উম্মাহ নিউজ || ২২ যিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী || ২১ মে ২০২৫ ঈসায়ী​​

[Al-Firdaws]

গাজায় লাগামহীন ইসরায়েলি বর্বরতা, শহীদ ৫৩ হাজার ৫৭৩

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা চলছেই। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চালানো সন্ত্রাসী ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৫৭৩ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০ মে, মঙ্গলবার গাজায় ৮৭টি মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন ২৯০ জন। ফলে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৬৮৮ জনে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বহু মরদেহ এখনও ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তার পাশে পড়ে আছে, কিন্তু টানা হামলা ও রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে উদ্ধারকারী দলগুলো সেখানে পৌঁছাতে পারছে না।

গত ১৮ মার্চ নতুন করে দখলদার ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে। এরপর থেকে শুধু এই সময়ে ৩ হাজার ৪২৭ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৯ হাজার ৬৪৭ জন।

---

তথ্যসূত্র:
1. Gaza death toll nears 53,600 as Israel continues deadly attacks
– https://tinyurl.com/bdfsndjx

[Al-Firdaws]

নিজ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারাল দখলদার ইসরায়েলি সেনা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৯ মে, সোমবার দখলদার ইসরায়েলের এক সেনা নিহত হয়েছে। ২০ মে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, সার্জেন্ট ইউসেফ ইয়েহুদা চিরাক নামে এই সেনা নিজ বাহিনীর গুলিতে (ফ্রেন্ডলি ফায়ার) প্রাণ হারিয়েছে। তাকে লক্ষ্য করে অন্য সেনারা ‘ভুলক্রমে’ গুলি করে।

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, সোমবার উত্তর গাজায় এই দখলদারের মৃত্যু হয়। ওই সময় সেখানে কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ার্সরা ৪০১তম সাঁজোয়া ব্রিগেডের অধীনে কাজ করছিল। তারা একটি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর অংশ হিসেবে এটির নকশা অঙ্কন করা হচ্ছিল। সে এ দলের অংশ ছিল।

সেখানে সেনাবাহিনীর অপর একটি কোম্পানি এলাকাটির নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করছিল। ওই সময় কোম্পানিটি সার্জেন্ট ইউসেফ ইয়েহুদা চিরাককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এই দখলদার সেনা সুড়ঙ্গটির পাশে ছিল। গুলিবিদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। তাদের এ হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই উপত্যকায় ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। অপরদিকে গাজায় গণহত্যা চালাতে গিয়ে সেখানে প্রায় ৯০০ ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু হয়েছে।

দখলদাররা গাজায় শুধুমাত্র বর্বরতাই চালাচ্ছে না, সেখানকার মানুষকে অনাহারে থাকতেও বাধ্য করছে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, গাজার মানুষ আর কিছুদিনের মধ্যে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বেন।

---

তথ্যসূত্র:
1. IDF soldier killed in Strip; Hamas-linked agency raises day’s Gazan death toll to 91
– https://tinyurl.com/26up7zxb

[Al-Firdaws]

টানা অবরোধে গাজায় পুষ্টিহীনতা ও ওষুধের তীব্র সংকট, শহীদ তিন শতাধিক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে সন্ত্রাসী ইসরায়েলের লাগাতার হামলা ও অবরোধে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। প্রতিদিন লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, এবং খাদ্য, চিকিৎসা, নিরাপত্তা—সবকিছুর অভাবে গাজা পরিণত হয়েছে একটি মৃত্যু পুরীতে। এছাড়া দখলদার ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের অবরোধে ওষুধ ও পুষ্টির অভাবে অন্তত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। ২১ মে, বুধবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টি ও ওষুধের অভাবে অন্তত ৩২৬ জন শহীদ হয়েছেন। এছাড়া ২০ মে, মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অব্যাহত হামলায় মঙ্গলবার কমপক্ষে ৮৭ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল সীমিত পরিমাণে মানবিক সহায়তা ঢুকতে অনুমতি দিলেও মঙ্গলবার গাজায় কোনো ধরনের ত্রাণ বিতরণ সম্ভব হয়নি। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, দুই দিনের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশু চরম অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
সোমবার গাজায় মাত্র পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর এটিকে ‘সমুদ্রে এক বিন্দু পানি’ বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো সীমান্ত পার হয়ে গাজায় প্রবেশ করলেও এখনও সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কাছে পৌঁছায়নি।

দখলদার ইসরায়েলের অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। গত আড়াই মাস ধরে সেখানে কোনো খাদ্য বা অন্য কিছু ঢুকতে দেয়নি ইহুদিবাদীরা। এতে করে গাজার মানুষ ব্যাপক খাদ্যাভাবে পড়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে সেখানকার মানুষ পশুর খাবার ও বালুযুক্ত আটা খেতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবার এমনই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। খাদ্যের অভাবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশুরা। পশুর ও বালুযুক্ত খাবার খাওয়ায় তারা ডায়রিয়া ও চরম দুর্বলতায় ভুগছে।

---

তথ্যসূত্র:
1. More than 300 Palestinians die due to malnutrition and lack of medicine
– https://tinyurl.com/ydjnaxjb
2. Gaza reports 326 malnutrition deaths, more than 300 miscarriages due to lack of essentials
– https://tinyurl.com/4xvbewkn

[Al-Firdaws]

‘১৭ বছর খাইতে পারিনি, এখন খাব’; ঠিকাদারকে হুমকি

রাজশাহীর সাবেক এক বিএনপি নেতা নওগাঁর এক ঠিকাদারকে চাঁদা দাবী করে মোবাইলে হুমকি দিয়েছে। সড়ক বিভাগের ঠিকাদারি কাজের বিষয়ে ঈদের আগেই তার সঙ্গে বসে সমাধান করার জন্য চাপ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদারকে। ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপে এই তথ্য পাওয়া বেরিয়ে এসেছে।

অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক ওই নেতার নাম মাহমুদুল হক রুবেল। সে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা বিএনপির থেকে পদত্যাগ করা যুগ্ম আহ্বায়ক। আর ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদারের নাম শাহজাহান আলী। সে মান্দার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলে ফোনালাপ সূত্রে জানা গেছে।

দুজনের মধ্যে ফোনালাপে শোনা যায়, রুবেল ঐ ঠিকাদারকে বলছেন— ‘রোডসে আর টেন্ডার সাবমিট করবেন না।’ শাহজাহান প্রশ্ন করলেন, ‘কেন?’ জবাবে রুবেল বলেন, ‘কারণ, আমরা নিজেরাই খাইতে পাচ্ছি না। আমার কথা হলো, আপনি ভাই টেন্ডার-মেন্ডার দিয়েন না, আমার অনুরোধ থাকল। আমরা ১৭ বছর খাইতে পারিনি। এখন আমরা খাব।’

জানা গেছে, কলরেকর্ডটি সোমবার (১৯ মে) দুপুরের। পৌনে ১০ মিনিটের ওই কথোপকথনে রুবেলের সঙ্গে হারুন নামে একজন কথা বলতে শোনা যায়।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) রাজশাহীর বৃক্ষপালনবিদের কার্যালয় থেকে ৯টি লটে গাছ বিক্রির জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অংশ নেয় শাহজাহান আলী। শাহজাহান আলী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে রাখা বাক্সে দরপত্র জমা দিয়ে এতে সে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকায় দুটি লটের কাজ পায়।

এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদার শাহজাহান আলীকে ফোন করে রুবেল। ফোনে রুবেল ঠিকাদার শাহজাহানকে বলে, ‘আপনি এই কাজগুলা কইরেন না, জাস্ট সমস্যা হবে।’

শাহজাহান বলে, ‘আপনারা যদি নিষেধ করেন, তাহলে বিষয়টা কেমন হয় না?’ রুবেল বলেন, ‘এখন এমন অবস্থা হয়েছে, মান্দার লোক শুনলেই চার-পাঁচটা থাপ্পড় মারবে।’ শাহজাহান বলেন, ‘মান্দার লোক তো আরও টেন্ডার করছে।’

জবাবে রুবেল বলে, ‘একটার পর একটা অপমান হবেই, দেখবেন। আপনাকে আমি বললাম ভাই ব্যক্তিগতভাবে। মাথায় রাইখেন।’

শাহজাহান জানতে চায়, ‘কী করলে অপমান হবে না সেইটা বলেন।’ রুবেলের জবাব, ‘টেন্ডার না দিলেই অপমান হবেন না।’ ‘টেন্ডার তো হয়েই গেছে’, শাহজাহান এ কথা জানালে এরপর অশ্লীল ভাষায় কথা বলে বিএনপি নেতা রুবেল।

শাহজাহান বলে, ‘আপনি টেন্ডার করবেন, করে কাজ নিবেন আপনি।’ শাহজাহান বলেন, ‘নিজের এলাকাতে এখন কুইত্তাও ভাগ দেয় না, জানেন? কুইত্তাও বুলছে যে, তোর এলাকা তুই খা, আমার এলাকা আমি খাই।’

এ সময় শাহজাহান রুবেলের দলীয় পরিচয় জানতে চায়। তখন রুবেল বলেন, ‘আমি বিএনপির সভাপতি, রাজপাড়া থানার।’ যদিও রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি।

---

তথ্যসূত্র:
১. ‘১৭ বছর খাইতে পারিনি, এখন খাব’ ঠিকাদারকে বিএনপি নেতা
-https://tinyurl.com/mpaek79h

[Al-Firdaws]

গাজায় থামছেইনা মৃত্যু মিছিল, বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসনে শহীদ ৮২

গাজা উপত্যকায় চলমান বর্বর আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে প্রাণহানির সংখ্যা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। চিকিৎসা সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ২১ মে, বুধবার গাজার বিভিন্ন স্থানে বর্বর ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশু সহ অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি শহীদ এবং আরও ২৬২ জন আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া নৃশংস ইসরায়েলি হামলায় মোট শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩,৬৫৫ জনে, আহত হয়েছেন ১,২১,৯৫০ জনেরও বেশি। শহীদদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

বুধবার সন্ধ্যায় গাজার আল-নাফাক স্ট্রিটে বেসামরিক নাগরিকদের একটি সমাবেশে বর্বর ইসরায়েলি বিমান হামলায় চারজন বেসামরিক নাগরিক শহীদ হন এবং অনেকে আহত হন। একই ধরনের আরেকটি হামলা চালানো হয় গাজার আল-দারাজ এলাকায়, যেখানে নয়জন ফিলিস্তিনি নাগরিক শহীদ হন।

জাবালিয়া বাস স্টেশনে গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছেন অন্তত আটজন, আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন। গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়া আল-বালাদ এলাকার আল-নুজা স্ট্রিটে নাভান পরিবারের বাড়িতে হামলায় শহীদ হয়েছেন ১১ জন, আহত ১৩ জন।

দেইর আল-বালাহ শহরে একটি বাড়িতে বিমান হামলায় পাঁচজন শহীদ হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু। খান ইউনিসের পূর্বে আবাসান আল-কাবিরা এলাকায় আবু সালাহ পরিবারের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে চারজনকে শহীদ করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

চিকিৎসা সূত্র জানায়, ইসরায়েলের পুনরায় হামলা শুরু হওয়ার পর— অর্থাৎ ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৫০৯ জনে, আহত হয়েছেন ৯,৯০৯ জন।

স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী নিয়মিতভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে, ফলে বহু হতাহত ও মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তার পাশে পড়ে আছে। জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর পক্ষে সেখানে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

---

তথ্যসূত্র:
1. Gaza death toll nears 53,700 as Israel kills 82 more Palestinians
– https://tinyurl.com/4unzua3y
2. Death toll across Gaza Strip surges to 53,655, over 121,950 injured
– https://tinyurl.com/2s36et5d