Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ # ২৭শে রজব ১৪৪২ হিজরি ১২ই মার্চ ২০২১ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ # ২৭শে রজব ১৪৪২ হিজরি ১২ই মার্চ ২০২১ ঈসায়ী

    শাকসবজি তুলায় ৫ ফিলিস্তিনি শিশুকে গ্রেফতার

    সন্ত্রাসবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল বাহিনী ৫ জন শিশুকে গ্রেফতার করেছে। ফিলিস্তিনি নিউজ মাধ্যমগুলো জানায়, গত ১০ মার্চ অধিকৃত পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তা এলাকায় বন্য শাকসবজি তুলতে যায় ৫ জন শিশু। প্রত্যেকের বয়স ৭- ১১ বছরের মধ্যে। এ সময় সন্ত্রাসবাদী ইসরায়েল সেনাবাহিনী তাদের ধাওয়া করে ঘিরে ফেলে। পরে গ্রেফতার করে নিকটস্থ থানায় নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৩ জনই আপন ভাই।

    গ্রেফতার মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় অসংখ্য ইহুদি সেনা শিশুদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় শিশুরা ভয়ে কাঁদছিল।

    ফিলিস্তিনি সংস্থা ‘ডিফেন্স ফর চিলড্রেন’ (ডিসিআইপি) এর তথ্য অনুসারে গত ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রায় ১৩,০০০ ফিলিস্তিনি শিশুকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাবন্দী করেছে।

    সংস্থাটি আরও জানায়, প্রতিবছর গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ ফিলিস্তিনি শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে থাকে ইসরায়েল।

    উল্লেখ্য যে, ইসরায়েল আদালতে ফিলিস্তিনি শিশুদের বয়স্কদের মতই গন্য করা হয়।

    অথচ কথিত জাতিসংঘের ‘শিশু অধিকার সনদ, ১৯৮৯’ আইনেও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় রয়েছে ৫৪ টি ধারা। এসবের একটাও মানছে না সন্ত্রাসবাদী ইসরায়েল। দখলদার ইসরায়েল জাতিসংঘের আইনকে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে শিশু ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছেই প্রতিদিন। ফলে, এ মামলায়ও শিশুদের ভুগতে হবে জেল-জরিমানা।
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    ‘কারাগারে দাঁতে ব্যথা হলে যে ওষুধ, মাথা ব্যথা হলেও একই ওষুধ’

    বাংলাদেশে সম্প্রতি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর কারাগারে মৃত্যু নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। জেলখানায় মৃত্যুর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলেই দাবি করলেও অনেক ক্ষেত্রেই মৃতের পরিবার, মানবাধিকার সংস্থা এমনকি সাধারণ মানুষের কাছে এসব মৃত্যু কতটা স্বাভাবিক তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

    বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে কারাগারে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৫ বছরে জেলখানায় মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৩৩৮ জন বন্দী।

    ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক লেখক মুশতাক আহমেদ জামিন না পেয়ে দশমাস কারাবন্দী থাকা অবস্থায় মারা যায়। তার মৃত্যুকে সরকারের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাবি করা হয়।

    এ বছরই কিশোরগঞ্জের এক ব্যক্তি নেশা ছাড়াতে ছেলেকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন সংশোধনের জন্য, দুমাস না যেতেই ফেরত পেয়েছেন ছেলের লাশ।

    এছাড়া ২০১৯ সালে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আগুনে পুড়ে মারা যায় আইনজীবী পলাশ কুমার রায়। তদন্তে এই মৃত্যুকে কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে জানায় যদিও পলাশের পরিবারের কাছে শুরু থেকেই এ তদন্ত প্রতিবেদন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

    কারাবন্দী কোন ব্যক্তির মৃত্যু হলে কতটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হয় – তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন থাকে সেই সাথে জেলখানায় বন্দীরা কতটা চিকিৎসা সুবিধা পায় রয়েছে সে প্রশ্নটিও।

    কারাগারে একাধিক মৃত্যু দেখেছেন এমন একজন তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, জেলখানায় মৃত্যুগুলোকে তার ভাষায় কোনভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু বলার সুযোগ নেই।

    “প্রচণ্ড পরিমাণ একটা মেন্টাল টর্চারের মধ্যে থাকতে হয় জেলের মধ্যে। মানসিক চাপের মধ্যেও থাকতে হয়। এত মানসিক নির্যাতনের মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্য হতে পারে না। কিন্তু আমি মনে করি এগুলো স্বাভাবিক মৃত্য না।”

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি কারাগারে একাধিক কারাগারে দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। কারাবাসের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি ধারণা দেন জেলখানার স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও।

    “কিছু সরকারি গতানুগতিক ওষুধ আছে। আপনার দাঁতে ব্যথা হলে যে ওষুধ, মাথা ব্যথা হলেও একই ওষুধ। আর ট্রিটমেন্টটাও ঠিকমতো হয় না।”

    তিনি বলছেন, “জেলখানাতে একটা হসপিটাল আছে। বাট সে হাসপাতালে থাকতে হলে আপনার টাকা থাকতে হবে। হঠাৎ যদি কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে, তাহলে পারমিশন লাগবে। সেই পারমিশন নিতে নিতে যদি আপনি মারা যান, তাহলে আরতো ট্রিটমেন্ট নেয়ার দরকার নাই। বলা হবে স্বাভাবিক মৃত্যু।”

    জেলখাটা ওই ব্যক্তির অভিজ্ঞতার সাথে মিল পাওয়া যায় দেশের বিভিন্ন কারাগারে বহু বছর কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক ব্যক্তির সঙ্গে বিস্তারিত আলাপে।

    “কারাগারে একজন রোগী অসুস্থ হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে খুব একটা আমলে নেয়া হয় না। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”

    তার কথায়, “যখন চূড়ান্ত অসুস্থ্য হয়ে পড়েন, তখন দৌড়-ঝাপ শুরু হয়। আর আরেকটি কারণ হল- প্রকৃত অসুস্থ রোগীরা হাসপাতালে জায়গা পায় না। প্রভাবশালীরাই কারা হাসপাতালে বেড পায়। যাদের টাকা আছে, তারা বেড পায়।”

    “আর চাইলেই কিন্তু একজন রোগী কারাগারে চিকিৎসা নিতে পারে না। তাকে অনুমোদনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যখন বন্দী মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন কর্তৃপক্ষ বাইরে হাসপাতালে পাঠায়”।

    মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র জেলখানায় মৃত্যু নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। বন্দী মৃত্যু নিয়ে তাদের চিঠির যে জবাব আসে সেগুলোতেও গৎবাঁধা স্বাভাবিক মৃত্যু অথবা আত্মহত্যার উল্লেখ থাকে।

    সংগঠনটির সিনিয়র উপপরিচালক নীনা গোস্বামী বলেন, “প্রায় প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনাই আমরা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই যে কী ঘটেছিল। সঠিক তদন্ত হয়েছে কিনা, তদন্ত হলে রিপোর্ট কী?”

    “অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা উত্তরও পাই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বলা হয় স্বাভাবিক মৃত্যু। কিন্তু উত্তর পেলেও আমাদের জিজ্ঞাসা থেকেই যায়। যে স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও যথেষ্ট পরিমান তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল কিনা। যে যে অধিকার জেলখানাতে পাওয়ার কথা সেগুলো সে পেয়েছিল কিনা।”

    নীনা গোস্বামী আরো বলেন, “আত্মহত্যা নিয়েই আমাদের যথেষ্ট প্রশ্ন যে সত্যিই আত্মহত্যা করেছিল কিনা? যে এলিমেন্টসগুলো দিয়ে আত্মহত্যা করে, সেগুলো কিন্তু তাদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানোর কথা না। নিরাপত্তা বিধান করা তাদের দায়িত্ব।”

    “সেই নিরাপত্তা যদি দিতে না পারে এটা খুবই প্রশ্নের তৈরি করে। যে তাহলে কি যথেষ্ট নিরাপত্তা আমরা দিতে পারছি না।”

    বন্দীদের মধ্যে ‘বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা’, একজনও মানসিক ডাক্তার নেই

    বাংলাদেশে ৬৮টি কারাগারে সবসময়ই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী থাকে। এখনো দেশের কারাগারগুলোতে দ্বিগুনের বেশি বন্দী রয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণেই উঠে এসেছে যে বন্দীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে।

    এ অবস্থায় প্রতিটি কারাগারে একজন মানসিক রোগের চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশের কোনো কারাগারে এখনো একজনও মানসিক চিকিৎসক নেই বলে জানায় কারা অধিদপ্তর। কারা মহাপরিদর্শক স্বীকার করেন কারাগারে চিকিৎসার ঘাটতি আছে।

    সূত্র: বিবিসি বাংলা।
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      পশ্চিমবঙ্গ-আসামে বিজেপির শক্তি যোগাচ্ছে সন্ত্রাসী সংঘ আরএসএস

      পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত প্রায় ২২০০ কিলোমিটার। আসামের সঙ্গে আড়াই শ কিলোমিটারের মতো। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ৬০ ভাগ পড়েছে এই দুই এলাকায়। আয়তন, ভাষা, সংস্কৃতি, ও রক্তপাত মিলেমিশে এই দুই সীমান্ত বাংলাদেশের জন্য খুবই স্পর্শকাতর।

      এই দুই সীমান্তের অপর পাড়ে এখন চলছে অপরাজনীতির নির্বাচনী খেলা। দুই জায়গায়, দুই নির্বাচনেই সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছে আরএসএস-বিজেপি। জয়ের পাল্লা তাদের দিকেই ভারী। অথচ এক দশক আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না।

      এখন বেশ জোরেশোরে আরএসএস সদস্য বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তের অপর পারে। তাদের এই বৃদ্ধির মধ্যে লেপটে আছে অল্প-বিস্তর বাংলাদেশ-বিদ্বেষও। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে কেবল বিজেপির উত্থানটুকুই দেখা যাচ্ছে। এর পেছনের চালিকাশক্তি হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের বিস্তার এবং তার আঞ্চলিক তাৎপর্য ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আলাপ হয় কম।

      রাজনীতির ছক পাল্টাতে চালকের আসনে আরএসএস

      আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা কেশব হেডগেওয়ার একদা কলকাতায় চিকিৎসাবিদ্যা পড়াতো। আরএসএসের দাবি, এই শহর থেকেই সে হিন্দুত্বাবাদী অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার প্রেরণা পায়। সংগঠনের আরেক তাত্ত্বিক শ্যামাপ্রসাদের জন্মস্থানও এখানে। কিন্তু বাংলা ও আসামে আরএসএসের প*ক্ষে জমিন তৈরি বরাবরই কঠিন ছিল। এর কারণ, এই দুই অঞ্চলে রয়েছে উপমহাদেশের শক্তিশালী দুই ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের বসতি।

      বিশেষ করে অসমিয়া ঐতিহ্যের বিপরীতে হিন্দুত্ববাদের ভিত্তি তৈরি খুব কঠিন ছিল। স্বাধীনতার সময় বৃহত্তর আসামে আরএসএসের ‘প্রচারক’ ছিল মাত্র তিনজন—দাদারাও পরমার্থ, বসন্তরাও ওক এবং কৃষ্ণ প্রাণজাপি। গুয়াহাটি, শিলং ও দ্রিবুগড়ে তিনটি ‘শাখা’ খুলেছিল তারা। পাঞ্জাব থেকে আসা ঠাকুর রাম সিং এসেও এ কাজে হাত লাগায়। প্রায় পাঁচ দশক পর ১৯৯৮ সালে বৃহত্তর আসামে স্বয়ংসেবকদের এক সম্মেলনে সদস্যসংখ্যা দেখা গেল ৩৫ হাজার। আরও দুদশক পর তারা বিজেপিকে রাজ্যে ক্ষমতায় বসায়।

      পশ্চিমবঙ্গেও তারা পিছিয়ে নেই। ছয় দশক হলো এই রাজ্যে তারা কাজ করছে। ফল মোটাদাগেই দেখা যাচ্ছে এখন। প্রথমে তারা উত্তরবঙ্গ ও কলকাতার বড় বাজারে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের অভিবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কাজ করত। বামফ্রন্টের দাপটে এগোতে পারছিল না ভালো করে। সে সময় আরএসএসের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা তলোয়ার ও ত্রিশূল উঁচিয়ে রাম নবমীর মিছিল করেছে, এমন ঘটনা বিরল। এখন সেটা করা যায়। এমনকি মালদার মতো মুসলিম প্রধান জেলায় সেটা বাড়তি আয়োজনে করা হয়।

      আসামে এখন আরএসএস ক্যাডারের সংখ্যা আনুমানিক ২৫ হাজার। ৯০০-এর বেশি ‘শাখা’ আছে তাদের। নানা নামে অঙ্গ সংগঠন আছে ২১টি। বিদ্যাভারতী স্কুল আছে প্রায় ৫০০।

      এ রকম প্রতিষ্ঠান বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও তুমুল গতিতে। বিদ্যাভারতীতে আরএসএসের ক্যাম্পিং হয়। সেসব ক্যাম্পে ‘দেশগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি’ নিয়ে কর্মীরা মতবিনিময় করে।

      পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের অঙ্গ সংগঠনের সংখ্যা আসামের চেয়েও বেশি বলে মনে করা হয়। আসামে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর আরএসএস-বিজেপি পরিবারের প্রধান টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আরএসএস ‘মিশন-বেঙ্গল’ নামে আহমেদাবাদে বিশেষ সম্মেলনও করল বিজেপিকে নিয়ে। এখানেই আসন্ন ভোটে তৃণমূলের হাত থেকে ক্ষমতা নিয়ে নেওয়ার বিস্তারিত রণকৌশল ঠিক করে সংগঠকেরা।

      পশ্চিমবঙ্গের ৩৪১টি ব্লকের সব কটিতে আরএসএসের ইউনিট আছে এখন। ৩ হাজার ৩৪২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত অর্ধেকে তারা পৌঁছে গেছে। এ বছরের মধ্যে তারা প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত একটা শাখা করতে চায়। এ মুহূর্তে শাখার সংখ্যা দুই হাজার ছুঁই ছুঁই। দক্ষিণ বাংলায় এটা বেশি। উত্তরে কম। দক্ষিণে তাদের সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ৩৩টি; উত্তরে ১৫টি। ২০১১ সালে সব মিলে শাখার সংখ্যা ছিল ৫৮০। এক দশকে চার গুণ হয়েছে। উত্তরবঙ্গে কম হলেও দ্রুত বাড়ছে। ২০১০-এর পর তিন গুণ বেড়েছে। আরএসএসের ‘শাখা’গুলো সচরাচর প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একবার বৈঠক করার রেওয়াজ। খেলাধুলা থেকে প্রার্থনা—সবই হয় এ রকম বৈঠকে। বছরে ছয়টি উৎসবও করে তারা।

      পুরো পশ্চিমবঙ্গকে আরএসএস উত্তর-দক্ষিণে সাংগঠনিকভাবে ভাগ করে নিয়েছে। উভয় ভাগের মুসলমান অধ্যুষিত গ্রামগুলোতেও তাদের ‘শাখা’ আছে। সেটা চলে ‘সেবা’র আদলে। ভানবাসী কল্যাণ আশ্রম, বনবন্ধু পরিষদ, সমাজসেবা ভারতী প্রভৃতি বহু নামে বহু সংগঠন আছে ‘সেবা’র জন্য। আর আছে বিশেষভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলার মতো বিশাল আইটি-টিম। এদের দক্ষতা বাড়াতে প্রায়ই ‘আইটি-মিলন’ নামের কর্মশালা হয়। আইটি-মিলন মানে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান বাড়ানো। সেটা আবার শুরু হয় ভোরে ‘সূর্য নমস্কার’ এবং যোগসাধনা দিয়ে। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে এভাবেই সংস্কৃতিকে যুক্ত করে কর্মীদের তৈরি করা হয়। আরএসএসের পাশাপাশি প্রতিটি অঙ্গ সংগঠনেরও আইটি শাখা রয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টুইটারে দক্ষতা সব স্বেচ্ছাসেবকের স্বাভাবিক কাজের মধ্যে পড়ে। কেবল ভাবাদর্শ প্রচার নয়, প্রতিপক্ষকে ‘ট্রল’ করাও একটা ‘কাজ’।

      আরএসএসের সদস্য হতে সবচেয়ে বেশি আবেদন পশ্চিমবঙ্গে

      আরএসএস সচরাচর সরাসরি রাজনৈতিক তৎপরতায় থাকে না এবং বিজেপির রাজনৈতিক অগ্রগতির কৃতিত্বও দাবি করে না। কিন্তু সামান্য ব্যতিক্রম বাদে সব রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্বে আছেন তাদের তৈরি সংগঠকেরা।

      স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনে সহসম্পাদক পর্যন্ত পদগুলো আরএসএসের জন্য সংরক্ষিত থাকে। গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ৪২ জন প্রার্থীর অন্তত ২৯ জন ছিলেন আরএসএস-ঘনিষ্ঠ। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ আরএসএসে ‘প্রচারক’ জীবন শুরু করেছিল ১৯৮৪ সালে।

      তবে বিজেপি অন্য দল থেকে জার্সি বদল করেও অনেক ‘নেতা’ এনেছে। এ রকম ‘অধিগ্রহণ’-এর কারণ, তাদের সুপরিচিত মুখ কম। কিন্তু সাংগঠনিক শক্তি আছে। সেই শক্তির উৎস আরএসএস। সুপরিচিত কাউকে টেনে এনে সহজে ভোটের অঙ্কে জিতিয়ে আনতে পারে বিজেপি। ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিজেপিকে বেশি ভাবতে হয় না। অর্থ নিয়েও নয়। এ দুটো আরএসএসই সামলাতে সক্ষম।

      আসামে আরএসএস কীভাবে বেড়েছে, সেটা বিজেপির নির্বাচনী সফলতা থেকে আঁচ করা কঠিন নয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১২৬ আসনের মধ্যে তারা ৬০টি পায়। ২০১১ সালে তাদের আসন ছিল মাত্র ৫টি। তাদের এই অচিন্তনীয় উত্থান আরএসএসের পরিশ্রমেরই ফসল।

      ২০১১ সালের নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যে কোনো আসন পায়নি। ভোট পেয়েছিল মাত্র ৪ শতাংশ। পরের নির্বাচনে ভোট পায় ১০ ভাগ। আর এখন তারা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখছেন ওয়াকিবহাল অনেকে। ২০১৯-এর সর্বশেষ লোকসভায় তারা ভোট পেয়েছে ৪১ ভাগ। আসন পেয়েছে রাজ্যের প্রায় অর্ধেক। তাদের জনপ্রিয়তা ক্রমে বাড়ছেও।

      একই দৃশ্য আসামে। ২০১১-এর চেয়ে ২০১৬-এর বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির ভোট বেড়েছে ৩০ ভাগ। ২০০৯-এর চেয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট বেড়েছে ২০ ভাগ।

      আরএসএস-বিজেপিকে একসময় হিন্দি বলয়ের সংগঠন ভাবা হতো। কিন্তু ওই অঞ্চলের বহু রাজ্যের চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে আরএসএসের বিস্তার বেশি। সংগঠনের নেতারাই সেটা জানাচ্ছে। ২০১৯ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অনলাইনে উত্তর প্রদেশের পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরএসএসের সদস্য হতে বেশি আবেদন পড়েছে। ২০১৭ সালে এ রকম আবেদন ছিল ৭ হাজার ৪০০। ২০১৮ সালে ছিল ৯ হাজার। আর ২০১৯-এর প্রথম ছয় মাসে ছিল ৭ হাজার ৭০০। একই সময় কেবল উত্তর প্রদেশ থেকে আবেদন পড়েছিল ৯ হাজার ৩৯২। পশ্চিমবঙ্গের লোকসংখ্যা উত্তর প্রদেশের অর্ধেক। এই হিসাবে আরএসএসের সদস্য হতে চাওয়া মানুষের হার পশ্চিমবঙ্গ থেকেই বেশি বলা যায়। আবেদনকারীদের মধ্যে ৭০ ভাগের বয়স ৩৫-এর মধ্যে।

      প্রশ্ন উঠতে পারে, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের প্রতি তরুণদের এত আগ্রহের কারণ কী এবং বাংলাদেশের জন্য তার তাৎপর্য কী?

      কাজে লাগানো হচ্ছে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণাও

      পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম— দুই জায়গাতেই আরএসএসের মূলমন্ত্র ‘ভারতমাতার সুরক্ষা’। এই সুরক্ষার বড় এক দিক ভারতকে ‘বাংলাদেশি সন্ত্রাসী’দের ‘আগ্রাসন’ থেকে বাঁচানো। মিছিল-সমাবেশে, লেখনীতে এসব নিয়ে রাখঢাক দেখা যায় না। উত্তর ভারতে তাদের এ রকম ‘বিদেশি’ প্রতিপক্ষ নেই। আসাম-পশ্চিমবঙ্গে এ রকম কল্পিত শত্রু সহজে পাওয়া যায় বাংলাভাষী থাকা এবং সীমান্ত ঘেঁষে বাংলাদেশ থাকার কারণে।

      বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে মানুষ এসে আসাম-পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের হিস্যা কমিয়ে দিচ্ছে— এ রকম ভীতির আবহ ইতিমধ্যে এই দুই রাজ্যের মানুষের মধ্যে তৈরি করা গেছে। আসামে ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রধান অ্যাজেন্ডাই ছিল ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ তাড়ানোর প্রশ্ন। সেই ভীতির রাজনীতির সূত্রেই আসাম হয়ে এনআরসি কর্মসূচি পশ্চিমবঙ্গে আসি-আসি করছে। সঙ্গে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন করে অ-মুসলমানদের ভোটের হিস্যা বাড়ানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। লক্ষ্য করার মতো ব্যাপার, আসামে এনআরসি শুরুর সময় অসমিয়াদের রক্ষার কথা বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গে বলা হচ্ছে, বাঙলি হিন্দুদের রক্ষার কথা। দুই জায়গাতেই এসব নতুন উদ্যোগে ন্যায্যতা খোঁজা হয় উভয় রাজ্যের মুসলমানপ্রধান সীমান্তঘেঁষা কিছু জেলার শুমারি দলিল সামনে রেখে। তাতে পরোক্ষে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা হয়, এসব জেলায় ‘বাংলাদেশি’ আছে। আরএসএস সাহিত্যে দুই ধরনের ‘অবৈধ বাংলাদেশি’র সন্ধান মেলে। মুসলমান বাংলাদেশিরা হলো ‘অনুপ্রবেশকারী’ আর হিন্দু বাংলাদেশিরা হলো ‘শরণার্থী’।

      আসামে বহুকাল এক কোটি অবৈধ ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’র কথা বলে আরএসএস তুমুল রাজনীতি করে সংগঠন গুছিয়ে নিয়েছে। এনআরসি শেষে তার সত্যতা মেলেনি। এখন পশ্চিমবঙ্গে একইভাবে নতুন দফায় ‘এক কোটি অনুপ্রবেশকারী’র রাজনীতি শুরু হয়েছে, যা মূলত এনআরসি করিয়ে নিতেই। অথচ উভয় রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে কাজের সন্ধানে কারও যাওয়ার অর্থনৈতিক বাস্তবতা নেই। সীমান্তের এপারে বাংলাদেশের অর্থনীতি, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলনামূলক উন্নত। জীবনযাত্রার সূচকেও সীমান্তের উভয় পারের মধ্যে বাংলাদেশের জেলাগুলো এগিয়ে। তারপরও আরএসএসের নেতৃস্থানীয় এক সংগঠক জিঞ্চু বসুর এ রকম বক্তব্য দেখা গেল, ‘পশ্চিমবঙ্গ পশ্চিম বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছে ক্রমে।’ এসব অদ্ভুত প্রচারণায় শক্তি জোগাতে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে তুলে ধরার সম্পূরক প্রচারণাও চলে নানান দিক থেকে। পুরোনো দিনের অনেক শরণার্থীকে সামনে এনে এ রকম প্রচারণাকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেওয়া হয়।

      কেন্দ্রে তারা দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আছে নির্বিঘ্নে। ১৭টি রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর সরকার রয়েছে। মার্চ-এপ্রিলে আসামের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ দখলেও মরিয়া তারা।

      সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
      আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        পশ্চিমবঙ্গ-আসামে বিজেপির শক্তি যোগাচ্ছে সন্ত্রাসী সংঘ আরএসএস

        এই শতাব্দী বিজয়ের শতাব্দী!
        জাগো.. জাগো.. গর্জন দিয়ে জেগে ওঠো।
        বসে থাকার নেইকো সময়.. চেতনায় তুমি খালিদ, সালাউদ্দিন.. বাহুতে তোমার হায়দারী তকত.. প্রতিরোধে যতথাক কাপুরুষ শক্তি কুয়্যত..
        ডাকছে রণাঙ্গন...চারদিকে শুধু উম্মাহর রোনাজারি ক্রন্দন..হুর গিলমান রয়েছে মওজুদ.... শাহাদাহর পেয়ালা নিয়ে হও প্রস্তুত..
        কোরবান করো জানমাল রক্ত বিন্দু... হাতছাড়া করোনা শেষ সুযোগটুকু


        তাকাব্বালাহুল্লাহু মিনকুম ওয়া মিন্না!
        আমীন! ইয়া রাব্বাল আলামীন!!
        আসুন! নববী মানহাযে শান্তির জন্য কাজ করি!!

        Comment


        • #5
          Originally posted by Al-Firdaws News View Post
          ‘কারাগারে দাঁতে ব্যথা হলে যে ওষুধ, মাথা ব্যথা হলেও একই ওষুধ’
          নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি:
          “আমার পারিবারিক সমস্যা জনিত কারনে বাংলাদেশের কোন একটি জেলে যেতে হয়েছিল, বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হবার সুযোগ পেয়েছিলাম,এই সময় টা আমি দেখে দেখে অনেক করে কিছু শিখে ছিলাম।সামান্য কারনে হাজতিদের আড় চোখে দেখা,পাগলকেও ছাড় না দিয়ে সংঘবদ্ধভাবে পিটানো,পাগলের উক্তি ছিল “মারিস না ব্যাথা পাই!” তারপরও ছাড় দেয় না।যাদের একটু মেধা কম অথচ হাজতি আসামি তাদের দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করানো,করতে না চাইলে কাঁঠাল গাছে ঝুলিয়ে পিটানো,বা পিছনে হাত কড়া পরিয়ে আলতো ঢেলা দিয়ে পায়ে পিটানো,অথচ যারা সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি তাদের কাজ করার কথা ছিল। যারা পানি আনতে যেত কিন্তু ওই সকল কয়েদি বা হাজতি যারা নিয়মিত সিগারেট, কোল্ড ড্রিংকস চা কফি দূধ খাওয়াতো না তাদের লাথি মেরে সিড়িতে ফেলে দেয় কিছু কারা রক্ষি,তাছাড়া বাবা মার দেওয়া টাকা পিছি কার্ডে যে টাকা দেয় তা নিয়ে নিজেরা খেয়ে ফেলে।সাধারণ হাজতিদের দিয়ে রান্না বান্না করানো হয়,২ বেলা ঝাড়ু দিতে হয়,অনেকে বয়সের ভারে নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পারলেও তাকে চলা বইতে হয়।কেউ রাতে খুব অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসার বদলে বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে আবার নিয়ে আসে।অনেকের হাত পা ভাঙা থাকলেও তাদের কোন উন্নত মানের চিকিৎসা দেওয়া হয় না।কেউ তাদের দুর্নীতি কথা বলতে গেলে তাকে সকালে একবার পিটায়,দুপুরে ১২ গুনতির পর বিকালে আবার সর্বশেষ জেলার ফাইলে পিটায়।প্রতিবার পিটানোর পর আবার মাঠ দিয়ে দোড়াতে বলা হয়,তার পর আবার পিপিয়ে ওয়ার্ল্ড রাখা হয়।যারা জামিন পায় তাদের পিসি কার্ডের সামান্য কটা টাকা দেয়। বাকি টাকা রেখে দেয়।আগে বের হবার জন্য এটাকাও শেষ, যার টাকা নেই তাকে ব্যাপক জিঙ্গেসা করা হয় ও সবার পরে ছাড়ে।খাবারের মান খুবই করুন,অস্বাস্থ্যকর ”
          উপরের কথাগুলো সম্পূর্ন বাস্তব ।
          “দ্বীনের জন্য রক্ত দিতে দৌড়ে বেড়ায় যারা,সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর উত্তরসূরী তারা”–TBangla

          Comment

          Working...
          X