৃহীত তথ্যমতে, ভারতে ১১ হাজার ২৯০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে।
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ বলছেন, “প্রতি বছর ব্যাংক বড় বড় কর্পোরেশনের নেওয়া লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মওকুফ করে এবং সেটার কোনও উল্লেখও হয় না, এমনকি এ নিয়ে কোন খবরও হয় না। কর্পোরেশনগুলি সব ধরনের ঋণ মওকুফ করে পার পেয়ে যায়। কিন্তু কৃষকরা তাদের ঋণের একটি ক্ষুদ্র অংশ মওকুফ করতে চাইছেন অথচ তাদের সাথে অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে।”
কেন সরকার কৃষিঋণ মওকুফ করতে নারাজ সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
যেভাবে কৃষক আন্দোলনে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে মোদী সরকার
বিভিন্ন গণমাধ্যমে আন্দোলনে কৃষকদের ওপর হিন্দুত্ববাদী সরকারের ড্রোন ব্যবহার করে টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ, প্যালেট গুলি ব্যবহারসহ নানা গোলাবারুদ ব্যবহারের ঘটনা উঠে এসেছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য পাঞ্জাবের একটি হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরানো বলবিন্দর সিং বলেছেন, তিনি কখনও শোনেননি যে বেসামরিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী গোলাবারুদ হিসেবে প্যালেট গুলি ব্যবহার করেছে। অতীতে ভারতের অবৈধভাবে দখলকৃত কাশ্মীরে ‘ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা’ হিসেবে এ ধরনের গুলি ব্যবহার করা হতো যার ফলে কাশ্মীরের বহু মুসলিম অন্ধ হয়েছে।
আম আদমি পার্টি শাসিত পাঞ্জাবের সরকার জানিয়েছে, হরিয়ানা পুলিশের প্যালেট গুলিতে তিনজন কৃষক দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং ডজনখানেক কৃষক এতে আহত হয়েছেন।
তথ্যসূত্র:
1. ‘We want dignity’: Indian farmers defy pellets, drones to demand new deal
– http://tinyurl.com/4y2drrue
2. India farmers march: What are their demands? Why is gov’t blocking roads?
– http://tinyurl.com/hhsac8xe
গত ১৩ ফেব্রুয়ারী কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে পাঞ্জাব থেকে দিল্লীমুখী হয় ভারতের নিপীড়িত কৃষক সমাজ। এর প্রেক্ষিতে দিল্লির সীমান্তবর্তী হরিয়ানা রাজ্যের পুলিশ রাজধানীতে প্রবেশে বাধা দিতে কৃষকদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এছাড়াও রাজধানীর একাধিক প্রবেশ পথ কাঁটাতার, স্পাইক ও সিমেন্টের ব্লক দিয়ে সিলগালা করে দেয় মোদীর বিজেপি প্রশাসন।
যেকারণে রাস্তায় কৃষকরা
কৃষকদের প্রধান দাবি সরকার যেন প্রতিশ্রুত ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন’ কার্যকর করে, যাতে তাদের ফসল উৎপাদনের হার স্থিতিশীল হয় এবং তারা উপযুক্ত উপার্জন নিশ্চিত করতে পারেন। ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী সরকার দুই বছর আগে কৃষকদেরকে ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন’ বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
দ্বিতীয়ত, ঋণ মওকুফের দাবিতে ক্ষমতাসীন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার আশা করছেন তারা। তারা বলছেন, চাষের জন্য বেশি খরচ করেও এর বিপরীতে তাদের কোন উপার্জন হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে চরম আবহাওয়া বৃদ্ধির পাশাপাশি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, ফলন প্রভাবিত এবং কৃষকদের ঋণের গভীরে ঠেলে দেওয়ার কারণে কৃষি শিল্প মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার কৃষক আত্মহত্যা করে। ২০২২ সালে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) সংগৃহীত তথ্যমতে, ভারতে ১১ হাজার ২৯০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে।
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ বলছেন, “প্রতি বছর ব্যাংক বড় বড় কর্পোরেশনের নেওয়া লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মওকুফ করে এবং সেটার কোনও উল্লেখও হয় না, এমনকি এ নিয়ে কোন খবরও হয় না। কর্পোরেশনগুলি সব ধরনের ঋণ মওকুফ করে পার পেয়ে যায়। কিন্তু কৃষকরা তাদের ঋণের একটি ক্ষুদ্র অংশ মওকুফ করতে চাইছেন অথচ তাদের সাথে অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে।”
কেন সরকার কৃষিঋণ মওকুফ করতে নারাজ সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
যেভাবে কৃষক আন্দোলনে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে মোদী সরকার
বিভিন্ন গণমাধ্যমে আন্দোলনে কৃষকদের ওপর হিন্দুত্ববাদী সরকারের ড্রোন ব্যবহার করে টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ, প্যালেট গুলি ব্যবহারসহ নানা গোলাবারুদ ব্যবহারের ঘটনা উঠে এসেছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য পাঞ্জাবের একটি হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরানো বলবিন্দর সিং বলেছেন, তিনি কখনও শোনেননি যে বেসামরিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী গোলাবারুদ হিসেবে প্যালেট গুলি ব্যবহার করেছে। অতীতে ভারতের অবৈধভাবে দখলকৃত কাশ্মীরে ‘ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা’ হিসেবে এ ধরনের গুলি ব্যবহার করা হতো যার ফলে কাশ্মীরের বহু মুসলিম অন্ধ হয়েছে।
আম আদমি পার্টি শাসিত পাঞ্জাবের সরকার জানিয়েছে, হরিয়ানা পুলিশের প্যালেট গুলিতে তিনজন কৃষক দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং ডজনখানেক কৃষক এতে আহত হয়েছেন।
তথ্যসূত্র:
1. ‘We want dignity’: Indian farmers defy pellets, drones to demand new deal
– http://tinyurl.com/4y2drrue
2. India farmers march: What are their demands? Why is gov’t blocking roads?
– http://tinyurl.com/hhsac8xe
Comment