Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ১০ সফর, ১৪৪৭ হিজরী || ০৫ আগস্ট, ২০২৫ ঈসায়ী​

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ১০ সফর, ১৪৪৭ হিজরী || ০৫ আগস্ট, ২০২৫ ঈসায়ী​

    খাবারের অভাবে গাজায় প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ২৮ জন শিশু




    বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় শিশুদের দুর্দশা সীমাহীন রূপ নিয়েছে। যুদ্ধ, ক্ষুধা এবং মানবিক সেবার অভাবে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে অসংখ্য শিশু। এই হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জরুরি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। ৫ আগস্ট, মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

    ৪ আগস্ট, সোমবার ইউনিসেফ জানায়, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮ শিশু নিহত হচ্ছে। মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা এবং মৌলিক সেবা ভেঙে পড়ার কারণে এ মৃত্যুর হার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

    এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮টি শিশু মারা যাচ্ছে। এদের প্রয়োজন খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও নিরাপত্তা। কিন্তু সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে—একটি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি।

    ইউনিসেফের এই বিবৃতি এমন এক সময় এসেছে, যখন আন্তর্জাতিক মহলের একের পর এক যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে সন্ত্রাসী ইসরায়েল গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এই দীর্ঘ অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।

    গাজার অবকাঠামো প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্কুল, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা—সবকিছু ভেঙে পড়েছে। খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় এই ভূখণ্ড এখন দারুণ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। ইউনিসেফ বলছে, শিশুরা এখন শুধু যুদ্ধের গোলায় নয়, বরং ক্ষুধা এবং চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছে।

    বর্বর ইসরায়েলের অবরোধের কারণে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ঢুকতে পারছে না, ফলে লাখো শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউনিসেফ আবারও আহ্বান জানিয়েছে, “এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার যুদ্ধবিরতি, এখনই!”

    মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই পরিস্থিতি কেবল শিশুদের বর্তমান জীবনই নয়, ভবিষ্যতও ধ্বংস করছে। যুদ্ধের ভয়াবহ ছাপ, মানসিক ট্রমা ও অপুষ্টিজনিত রোগে শিশুদের একটি প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে।


    তথ্যসূত্র:
    1. 28 children killed daily in Gaza, UNICEF says, calling for immediate ceasefire
    https://tinyurl.com/3pr8tyes
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    ধর্মীয় সভার নামে ২২ কোটি টাকার সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগ আওয়ামী এমপির বিরুদ্ধে



    গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ধর্মীয় সভার নামে বরাদ্দকৃত পাঁচ হাজার ৮২৩ টন সরকারি চাল আত্মসাতের মামলায় দুদক চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুই হাজার ২৫৩টি ভুয়া ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অজুহাতে চাল বরাদ্দ নেওয়ার পর তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে এ চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ বছরের তদন্তে ২৫ অভিযুক্তের মধ্যে ১০ জন অব্যাহতি পেলেও আজাদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

    অভিযুক্তদের তালিকায় আজাদের পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি উম্মে কুলসুল স্মৃতি, ৭ ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আকতারা বেগম রুপা, খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল আহাদ ও গুদাম কর্মকর্তারা রয়েছে।

    ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট দুদকের রংপুর শাখার মামলার ভিত্তিতে এ তদন্ত শুরু হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলী আকবর আজিজ প্রমাণ পেয়েছেন যে, আজাদের নির্দেশে স্থানীয় নেতারা জাল দলিল তৈরি করে চাল বরাদ্দ নেয় এবং পরে তা আত্মসাৎ করে। তদন্তে প্রভাবশালী চাপের অভিযোগ থাকলেও দুদক দাবি করে, শুধু প্রমাণের ভিত্তিতেই চার্জশিটে রদবদল করা হয়েছে।


    তথ্যসূত্র:
    ১. ২২ কোটি টাকার চাল আত্মসাৎ
    https://tinyurl.com/7hrdn7j7
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      গাজায় একদিনে নিহত ৯৪, মোট প্রাণহানি ৬১ হাজার ছুঁইছুঁই


      ৪ আগস্ট, সোমবার দিনভর দখলদার ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯৪ জন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৩৯ জন। এদিন সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

      ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে এ পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৯৩৩ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫০ হাজার ২৭ জন ফিলিস্তিনি।

      সোমবারের বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দখলদার বাহিনীর বোমার শিকারদের অনেকেই ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকা পড়ে আছেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও লোকবলের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

      বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ত্রাণের খাবার নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোমবার গাজার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ নিতে এসে নিহত হয়েছেন ২৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ৩০০ জন।

      বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় আগ্রাসনে শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত চার মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৯ হাজার ৪৪০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩৭ হাজার ৯৮৬ জন।


      তথ্যসূত্র:
      1. Gaza death toll nears 61,000 amid Israel’s genocidal war
      https://tinyurl.com/4px9xjp6
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        হাসিনা পালানোর মুহুর্তের ভিডিও ধারনকারীর সন্ধান করতে বেড়িয়ে এলো বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরের ‘র’ নেটওয়ার্ক




        ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ২০২৪ দুপুরে কুর্মিটোলা বিমানবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। তার পালিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও দৃশ্যের সঙ্গে সবাই পরিচিত। হাসিনার পালানোর এই একটিমাত্র ছবি। কে তুলেছেন এই ছবি এবং কে ধারণ করেছেন এই ভিডিও? সঙ্গে সঙ্গে নেট দুনিয়ায় ভিডিওটি আবার ছড়িয়ে দিলোই বা কে?

        এয়ার ইন্টেলিজেন্স এই ঘটনার অনুসন্ধান এবং ছবি ধারণকারী ব্যক্তিকে ধরতে গিয়ে উদঘাটন করল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরের ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এক নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফকে ইতোমধ্যে কোর্ট মার্শাল করে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। সে এখন কাশিমপুর কারাগারের হাই সিকিউরিটি সেলে বন্দি আছে। ‘র’ সংশ্লিষ্টতায় বিমান বাহিনীর উচ্চপদস্থ ৬ কর্মকর্তা- এয়ার ভাইস মার্শাল এম এ আউয়াল হোসেন, এয়ার ভাইস মার্শাল জাহিদুল সাঈদ, এয়ার কমডোর মোহাম্মদ আমিনুল হক, গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক, গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শামীম ও উইং কমান্ডার সাইয়েদ মোহাম্মদকে শনাক্ত করে তাদেরকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

        গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে এই খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

        গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এয়ার ফোর্সের ভেতরে ‘র’-এর শ্যাডো রিক্রুটার হিসেবে কাজ করতে স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফ। এয়ার ইন্টেলিজেন্স তাকে আইডেন্টিফাই করার পর ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট ডিজিএফআইর হাতে সে গ্রেপ্তার হয়। তার ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ভারতীয় প্যারা কমান্ডোর ব্যবহার করা দুটি এফএন-৯০ এবং সিগপি-২২৯ রাইফেল ও এক কোটি নগদ টাকাসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ভারতীয় ‘র’-এর সক্রিয় এই এজেন্টকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ছবি ধারণ করা বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাকে ধরতে গিয়ে। বিমান বাহিনীর কুর্মিটোলা এয়ারবেইসের অফিসার্স মেসের জানালা থেকে ছবিটি তুলেছিলেন ফ্লাইট লে. রিফাত আশরাফী। আর ছবিটি নেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহসিফ সুরি। তাদের দুজনকেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। ফ্লাইট লে. রিফাত আশরাফী প্রশাসন শাখার একজন কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।

        শেখ হাসিনার পলায়ন দৃশ্য কেবল এক অ্যাঙ্গেলের ভিডিও থেকেই দেখা যায়। এই ছবির সূত্র ধরে শুরু হয় এয়ার ইন্টেলিজেন্সের গোপন তদন্ত। এতে পরিষ্কার হয়ে যায়, এই ভিডিও করেছে মাত্র একজন এবং সেটা বেশ দূর থেকে। ভিডিও করার অ্যাঙ্গেল, অবস্থান ও ক্যামেরা প্যান করার পর্যবেক্ষণ করে এয়ার ইন্টেলিজেন্স কোন কক্ষ থেকে এবং কে এই ভিডিও দৃশ্য ধারণ করে তা আইডেন্টিফাই করতে সক্ষম হয়। ফ্লাইট লে. রিফাত আশরাফীকে ধরা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, তার অফিসের রুমের জানালা থেকে সে ছবিটি তুলেছে। শেখ হাসিনা বিমান বাহিনীর সি-১৩০-জে বিমানে করে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে কলকাতা হয়ে দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তার পলায়নের এই রুট এবং বিমানে করে যাচ্ছে সে কথা যাতে জানাজানি না হয়ে যায় সেজন্য ছবিটি তোলা ও ভাইরাল করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরা পালিয়ে যাচ্ছে-আগেই এই ন্যারেটিভকে এস্টাবলিশড করা।

        ছবি ধারণকারী রিফাতের মোবাইল ফরেনসিক করার সময় তদন্তকারী এয়ার ইন্টেলিজেন্স আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের যোগসূত্রতা আবিষ্কার করা হয়। জানা যায়, সে ‘র’-এর সক্রিয় এজেন্ট।

        এয়ার ইন্টেলিজেন্স প্রথমে আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়ে। বড় ঘটনা বুঝতে পেরে এয়ার ইন্টেলিজেন্স বিষয়টি ডিজিএফআইর নজরে আনে। ডিজিএফআই ১৪ আগস্ট ২০২৪ তাকে আটক করে বিষয়টি সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ‘র’-এর সঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের জড়িত থাকা প্রমাণিত হয়। কোর্ট মার্শালে তার ১০ বছরের জেল হয়। বর্তমানে সে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছে। এ ব্যাপারে ওই কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফ কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি সেলে আছে। বিমান বাহিনী অ্যাক্টের অধীনে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কোর্ট মার্শালে ১০ বছরের সাজা হয়েছে তার। ৭/৮ মাস আগে তাকে এই কারাগারে পাঠানো হয়। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

        আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ‘র’-এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিমান বাহিনীর এমন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের শনাক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে ৬ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

        গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, এ ঘটনার তদন্তে শুধু এয়ার ফোর্সের ৬ জন অফিসারই নয়, আরো ‘পারমানেন্টলি সাসপেন্ড’ দেখানো হয়েছে ৪ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে। এরা হল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর ডিভিশনের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লাহ, গুলশান ডিভিশনের অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার রফিকুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী জোনের ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার তানজিল আহমেদ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেডেন্ট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এরা সবাই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এদের স্টেশন মাস্টার ছিলেন গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখার মাহমুদ (ডিবি)। এই পুলিশ কর্মকর্তা ছিল বিমান বাহিনীতে ‘র’-এর সক্রিয় এজেন্ট স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আর এদের মূল কমান্ডার ছিল বাংলাদেশে ‘র’ নেটওয়ার্কের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল মুজিবুর রহমান, যে জেনারেল মুজিব নামে পরিচিত।

        অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে উদঘাটিত হয়েছে- ভারতীয় ইন্টেলিজেন্সের পক্ষে শ্যাডো এজেন্ট হিসেবে কাজ করায় ‘র’ স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফকে একটি ব্র্যান্ড নিউ হুন্দাই গাড়ি উপহার দিয়েছে। তাছাড়া ‘র’-এর পক্ষ থেকে তার কাছে নিয়মিত সুন্দরী নারী পাঠানো হতো।

        ফ্লাইট লে. রিফাত ও ফ্লাইট লে. তাহসিফ

        তদন্তে প্রমাণ মেলে যে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রিফাত আশরাফীর মোবাইলে ধারণ করা শেখ হাসিনার পালানোর সেই ভিডিও ফেসবুকে নিজের টাইমলাইন থেকে পোস্ট করেছিল বিমান বাহিনীর আরেক কর্মকর্তা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহসিফ সুরি। গণমাধ্যম-এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে রোববার সন্ধ্যায় তাহসিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে প্রথমে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে, ‘কোন ভিডিও? আপনি কোন প্রসঙ্গে বলছেন আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।’ তাকে যখন বিস্তারিত জানানো হয় এই তদন্তের সব তথ্য এবং প্রমাণ গণমাধ্যম-এর কাছে রয়েছে, তখন সে হাসতে হাসতে বলে, ‘আরে ভাই, ওই ভিডিও পোস্ট করে তো অনেকেই অনেক টাকা উপার্জনও করেছে। আর্থিক পুরস্কারও পেয়েছে!’

        তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন তাহসিফ। বলে, ‘আপনি আসেন, সাক্ষাৎ করেন আমরা মুখোমুখি বসে কথা বলব। জানেনই তো এখন সবারই টেলিফোন কল রেকর্ড হয়।’ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা রিফাত ভিডিওটি করেছেন বললে সে বলে, কোন রিফাত? ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রিফাত আশরাফী?

        তাহসিফ সুরির সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তার শুরুটা হয় ক্রিকেট নিয়ে। ক্রিকেট বোর্ডের অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (আকসু)-এর সহযোগী হিসেবে সে কাজ করেছেন। সর্বশেষ বিপিএলেও এই দায়িত্বে ছিল সে।

        পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার মাহমুদের ‘র’ সংশ্লিষ্টতা ও গ্রেপ্তার

        ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর স্টেশন মাস্টার হিসেবে কাজ করত পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার (ডিবি) ইফতেখার মাহমুদ। সে ছিল স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

        ৫ আগস্ট ২০২৪ অস্ত্রসহ ইফতেখার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের সহায়তায় এয়ার ফোর্সের বাসভবন ফ্যালকন টাওয়ারে আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে ছিল। এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের ‘র’ কানেকশন ফাঁস হয়ে যায় এবং সে গ্রেপ্তার হয়। একই কানেকশনে গ্রেপ্তার হয় পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার। তার এই গ্রেপ্তার গোপন ছিল। তার স্ত্রী সাবা তাহসিন স্বামীর কোনো খোঁজ না পেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর ইফতেখারের নিখোঁজ বিষয়ে একটি আবেদন জানায়। তিনি আবেদনে লেখেন : ইফতেখার মাহমুদের সঙ্গে ইস্যুকৃত অস্ত্র ছিল। গত বছরের ৬ থেকে ১০ আগস্ট ইফতেখার এয়ার ফোর্স অফিসার বন্ধুর কাছে ফ্যালকন টাওয়ারে অস্ত্রসহ আশ্রয়ে ছিল। এরপর ১১ আগস্ট বাসায় ফেরেন। তার অস্ত্রটি ইফতেখারের হেফাজতে রেখে আসে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে অস্ত্রটির জন্য তাকে ফোন করা হয়। পরে জানা যায়, সে হাউস অ্যারেস্ট। ১৭ আগস্ট ইস্যুকৃত অস্ত্রের বিষয়ে তেজগাঁও থানায় জিডি করা হয়। ২২ আগস্ট একটি ফোন আসায় ইফতেখার সকাল সাড়ে ১০টায় বাসা থেকে বেরিয়ে যান। ড্রাইভার তাকে এয়ার ফোর্স হেডকোয়ার্টারে নামিয়ে দেন এবং তাকে রিসিভ করে ভেতরে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।


        তথ্যসূত্র:
        ১. বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরের ‘র’ নেটওয়ার্ক ফাঁস
        https://tinyurl.com/585pkdd4
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          দেশ ছেড়ে পালানোর আগে দিল্লির নিশ্চয়তা চেয়েছিল খুনি হাসিনা


          ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার পর ঢাকা থেকে দিল্লিতে পরপর দুইটি ফোন আসে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর নিজেই পরে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে যে তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রথম ফোনটা এসেছিল শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে, কথা বলেছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই। জয়শংকর অবশ্য ভাঙেনি সে কার কাছে ফোন করেছিলেন, তবে প্রোটোকল বলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত কথা হয়ে থাকে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেই।

          ভারত ততক্ষণে জেনে গেছে, দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পর হাসিনা পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এরপরই দিল্লিতে টেলিফোন করে সে অনুরোধ করে, তাকে ‘তখনকার মতো’ ভারতে আসার অনুমোদন দেওয়া হোক। সেই অনুরোধে সঙ্গে সঙ্গেই ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়।

          দ্বিতীয় ফোনটা আসে একটু পরেই, বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর কাছ থেকে দিল্লিতে ভারতের এয়ারফোর্স কমান্ডের কাছে। শেখ হাসিনাকে বহনকারী সামরিক বিমান যাতে ভারতের নির্দিষ্ট কোনো বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করার অনুমতি পায়, আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ‘ক্লিয়ারেন্স’ চেয়ে করা হয় এই দ্বিতীয় ফোনটা। সেই অনুমতিও দেওয়া হয় সঙ্গে সঙ্গেই।


          তথ্যসূত্র:
          ১. পালানোর আগে দিল্লির নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন হাসিনা
          https://tinyurl.com/3pbk987u
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            ‘পুলিশ লোড করে দেয়, আর গুলি করে আ.লীগ সন্ত্রাসীরা’



            শেখ হাসিনা ভারতে পলায়নের আগের দিন আওয়ামী বর্বরতার আরেকটি নজির দেখেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ চৌরাস্তায় অবস্থান নেওয়া ছাত্র-জনতা। গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের গুলিতে সে দিন ২৮ জন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই আটজন নিহত হন।

            প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সকাল ৮টা থেকে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ চৌরাস্তায় ছাত্র-জনতার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। চারদিকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সশস্ত্র অবস্থান। এর মধ্যে কৌশলে একজন একজন করে বিক্ষিপ্তভাবে বসিলা চৌরাস্তায় উপস্থিত হতে থাকেন ছাত্র-জনতা। রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ছাত্র-জনতা, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ধীরে ধীরে উপস্থিত হতে থাকেন। সকাল ৯টা নাগাদ মোহাম্মদপুর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ চৌরাস্তা মোড় লোকে-লোকারণ্য হয়ে যায়।

            চৌরাস্তা থেকে আনুমানিক ১০০ মিটার দূরত্বে চারদিকের সড়কেই ব্যারিকেড দেয় ছাত্র-জনতা। বাঁশ, কাঠের অংশ, ইটসহ যা কিছু পাওয়া গেছে, তাই দিয়ে দেওয়া হয় ব্যারিকেড। সেখানে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতা নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা।

            এ সময় ‘এক দফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘হাসিনার দুই গুণ, ধর্ষণ আর মানুষ খুন’ এসব নানা স্লোগান। আন্দোলনকারীদের মধ্যে ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার সুমন আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ডের দিক থেকে বেড়িবাঁধমুখী সড়কে পুলিশ র‍্যাবের সশস্ত্র টিম অবস্থান নেয়। সঙ্গে ছিল জলকামান, রায়ট কার, সাঁজোয়া যান (এপিসি)। মনে হচ্ছিল কথা বললেই যেন গুলি করবে।’

            চৌরাস্তা দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ। চারদিকে থমথমে পরিস্থিতি। এর মধ্যেই দুপুর ১টার পর ছাত্র-জনতার সঙ্গে যোগ দেয় মোহাম্মদপুর বাঁশবাড়ী এলাকার রহমানিয়া মাদরাসার ছাত্ররা। ৬ থেকে ৭ জন শিক্ষকের নেতৃত্বে কয়েকশ’ ছাত্র সেখানে মিছিল নিয়ে যোগ দেয়। মাদরাসাটি শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক সাহেব প্রতিষ্ঠা করে। বেলা যত বাড়তে থাকে; আশপাশের দোকানদার ও মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিতে থাকেন।

            বেলা তিনটার দিকে খবর আসে, জাপান গার্ডেন সিটির সামনে দিয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন হেলমেট পরা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চৌরাস্তার দিকে আসছে। এ খবর প্রচারের পর ছাত্র-জনতার মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়। মনে হলো সবাই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। সাড়ে ৩টার দিকে বাঁশবাড়ী এলাকা দিয়ে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আসতে থাকে। চৌরাস্তা থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার সড়কে থাকা ফুটওভার ব্রিজের ওপরে আগে থেকেই অনেকে অবস্থান করছিলেন।

            স্থানীয় ওয়ার্কশপের মালিক শরিফ গণমাধ্যমকে জানান, ‘বেলা সাড়ে ৩টার পর হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। আমি তখন চৌরাস্তায় ছিলাম। একপর্যায়ে জানতে পারি হানাদার আওয়ামী বাহিনী হেলমেট পরে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করছে। নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা একপর্যায়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে। প্রতিরোধের মুখে পড়লে হেলমেট বাহিনী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিয়ে সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছিল।’

            ঘটনাস্থলে সকাল ৮টা থেকেই উপস্থিত ছিলেন ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা ডা. তৌফিকুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সকাল থেকে আমার সঙ্গে অটোরিকশা চালক কিশোর সাদ্দাম ও তার বন্ধু শিপন যোগ দেয়। দুপুর ১টার দিকে একজন ভাই আমাদের জন্য দুটি রিকশায় করে কাঠের লাঠি নিয়ে আসেন। লাঠিগুলো অমসৃণ হওয়ায় সাদ্দাম ও শিপন নিজেদের উদ্যোগে ইট দিয়ে ধরার জায়গাটা (হাতল) মসৃণ বানায়।

            তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বিকাল সাড়ে চারটার দিকে আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হেলমেট বাহিনী গুলি শুরু করে দিয়েছিল। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে আমাদের গুলি করছিল। পাশাপাশি তাদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি চালাতে থাকে। ওভার ব্রিজ থেকে নিচে নামতে নামতেই কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন।

            বিস্ময় প্রকাশ করে তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল র‌্যাব-পুলিশ সেখানে তাদের অস্ত্রশস্ত্র হেলমেট বাহিনীর কাছে দিয়ে তারা নিজেরা নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে পরিস্থিতি দেখছে। সরকারি অস্ত্র দিয়ে গুলি চালাচ্ছে, রাবার বুলেট মারছে, টিয়ারশেল ছুড়ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সশস্ত্র গুণ্ডারা। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো পুলিশ গুলি লোড করে দিচ্ছে; আর গুলি করছে হেলমেট বাহিনী।’

            একদিকে পুলিশি মদত পাওয়া আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডাররা হেলমেট মাথায় দিয়ে গুলি করছে, আর নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা এদিক থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছে। চিকিৎসক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাদ্দাম আর শিপনসহ বেশ কয়েকজন দুরন্ত কিশোর-তরুণ সবাই গুলি উপেক্ষ করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল। গুলির বিপরীতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পাল্টা জবাব দিতে দিতে এভাবে দুঃসাহসিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। পেছন থেকে বড়রা তাদের ডাকলেও ছুটে চলছিলেন তারা। একপর্যায়ে গুলি খেয়ে দুজন রাস্তার ওপরেই পড়ে যায়। আমরা কয়েকজন সামনে এগিয়ে গিয়ে তাদের দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই।’

            সাদ্দামের কপালে দুটি গুলি লাগে। গুলি কপাল দিয়ে ঢুকে মাথার খুলি ভেদ করে পেছন দিয়ে বের হয়ে গেছে। অন্যদিকে শিপনের বাম কান দিয়ে গুলি ঢুকে ডান কান দিয়ে বের হয়ে গেছে। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ধরাধরি করে দ্রুত শিকদার মেডিকেল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন সহযোদ্ধারা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন দুই কিশোর। এ কথা বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মধ্যবয়সি এই চিকিৎসক।

            চিকিৎসক তৌফিকুল ইসলাম আরো বললেন, ‘সাদ্দাম ও শিপন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আমরা পেছনে চলে আসি। একপর্যায়ে হেলমেটধারীরা মনে করেছিল পিছু হটে আমরা নতুনভাবে আক্রমণ করব। সম্ভবত এই কারণে তারা সেখান থেকে পিছু হটে। কিন্তু এরই মধ্যে আমাদের ২৮ জন ভাই গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন অন্তত ১০ জন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেদিনের মতো নিরাপদে বিচ্ছিন্নভাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখ এড়িয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় সবাইকে। আর আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল কিংবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আলাদাভাবে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। সামান্য আহতদের আশপাশের ক্লিনিকগুলোতে সুবিধাজনকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।’


            তথ্যসূত্র:
            ১. ‘পুলিশ লোড করে দেয়, আর গুলি করে আ.লীগ সন্ত্রাসীরা’
            https://tinyurl.com/bdcsxeet
            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

            Comment

            Working...
            X