Announcement

Collapse
No announcement yet.

​ উম্মাহ নিউজ || ১৩ মুহাররম,১৪৪৭ হিজরী || ০৯ জুলাই, ২০২৫ ঈসায়ী​​

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ​ উম্মাহ নিউজ || ১৩ মুহাররম,১৪৪৭ হিজরী || ০৯ জুলাই, ২০২৫ ঈসায়ী​​

    বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা: ০৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে একদিনে ৫২ জনকে গুলি করে হত্যা





    ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হন বলে বিবিসি আই এর একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ঘটনাটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

    এই হত্যাকাণ্ড সেদিন ঘটেছিল, যেদিন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে টানা ৩৬ দিন ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং ভারতে পালিয়ে যায়।

    গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভের শেষ দিনে ভয়াবহ ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল, সেটি বের করার জন্য তখনকার শত শত ভিডিও, ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং সেগুলো বিশ্লেষণের পাশাপাশি সরেজমিনে বেশ কয়েকবার যাত্রাবাড়ীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিবিসি।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানান খবর প্রকাশিত হলেও নির্বিচারে হত্যার ঘটনাটি কীভাবে শুরু ও শেষ হয়েছিল এবং তাতে কত মানুষ হতাহত হয়েছিল, সে সম্পর্কে বিবিসি’র অনুসন্ধানে এমন কিছু তথ্য ও বিবরণ উঠে এসেছে, যা আগে সেভাবে সামনে আসেনি।

    আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাহিনীর একজন মুখপাত্র ঘটনা স্বীকার করে বিবিসিকে বলেছে, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তৎকালীন পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে অপেশাদার আচরণ করেছিল।”

    যাত্রাবাড়ীতে হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছিল যেভাবে

    অনুসন্ধান চলাকালে ঘটনার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও বিবিসি’র হাতে আসে, যেখানে পাঁচই অগাস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিবর্ষণ শুরুর কিছু মুহূর্ত দেখা যায়।

    ভিডিওটি এমন একজন আন্দোলনকারীর মোবাইল ফোন থেকে বিবিসি সংগ্রহ করেছে, যিনি নিজেও সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান।

    নিহত ওই আন্দোলনকারীর নাম মিরাজ হোসেন।

    পুলিশ যখন বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে, সেই সময়ের ভিডিও ধারণ করেছেন মিরাজ হোসেন। মর্মান্তিকভাবে মোবাইল ক্যামেরায় ওই ভিডিওতে তার জীবনের শেষ মুহূর্তও ধরা পড়েছে।

    মিরাজ হোসেনের মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার মোবাইলটি খুঁজে পান এবং ফোনে সংরক্ষিত ভিডিওটি বিবিসিকে দেন।

    ভিডিও’র মেটাডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি শুরু হয়েছিল দুপুর দুইটা ৪৩ মিনিটে।

    ভিডিওটিতে যাত্রাবাড়ী থানার মূল ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে সেনাবাহিনীর একটি দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর হঠাৎ করেই তারা ওই এলাকা থেকে সরে যান।

    এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরের পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারী জনতার ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করে।

    থানার উল্টো দিকে অবস্থিত একটি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ গুলি চালানো শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে গলির ভেতর দিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

    ওই সময়ের আরেকটি ভিডিওতে আহতদের শরীরে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে।

    হত্যাকাণ্ড চলেছিল কতক্ষণ?

    অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে যে, ৫ই আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।

    ঘটনার সময়ের কিছু ড্রোন ভিডিও বিবিসি’র হাতে এসেছে।

    ভিডিও’র মেটাডেটার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিকেল তিনটা ১৭ মিনিটেও যাত্রাবাড়ী থানার সামনের মহাসড়কে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাচ্ছিলো পুলিশ।

    এরপর তাদের বড় একটি দলকে থানার উল্টো পাশে অবস্থিত একটি অস্থায়ী সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।

    ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। ভ্যান-রিকশা এবং বাইকে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।

    পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনও যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ একটি অংশ থানায় আগুন দেন।

    ৫ই অগাস্ট বিকেলে পুলিশের নির্বিচার গুলির ঘটনার পর আহতদেরকে আশেপাশের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বহু ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন।

    সেদিন যাত্রাবাড়ীতে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিলো।

    কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত তখনকার খবর, নিহতদের পরিবারের সাক্ষাৎকার, হাসপাতালের নথি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টের সত্যতা যাচাই করার পর বিবিসি দেখেছে, ৫ই আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন।

    হাসিনার কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস

    পলাতক শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়, গত গ্রীষ্মে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি সে নিজেই দিয়েছিল।

    বিবিসি’র যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে “প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার” করার অনুমতি দিয়েছে এবং “তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করবে”।

    অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে সে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিল।

    ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত ১৮ই জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপটি করে।

    চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ফোনালাপের অডিওটি কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভের পর থেকে হাসিনার কলের অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।

    ১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

    বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে এবং তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।

    মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোন কলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।

    ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছে, যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। এটি এমন এক সূচক যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।

    তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।

    ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, “রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।”


    তথ্যসূত্র:
    ১. বিবিসির অনুসন্ধানে ৫ই অগাস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশি হত্যাকাণ্ডের যে চিত্র উঠে এসেছে
    -https://tinyurl.com/5fj4efx9
    ​​​​
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    গোমতী নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি; নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে চরবাসীদের





    টানা দুদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে এখনো পানি বিপদসীমার প্রায় ১০ ফুট (তিন মিটার) নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

    কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। কুমিল্লায় এত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল না। উজান, অর্থাৎ ভারতের অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় গোমতী নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ থেকে ৫ মিটার বেড়েছে। উজানের পানি আমাদের এখানে পৌঁছাতে প্রায় ১৮ ঘণ্টা সময় লাগে। বিকেল নাগাদ গোমতীর পানির সর্বশেষ পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে।’

    বুধবার (০৯জুলাই) সকাল ১০টায় গোমতী নদীর টিক্কার চর, চানপুর ব্রিজ ও সংরাইশ এলাকাসহ কিছু কিছু স্থানে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

    তথ্যসূত্র:
    ১.গোমতী চরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
    -https://tinyurl.com/3ubw52xf
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর; বন্যার আশঙ্কা এলাকাবাসীর




      ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে নোয়াখালী আবহাওয়া বিভাগ।

      বুধবার (৯ জুলাই) , তিন দিনের টানা বৃষ্টির পানিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে, মৎস্য ভবন, ফায়ার সার্ভিস, জেলা সশস্ত্র বাহিনী র্বোডসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে পানিতে তলিয়ে গেছে।

      জানা গেছে, টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, নোয়াখালী কলজে সড়ক, জেলখানা সড়ক, মাইজদী বাজার সড়ক, বাড়িঘর ও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া জেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনী পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।

      এছাড়া জেলা সদর, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখলি, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, কবরিহাট, সুবর্ণচর, হাতিয়াসহ নয়টি উপজেলার অনেক রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষরা। এভাবে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যার হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

      তথ্যসূত্র:
      ১.ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর
      -https://tinyurl.com/y34ky3fy
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        ফেনীতে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৫ জায়গায় ভেঙ্গে প্লাবিত ৩২ টি গ্রাম; যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পশুরাম উপজেলা



        টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের পানির স্রোতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৫টি স্থান ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে জেলার দুই উপজেলার ৩২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হাজারো পরিবার। এছাড়া সোনাগাজী, দাগনভূঞা ও ছাগলনাইয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, পুকুর-মাছের ঘের এবং খেত-খামার পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পরশুরাম উপজেলা।

        বুধবার (০৯ জুলাই) সকল ১০টা পর্যন্ত জেলা আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ‍্যমতে, ফেনীতে ৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ৯ জুলাই সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় ৫৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

        পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মুহুরী নদীর পরশুরাম গেজ স্টেশনে ৮ জুলাই সকাল ৬টায় পানির লেভেল ৬.৯৭ মিটার, রাত ৮টায় ১৩.৮৫ মিটার ছিল। বিপদসীমা ১২.৫৫ মিটার, এই সময়ে প্রায় ৭ মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী নদীর ডান তীরে জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত বাঁধের সংযোগস্থল দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। মুহুরী নদীর উভয় তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে পরশুরাম উপজেলায়, জঙ্গলগোনা ২টি (মুহুরী, ডান তীর), উত্তর শালধর ১টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), নোয়াপুর ১টি (মুহুরী নদীর বাম তীর), পশ্চিম অলকা ১টি (মুহুরী নদীর বাম তীর), ডি এম সাহেবনগর ১টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), পশ্চিম গদানগর ১টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), দক্ষিণ বেড়াবাড়ীয়া ১টি (কহুয়া নদীর বাম তীর), পূর্ব সাতকুচিয়া ১টি (কহুয়া নদীর ডান তীর), উত্তর টেটেশ্বর ১টি (কহুয়া নদীর বাম তীর) সহ ১০টি স্থানে ভাঙন হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলায় দেড়পাড়া ২টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), শ্রীপুর ১টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), উত্তর দৌলতপুর ১টি (কহুয়া নদীর ডান তীর), কমুয়া ১টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর) সহ ৫টি ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।

        এছাড়া, বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। সবশেষ সকাল ৯টায় পানির লেভেল ১৩.৩১ মিটার।

        এদিকে জেলার বিদ‍্যুত বিতরণ বিভাগ ও ফেনীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ‍্যমতে, সদর উপজেলা ও সোনাগাজী, পরশুরাম এবং ফুলগাজীর অনেক বাসা, বাড়ি ও ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার এবং সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে এর পরিধি বাড়তে পারে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।


        তথ্যসূত্র:
        ১.ফেনীর ৩ নদীর বাঁধ ভাঙন, প্লাবিত ৩২ গ্রাম
        -https://tinyurl.com/27zys2tm
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          জুলাই আন্দোলনে আহত শুভর শরীরে এখনো ১৭০ ছররা গুলি, ঘুম হয় না যন্ত্রণায়; চিকিৎসার জন্য একমাত্র জমিটিও বিক্রি করে অসহায় পরিবার




          মাত্র ১৭ বছর বয়সেই শুভর জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে চিরদিনের জন্য হারালেন একটি চোখ। আরেকটি চোখও অন্ধ হওয়ার পথে। এছাড়া শরীরের ভেতরে চামড়ার নিচে এখনো রয়েছে ‘১৭০টি ছররা গুলি’। সব মিলিয়ে জীবন দুর্বিষহ শুভর। জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করালেও পুরোপুরিভাবে সুস্থ হননি। এরমধ্যে অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার।

          মাদারীপুর পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চর কুকরাইল এলাকার মো. সোহেল বেপারীর একমাত্র ছেলে শুভ বেপারী। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার পরিবারে মা-বাবা, বড় এক বোন ও ৭ বছর বয়সী এক ভাগ্নে আছে। এখন শুভর বয়স ১৮।

          সংসারের হাল ধরতে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। মা লিপি বেগম লোন করে আড়াই লাখ টাকা জমা দেন এক দালালের কাছে। শহরের ইটেরপুল এলাকায় ছোট একটি মুদি দোকান করে শুভর বাবা কোনো রকমে সংসার চালাতেন। রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা হওয়ায় সেই দোকান উচ্ছেদ করা হয়। এতে আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারটি।

          শুভর পরিবার ও স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান, গত বছরের ১৮ জুলাই মাদারীপুর শহরের শকুনি লেকপাড়ে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যান শুভ। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আস্তে আস্তে এগুতে থাকেন।

          মাদারীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এলে পুলিশ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় ছররা গুলি তার মাথা, চোখসহ সারা শরীরে ঢুকে যায়। সেই সময় তার বন্ধুসহ আরও চারজন আহত হন। বুলেটের আঘাতে তখন শুভর কোনো জ্ঞান ছিল না।

          এরপর শুভসহ ৪ জনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে মাদারীপুরের চরমুগরিয়া আধুনিক হাসপাতালে, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সবশেষ ঢাকায় নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সে যাওয়ার পথেও হামলার শিকার হন তারা। পরে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রাণে বাঁচলেও হারাতে হয়েছে বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ও অর্থের অভাবে ডান চোখটিও হারাতে বসেছেন তিনি।

          পুনরায় দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন শুভ ও তার পরিবার। এছাড়া মাথাসহ সারা শরীরে অসংখ্য ছররা গুলি রয়েছে তার। এরমধ্যে মাত্র ১০টির মতো বের করতে পারলেও বাকিগুলো বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে এগুলোর কারণে শরীর ও মাথার মধ্যে তীব্র যন্ত্রণা হয়। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেন না শুভ।

          এদিকে বিদেশ যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। দালালের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকাও এখনো ফেরত পাননি। জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করালেও বর্তমানে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। বিভিন্নভাবে দেড় লাখ টাকা পেলেও এখন পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। অন্যদিকে কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারায় দুটি মামলাও হয়েছে শুভর মা লিপি বেগমের নামে। তাই সব মিলিয়ে পরিবারটি এখন অসহায়।

          আহত শুভ বলেন, আমাদের একটা ছোট মুদি দোকান ছিল। সেই দোকানের আয়ের টাকায় সংসারসহ চিকিৎসা খরচ চলতো। কিন্তু দোকানটি সরকারি জায়গায় হওয়ায় তা উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়। পরে ওই দোকানটি আমাদের বাড়ির সামনে রাখা হয়েছে। তবে এখানে তেমন একটা বেচাকেনা হয় না। আমাদের একটি মাত্র জমি ছিল, সেটাও বিক্রি করা হয়েছে। জমি বিক্রির টাকাসহ মোট ৫ লাখ টাকা আমার চিকিৎসার খরচ চালানো হয়েছে। পরে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও সরকারের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। সেই টাকাও চিকিৎসার জন্য খরচ হয়ে গেছে।

          তিনি আরও বলেন, দোকান উচ্ছেদ করে দেওয়ার পর আমার বাবা ও আমি দুজনই বেকার। কোনো রকম টেনেটুনে সংসার চলছে। এখন চিকিৎসা করাবো কীভাবে সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি। এছাড়া চিকিৎসার জন্য আমাদের একমাত্র বাড়ির জমিও বিক্রি করায় এখন আমরা নানার দেওয়া বাড়িতে থাকছি। আমার চোখ ও মাথায় ৫৭টিসহ সারা শরীরে ১৮০টি গুলি আছে। মাত্র ১০টি মতো বের করা সম্ভব হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন এগুলো রগের সঙ্গে মিশে গেছে। বের করতে হলে জীবনের ঝুঁকি আছে। তাই এখন কি করবো জানি না। খুব যন্ত্রণায় দিন কাটছে।


          তথ্যসূত্র:
          ১.এখনো শরীরে ১৭০ ছররা গুলি, যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারেন না শুভ
          -https://tinyurl.com/2f4nnw29
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            রেলস্টেশনের কক্ষ দখল করে পার্টি অফিস বানানোর অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে



            রাজশাহী মহানগর বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনের একটি কক্ষ দখল করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে।

            সম্প্রতি ওই রেলওয়ে স্টেশনটির একটি পরিত্যক্ত কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও রং করে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

            স্থানীয় লোকজন গণমাধ্যমকে বলেছে, দখলকৃত কক্ষটিতে নেতৃত্ব দেওয়া নেতার নাম মো. একরাম আলী। সে রাজশাহী মহানগর বিএনপির মতিহার থানা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। দিনের বেলা কক্ষটি তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যা বা রাতের দিকে মাসখানেক ধরে লোকজন নিয়ে সে সেখানে বসে।

            গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের উত্তর পাশে স্টেশনবাজার এলাকায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে এই স্টেশনটি চালু করা হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরেই স্টেশনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। কিছু লোকাল ট্রেন এখানে দাঁড়ায়। বেশ কয়েকজন ছিন্নমূল মানুষ সেখানে রাত কাটায়।

            ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই কক্ষটি দখলে নিয়ে তালাবদ্ধ করে করেছিল তারা। তবে মাসখানেক আগে থেকে ওই কক্ষটিতে তারা নিয়মিত বসছে। সেটি রঙিন রং করে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ‘পার্টি অফিস’ বানিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সরকারি ও পাবলিক ফাংশনের মতো জায়গায় কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের মনে আলোচনার খোরাক হয়েছে।

            সরেজমিনে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কক্ষটিতে একটি টেবিল বসানো আছে। টেবিলটির চারপাশে চেয়ার রয়েছে। সেখানে মহানগর মতিহার থানা বিএনপির সভাপতি একরাম আলী একটি চেয়ারে বসে আছে। তার অন্তত ৮-১০ জনকেও সেই কক্ষে চেয়ারে বসে ও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।


            তথ্যসূত্র:
            ১.রেলস্টেশনের কক্ষ দখল করে বিএনপি নেতার ‘পার্টি অফিস’
            -https://tinyurl.com/2p3y264s
            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

            Comment


            • #7
              ইসরায়েলি বন্দিশিবিরে ইতিহাসের ভয়াবহতম দমনপীড়ন: বন্দি সংখ্যা ছাড়াল ১০,৮০০




              ফিলিস্তিনি বন্দি অধিকার সংস্থাগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে ৮ জুলাই, (মঙ্গলবার) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই মাসের শুরুতে দখলদার ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনির সংখ্যা প্রায় ১০,৮০০-তে পৌঁছেছে। ২০০০ সালের পর থেকে এটি সর্বোচ্চ। এই বিশাল সংখ্যক বন্দিদের মধ্যে ৪৫০ জনের বেশি শিশু ও ৫০ জন নারীও রয়েছেন।

              সংস্থাগুলোর মতে, প্রকাশিত নথিতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের এই সংখ্যায় ইসরায়েলি সামরিক ক্যাম্পগুলোতে আটকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যাদের অধিকাংশই বিচারবহির্ভূতভাবে এবং জেল তালিকাভুক্ত না করেই বন্দি রাখা হয়েছে। এর অর্থ— সামরিক ক্যাম্পগুলোতে থাকা বন্দিদের সংখ্যা যোগ করলে প্রকৃত বন্দির সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।

              ইসরায়েলের কথিত ‘প্রশাসনিক আটক আইন’ অনুযায়ী বর্তমানে ৩,৬২৯ ফিলিস্তিনিকে অভিযোগ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্দি করে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার এ প্রথার তীব্র নিন্দা জানালেও, ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি এই আইনকে দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যাচ্ছে।

              এছাড়া ২,৪৫৪ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ‘অবৈধ যোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এ তালিকায় লেবানন ও সিরিয়ার আরব মুসলমানরাও রয়েছেন, যা দখলদার রাষ্ট্রটির আঞ্চলিক সন্ত্রাসনীতিরই প্রতিফলন।

              বর্তমানে ৫০ জন ফিলিস্তিনি নারী ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি, যাদের মধ্যে দুইজন গাজার বাসিন্দা। পাশাপাশি ৪৫০ জন শিশু আটক রয়েছে, যাদের অধিকাংশকে দিনরাত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

              ডেইমন কারাগারে নারী বন্দিদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। এখানে প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিটের মুক্ত বাতাসের সময় বরাদ্দ, যা টয়লেট ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত। পুরো দিনজুড়ে সেলে তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকতে হয়। খাবারের পরিমাণও ভয়াবহভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারাগারে ইসরায়েলি বাহিনী নিয়মিতভাবে বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। বন্দি নারীদের বর্বরভাবে লাঞ্ছনা, গালাগালি, থুতু ছিটানো, একাকী নির্জন কক্ষে বন্দিত্ব সহ বিভিন্ন ভয়াবহ নির্যাত করা হচ্ছে।

              এই সকল কর্মকাণ্ড ইসরায়েলের বর্বর রাষ্ট্রীয় চরিত্রের নগ্ন প্রকাশ—যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সব সীমা লঙ্ঘন করছে। ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল এখন শুধু গাজা উপত্যকায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে না, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত দমনযজ্ঞে লিপ্ত। গাজায় গণহত্যা, পশ্চিম তীরে দখলদারিত্ব, কারাগারে শিশুদের বন্দিত্ব, নারীদের লাঞ্ছনা, বিচারহীন আটক—এরই কিছু নমুনা মাত্র।


              তথ্যসূত্র:
              1.10,800 Palestinians in Israeli prisons; highest since Second Intifada
              https://tinyurl.com/3phkepjp
              নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

              Comment


              • #8
                বর্বর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনে শহীদ অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি


                ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় একদিনে আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এতে করে দুর্বৃত্ত ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনির সংখ্যা প্রায় ৫৭ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে।

                ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সন্ত্রাসী ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান ও স্থল হামলার ফলে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৫৭৫ জনে। ৮ জুলাই, মঙ্গলবার নতুন করে আরও ৫১টি মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছে ২৬২ জন। চলমান আগ্রাসন ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় এই রকম নৃশংস সহিংসতার মাত্রা দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে।

                স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে কারণ বহু মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কিংবা রাস্তায় পড়ে আছে, যেগুলো উদ্ধারকারীরা নিরাপত্তার অভাবে তুলতে পারছে না। বিশেষ করে হামলার পর পরই যে ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি হয়, তার মধ্যে কাজ করা রীতিমতো জীবন ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

                এছাড়া, ৮ জুলাই, মঙ্গলবার শুধুমাত্র মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলায় শহীদ হয়েছেন ৮ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৭৪ জনেরও বেশি। মার্চ মাস থেকে এই ধরনের সহায়তা নিতে গিয়ে মোট ৭৬৬ জন শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৪৪ জন। এই তথ্য গাজার মানবিক পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও সহায়তা কার্যক্রমের বিপন্নতাকে সামনে নিয়ে আসে।


                তথ্যসূত্র:
                1.Militants kill 5 Israeli soldiers in Gaza and Israeli strikes kill 51 Palestinians
                https://tinyurl.com/2f2mm6r2
                নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                Comment


                • #9
                  দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীতে মানসিক বিপর্যয় চরমে, আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়ে ৪৩




                  গাজায় চলমান যুদ্ধ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মারাত্মক মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করছে। ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে অন্তত ৪৩ ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে দেশটির সামরিক সূত্র। যুদ্ধের মানসিক যন্ত্রণা এবং পিটিএসডি-তে (পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার) ভুগে এসব আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

                  গত বছরের ৭ অক্টোবর, আল-আকসা স্টর্ম অভিযান শুরুর পর থেকেই দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বাড়তে থাকে। সর্বশেষ আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ বছর বয়সী সেনা ড্যানিয়েল এডরি-র ক্ষেত্রে, যে লেবানন ও গাজা সীমান্ত থেকে নিহত সেনাদের মৃতদেহ পরিবহনের দায়িত্বে ছিল। মানসিক ট্রমার কারণেই সে আত্মহত্যা করে বলে জানানো হয়েছে।

                  ইসরায়েলি দৈনিক হারেটজ-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, জনবল সংকটের কারণে দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বর্তমানে মানসিক রোগে আক্রান্ত রিজার্ভ সেনাদের গাজায় পাঠাচ্ছে। এক সামরিক কমান্ডার জানায়, ‘আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। মানসিক চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদেরও যুদ্ধে নামাতে হচ্ছে।’

                  সে আরও জানায়, হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা গাজা যুদ্ধে অংশ নিয়ে চরম মানসিক অবসাদ ও বিকারগ্রস্ততায় ভুগছে।

                  ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, ৭ অক্টোবরের পর থেকে ৯,০০০ ইসরায়েলি সেনা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে। তবে সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত পরিসংখ্যান প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, অনেক সেনার মরদেহ সামরিক সম্মান ছাড়াই দাফন করা হচ্ছে।

                  এক সেনা জানিয়েছে, তাদের সামনে কমান্ডাররা এখন দুইটি বিকল্প রাখছে— আত্মহত্যা বা পালিয়ে যাওয়া।

                  ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল কান ১১ জানায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীতে ৮০০ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেন্টার খোলা হয়েছে।

                  ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা সামা নিউজ জানায়, ইসরায়েলি সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ মন্তব্য করেছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সেনাদের খান ইউনিস ও জেনিনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে, অথচ হারেদি (অর্থোডক্স ইহুদি) ইহুদিদের সেনাবাহিনীতে যোগদানে বাধা দিচ্ছে।’

                  ইসরায়েল বেইতেনু পার্টির প্রধান অভিগদোর লিবারম্যান বলেছে, ‘গত কয়েক মাসে যারা নিহত হয়েছে, তারা মূলত ক্ষমতাসীন জোট রক্ষার বলি।’ সে আরও জানায়, ‘সরকার বন্দিবিনিময় চুক্তি আটকে দিচ্ছে।’

                  গাজা যুদ্ধ শুধু রণক্ষেত্রে নয়, ইসরায়েলি সেনাদের মনোজগতে ভয়াবহ ক্ষত তৈরি করেছে। আত্মহত্যা, মানসিক রোগ আর হতাশার এই ঢেউ এখন পুরো সেনাবাহিনীর জন্যই বড় এক সংকটে পরিণত হয়েছে।

                  তথ্যসূত্র:
                  1. Israeli soldier who fought in Gaza, Lebanon commits suicide inside his car
                  -https://tinyurl.com/y9fb3vzh
                  2. 43 Israeli soldiers commit suicide since October 7, 2023
                  -https://tinyurl.com/mprjzpb3
                  নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                  Comment


                  • #10
                    ফেনীতে টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাঁচটি স্থানে ভাঙন



                    ফেনীতে দু’দিনের অতি ভারী বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাঁচটি স্থান ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

                    মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দিনভর টানা বর্ষণে ফেনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। নিচু এলাকার দোকানপাট, বাসা-বাড়িতেও ঢুকছে পানি।

                    সংশ্লিষ্ট সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জঙ্গলঘোনায় দু’টি স্থান, গদানগরে, দেড়পাড়া, সাহেবনগরসহ পাঁচটি স্থানে ভাঙ্গন হয়েছে।

                    এদিকে অতি ভারী বৃষ্টিতে শহরের বেশিভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, শান্তি কোম্পানি সড়ক, পাঠানবাড়ি সড়ক, একাডেমি, মাস্টারপাড়া, সহদেবপুর, পুরাতন পুলিশ কোয়াটার, মিজান পাড়া, বিরিঞ্চি, বারাহিপুর এলাকায় দুই থেকে চার ফুট পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে।


                    তথ্যসূত্র:
                    ১.ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫ স্থানে ভাঙন, বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
                    -https://tinyurl.com/2vw5v3w9
                    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                    Comment


                    • #11
                      রাজপথে শাহাদাত থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গন; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসার অবদান



                      ​২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশের সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজ অসাধারণ ত্যাগ ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের অবদান শুধু রাজপথের সংগ্রামেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের মানবিক ও নৈতিক অবস্থান এই আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ঢাকার যে কয়টি এলাকা অবিস্মরণীয় ত্যাগ, সাহস আর শাহাদাতের ক্ষেত্রে প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে, যাত্রাবাড়ী তার মধ্যে অন্যতম।

                      ইসলামবিদ্বেষী জালিম শাসক হাসিনার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ীর এই গণবিস্ফোরণের ক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্র-জনতার সঙ্গে অসামান্য অবদান রেখেছেন ওই এলাকার কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

                      যাত্রাবাড়ীতে ‘সাধারণ আলেম সমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে মাওলানা রিদওয়ান হাসানের নেতৃত্বে এই সমাবেশে মাওলানা মূসা আল-হাফিজ, মাওলানা আবদুল্লাহ আল-মাসউদ, মাওলানা উসামা সিরাজসহ অনেক উলামা জালেমের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন। এই সমাবেশ থেকে মিছিল বের হয়, যা কাজলা থেকে কুতুবখালী খাল পার হয়ে এগিয়ে যায়। ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তারা ‘গাশত কর্মসূচি’ ঘোষণা করেন। ফারসি ‘গাশত’ (মার্চ) শব্দের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদের স্বাতন্ত্র্য প্রকাশিত হয়। এই আন্দোলনে শতাধিক আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন। কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা মাওলানা শিহাব উদ্দীন জুমার নামাজের পর বাসার বারান্দায় ঘাতকের বুলেটে শহীদ হন। একইভাবে যাত্রাবাড়ীর আরেক তরুণ আলেম রোকন রাইয়ান রাস্তায় হাঁটার সময় বুলেটের আঘাতে প্রাণ হারান। এই ত্যাগের গল্পগুলো কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের অদম্য সাহস ও দেশপ্রেমের প্রতীক। ১২ বছর বয়সী মাদরাসা শিক্ষার্থী আরাফাতের শাহাদাত এই আন্দোলনে ত্যাগের আরেক হৃদয়বিদারক সাক্ষ্য হয়ে আছে। তার মতো অসংখ্য মাদরাসা শিক্ষার্থী তাদের প্রাণ দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও পলায়ন নিশ্চিত করেছেন।

                      জুলাই বিপ্লবে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা শুধু রাজপথেই সক্রিয় ছিলেন না, তারা মানবিকতার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বারিধারার জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসা আন্দোলনকারীদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিয়েছিল। মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর নির্দেশে মাদরাসার ছাত্ররা আন্দোলনকারীদের জন্য পানি, শরবত, স্যালাইন, বিস্কুট ও বিরিয়ানি বিতরণ করেন। মাদরাসার গেট সর্বদা উন্মুক্ত ছিল বিশ্রাম ও প্রয়োজনীয় সুবিধার জন্য। এমনকি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও রাস্তা পরিষ্কারের কাজেও তারা অংশ নিয়েছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ আহতদের চিকিৎসার জন্য পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং আরো পাঁচ কোটি টাকা পরে দেওয়ার কথা বলেন । এই মানবিক সহায়তা কওমি মাদরাসার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।

                      কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা শুধু রাজপথেই নয়, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। মাওলানা উসাইদ মুহাম্মদের আঁকা ‘স্বাধীনতার সূর্যোদয়’ গ্রাফিতি দেশব্যাপী সাড়া জাগিয়েছে।

                      ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি পুরোনো দেয়ালে এই ক্যালিগ্রাফি জুলাই বিপ্লব পরবর্তী স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের আয়োজিত জুলাই কবিতা প্রতিযোগিতায় আলেম কবিরা তাদের স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে বিপ্লবের স্মৃতি অমর করে রেখেছেন।


                      তথ্যসূত্র:
                      ১.জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমি মাদরাসা
                      -https://tinyurl.com/yx8cj6pv
                      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                      Comment


                      • #12
                        সীমান্তে ঘাস কাটার সময় বাংলাদেশি কৃষককে গুলি করে হত্যার ০৭ দিন পর লাশ ফেরত দিল বিএসএফ


                        চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কৃষক ইবরাহিম বাবুর মরদেহ ৭ দিন পর বাংলাদেশে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

                        মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে দর্শনা সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

                        বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার ও ভারতের ৩২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গেদে কোম্পানির কমান্ড্যান্ট। পরে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থানা পুলিশ মরদেহ দর্শনা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

                        উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই দুপুরে ইবরাহিম বাবু (২৮) ঝাঁঝাডাঙা সীমান্তের ৭৯ নম্বর পিলারের কাছে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। নিহত ইবরাহিম ঝাঁঝাডাঙা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।


                        তথ্যসূত্র:
                        ১. সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কৃষকের মরদেহ ৭ দিন পর হস্তান্তর
                        -https://tinyurl.com/47xu2hva
                        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                        Comment


                        • #13
                          স্মৃতিতে জুলাই অভ্যুত্থান; ফেসবুকে প্রোফাইল লাল করায় এমপির বেডরুম থেকে উদ্ধার ১৬ বছর বয়সী ইয়াসিনের লাশ


                          নাটোরের আকাশে নেমে এসেছে ঘন বিষাদের ছায়া। মল্লিকহাটি গ্রামের বাতাসে ভাসছে পিতার আর্তনাদ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছিলেন যে কিশোর, আজ তার দগ্ধ মরদেহ শুয়ে আছে শীতল মাটির নিচে।

                          তার নাম ইয়াসিন আলী। বয়স মাত্র ১৬ বছর। সে ছিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী, দিনমজুরের ছেলে, আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। শহীদদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল রঙিন করেছিল লাল রঙে। আর সেই ভালোবাসাই হয়ে উঠেছিল তার মৃত্যুর কারণ।

                          ৪ আগস্ট ২০২৪—যখন অন্য কিশোররা বইয়ে ফিরে গিয়েছে, ভয় আর শঙ্কার মধ্যে আন্দোলনের পথ থেকে সরে গেছে, তখন ইয়াসিন নিখোঁজ হয়। পরিবার থানায়, হাসপাতালে, বন্ধুদের কাছে ছুটে বেড়ায়। কেউ জানে না কোথায় সে।

                          ৬ আগস্ট সন্ধ্যায়, নাটোর-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের ব্যক্তিগত বাসার বেডরুম থেকে উদ্ধার হয় আগুনে পোড়া একটি লাশ। পিতা ফজর আলী নিশ্চিত করেন— সেটিই তার প্রিয় পুত্র ইয়াসিনের নিথর দেহ।

                          ইয়াসিনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। সে ছিল না কোনো অপরাধী। ছিল কেবল একটি জেগে থাকা বিবেক, একটি প্রতিবাদী মন। পরিবার ও সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ও যুবসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী তার ওপরে ক্ষিপ্ত ছিল। কারণ সে শহীদদের স্মরণে ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছিল। কারণ সে লিখেছিল, ‘অন্যায়কারীরা যত শক্তিশালী হোক, আমরা মাথা নোয়াবো না।’

                          তারা ইয়াসিনকে হুমকি দেয়, মারধর করে, মোবাইল কেড়ে নেয়। তারপর সেই নির্দয় পরিণতি। পিতা ফজর আলী কাঁদতে কাঁদতে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছেলেটা কাঠের দোকানে আমার সাথে কাজ করতো। খুব ভালো পড়তো। বলতো, ‘বাবা, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো।’ আমি কী করে ভাবতাম সেই কথাই তার জীবন কেড়ে নেবে!’ মা রত্না বেগম কোনো কথা বলতে পারেন না। শোকে নীরব হয়ে গেছেন। তার চোখের পানি যেন এখন পুরো গ্রামকে শোকগ্রস্থ দিচ্ছে।


                          তথ্যসূত্র:
                          ১.লাল প্রোফাইল দেওয়া ইয়াসিনের পোড়া লাশ মিলল সাবেক এমপির বেডরুমে
                          -https://tinyurl.com/uy3arn2c
                          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                          Comment


                          • #14
                            স্মৃতিতে জুলাই অভ্যুত্থান; নির্যাতনের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রবিনকে




                            স্বামীকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধে একমাত্র ছেলেকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন আমেনা আক্তার রুবি। সন্তান মেহেদী হাসান রবিন ছিলেন তার জীবনের শেষ আশ্রয়, শেষ ভরসা। কিন্তু সেই আশ্রয়টুকুও কেড়ে নিয়েছে হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিম ২০২৪ সালের ‘জুলাই আন্দোলনে’ অংশগ্রহণের অপরাধে। অপহরণের পর নির্মমভাবে নির্যাতন করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রবিনকে। একমাত্র সন্তান হারিয়ে আজ নিঃস্ব আমেনা।

                            নাটোর সদর উপজেলার উত্তর বড়গাছা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেহেদী হাসান রবিন ছিলেন সমাজসচেতন, স্পষ্টভাষী একজন ছাত্র। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দৃপ্ত কণ্ঠে কথা বলাই ছিল তার অপরাধ।

                            গত বছরের জুলাই আন্দোলনের ৫ আগস্ট নাটোর-২ (নাটোর সদর–নলডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীরা রবিনকে অপহরণ করে। এরপর তাকে অমানবিক নির্যাতন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। আগুনে ঝলসে যাওয়া অবস্থায় রবিন নিজের পরিচয় দিয়ে শেষবারের মতো সাহায্য চেয়েছিলেন, বলেছিলেন: ‘আমি রবিন, আমাকে বাঁচাও।’

                            স্থানীয়দের সহায়তায় এবং মামার তৎপরতায় রবিনকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। কিন্তু সমস্ত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে ৭ আগস্ট মৃত্যুহয় তাঁর। শহীদ হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা।

                            অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে আমেনা আক্তার রুবি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রবিন ছিল আমার বাঁচার একমাত্র অবলম্বন। অনেক স্বপ্ন ছিল ওকে ঘিরে। আজ সব শেষ। আমি বিচার চাই—যারা আমার ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’


                            তথ্যসূত্র:
                            ১.নির্যাতন শেষে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রবিনকে
                            -https://tinyurl.com/4sf6urwm
                            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                            Comment

                            Working...
                            X