উম্মাহ নিউজ || ১৯ যিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী || ১৮ মে ২০২৫ ঈসায়ী​​

[Al-Firdaws]

যাচাই-বাছাই না করেই ভুয়া খবরে সয়লাব ভারতের মিডিয়া

সম্প্রতি ভারত পাকিস্তান সংঘর্ষের সময় ভিত্তিহীন ও মিথ্যা খবর প্রচার করে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়েছে ভারতের মিডিয়াগুলো। এ সময়ে ভারতীয় প্রথম সারির ও ‘বিশ্বস্ত’ কিছু গণমাধ্যমও তথ্য যাচাই না করার পাশাপাশি বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবার ব্রিটেন ভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্যা ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনেও ভারতের টিভি মিডিয়াগুলোর তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রকাশিত সংবাদের বিরাট একটি অংশ জুড়ে ছিল নিজেদের সামরিক বাহিনীর বন্দনা। ভারতের হামলায় প্রতিবেশী পাকিস্তানের একটি পারমাণবিক ঘাঁটিতে আঘাত করার পাশাপাশি দুইটি পাক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে— এমন দাবিও করা হয়।

পাশাপাশি পাকিস্তানের অন্যতম বন্দরনগরী ও দেশটির বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র করাচি বন্দরের একটি অংশ ধ্বংস করা হয়েছে বলেও খবর ছড়িয়ে পড়ে। সার্বিকভাবে এই তথ্যগুলো পরিবেশনের সময় ভারতীয় মিডিয়া বেশ সুনির্দিষ্ট আঙ্গিকে প্রচার করে, যেন এটি আসলেই ঘটেছে। তবে এগুলোর কোনোটিই সত্য ছিল না।

ভারত ও পাকিস্তানের তীব্র সামরিক সংঘর্ষের সময় এবং তার পরের দিনগুলিতে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সীমান্তের উভয় পাশেই মিথ্যা, অর্ধসত্য, মিম, বিভ্রান্তিকর ভিডিও ফুটেজ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ব্যবহৃত বক্তৃতার কারণে একপর্যায়ে মিথ্যা থেকে সত্য আলাদা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এদিকে, সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে পাকিস্তানে সৃষ্ট বন্যার কিছু অংশ ভারতের মূলধারার গণমাধ্যম প্রচার করে। তবে সংবাদমাধ্যমগুলোর পরিবেশন প্রক্রিয়া ছিল অন্যরকম। সেসময় উপস্থাপকের ভূমিকা অনেকটা এমন হয়ে ওঠে, যেন তারা দুটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধের খেলায় চিয়ারলিডার।

একপর্যায়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পাকিস্তানের একটি পারমাণবিক ঘাঁটিতে কথিত হামলার খবর প্রকাশ করে। এর পাশাপাশি বলা হয়, সৃষ্ট এ হামলার ফলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে, এমনকি কোথায় কোথায় হামলা চালানো হয়েছে সেই অঞ্চলগুলো বোঝার সুবিধার্থে তারা মানচিত্রে কিছু এলাকাকে নির্দেশ করে যা আসলে পুরোটাই ছিল মিথ্যা। ভারতীয় নৌবাহিনীর করাচি আক্রমণের খবরটিও একই রকম ছিল। পরে, ফ্যাক্ট চেকাররা জানতে পারে ওই দৃশ্যগুলো ফিলিস্তিনের গাজার।

---

তথ্যসূত্র:
1. How the Indian Media Amplified Falsehoods in the Drumbeat of War
– https://tinyurl.com/zhrsz6ey

[Al-Firdaws]

গাজায় একদিনে বর্বর ইসরায়েলি হামলায় শহীদ ১৪৬

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজায় নতুন করে নৃশংস ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৭ মে, শনিবার কমপক্ষে ১৪৬ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৪৫৯ জন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

১৫ মে, বৃহস্পতিবার থেকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন দফায় হামলা শুরু হয়েছে। এর ফলে গত মার্চে অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়ার পর অন্যতম ভয়াবহ সহিংসতা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়া হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-সুলতান বলেন, রাত ১২টা থেকে এখন পর্যন্ত ৫৮ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকে আছেন। হাসপাতালের পরিস্থিতি ভয়াবহ।

গাজার স্বাস্থ্যখাতের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে হাসপাতালগুলো একের পর এক হামলার শিকার হয়েছে। মার্চ থেকে চলা অবরোধের কারণে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া ও জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক হামলার পর সেখানকার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দেয়। তবে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ট্যাংক ইতোমধ্যে দক্ষিণের খান ইউনুস শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এদিকে, গাজায় ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ৭৬ দিন ধরে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ থাকায় ফিলিস্তিনিরা মারাত্মক মানবিক সংকটে পড়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল ।

সে বলেছে, ‘এই সর্বশেষ বোমাবর্ষণ, বাসিন্দাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর, বিভিন্ন এলাকাগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করা এবং মানবিক সহায়তা না ঢুকতে দেওয়া—সবকিছু মিলে মনে হচ্ছে গাজায় একটি স্থায়ী জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে, যা আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী এবং জাতিগত নিধনের সমতুল্য।’

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কর্মরত ব্রিটিশ সার্জন ভিক্টোরিয়া রোজ বিবিসি রেডিও ফোর-এর অনুষ্ঠানে বলেছে যে, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তার দল ক্লান্ত এবং সবারই ওজন যথেষ্ট পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। শিশুরা খুবই রোগাক্রান্ত, আমাদের এখানে অনেক ছোট বাচ্চা রয়েছে যাদের দাঁত পড়ে গেছে। তাদের অনেকের শরীরে বড় ধরনের পোড়া ক্ষত রয়েছে এবং এমন অপুষ্টির কারণে অনেক বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের অনেকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে।

---

তথ্যসূত্র:
1. Gaza ceasefire talks resume as Israeli assault kills hundreds in 72 hours
– https://tinyurl.com/mvb2m3vp

[Al-Firdaws]

বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে সামরিক মহড়া চালালো ভারতীয় সেনাবাহিনী

সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ‘তিস্তা প্রহার’ নামে তিনদিনব্যাপী (৮ থেকে ১০ মে) একটি পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই মহড়াটি বাংলাদেশের সীমান্তের অত্যন্ত কাছাকাছি, ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডোর এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

১৭ মে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এই মহড়ায় ভারী অস্ত্র, হেলিকপ্টার, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল এবং আধুনিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্য বলছেন, এটা কোনো সাধারণ রুটিন মহড়া নয়, কারণ এই এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে এত বড় ধরনের সামরিক মহড়া হয়নি।

এদিকে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায়ও একই সময় পরিচালিত হয় আরও একটি নিরাপত্তা মহড়া, যার ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এটি ছিল একটি পূর্বনির্ধারিত ‘মক ড্রিল’। ভারতের সিআইএসএফ-এর সিনিয়র কমান্ড্যান্ট মুকেশ কুমারের মতে, ফারাক্কা ব্যারাজ কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই নিরাপত্তা জোরদার করতে সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তবে সীমান্তের এত কাছাকাছি অঞ্চলজুড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই ধরনের যুদ্ধ প্রস্তুতির তৎপরতায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—এই সামরিক মহড়াগুলোর লক্ষ্য কী? শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সংকেত, নাকি একটি কৌশলগত চাপ তৈরির ইঙ্গিত?

---

তথ্যসূত্র:
1. Security intensified along Bangladesh border after Operation Sindoor
– https://tinyurl.com/487rjfx3

[Al-Firdaws]

বাংলাদেশের কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলো ভারত

বাংলাদেশের কয়েকটি পণ্য ভারতের বাজারে আর ঢুকতে পারবে না। ১৭ মে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বৈদেশিক বাণিজ্য দফতর (ডিজিএফটি) জানায়, বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি রেডিমেড পোশাক, খাবার ভারতে আমদানি করা যাবে না। তবে ভারত হয়ে নেপাল বা ভুটানের মতো দেশে ওই সব পণ্য যাওয়ার ব্যাপারে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

ভারতের গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, তুলা, সুতির পোশাক, প্লাস্টিক এবং পিভিসি দিয়ে তৈরি জিনিস, রঞ্জকের মতো পণ্য বাংলাদেশ থেকে আসাম, মিজোরাম, মেঘালয় কিংবা ত্রিপুরার কোনো শুল্ককেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা এবং ফুলবাড়ি শুল্ককেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে আসা মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেলের মতো পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

এর আগে বাংলাদেশের ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। এই ঘোষণার দিন কয়েক পরেই বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা হচ্ছে। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা শুধু কার্যকর করা হয় স্থলবন্দরের ক্ষেত্রেই।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান ড. ইউনূস গত মার্চে চীন সফরে গিয়ে বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত স্থলবেষ্টিত এবং ঢাকা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।

এর পরেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়।

---

তথ্যসূত্র:
1. India Imposes Port Curbs On Import Of Certain Bangladeshi Goods
– https://tinyurl.com/48auyp5y

[Al-Firdaws]

যুক্তরাষ্ট্রের দুই রাজ্যে টর্নেডোর আঘাত, ২১ জনের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ও কেন্টাকি রাজ্যে তীব্র ঝড়ের কবলে পড়ে এপর্যন্ত ২১ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে। ১৭ মে, শনিবার রাজ্যের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছে, শুক্রবার রাতের ঝড়ে এপর্যন্ত অন্তত ১৪ জন মারা গেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসৌরিতে অন্তত সাতজন মারা গেছে। মিসৌরির কর্মকর্তারা জানায়, শুক্রবার টর্নেডো আঘাত হানার পর ৫,০০০ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ছাদ উড়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেন্ট লুইসে প্রায় ১,০০,০০০ বাড়ি-ঘরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বাড়ি বাড়ি অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

বেশিয়ার বলেছে, ‘আমরা আজ এই কঠিন সংবাদ দিয়ে শুরু করছি, রাতের ঝড়ে আমাদের অন্তত ১৪ জন মারা গেছে। তবে আরও তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

মিসৌরির সেন্ট লুইসের মেয়র কারা স্পেন্সার শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের বলেছে, আমাদের শহর আজ রাতে শোকে বিহ্বল। প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি সত্যিই ভয়াবহ।

---

তথ্যসূত্র:
1. US consumer sentiment slumps, households brace for inflation surge
– https://tinyurl.com/3zzbk6rb

2. At least 21 dead after tornado-spawning storms move across central US
– https://tinyurl.com/p2vtxx2h