Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ#| ২১ রজব, ১৪৪৬ হিজরী।। ২২ জানুয়ারী, ২০২৫ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ#| ২১ রজব, ১৪৪৬ হিজরী।। ২২ জানুয়ারী, ২০২৫ ঈসায়ী

    হাসিনার আয়না ঘরে আটক থাকত শিশুরাও




    বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। তারপর থেকেই সামনে আসছে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র।

    আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এর একটি তদন্তে উঠে এসেছে, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে অন্যান্য মানুষের সঙ্গে শিশুদেরও গোপন কারাগারে আটক রাখতো। সেখানে চলত নির্যাতন, এমনকি জিজ্ঞাসাবাদের সময় চাপ সৃষ্টির জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হতো, যার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ পান করতে না দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

    মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

    টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, বাংলাদেশের গোপন আটক কেন্দ্রে বন্দি শত শত লোকের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও ছিল বলে জানিয়েছে বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে জোরপূর্বক গুমের তদন্তকারী একটি কমিশন। অন্তত অর্ধডজন শিশু তাদের মায়েদের সাথে মাসের পর মাস জেলের ভেতরে কাটিয়েছে। আটক রাখার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুদের লিভারেজ হিসাবে অর্থাৎ মানসিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল, যার মধ্যে তাদের দুধ পান করতে দিতে অস্বীকার করার ঘটনাও রয়েছে।

    হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শত শত নেতা-কর্মীকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং আরও শত শত মানুষকে বেআইনিভাবে অপহরণ ও গুমসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে এসেছে।

    কমিশন বলেছে, নারীদের তাদের সন্তানসহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনার বিশদ বিবরণ তাদের কাছে রয়েছে। যার মধ্যে সর্বশেষ এই ধরনের ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালে। এছাড়া কমিশন এই বিষয়ে এক গর্ভবতী নারীর ঘটনাও উল্লেখ করেছে। গর্ভবতী ওই নারীকে তার দুটি ছোট বাচ্চাসহ আটকে রাখা হয়েছিল এবং সেই আটক কেন্দ্রে তাকে মারধরও করা হয়েছিল।

    কমিশন আরও বলেছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী তদন্তকারীদের এমন একটি বন্দিস্থানের কক্ষটি দেখিয়েছেন যেখানে তাকে শিশুকালে তার মায়ের সাথে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। আর এই আটক কেন্দ্রটি পরিচালনা করত আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

    অন্য একটি ঘটনায়, এক দম্পতি এবং তাদের শিশুকে আটক করা হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাবাকে চাপ দেওয়ার জন্য “মানসিক নির্যাতনের অংশ হিসাবে” শিশুটিকে মায়ের দুধ খাওয়ানো থেকে দূরে রাখা হয়েছিল।

    কমিশন বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অপহৃত প্রায় ২০০ বাংলাদেশি এখনোও নিখোঁজ রয়েছেন।


    তথ্যসূত্র:
    1.Bangladesh’s ousted PM Hasina held babies in secret jails
    -https://tinyurl.com/58kdjs5h
    -https://tinyurl.com/4f6ph5v8
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    মোদিকে নিয়ে স্ট্যাটাস, গুম ছিলেন তিন প্রকৌশলী

    ​বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ২০২০ সালে ভারতের হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রধান অতিথি করার প্রতিবাদে ফেসবুকে লেখালেখি করায় তিন প্রকৌশলীকে গুম করে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

    ভুক্তভোগী প্রকৌশলীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং গুমের সময় অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। গুমের ঘটনায় র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তাকেও শনাক্ত করেছেন তারা।

    তিন প্রকৌশলীর মধ্যে মাসরুর আনোয়ার চৌধুরী ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেন। আসিফ ইবতেহাজ রিবাত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মোহাম্মদ কাওসার আলম ফরহাদ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে এ সংক্রান্ত অভিযোগও জমা দিয়েছেন তারা।

    মোদিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি করার প্রতিবাদে প্রকৌশলী মাসরুর আনোয়ার চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘মোদি ভারতে মুসলিমদের নির্যাতন করে। আর আজ তাকে প্রোটেকশন দিয়ে বাংলাদেশে সম্মান, মর্যাদা, নিরাপত্তা দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে র‌্যাব-পুলিশ। মনে রাখা হবে।’

    এর আগের বছরের ২০ অক্টোবর বিএসএফের হাতে নির্মম মারধরের শিকার পাঁচজন র‌্যাব সদস্যের রক্তাক্ত ও ছিন্নবস্ত্রের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘এবার বিএসএফ আর ভারতীয় গ্রামবাসী র‌্যাবের পাঁচ সদস্যকে সোর্সসহ পিটিয়ে ১০ ঘণ্টা পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। তারা (র‌্যাব সদস্যরা) মাদকের আসামিকে ধরতে গিয়ে ভারতের সীমান্তে ঢুকে পড়েছিল। পা-চাটা গোলামেরা তাও বলবে ভারত আমাদের বন্ধু। এই ডিবি-পুলিশগুলোই আবার ভারতবিরোধী নিরপরাধ দেশের মুসলিমদের গুম করবে, হত্যা করবে।’

    ফেসবুকে ভারতের আধিপত্যবাদ নিয়ে এমন লেখার কারণে মোদি বাংলাদেশে আসার আগেই গুম করা হয়েছিল তিন প্রকৌশলীকে। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের জেএমবি সদস্য সাজিয়ে দিনের পর দিন গুম এবং নির্মম নির্যাতনের পর মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে কুখ্যাত জঙ্গি হিসেবে হাজির করা হয়।

    যেভাবে তাদের গুম করে র‌্যাব

    প্রকৌশলী মাসরুর সে দিনের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ২০২০ সালের ১ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল পুলিশ প্লাজার পাশে তাকে বহনকারী রিকশাকে আটকায় একটি সাদা মাইক্রোবাস। তাকে রিকশা থেকে নামিয়ে বিভিন্ন ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখিয়ে নাম জানতে চায়। পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিমের একজন অফিসার র‌্যাবের আইডি কার্ড দেখিয়ে বলেন, ‘বুঝতেই তো পারছেন, আমরা কারা? গাড়িতে উঠেন এক্ষুণি, নইলে শুট করব।’

    প্রকৌশলী মাসরুরকে তুলে নেওয়ার পর একই কায়দায় অপহরণ করা হয় প্রকৌশলী আসিফ ইবতেহাজ রিবাতকেও। গুমের ঘটনা বর্ণনা করে আমার দেশকে তিনি বলেন, ‘গুলশান-১ সংলগ্ন পুলিশ প্লাজার নিচ থেকে আমাকে তুলে নেওয়ার পর তারা আমার কাছে জানতে চায় আমি কোনো জঙ্গি দলের সদস্য কি না।’

    ‘তাদের মধ্যে দু-একজন আমাকে পররাষ্ট্র নীতি বোঝানোর চেষ্টা করেন। দেশে কোন রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন সেটি নিয়ে আমি কেন (ফেসবুকে) কথা বলব, পররাষ্ট্রনীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এ বিষয়ে নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। ভারতের মুসলিম হত্যা করা হয় সেটির কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করলে দেশের ক্ষতি হবে। ভারত আমাদের অনেক বড় বন্ধু ইত্যাদি এসব বিষয় তারা আমাকে বুঝাতে থাকে।’

    ওই একই টিম গভীর রাতে প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাওসার আলম ফরহাদকেও তার বাসা থেকে তুলে নেয়। তিনি বলেন, ‘৩ মার্চ আনুমানিক রাত ১টার দিকে বাসায় নক করে ওরা। দরজা খুলতেই দেখলাম পাঁচ থেকে ছয়জন লোক। আমার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তারা আমার ফোন, মানিব্যাগ, আইডি কার্ড, ক্রেডিট কার্ড সব নিয়ে নেয়। তারা আমার স্ত্রীকে তাদের কাছে অস্ত্র আছে বলে ভয় দেখায়। এরপর তারা আমাকে কালো গ্লাসের একটা মাইক্রোতে চোখ বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়।’

    ভয়াবহ নির্যাতন

    মোদির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় র‌্যাবের গুম ঘরে বর্বর নির্যাতন করা হয়েছিল এই তিন প্রকৌশলীকে। নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে প্রকৌশলী মাসরুর বলেন, ‘তুলে নেওয়ার পর আমাকে ছোট একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর এক রক্ষী এসে আবার চোখ বন্ধ করে আমাকে নিয়ে যায় আরেক রুমে। চেয়ারে বসিয়ে হাত এবং পা বাঁধা হয়। হঠাৎ করে দুই পাশ থেকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। আর বলে, তোর সঙ্গে আর কে কে আছে, নাম বল। আমাকে জঙ্গি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করতে বলে। কিছু নাম বলতে বলে।’

    ‘পরের দিন চোখ, হাত বেঁধে একটা গাড়িতে তোলা হলো। গাড়ি চলতে লাগল এক অজানা গন্তব্যে। আমি শিওর হলাম যে আমাকে ক্রসফায়ার দিতে নিয়ে যাচ্ছে। পেছনের সিটে বসে হেলান দিয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় হালকা ফাঁক দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম কোথায় যাচ্ছি আমরা। আনুমানিক এক ঘণ্টা পর গাড়ি থামলে আমি ‘র‌্যাব হেডকোয়ার্টার’ লেখা দেখি।

    ‘এরপর উপরে নিয়ে চোখ আর হাত খুলে দিলে দেখতে পাই একটা অন্ধকার রুম চারপাশে কালো কাপড়। লাঠি দিয়ে গুঁতো দিয়ে মাথা নিচু করে থাকতে বলল। … এরপর একটা অন্ধকার সেলের দরজা খুলে আমাকে ফেলে যায়। আর বলে যায়, যাতে নাড়াচাড়া না করি। কোনো আওয়াজ না করি।’

    প্রকৌশলী মাসরুর বলেন, ‘সাত-আট দিন পর একজন রক্ষী এসে আমাকে, আমার কাপড়-চোপড় দিয়ে বলে এগুলো পরে নে। এরপর গাড়িতে তোলা হলো, আবার গাড়ি চলতে লাগল। এক ঘণ্টা পর গাড়ি থেকে নামানো হলো। আবারও সেই প্রথম দিনের সেলে ঢুকানো হলো। তখনো বুঝতে পারিনি সেই সেলটি কোন জায়গায়।’

    প্রকৌশলী ফরহাদ আমার দেশকে বলেন, ‘তারা আমাকে ছোট একটা রুমে চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরা অবস্থায় মাটিতে ফেলে রাখল। কিছুক্ষণ পর দুজন এসে নিয়ে গেল আরেক জায়গায়, চেয়ারে বসিয়ে শুরু হল জিজ্ঞাসাবাদ।’

    জানতে চায়, ‘হাসিনার সরকারের সঙ্গে আমাদের সমস্যা কী? আমরা নাকি হাসিনাকে উৎখাত করতে চাই। এসব অভিযোগ অস্বীকার করার পর শুরু হলো দুই পাশ থেকে দুজনের লাঠির আঘাত। পিঠে, দুই হাঁটুতে এবং দুই বাহুতে চলতে থাকে লাঠির আঘাত। আমি জানি না তারা আমাকে কতক্ষণ মারছে। আমি শুধু প্রথম আঘাতেই ব্যথা পাইছি। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না।
    এভাবে প্রায় দুই থেকে তিন দিন এই জায়গাতে ছিলাম গুম অবস্থায়, কখন দিন হচ্ছে কখন রাত হচ্ছে কিছুই জানি না। এ সময় প্রায় প্রতি রাতেই তারা জিজ্ঞাসাবাদের নামে কখনো পিটিয়েছে, কখনো মানসিক টর্চার করেছে। ক্রসফায়ারের ভয়, নখ তুলে নেওয়ার ভয়, ইলেকট্রিক শকের ভয়। শুধু এটা স্বীকার করার জন্য যে আমরা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।’

    তিনি জানান, ‘এরপর এক রাতে কয়েকজন এসে বলল, নে কাপড়-চোপড় পরে নে। বাইচা গেছস। এই বলে তারা আবার আরেকটা গাড়িতে তুলল। চোখ কালো কাপড়ে বাঁধা, হাতকড়া পরানো। মনে হচ্ছিল আজকে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। গন্তব্য আরেক জায়গা, পরে জানলাম সেটা র‍্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ। সেখানেও প্রতি রাতে চলল মানসিক টর্চার। ফেসবুক আইডিতে ঢুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেখে দেখে চলত মানসিক নির্যাতন।

    তিনি বলেন, আটকের পর তারা তাকে ও প্রকৌশলী ফরহাদকে র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে নিয়ে আসে এবং একটি ভবনের দ্বিতীয় তলাতে নিয়ে রাখে। সেখানে ৩ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত তাদের রাখা হয়। এরপর ৫ তারিখ রাতে আমাদের র‍্যাব-১ থেকে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র‍্যাব-১১ তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের বাকি সময় রাখা হয়।

    জঙ্গি নাটক ও মিডিয়া ট্রায়াল

    গুম ঘরে দিনের পর দিন রেখে নির্যাতনের পর এই তিন প্রকৌশলী ও তাদের সঙ্গে আরেক আলেমকে নিয়ে গ্রেপ্তারের নাটকও ছিল বেশ চাঞ্চল্যকর। তিন প্রকৌশলী মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হন।

    প্রকৌশলী মাসরুর বলেন, ২০২০ সালের ৬ মার্চ রাত ১২টার পর একটা কালো মাইক্রোবাসে করে আমাদের তিনজনসহ আরেকজন অপরিচিত এক হাফেজকে নিয়ে একটা গাড়িতে করে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে সাইনবোর্ড এলাকায় নিয়ে একটা গোপন বৈঠকের নাটক সাজায় র‌্যাব। আমরা গাড়িতে বসা ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম হইহুল্লোড় করে কয়েকজন পাঞ্জাবি পরা লোক আমাদের গাড়িতে উঠছে। বাইরে ‘এই জঙ্গি ধর, জঙ্গি ধর’, ‘এই ধর ধর’ এমন চিৎকার, হুড়াহুড়ির শব্দ শুনতে পাই।’

    ‘আমি শুনতে পাই আমাকে নিয়ে আসা লোকেরা গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ধর ধর, গাড়িতে উঠা এসব বলে চিৎকার করছে। গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়ে এরপর বাইরে থেকে একজন আমাদের কাছে আমার নাম, পরিচয় জিজ্ঞেস করে। তাদের কাছে এসব তথ্য আগে থেকেই থাকার পরও তারা ওই সময় গাড়ির ভেতর আটকে রেখে বাইরে থেকে নাম, বাবার নাম, ঠিকানা এসব জানতে চায়। পরে বুঝলাম এটা একটা নাটক, যেখানে আমাদের বলি দেওয়া হচ্ছে। এরপর আবার র‍্যাব-১১ এর সেলে সেই রাতেই নিয়ে যায়।’

    ‘পরের দিন সকালে সব গণমাধ্যম ডেকে নিউজ করল আমরা নাকি গোপন জঙ্গি বৈঠক করেছি হাসিনাকে উৎখাতের জন্য। সব গণমাধ্যমকে দিয়ে নিউজ করিয়েছে। আমাদের কাছে থেকে নাকি বিপুলসংখ্যক জিহাদি বই পাওয়া গেছে। যথারীতি সারা দেশের মানুষের কাছে আমাদের জঙ্গি হিসেবে প্রচার করল। এরপর ফতুল্লা থানায় নিয়ে গিয়ে কোর্টে তুলল সন্ত্রাসবিরোধী ধারায় মিথ্যা মামলা দিয়ে।’

    প্রকৌশলী মাসরুর বলেন, ‘র‌্যাব-১১-এর দুর্নীতিগ্রস্ত কয়েকজন কর্মকর্তা প্রমোশনের জন্য, টাকার জন্য, এসব করে বেড়াত। বিদেশিদের ওরা খুশি করার জন্য মিথ্যা জঙ্গি নাটক সাজাতো। আর সরকার থেকে পদক পেত। এই ব্যক্তিরাই শত শত নিরপরাধ মানুষকে গুম করে নির্যাতন করেছে। পরে জঙ্গি মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে। এদের অত্যাচার থেকে নারীরা পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। ওরা নারীদেরও গুম করত, টর্চার করত এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে এ দিত।’

    জড়িত র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। মামলা করার ক্ষেত্রে বিলম্বজনিত কারণে ফৌজদারি অপরাধ কখনো তামাদি হয় না। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেই এলাকার থানায় অথবা ওই এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগীরা মামলা করতে পারবে।


    তথ্যসূত্র:
    ১.মোদিকে নিয়ে স্ট্যাটাস, গুম তিন প্রকৌশলী
    -https://tinyurl.com/dv98446u
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      ব্যর্থতা মেনে নিয়ে পদত্যাগ করল সন্ত্রাসী ইসরায়েলের সেনাপ্রধান






      ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগ করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হার্জি হালেভি। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মুজাহিদদের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ে সে পদত্যাগ করেছে।

      ২১ জানুয়ারি, মঙ্গলবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

      প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য নিজের দায় স্বীকার করে সে পদত্যাগ করেছে। সোমবার সে এজন্য নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করেছে।

      ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তার পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেছে। এতে সে উল্লেখ করেছে, ৭ অক্টোবর (সামরিক বাহিনীর) ব্যর্থতার জন্য আমার দায় স্বীকার করে আমি পদত্যাগ করছি। বর্তমান পরিস্থিতিকে সে সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের সময় উল্লেখ করে পদত্যাগের কথা জানায়। যদিও যুদ্ধে ইসরায়েলের কোন লক্ষ্য অর্জিত হয়নি বলে সে স্বীকার করেছে।

      প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৬ মার্চ থেকে তার এ পদত্যাগ কার্যকর হবে।

      ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সাউদার্ন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ইয়ারোন ফিনকেলম্যানও পদত্যাগ করেছে। গাজা এই সাউদার্ন কমান্ডের অধীনেই পড়েছে।

      উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ব্যাপক সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দখলদার ইসরায়েল।

      ১৫ মাস ধরে সন্ত্রাসী ইসরায়েলের টানা হামলা অপরাধী-নিরপরাধ বিচার করেনি। ৪৭ হাজারেরও বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। এই নির্মমতা বন্ধে পৃথিবীব্যাপী জনমত সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।


      তথ্যসূত্র:
      1. Israel’s military chief resigns over 7 October 2023 failures
      https://tinyurl.com/yvb6r287
      2.Israeli army chief to resign over huge security breach in Hamas’ Oct 7 attack
      https://tinyurl.com/fnpymv2s
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment

      Working...
      X