Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ০৮ শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরী || ০৭ এপ্রিল, ২০২৫ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ০৮ শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরী || ০৭ এপ্রিল, ২০২৫ ঈসায়ী

    গাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ০২ সাংবাদিক



    ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের নৃশংসতা চলছেই। রবিবার (০৬ মার্চ) ভোরে গাজার খান ইউনিসে নাসির হাসপাতালে সাংবাদিকদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে হামলা চালায় দখলদার বাহিনী। এ হামলায় দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং আরও সাতজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

    সোমবার (৭ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

    ফিলিস্তিনি ইনফরমেশন সেন্টার এবং কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, নিহতরা হলেন-হেলমি আল-ফাকাওয়ি ও ইউসুফ আল-খাজান্দার। আর আহতরা হলেন-আহমদ মানসুর, হাসান এসলাইহ, আহমদ আল-আঘা, মোহাম্মদ ফায়েক, আবদাল্লাহ আল-আত্তার, ইহাব আল-বারদিনি এবং মাহমুদ আওয়াদ।

    আল জাজিরা জানায়, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছাকাছি স্থাপিত সাংবাদিকদের একটি তাঁবুকে লক্ষ্য করে দখলদার ইসরায়েল এই প্রাণঘাতী হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সাংবাদিক হিলমি আল-ফাকাওয়ি, যিনি কুদস নিউজ নেটওয়ার্কের হয়ে কাজ করতেন।

    হামলায় গুরুতর দগ্ধ হন আরেক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আহমেদ মনসুর। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। হামলার পর পুড়ে যাওয়া তাঁবুর ভেতরে আহমেদ মনসুরের একটি ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।

    প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।


    তথ্যসূত্র:
    1. Israeli attack on tent housing journalists in Gaza kills 2, wounds 7
    https://tinyurl.com/swx94rnr
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    আয়নাঘরে গুমের তদন্ত দলকে হত্যার উদ্দেশ্যে টাইম বোমা রাখা হয়েছিল




    গুমের মামলা তদন্ত করতে যাওয়া দলকে হত্যার উদ্দেশ্য টাইম বোমা রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ট্রাইব্যুনালে চার মামলার শুনানি শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

    তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমিসহ গুমের মামলা তদন্ত দলকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। তবে কোনো ষড়যন্ত্র বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ দিতে পারবেন না।’

    বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল তৈরির নিয়ে রাজনৈতিক দলের দাবির বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা উচিৎ হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দাবি জানাতে পারে। রাজনীতির কাজ হচ্ছে দেশকে নিয়ে ভাবা। ফলে তারা এই বিষয়ে ভাবতে পারে। অপরাধের যে বিস্তৃতি, তা বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। তবে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া কতটা বাস্তবসম্মত, সেটা সরকার অবশ্যই চিন্তা করবে।’


    তথ্যসূত্র:
    ১. তদন্তদলকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল : চিফ প্রসিকিউটর
    https://tinyurl.com/yzvtp52c
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      সীমান্তে উচ্চ গতির ইন্টারনেটের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সংযোগ দিতে বিএসএফ এর বাধা; ইন্টারনেট বঞ্চিত ছিটমহল-বাসী





      লালমনিরহাটের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় উচ্চ গতির ইন্টারনেটের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ স্থাপন করতে দিচ্ছে না ভারত। রাষ্ট্রীয়ভাবে একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও সেখানে প্রতিবেশী দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা বাধা দিয়েছে। নানা অজুহাতে তারা এই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এতে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার নাগরিকরা।

      রাষ্ট্রীয়ভাবে ছিটমহল বিনিময়ের পর ভারতের অংশে দেশটি নানা অবকাঠামো নির্মাণ করেছে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে। এসব কর্মসূচিতে কোনো রকম বাধা দেয়নি বা ন্যূনতম আপত্তিও জানায়নি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু যতবারই বাংলাদেশ অংশে অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ততবারই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে বিএসএফ।

      সীমান্তের এই খুনি বাহিনীর পক্ষ থেকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) জানানো হয় যে, ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন করলে আশপাশের এলাকায় ভৌগোলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটবে। তবে কীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটবে, কী অসুবিধা হতে পারে-সে বিষয়ে কখনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

      উচ্চগতির ইন্টারনেটের জন্য প্রযোজ্য অপটিক্যাল ফাইবার কেবল ওই এলাকায় সংযোগ না থাকার কারণে সেখানকার লোকজন মোবাইল ফোন গ্রাহকরা বেশি দামে কেনা নিম্নগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। আবার সেখানে মাঝে-মধ্যে নেটওয়ার্ক থাকে না। উচ্চগতির ইন্টারনেট না থাকায় ভিডিও কলের সুবিধাও নিতে পারেন না তারা। ব্যবহার করতে পারেন না কলিং সেবার বিভিন্ন অ্যাপ। এতে দারিদ্র্যপীড়িত ওই অঞ্চলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে তাদের ব্যয় বাড়ছে।

      গত ১৭ ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনে বিজিবির পক্ষ থেকে সেখানে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সংযোগের বিষয়টি তোলা হয়। কিন্তু বিএসএফের পক্ষ থেকে বিষয়টি নাকচ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্ক লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পর্যন্ত রয়েছে। পাটগ্রামে ইন্টারনেটের শক্তিশালী সংযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সংযোগ দেওয়া যায়নি।

      ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় কেবল সংযোগ স্থাপন করার জন্য আমরা সরকারের কাছে সুপারিশ করেছি। ট্রান্সমিশন বসালেই আমরা দ্রুত নেটওয়ার্ক দিতে পারব।’

      ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল সংযোগ হচ্ছে, এটি উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ, যা ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহার করে ডেটা স্থানান্তর করে। এটি দ্রুত এবং স্থিতিশীল সংযোগ দেয়, যা বৃহৎ ডেটা স্থানান্তর এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জন্য কার্যকর। দূরবর্তী বা গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায়। এটি ওয়্যারলেস সংযোগ থাকায় রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগও দেয়। মোবাইলে ব্রডব্যান্ড ব্যবহার ছাড়াও ওয়াইফাই, হটস্পট বা ওয়্যারলেস রাউটারের মাধ্যমে নির্বিঘ্ন সেবা পাওয়া যায়। এটি দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতায় না থাকার কারণে সেখানে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

      তিনবিঘা করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতার বাংলাদেশের নাগরিকরা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট কিনে থাকেন। এতে তাদের বেশি ব্যয় হচ্ছে। সেখানে মোবাইলের ইন্টারনেটের গতির মান একেবারেই কম। বাফারিং বেশি হয়। যে কোনো ফাইল ডাউনলোড করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া কেবল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে সেখানে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারেন না বাসিন্দারা।


      তথ্যসূত্র:
      ১. বিএসএফের বাধায় ইন্টারনেট পাচ্ছে না ছিটমহলের মানুষ
      https://tinyurl.com/bdd4c4uw
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        মাজলুম ফিলিস্তিনিদের ডাকে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে বিক্ষোভ; পালিত হচ্ছে ‘নো ওয়ার্ক, নো ক্লাস’ কর্মসূচি




        যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এসকল হামলায় বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে করছে। নির্বিচারে হত্যা করছে লাখ লাখ সাধারণ ফিলিস্তিনিকে। আর এই হত্যাকান্ড পরিচালিত হচ্ছে আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে। এরই প্রতিবাদে পুরো ফিলিস্তিন জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন হামাস সহ অন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো।

        গত রবিবার (০৬ মার্চ) এক বিবৃতির মাধ্যমে সোমবার (০৭ মার্চ) বৈশ্বিক এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ শক্তিগুলো। এই বিবৃতিতে সারা বিশ্বব্যাপী দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরোধে সোচ্চার সংগঠন এবং দেশগুলোকে অংশগ্রহণের আশা ব্যক্ত করেছেন তারা। এই বিবৃতিতে গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যার ঘটনা তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে।

        ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের আহ্বান করা ধর্মঘটের ডাকে সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশের তৌহিদি জনতাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ। হেফাজতে ইসলামসহ একাধিক সংগঠন ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট পালনের ডাক দিয়েছেন। একইসাথে মাজলুম ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ‘নো ওয়ার্ক, নো ক্লাস’ কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছে দেশের ছাত্র-সমাজ।

        হেফাজতের বৈশ্বিক ধর্মঘটের আহ্বান
        ইসরায়েল কর্তৃক গাজাবাসীর ওপর গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার (০৭ মার্চ) বাদ জোহর সব আলেম এবং মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একযোগে বৈশ্বিক হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানান সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
        ইসরায়েলের গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের দায় রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরায়েলকে অবিরাম সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

        ঢাবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কট

        গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

        রোববার (০৬ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

        ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’

        দখলদার ইসরায়েলের ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মাজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা।
        সোমবার (৭ এপ্রিল) সারাদেশে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি রাজধানীতে বিক্ষোভ ও সংহতি সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

        গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বাগেরহাটে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

        গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাগেরহাটের ছাত্র-জনতা। তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের অঙ্গীকার করেছে।

        সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সর্বস্তরের ছাত্র ও জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
        বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই’; ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জাতিসংঘ জবাব চাই’; ‘বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’; ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই’; ‘নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন চাই’সহ নানা ক্ষোভ ও প্রতিবাদের স্লোগান দেন।

        গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে পিরোজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানববন্ধন

        ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা এবং নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

        সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানান।

        গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ঢামেক চিকিৎসকদের বিক্ষোভ

        গাজায় বর্বোরচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ও গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে মিলিত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
        সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জন এং মুসলিম বিশ্বকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। এ সময় তারা ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি, নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার ইত্যাদি স্লোগান দেন।

        ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

        ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কর্তৃক ফিলিস্তিনে চলমান বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি)। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

        ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইবিতে বিক্ষোভ মিছিল

        ‘From the river to the sea, Palestine Will be Free’ স্লোগান সামনে রেখে #GlobalStrikeForGaza কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

        ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

        ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল নয়টার পর থেকে বাড্ডা ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

        ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে তরুণদের বিক্ষোভ

        ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করেন একদল তরুণ।

        শাবিপ্রবিতে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি
        গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
        সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


        তথ্যসূত্র:
        1. Palestine to observe general strike on Monday in protest of Israel’s aggression on Gaza
        https://tinyurl.com/3j3wvrwz
        ২. ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আগামীকাল একযোগে বৈশ্বিক হরতাল পালনের আহ্বান হেফাজতে ইসলামের
        https://tinyurl.com/mw9kf5ux
        ৩. ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’
        https://tinyurl.com/msmnurje
        ৪. ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে তরুণদের বিক্ষোভ
        https://tinyurl.com/pss68545
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          গাজায় দখলদার ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ, নিহত আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি




          ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর ইসরায়েলি হামলায় ৭ এপ্রিল, সোমবার আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই উপত্যকাজুড়ে দখলদার বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই একদিনে আরও অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

          এতে করে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছে গেছে। ৭ এপ্রিল, সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

          সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দেইর আল-বালাহের পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদের তাদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর দখলদার ইসরায়েল গাজার মধ্যাঞ্চলে নতুন করে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে। সর্বশেষ এই হামলার ফলে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যার মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।

          গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের একদিন পর নতুন করে এই হামলা চালানো হলো। এই উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন।

          পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে আল-নাখিল স্ট্রিটে ইসরায়েলি কামানের গোলাবর্ষণে আট শিশুসহ দশজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।

          ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে শুজাইয়া পাড়া লক্ষ্য করে বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

          একই শহরের জেইতুন পাড়ায় আইন জালুত স্কুলের কাছে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ার সালাম পাড়ায়ও কামানের গোলাবর্ষণে আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

          কেন্দ্রীয় গাজার জাওয়াইদা এলাকায় একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ড্রোন হামলায় আরও একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে চালানো হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন।


          তথ্যসূত্র:
          1. Death, devastation as Israel hits residential homes in Gaza’s Khan Younis
          https://tinyurl.com/46x53k37
          2. 36 more Palestinians killed in Israeli airstrikes across Gaza
          https://tinyurl.com/9d6n5jtm
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            গাজা থেকে মুসলিম বিশ্বকে এক সাংবাদিকের ঈদের চিঠি




            চিঠিটি আবু বকর আবিদের পক্ষ থেকে, যিনি গাজার একজন সাংবাদিক। আল ফিরদাউসের পাঠকের জন্য আবু বকর আবিদের চিঠিটির অনুবাদ উপস্থাপন করা হল

            প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা,
            ইসরায়েলিদের সাথে রুটি ভাগ করে খেয়োনা। গাজার জন্য যেন তোমাদের বিচারের সম্মুখীন না হতে হয় (আল্লাহর নিকট)। মুসলিম বিশ্বের বধির হয়ে যাওয়া কান এবং গাজার প্রতি তাদের উদাসীনতার কারণে যেন তোমাদের বিচারের সম্মুখীন না হতে হয় (আল্লাহর নিকট)। মুসলিমদের গাজা বেশি প্রয়োজন, গাজার মুসলিমদের প্রয়োজন নেই।

            আমি আবু বকর আবিদ, চিঠিটি লেখার সময় আমি অপুষ্টিতে ভুগছি, কারণ গত ২০ দিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আমার মুসলিম ভাই ও বোনেরা গাজায় এক বোতল পানি পর্যন্ত পাঠাতে পারেননি—৫৩৮ দিন ধরে। আমি ভুলবশত বিশ্বাস করেছিলাম যে মুসলিম বিশ্ব আমাদের এই সংকটে সাহায্য করবে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তাদের কাছ থেকে আমরা কিছুই পাইনি, পেয়েছি শুধু গভীর হতাশা।

            প্রায় কোন বিক্ষোভই হয়নি, অধিকাংশ মানুষ চুপ করে ছিল— হয়তো চাকরি বা ক্যারিয়ার হারানোর ভয়ে। হয়তো তাদের ক্যারিয়ার একজন গাজার শিশুর জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যে জন্মের মাত্র তিন দিন পরে ইসরায়েলের হাতে নিহত হয়েছে— অন্তত ১৫,৫০০ অন্যান্য শিশুর মতো, যাদের গত ১৭ মাসে ইসরায়েল হত্যা করেছে।

            প্রিয় মুসলিম উম্মাহ, আমরা কখনোই তোমাদের পানির বোতল বা খাবারের প্যাকেট দিয়ে আমাদের কষ্ট লাঘব করতে বলেনি। তোমরা ইসলামকে ভুল বুঝেছ যখন এই পথ বেছে নিয়েছ। দুঃখের বিষয়, তোমরা শুধু ইসরায়েলের অনুমতি নিয়েই কাজ করেছ (ইসরায়েলকে সন্তুষ্ট করে নিজেদের কাজ করছো), কারণ গাজায় ২০ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধ তুলতেও তোমরা ব্যর্থ হয়েছ।

            তোমাদের উচিত ছিল আমাদের সাথে অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, নিষ্ক্রিয়ভাবে বসে থাকা নয়। ইসলাম ও কুরআন আমাদের এই বিষয়টিই শেখায়। শুধু শুভেচ্ছা জানিয়ে যেও না যখন আমরা গণহারে হত্যার শিকার হচ্ছি।

            আলহামদুলিল্লাহ, আমি মুসলিম এবং কুরআনের অর্ধেক হিফজ করেছি। শারিয়াহ ও ইসলামিক স্টাডিজের ছাত্র হিসেবে গত আট বছর ধরে আমি শিখেছি যে, মুসলিমদের অবশ্যই চরম সংকটে একত্রে দাঁড়াতে হবে, যেকোনো মুসলিমের ব্যথা ভাগ করে নিতে হবে— সে যেই হোক, যেখানেই থাকুক।

            সূরা নিসার ৭৫ নং আয়াত জিজ্ঞাসা করে:

            “তোমরা কেন আল্লাহর পথে লড়াই করো না সেই দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য যারা সাহায্যের জন্য কাতর?

            তাহলে তোমরা কেন এত মাস পরও সাড়া দাওনি? এটি কুরআনের অনেক আয়াতের মধ্যে একটি, যা তোমাদেরকে ভাইবোনদের কষ্ট লাঘব করতে লড়াই করতে বলে। কিন্তু তোমরা ক্ষুদ্রতম পদক্ষেপও নাও নি। যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি ব্যথিত করে তা হলো তোমরা তোমাদের সরকারগুলোকে আমাদের হত্যা ও নির্যাতনকে সমর্থন করতে দিয়েছ। তোমাদের সরকারগুলো ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, সর্বদা তাদের সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আগ্রহী— যা আমাদের হত্যা ও ধ্বংসকে ত্বরান্বিত করছে তোমাদের চোখের সামনেই।

            তোমরা কখনোই সত্যিকার অর্থে তোমাদের সরকারগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়াওনি, কিংবা ইসরায়েলের সাথে বাণিজ্য ও সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ প্রয়ােগ করো নি। আমরা এখন যা দেখছি তা হলো একটি সুপরিকল্পিত স্বাভাবিকীকরণ প্রচেষ্টা, যা মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও পরিচয় মুছে ফেলার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

            মুসলিমদের গাজা প্রয়োজন, কিন্তু গাজার মুসলিমদের প্রয়োজন নেই।

            পবিত্র রমজান মাসে, আমরা দেখেছি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশের তথাকথিত মুসলিম নেতারা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সাথে এক টেবিলে বসে রুটি ভাগ করে খাচ্ছে। অন্যদিকে, আমার পরিবার এবং আমি রোজা ভাঙার জন্য কিছু খুঁজে পাই না। আমি হাজার হাজার মানুষকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের দৈনিক খাবারের ছবি পোস্ট করতে দেখেছি।

            রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কি তোমাদের অন্যদের সাথে খাবার ভাগ করে খেতে শেখান নি? অথবা অন্তত চুপচাপ খেতে, যাতে যাদের খাবার নেই তাদের মনে কষ্ট না হয়?

            তোমাদের তথাকথিত মুসলিম নেতারা সূরা তাওবার শেষ আয়াতটি পড়েন, যেখানে বলা হয়েছে:

            “যারা আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের শত্রুদের সাথে বন্ধুত্ব করবে না, এমনকি যদি তারা তাদের নিকটতম আত্মীয়ও হয়।”

            তোমরা দিনের পর দিন দেখেছ শত শত মানুষকে নিজেদের রক্তে ডুবে মরতে, হাজার হাজার পরিবারকে ভাঙাচোরা তাবুতে খাদ্য ও পানির জন্য আহাজারি করতে। আর দেখেছো শত শত খালিপায়ের, আতঙ্কিত শিশুকে আবর্জনা ভরা রাস্তায় ভয়ে, শীতে ও ক্ষুধায় কাঁপতে।

            তোমরা তাদের জন্য সত্যিকার অর্থে কী করেছ?

            আমরা চাইনি যে বিশ্বের সামনে আমাদের মর্যাদা হ্রাস করে আমাদের মৌলিক মানবাধিকার চাইতে হবে, কিন্তু আমরা বাধ্য হয়েছি— কারণ তোমরা ও বিশ্ব আমাদের অবর্ণনীয় কষ্টকে মেনে নিয়েছ।

            ৬০,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১১০,০০০ এর বেশি আহত হয়েছে। তোমরা কি এই সংখ্যা দ্বিগুণ বা তিনগুণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছ?

            এই জুলুম বন্ধ করার জন্য আর কতকিছু দেখানোর প্রয়োজন তোমাদেরকে?

            সূরা নিসার ৭৬ নং আয়াতে, আল্লাহ আমাদেরকে অন্যায়ের শিকার মানুষের পক্ষে লড়াই করতে বলেছেন। কিন্তু তোমরা নামায, যাকাত ও রোজায় বেশি জোর দিচ্ছো।

            তাহলে যখন তোমরা মসজিদে যাও এবং কাতারে দাঁড়াও, তখন গাজার কথা মনে হলে কেমন অনুভব হয়? (যদি মনে হয়!) আমি জানি অনেকেই মনে রাখো না।

            আমাদের একসাথে হাতে হাত রেখে অধিকৃত ফিলিস্তিন ও তার পবিত্র ধর্মীয় স্থানগুলো মুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু তোমরা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছ, আমাদের বেশিরভাগ জমি ছেড়ে দিয়েছ এবং গাজায় গণহত্যাকে উৎসাহিত করেছ।

            মাঠে কিছুই অর্জন হয়নি (তোমাদের কোনো প্রচেষ্টাই কাজে আসেনি)। বরং আমরা পেয়েছি ফাঁকা বুলি ও অপমানজনক অনুরোধ।

            আল্লাহর রহমত তাদের (ইসরায়েলিদের) রহমতের চেয়ে বড়, কিন্তু তোমরা তাদের (ইসরায়েলের) অধীনস্ত হওয়াকে বেছে নিয়েছ। তিনি (আল্লাহ) প্রতিদিন তোমাদের উপর তাঁর অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষণ করেন, কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছ।

            আমি সরল-মনে ভেবেছিলাম যে আমি আমার পরিবারের সাথে শান্তি ও আরামে রমজান কাটাব। কিন্তু ইসরায়েল যা করছে— তারা আমাদের বিরুদ্ধে একটি দুর্ভিক্ষের-কৌশল বাস্তবায়ন করেছে এবং সীমান্ত বন্ধ করেছে দুই দিন পরে।

            ইসরায়েলের জন্য এটি খুব সহজ ছিল, কারণ তোমরা কিছুই করোনি। এখন আমাদের জীবন আবারও ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি কোন দুর্ঘটনা নয়— এটি একটি পরিকল্পিত গণহত্যা।

            যখন আজ সন্ধ্যায় তোমরা রোজা ভাঙবে, তখন মনে রেখো— গাজা একদিন এই বিভীষিকা থেকে মুক্তি পাবে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা, জীবনযাপনের অধিকার এবং যারা আমাদের উপর অত্যাচার করেছে তাদের বিচার ফিরে পাব।

            আর যখন সে দিন আসবে, তখন তোমাদের গাজার প্রয়োজন হবে সবথেকে বেশি— যাতে পরকালে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখোমুখি না হতে হয়, অথবা অন্তত তোমাদের মানবতা বাঁচাতে পারো।

            তোমরা এখন উভয়টিই (দুনিয়া ও আখেরাত) হারাচ্ছো, এবং আগামীকাল কেউ তোমাদের জন্য হস্তক্ষেপ করবে না (সাহায্যের হাত বাড়াবে না)— কারণ আজ যখন তোমাদের প্রয়োজন ছিল, তখন তোমরা হস্তক্ষেপ করোনি (সাহায্যের হাত বাড়াও নি)।

            এটি তোমাদের প্রতিদিন স্মরণ করা উচিত (সব সময় মনে রাখা উচিত)।

            ঈদের দিনে, আমি অবাক হই— তোমরা কীভাবে উদযাপন করবে? যখন আমাদের জীবনে প্রায় দুই বছর ধরে উদযাপনের কোন অর্থই নেই।

            তোমরা কীভাবে তোমাদের সেরা পোশাক পরবে, যখন আমরা কাফনে মোড়া?

            তোমরা কীভাবে মিষ্টি খাবে, যখন আমার পাড়ার শিশুরা বালিতে খাবারের ছবি আঁকে?

            তোমরা কীভাবে মসজিদে যাবে, যখন গাজায় প্রায় ১,০০০ মসজিদ ধ্বংস ও অপবিত্র করা হয়েছে?

            তোমরা কীভাবে তোমাদের প্রিয়জনদের সাথে দেখা করবে এবং ঘরে আনন্দ করবে, যখন আমরা আমাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের কবরের পাশে শোকে দাঁড়িয়ে?

            আমার মনে অনেক প্রশ্ন, কিন্তু ঈদ এমন একটি সময় যখন সব মুসলিম একসাথে উদযাপন করে। যদি এই বাস্তবতা (গাজার করুণ অবস্থা) তোমার মনে না আসে, তবে এটি সত্যিকারের ঈদ নয়— এটি শুধু ক্ষণস্থায়ী, স্বার্থপর আনন্দ যা ইসলামিক ও মানবিক উভয় মূল্যবোধ থেকে বঞ্চিত।

            বিষয়টি এমন যে— তোমার বাবা মারা যাওয়ার দিনে তোমার প্রতিবেশী একটি পার্টি করছে।

            আমি জানি না কিভাবে আমার মধ্যে এই অবিরাম যন্ত্রণাকে থামাব। আমার হৃদয়ে আর ব্যথার জন্য জায়গা নেই, কিন্তু তোমাদের কর্মকাণ্ড আমার কষ্টকে আরও গভীর করে তুলছে।

            তোমাদের ভাই,
            আবু বকর আবিদ
            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

            Comment

            Working...
            X