ভারতের মুম্বাইয়ে ১,৫০০টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার সরিয়ে দিল পুলিশ

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার ও হাইকোর্টের নির্দেশে মুম্বাই পুলিশ শহর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থিত প্রায় ১,৫০০টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার সরিয়ে দিয়েছে। পুলিশ দাবি করছে, এই পদক্ষেপ সব ধর্মের উপাসনালয়ের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে বাস্তবিক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর, যার ফলে সমাজে ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১ জুলাই ভারতীয় গণমাধ্যম ক্লারিওন ইন্ডিয়া জানায়, মুম্বাই পুলিশ কমিশনার দেবিন ভারতী বলেছে, ‘এই পদক্ষেপ কোনও নির্দিষ্ট ধর্মকে লক্ষ্য করে নয়। মসজিদ, মন্দির, গির্জা সব ধরনের উপাসনালয় থেকেই লাউডস্পিকার সরানো হয়েছে। তবে, ধর্মীয় উৎসবের সময় অনুমতি নিয়ে শব্দ দূষণ আইনের আওতায় অস্থায়ীভাবে লাউডস্পিকার ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।’
ধর্মীয় বাস্তবতায় দেখা যায়, মুসলিমদের জন্য আজান শুধু একটি রীতি নয়, বরং প্রতিদিন পাঁচবারের এক অপরিহার্য ধর্মীয় দায়িত্ব। বিপরীতে, হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে লাউডস্পিকার ব্যবহার মূলত উৎসব কিংবা বিশেষ আচার-অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকে। এই প্রেক্ষাপটে, যদিও আইনত নিয়মটি সব ধর্মের জন্য এক, বাস্তবে তা মুসলিমদের ধর্মীয় চর্চার ওপর অসামঞ্জস্যভাবে বেশি প্রভাব ফেলছে।
মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার অপসারণকে ঘিরে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে অসন্তোষ তীব্র হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন নেতা ও সমাজকর্মীরা মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার এবং পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এরই মধ্যে বিজেপি নেতা কীর্ত সৌম্য দাবি করেছে, ‘গত ২৯ জুন (রবিবার), বহু মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার সরানো হয়েছে। এটি একটি বড় অর্জন।’ তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, লাউডস্পিকার অপসারণ শুধু প্রশাসনিক নির্দেশ মানার অংশ নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করার রাজনৈতিক অভিপ্রায়ও এতে জড়িত। অনেকেই এই বক্তব্যকে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসনিক মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন, যা মুসলিম সমাজে আরও ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
তথ্যসূত্র:
1. Police Remove Loudspeakers From 1,500 Places of Worship in Mumbai
– https://tinyurl.com/rrdhmp9x
Comment