জনসাধারণের তীব্র বিরোধীতা সত্ত্বেও জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কার্যক্রম শুরুর চুক্তি স্বাক্ষর

ওলামায়ে কেরাম ও জনসাধারণের তীব্র বিরোধীতা স্বত্ত্বেও বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন চালু হতে যাচ্ছে। তিন বছর মেয়াদি মিশন চালুর জন্য সমঝোতা স্মারক সই করেছে দুই পক্ষ। পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম বাংলাদেশের এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক জাতিসংঘের পক্ষে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
জেনেভা থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তীব্র বিরোধীতা ও প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশের আলেম উলামা থেকে সাধারণ মানুষ। মানবাধিকারের নামে দেশে পশ্চিমাদের বিতর্কিত মতবাদ মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে চেপে দেওয়া হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার অনুমতি দেয়ার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত রুখে দেয়ার ঘোষণা করে বলেছেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার চক্রান্ত যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে। আমরা খাল কেটে কুমির আনার ক্ষমতা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) দেইনি।
তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে গণঅভ্যুত্থানে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিত দেশবাসী পায়নি। মানবাধিকারের নামে এদেশে কাদিয়ানিদের প্রতিষ্ঠা, মুসলিম পারিবারিক ব্যবস্থ ভেঙ্গে দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে মানবাধিকারের অফিস খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসুন। আমরা এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।
এই কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের বিরোধীতা করে এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞার মধ্যে সমকামিতার বৈধতা দেওয়া, ট্রান্সজেন্ডারকে স্বীকৃতি দেওয়া, গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে একই বর্গে অন্তর্ভুক্ত করা, যৌনশিক্ষাকে উন্মুক্ত করা এবং মৃত্যুদণ্ডকে রহিত করার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়গুলো বাংলাদেশের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এখন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় এ বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অতি খারাপ বলে প্রতিবেদন করবে, যা বিশ্বে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান, ভ্রমণকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং বাংলাদেশে বৈদেশিক পর্যটনকে নিরুৎসাহিত করবে।
তথ্যসূত্র:
১. জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন চালু হচ্ছে বাংলাদেশে, চুক্তি স্বাক্ষর
– https://tinyurl.com/4c9mp2bv
২. ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত রুখে দেয়ার ঘোষণা হেফাজত নেতাদের
– https://tinyurl.com/mvz2fn32
৩. জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার অনুমতি দীর্ঘ মেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে: ইসলামী আন্দোলন
– https://tinyurl.com/54vf34e8
Comment